আমার এই অতিক্ষুদ্র জীবনের সবচেয়ে বড় ট্রাজেডির ঘটনাটা ঘটে উনিশশো সাতানব্বই সালে। আমরা তখন পাঁচ বছর বরিশাল থেকে ঢাকায় শিফট করছি, হাজার খানিক কার্টন ট্রাঙ্ক স্যুটকেস এর মধ্যে আমার বইভর্তি চারটা কার্টন ছিলো। সেইটার একটাতে আক্ষরিক অর্থেই টিফিন না খেয়ে জমানো টাকায় বরিশাল এর তরুণ লাইব্রেরি থেকে কেনা ততদিন পর্যন্ত বের হওয়া সব তিন গোয়েন্দা, পঞ্চাশটার মতন সেবা অনুবাদ, তখন পর্যন্ত বের হওয়া কিশোর পত্রিকা আ
শাং গ্রি লা কথাটা প্রথম উঠে আসে জেমস হিলটনের উপন্যাস লস্ট হরাইজন এ। তিবেতান হিমালয়ের এর দুর্গম অংশ, যেখানে আধুনিক মানুষের পা এখনো পড়ে নাই, সেইখানে আছে এক রহস্যময় উপত্যকা। ওইখানে মানুষের বয়স বাড়ে না, কোন অসুখবিসুখ হয় না। লোকজন আক্ষরিক অর্থেই অমর।
'খুসখুসে কাশি ঘুসঘুসে জ্বর
ফুসফুসে ছ্যাঁদা বুড়ো তুই মর।'
এমনিতে আমার বেশি অসুখবিসুখ হয় না। কিন্তু অল্প যা কিছু হয় সেইটা বেশ ভালই ভোগায়। একটা সময় আমার সুতীব্র ডাস্ট এলার্জির সমস্যা ছিলো, নাকেমুখে মুখোশ এঁটে ঘর থেকে বের হতে হইতো। আজকাল ঢাকা শহরের বেশিরভাগ যানবাহনই সিএনজিতেও চলায় শহরের বাতাস মোটামুটি পরিষ্কার, তারপরেও বসন্তকালটা আমার কাছে সবসময়েই একটা আতঙ্ক নিয়ে এসে উপস্থিত হয়।
হাসপাতালে আমাদের রোজকার ডিউটি বারো ঘন্টার শিফটে হলেও অ্যাডমিশন ডিউটি থাকতো টানা চব্বিশ ঘন্টার। আর চব্বিশ ঘন্টা ডিউটি প্রায় সবসময়েই তিরিশ ঘন্টা ছাড়িয়ে যেতো। কারন অ্যাডমিশনের পরে দিন সকালবেলা আগের পুরো দিনে ভর্তি হওয়া সব পেশেন্ট দেখে , কোন ঝামেলা হলে সেইটা সামলে, আউটোডোরে চার ঘন্টা বসে ওখানে আসা পেশেন্ট দেখা শেষ করে তারপর ছুটি।
খেয়াল করে দেখলাম, বর্ণবাদ ব্যপারটা পশ্চিমাদের মধ্যে প্রবল, এইরকম একটা ধারণা একচেটিয়াভাবে চালিয়ে দেয়ার একটা প্রবণতা আমাদের বাঙ্গালীদের মধ্যে আছে। স্কটল্যান্ডে এক ব্রেড এন্ড ব্রেকফাস্টে বা অস্ট্রেলিয়ান আউটব্যাকের এক সার্ভিস স্টেশানে কে কি অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছিলো, সেইটা আমরা অনেকেই ফলাও করে বলি।
সিমন এর ফোনটা পাই কালকে সন্ধে সোয়া আটটায়, স্ক্রীনে ওর নাম আর ছবি ভেসে উঠেছিলো, কিন্তু হ্যালো বলার সাথে সাথে অপরিচিত কে যেনো হড়বড় করে বলতে থাকে, এই নাম্বার যার তাকে কি আপনে চিনেন? আপনার কে হয়? বললাম, আমার ভাই হয়। ক্যান কি হইছে? লোকটা জিজ্ঞেস করে- আপন ভাই? বললাম- হ্যা আপন ভাই। কি হইছে বলেন। -
একটা অ্যাম্বুলেন্স নিয়া কারওয়ান বাজার চলে আসেন। তাড়াতাড়ি।
প্রথম দুইটা দিন খুব স্বাভাবিক ছিলাম। বলতে গেলে একটু বেশিই স্বাভাবিক। এতো সব মন খারাপ করা খবরেও পেশাগত কাজে কোন বাধা পড়ে নাই। বাড়তি দায়িত্ব হিসেবে কাজ কিছু করতে হইছে। স্বাভাবিকভাবেই । খুব একটা ঝামেলা হয় নাই। যা করার, যদ্দুর করার, যেইভাবে করার- করার চেষ্টা করেছি। গত কয়টা বছরে আমাকে এইরকমভাবেই ট্রেইন আপ করা হয়েছে। শারীরিক ভাবে, মানসিকভাবেও । একজন প্রফেশনাল হিসেবে এইসব ব্যপারে এখন আর কোন প্রতিক্রিয়া
আজকে আমার মনের মাঝে
ধাঁই ধপাধপ্ তবলা বাজে
আলোয় ঢাকা অন্ধকার
ঘণ্টা বাজে গন্ধে তার
আজকে দাদা যাবার আগে
বলবো যা মোর চিত্তে লাগে
নাই-বা তাহার অর্থ হোক
নাই-বা বুঝুক বেবাক্ লোক