ছুটির দিন সকালবেলা আমি সাধারণত লেখাটেখা নিয়ে ঘুটঘাট করি। মেয়েটাকে নিয়ে সকালে বাজার করেছি, তারপর নাস্তা নিতে থেমেছিলাম পথে। সেই নাস্তা খেতে খেতে মেয়েটা ঘুরঘুর করছে পায়ের কাছে। আমি আধাশোয়া হয়ে মোগল রাজপুত গুঁতাচ্ছি, অনেকদিন লেখা নামানো হয়না। অলস ছুটির দুপুর, পাশে জানালা দিয়ে দেখা যায় এক পরিবার বাড়ি পাল্টাচ্ছে, বিশাল চারকোণা একটা বিছানা দুই তিনজনে মিলে ট্রাকে ওঠাতে ব্যাপক কারিকুরি। ওপরে ছয় তলায় বারান্দায় এই ঠাণ্ডার মধ্যেও হাফপ্যান্ট পরে কফি খাচ্ছে এক দাড়িওলা যুবক। নিচে রিসেপশনের কাছে মোটা রঙচঙে জামা পরে এদিক ওদিক দৌড়াচ্ছে কয়টা ছোট বাচ্চা, পাশে বয়স্ক দুইজন কি কি আলাপ করছে।
এসবের মধ্যে খুটখাট টাইপ করতে করতে তবু মনে পড়ে গেল আইয়ুব বাচ্চু আর নাই।
ক’দিন ধরেই আমার কানের ভেতর ডাকাডাকি করে চলেছে তিনটে পোকা। একটা ঝিঁঝিঁ, একটা এঁটুলি- আরেকটা যে কী ঠিক ধরে উঠতে পারছি না। অন্যদের চেয়ে লাজুক এটি, যখন খুব করে খুঁজি তখন লুকিয়ে পড়ে। খোঁজাখুঁজি থেমে গেলেই ক্ষীণ স্বরে জানান দিয়ে যায় সে আছে। ডাক্তার কাউল নানান রকম যন্ত্রপাতি দিয়ে দেখে জানালেন আমার কানে কোন সমস্যা নেই। আমি কিছুক্ষণ হা করে তাকিয়ে থেকে বললাম,
সম্প্রতি যে প্রসঙ্গটি গণমাধ্যমকে কয়েক সপ্তাহ ধরে আচ্ছন্ন করে রেখেছে, সেটি ইস্তাম্বুলে সৌদি দূতাবাসে সৌদি রাজপুরুষদের হাতে সৌদি সাংবাদিক জামাল খাশোগজির হত্যাকাণ্ড। আমার এ লেখাটি হত্যাকাণ্ড নয়, বরং জামাল খাশোগজির নামটি আমরা গণমাধ্যমে কীভাবে লিখছি, তার লেজ ধরে আরো দু'তিনটি প্রসঙ্গ নিয়ে।
কবিতা কী এইটা বড়ো মুশকিলের প্রশ্ন। এইটার উত্তর হয় ইশকুলের ছাত্রের মতো হয়; নাইলে হয় মাস্টরের মতো। কিন্তু কোনোভাবেই কবির মতো হয় না। আমি বরং কবিতার মইদ্যে কী পাই সেইটা বলি। কবিতার মইদ্যে আমি মূলত দুইটা জিনিস পাই। প্রথমত একটা পরিস্থিতি আর দ্বিতীয়ত সেই পরিস্থিতির অনুভূতি কিংবা প্রতিক্রিয়া। মানে ততক্ষণে মেঘ গর্জাইয়া বৃষ্টি শুরু হইয়া গেছে নাকি সুরঞ্জনা আরেক বেটার দিকে চইলা যাইতাছে সেইটা। তারপর কবি তার অন
১৭ মে। মরগানটাউন।
আজ সকালে বিল-এর মেইল পেলাম। লিখেছে -
হ্যালো,
আমি আনন্দিত যে তুমি এপালাচিয়ান ওয়াইল্ডারনেস এডভেঞ্চারে সাইন আপ করেছ। আশা কারি আমাদের সময়টা বেশ মজায় কাটবে! যেহেতু হাতে এক সপ্তাহ সময় আছে আমাদের কি কি জিনিস সাথে করে নিতে হবে তা লিখে দিচ্ছি। কোন প্রশ্ন থাকলে দয়া করে জানিও। বৃষ্টি হতে পারে, তাই পঞ্চো বা রেইন কোট আনলে ভালো হবে। আর ট্রেইলে ব্যবহৃত জুতো। ইতি -
পিঠের রুকস্যাক ব্যাগের ওজন বেশী না, তবু খাড়া রাস্তা বেয়ে উপরে উঠে আমার হাঁপ ধরে গেল। পাহাড়ের খাঁজে তৈরি হওয়া এই শহরের রাস্তাগুলো সবই এমন উঁচুনিচু, আর ভীষণ কনফিউজিং। এখানে আমি আগেও এসেছি একবার, তবু এবার এসে কিছুই যেন চিনতে পারছি না। অবশ্য সেবার এসে পৌঁছেছিলাম সন্ধ্যার ঠিক আগে আগে। আবার বেরও হয়ে গেছিলাম সূর্য ওঠার বেশ আগেই খানিকটা দূরের অন্য পাহাড়ে সূর্যোদয় দেখতে। সেবার সূর্যোদয় বা শহর কোনটাই দেখা হ
সুতপা’র একটা চিঠি পেয়েছিলাম।
চৈত্রের তারিখটা মনে নেই।
ও লিখেছিল-
“জানিস এপ্রিলের আগে হয়তোবা পরে অথবা মার্চের শেষেই
ওরা মানে পাষন্ডগুলো, কী জানি নি দোষ পেয়েছিল বাবার,
তাঁর বলিষ্ঠ দেহটাকে মেরে খাক করে ফেলেছিল, ফুটন্ত পানিতে ডুবিয়ে রেখেছিল বাবাকে।
উহ কি নির্মম অত্যাচার সহ্য করেছিলেন বাবা!
ওপার থেকে শুনে যখন ছুটে এলাম
তখন তাঁর মৃত, দগ্ধ দেহটাকে মাটি চাপা দিয়ে রেখেছিল কেবা কারা।
সন্ধ্যা প্রায় হয়ে গেছে, রাস্তার পাশের রাধাচূড়া গাছের নীচে শুকনো মুখে দাঁড়িয়ে আছে রাজু। মনে হচ্ছে ঝড় আসবে, বৈশাখ মাসের সন্ধ্যায় আকাশের কোণে এরকম কালো মেঘ দেখলে এর চেয়ে ভাল কিছু চিন্তা করা যায় না। সাথে ছাতাফাতা নেই, সত্যি সত্যি বৃষ্টি চলে আসলে ভিজে চপচপে হয়ে যেতে হবে। আশপাশে গাড়ি ঘোড়া পাওয়া মুশকিল, এই ঝড়বৃষ্টির মধ্যে কুষ্টিয়া শহরে যেতে খবর হয়ে যাবে।
সিয়াটল বিমানবন্দরে নেমেই ব্যাগ উদ্ধারের জন্য ছুটছি ট্রেনের দিকে। আমার পর পর হন্তদন্ত হয়ে উঠলেন এক মা আর তার ১১ থেকে ১৩ বছর বয়সী ছেলে। দেখে বোঝা গেলো ছেলেটার অটিজম আছে। মা ট্রেনে হ্যান্ডেলবারের সাথে ছেলেটার হাত চেপে রাখলেন।
ট্রেন চলা শুরু করতে ছেলেটা ট্রেনের দুলুনির সাথে তাল মিলিয়ে দোলা শুরু করল। মা লজ্জ্বায় কাঁচুমাচু হয়ে ছেলেটাকে থামানোর চেষ্ঠা করতে লাগলেন।
৮। দীর্ঘ যাত্রার শেষপ্রান্তে পৌঁছলাম অবশেষে। এসে গেল আমাদের গন্তব্য। ট্রেন থামলে ধীরেসুস্থে সব গুছিয়ে যখন প্ল্যাটফর্মে নেমে এলাম, তখন চারিদিকে শেষ বিকেলের মায়াবী আলো।