মাহফুজ খান
ধর্মীয় সাম্প্রদায়িকতার সাথে আমার প্রথম পরিচয় ঘটে খুব ছোটবেলা, প্রাইমারী স্কুলে। ৫/৬ বছর বয়সেই শিখে যাই কোন পিঁপড়া হিন্দুদেরকে কাটে আর কোনটা মুসলমানদের। এরপর থেকে কালো পিঁপড়া মারতাম না কিন্তু লাল পিঁপড়া দেখলেই প্রবল বিক্রমে ঝাঁপিয়ে পড়তাম, কারণ ওটা কামড়ায় আর ওটা হিন্দু পিঁপড়া।
দুদশক আগে স্কুলের পরীক্ষায় বহুবার লিখেছি আমাদের গ্রাম নিয়ে। তখন আনকোরা হাতে অনেক কথাই গুছিয়ে লেখা হত না, অথচ স্মৃতির ক্যানভাসে ঝাঁ চকচকে একটা গ্রামের ছবি আঁকা থাকত সবসময়। বছরে একবার অন্তত সে ছবিতে নতুন প্রলেপ দেবার সুযোগ হত গ্রাম থেকে বেড়িয়ে এসে। এখন কলমটাকে হয়ত কিছুটা শক্ত করে ধরতে পারি কিন্তু সেই ঝকঝকে ছবিটা বড় মলিন হয়ে গেছে, সেই জেল্লা আর নেই।
কেমন আছো, প্রিয়তা? সেলফোন, স্কাইপ, ভাইবার... কতকিছু আছে
তবু কথা নেই বহুদিন, নেই আসা কাছে।
বাংলা আধুনিক গানের ইতিহাসে এক উপেক্ষিত ঈশ্বরের নাম জটিলেশ্বর মুখোপাধ্যায়!
দেশের থেকে হাজারটা ক্রোশ দূরে
ঘর বেঁধেছি সুখের আশায়
বিজন অচীনপূরে।
নিত্য শুধু হাওয়ায় পাতি কান,
পূবের হাওয়া আনলো বুঝি আমার মাটির গান।
গান এ তো নয়! কোথায় গানের সুর?
লক্ষ প্রাণের কান্না আসে
পেরিয়ে সমুদ্দুর!
একাত্তরের শকুনরা ফের খুবলে খাচ্ছে দেশ
মারছে মানুষ, বাড়ছে শুধু কষ্ট অনিঃশেষ।
হায় গো আমার মাতৃভূমি
তোমায় দূরে ফেলে
অসহায় ক্ষোভে কাঁদছে দেখ
তোমার মাটির ছেলে।
ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে জন্ম নেয়া পাকিস্তানের মুখে ঝাঁটা মেরে জন্ম নেয়া বাংলাদেশ আজ স্বাধীনতার চার দশক পরেও ধর্মীয় বিষে নীল। শুধু মুসলমান হয়ে না জন্মাবার কারণে বারবার ভিটেশূন্য হচ্ছে হিন্দু ধর্মাবলম্বী মানুষ। কখনো ভোটের দোহাই দিয়ে, কখনো বাবরি মসজিদে হামলার দায়ে, কখনো বা স্রেফ ফেসবুকে কোন ছবিতে ট্যাগ হয়ে যাবার অপরাধে বাড়ি-ঘর, উপসানালয় হারিয়ে ফেলছে তারা, কখনো বা সাধের প্রাণটাও বিদায় নিচ্ছে শরীর থেকে
।।এইম ইন লাইফ।।
জ্ঞান হবার পর থেকেই চিন্তিত হয়ে পড়ি আমরা, 'বড় হয়ে কী হবো?'
জীবনের তেত্রিশ বছর পার হয়ে গেলেও বুঝে উঠতে পারছিলাম না, 'বড় হয়ে কী হবো?'
গত দুইদিনে বুঝে গেলাম, বড় হয়ে আসলে কী হতে চাই!
তেত্রিশ বছরের অভিজ্ঞতায় বুঝলাম, বড় হয়ে আমি সংখ্যাগুরু হতে চাই!
কিন্তু একজন সংখ্যালঘু কী কোথাও গিয়ে কোনভাবে সংখ্যাগুরু হতে পারে?
গত রোজার ঈদের ছুটিতে সকল আত্মীয় স্বজনরা তখন গ্রামের বাড়িতে। আমার অনেকগুলো চাচা থাকায় চাচাত ভাইবোনের সংখ্যাও প্রায় দুই ডজনের মত। তাই ঈদের সময় আমাদের গ্রামের বাড়ি একটা বিয়ে বাড়ির মতই রূপ নেয়। মজা করার সকল আইডিয়াগুলাতেও আমরা বড় ছোট সবাইকে সাথে রাখি। সব বয়সীরাই এক হয়ে যায় আমাদের গ্রামের বাড়ি ঈদগুলোতে। গত ঈদ আগস্ট মাসে হওয়ায় চারদিকে তখন বর্ষার নতুন পানি। এখন এ পানিতে নেমে গোসল করতে ইচ্ছা না করলেও নৌকা ভ্রমন করতে নিশ্চয় কারো কোন সমস্যা নেই। প্রস্তাব করার সাথে সাথে বুড়ো থেকে বাচ্চা সবাই এক কথায় রাজি হয়ে গেল। শুধু বাকি রইল যাত্রা করার!
সা লি শ ।। সা গ র র হ মা ন
আতামিয়ার গাঢ়ের রগ ত্যাড়া। সে রগ ত্যাড়া গাঢ় আরেকটু ত্যাড়া করে বললো, আপনেগো সালিশ আমি মানি না।
মনা হিস্ হিস্ করে বললো, তুই এইসব কি কস্? তোর মরণের সাধ হইছে, নাহ্?
বদলে যাউ, বদলে দাউ!
ছিলো রুমাল, হয়ে গেলো একটা বেড়াল। ছিলেন লালমতি, হয়ে গেলেন হলুদমতি।