গেরিলা

রায়হান আবীর এর ছবি
লিখেছেন রায়হান আবীর (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৮/০৪/২০১১ - ২:৫৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই বিশাল জীব-বৈচিত্র্য দেখে যখন আমরা খোদার কেরামতির উপর ভক্তিতে গদগদ হয়ে যাই, তখন আজাইরা জীববিজ্ঞানীরা আমাদের স্মরণ করিয়ে দেন, বাছা! কুয়ার ব্যাঙের মতো ফাল পাইরো না। একটু শোনো। তারা শোনাতে চান, সাড়ে তিনশ কোটি বছর আগে প্রাণের উৎপত্তির সূচনা থেকে আজ অবধি প্রকৃতিতে উদ্ভব হওয়া ৯০ থেকে ৯৫ ভাগ প্রাণী পরিবেশের সাথে খাপ খাওয়াতে না পেরে বিকাশের সাথে সাথেই বিলুপ্ত হয়ে গেছে। টিকে আছে দশভাগেরও কম। ভিন্ন প্রজাতির কথা বাদ দেই। নির্দিষ্ট একটি প্রজাতির দিকে তাকালেও ঠিক একই ঘটনা আমাদের চোখে পড়ে। আপনার নিকটবর্তী আম গাছে লক্ষাধিক মুকুল থেকে কয়টি আম ধরে? দশভাগ বললে তো বোধ হয় বেশি হয়ে যাবে। খোদা সবকিছুতে সর্বশক্তিমান হলেও সৃষ্টিতে তাঁর হাত কাঁপে। ‘ট্রায়াল অ্যান্ড এরর' এর মাধ্যমে একটি ভালো প্রজাতির উদ্ভব ঘটানোর জন্য তিনি বিনা গ্লানিতে হত্যা করেন অসংখ্য।

আমরা হোমো স্যাপিয়েন্সরাও এই প্রাণীজগতের বাইরের কেউ নই। জিনেটিক গঠনের দিকে তাকালে এক ড্যাফোডিল ফুলের সাথেও আমাদের ৩৩ শতাংশ মিল রয়েছে। কিন্তু তারপরও আমরা সবার থেকে আলাদা। আলাদা, কারণ কতোগুলো আজাইরা মানুষের অক্লান্ত পরিশ্রমের আজাইরা বিজ্ঞান দিয়ে আমরা খুব ধীরে ধীরে প্রকৃতিকে বশ করতে শিখেছি। গুহা থেকে বের হওয়ার পর থেকে সংগ্রামে টিকে থাকার জন্য, বিলুপ্ত না হয়ে যাবার জন্য, আমরা অসংখ্য উপায় বের করেছি। আম গাছের মুকুলের মতো হোমো স্যাপিয়েন্সের দশ শিশুর নয়জনকেই মৃত্যু বরণ করতে হয় না। আমরা খোদার উপর খোদাগিরি করতে পারি।

কিন্তু অহংকারী খোদার তা সহ্য হবে কেন? তিনি তাই সৃষ্টি করেছেন খোদাবাহিনী। এই খোদাবাহিনী কার খোদা শ্রেষ্ঠ, এই প্রমাণে নির্বিচারে হত্যা করে তারই ভাইকে, ধর্ষণ করে তার বোনকে-মাকে। জ্বালিয়ে দেয় তার নিজের গ্রামের মতো অসংখ্য গ্রাম। বিজ্ঞান-প্রযুক্তি সবার জন্যই সমান। আমরা এগুলোর সুফল ভোগ করে প্রচণ্ড গরমে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত ঘরে বসে সুরা পান করি, আমরা হেঁটে সৌদি আরব না যেয়ে প্লেনে চড়ে বসি। কিন্তু আজ অবধি মনের ভেতর আমরা লালন করে চলছি মধ্যযুগীয় এক বিশ্বাস। নিজের খোদা ব্যতীত অন্য খোদার সমর্থকদের জন্য রয়েছে আমাদের অপরিসীম ঘৃণার ভাণ্ডার। হুরবিশিষ্ট বেহেশতের ফুলেল বাগানে নিজেদের রাখলেও, নিজের মতোই দুইটি চোখ, একটি নাক, একটি হৃৎপিণ্ড বিশিষ্ট ভাইকে মনে করি নরকের কীট। এই নরকের কীটদের জন্য আমাদের ভালোবাসার প্রয়োজন নেই। কারণ আমাদের খোদা তাদের ভালোবাসেন নি। তিনিই তাদের অপরিসীম ঘৃণা করেন, আমরা তো কোন ছাতার মাথা। হ্যাঁ! লোকচক্ষুর খাতিরে আমরা তাদের সাথে মিশি, তবে "তাদের থেকে আমি শ্রেষ্ঠ" এই কথা আমরা ভুলে যাই না। আমরা মডারেটরা এই দর্শনে বিশ্বাস করি, যদিও আমরা নিজেদের হাত রঞ্জিত করি না। আমাদের নীরব সমর্থনের উপর দাঁড়িয়ে নিজের ভাইয়ের রক্ত রঞ্জিত হওয়ার কাজ করে আমাদের দলের স্পেশাল ফোর্স। আমরা প্রতিবাদ করি না, করলে আমাদের বুকিং দেওয়া বেহেশতের প্লটটা যে বেদখল হয়ে যেতে পারে।

ছোটবেলায় ভাবতাম, আচ্ছা পৃথিবীর সবচেয়ে সত্য ধর্মের অনুসারী হবার গৌরব অর্জনের জন্য আমি কী করেছি? না! নিজেকে ঠিক এই প্রশ্নটি করতাম না। আমি আসলে আনন্দিত হতাম আপনাদের মতো করেই, আমিও ভাবতাম আমার কোনো মৃত্যু নেই। আমি বেঁচে থাকবো অনন্তকাল। শুধুমাত্র একটি বইয়ের কথা আমার মেনে চলতে হবে। এখন হাসি পায় সে কথা ভাবলে। এখন আমি অস্বস্তিতে ভুগি। তবে এই তীব্র অস্বস্তির মাঝেও এখনও একটি স্বস্তি নিয়ে বেঁচে আছি। এই স্বস্তিটা আমাকে দিয়েছে আমার মুক্তিযুদ্ধ। ভাগ্যিস, মুক্তিযুদ্ধটা হয়েছিলো!
কেন এই স্বস্তি?

বাংলাদেশের আমজনতা পলিটিক্যালি মারাত্মক ইনকারেক্ট। অবশ্য শুধু বাংলাদেশের আমজনতার দোষ দিয়ে লাভ কী? সারাহ প্যালিনকে ভালোবাসা বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশীল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আমজনতার অবস্থাও তো এরকমই। আমাদের মস্তিষ্কটাকে খোলা চোখে দুটো ভাগে ভাগ করা যায়। করটেক্স, লিম্বিক সিস্টেম। লিম্বিক সিস্টেমকে আমরা পুরাতন মস্তিষ্ক হিসেবে ডাকতে পারি। পশু থাকা অবস্থায় উদ্ভব হওয়া মস্তিষ্কের এই অংশটায় রয়েছে আমাদের আবেগ, আমাদের ঘৃণা, ক্ষোভ, অন্ধবিশ্বাস, যেকোনো কিছু বিনা প্রশ্নে মেনে নেওয়ার তাড়না। আর করটেক্স বা নতুন মস্তিষ্কের উদ্ভব অনেক পরে। এটাই আমাদের র্যাকশনাল অংশ, আমাদের যুক্তিবোধ। মানুষের মস্তিষ্কে এই দুটো অংশই একসাথে কাজ করে। তবে পার্থক্যটা হয়ে যায় কে কাকে দমিয়ে রাখতে পারে, এই প্রশ্নে। আমজনতার লিম্বিক সিস্টেম শক্তিশালী, করটেক্স সিদ্ধান্ত তারা উপেক্ষা করে, কখনও জানতেও চায় না এর মতামত। এর বাইরে কিছু শক্তিশালী মানুষ আছেন, যারা এই লিম্বিক সিস্টেমকে পরাহত করতে পারেন যুক্তি দিয়ে। তাই এই মারাত্মক পলিটিক্যালি ইনকারেক্ট আমজনতার মাঝে থাকা এমন কিছু মানুষকে আমি শ্রদ্ধা করি। আমি স্বস্তি পাই, আমাদের মাঝেই রুমীর মতো মানুষ রয়েছেন, রয়েছেন আলতাফ মাহমুদ, রয়েছেন তাজউদ্দীন, রয়েছেন বিলকিস কিংবা জাহানারা ইমামের মতো অসংখ্য মানুষ। তাদের কল্যাণেই পাকিস্তানীদের মতো এক অন্ধবিশ্বাসের ঘোড়ায় সওয়ার হয়ে মধ্যযুগে যাত্রা অন্তত পঞ্চাশ বছরের জন্য পিছিয়েছি আমরা। কিন্তু মাত্র পঞ্চাশ বছর কেন, কেন পুরোটা নয়?

উত্তরের একটা ইঙ্গিত কর্নেল তাহের বলে গিয়েছিলেন। অতি অল্প সময়ের মুক্তিযুদ্ধটা আমাদের ঠিকমতো শুদ্ধ করতে পারে নি। কথাটির সত্যতা আমি জায়গায় জায়গায় উপলব্ধি করি এখন। ব্যাখ্যা করি। কয়েকমাস আগে ক্যাডেট কলেজ ব্লগ থেকে মেজর কামরুল হাসানের সাথে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ে কথা বলতে গিয়েছিলেন আমাদের এক বড় ভাই। যাবার আগে তিনি পোস্ট দিয়ে কামরুল হাসানের জন্য কারও কোনো প্রশ্ন আছে কিনা জানতে চেয়েছিলেন। সেখানে অনেকে অনেক চমৎকার চমৎকার প্রশ্ন করেছিলেন। আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম, মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেওয়া বেশিরভাগ মানুষের কি কোনো কমন ফিলোসফিক্যাল স্ট্যান্ড ছিলো? প্রশ্নটা হয়তো আমি ঠিকমতো বোঝাতে পারি নি, তাই সেটা উত্থাপিত হয় নি কামরুল হাসান স্যারের কাছে। কিন্তু আমি জানি এর উত্তর। আমি অনুভব করি এই প্রশ্নের উত্তর, মুক্তিযুদ্ধের চল্লিশ বছর পর প্রতিটা পদক্ষেপে, প্রতিদিন খবরের কাগজ খুলে।

রুমী কিংবা আলতাফ মাহমুদের মতো কিছু মানুষ ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রব্যবস্থার অসাড়তা বুঝেছিলেন। কিন্তু পথেপ্রান্তরে যুদ্ধ করেছে বাংলার কৃষক, খেটে খাওয়া মানুষেরা। এরা যতোটা না যৌক্তিক চিন্তাভাবনায় মুক্তিযুদ্ধ করেছিলো, বুকে গ্রেনেড আলিঙ্গন করেছিলো, তারচেয়ে বেশি ছিলো আবেগ। নিজের বোনকে ধর্ষিত হতে দেখার তীব্র ক্ষোভ, নিজের ভাইয়ের বাস্তুভিটা জ্বালিয়ে দেবার বিরুদ্ধে কঠোর প্রতিবাদ, নিজের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে দৃঢ় সংকল্প। এই আবেগ আমাদের একটা স্বাধীনতা এনে দিয়েছে সত্যি কিন্তু ধরে রাখতে শেখায় নি। কারণ আমরা জানি না আমরা কী করেছিলাম, মুক্তিযুদ্ধটা আসলে কী ছিলো?

সকল মুসলমান ভাই ভাই, এই বালখিল্য ফালতু কথার অসাড়তা আমরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে টের পেয়েছিলাম। আমরা ধর্মীয় সকল কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে একটি বৃহৎ মুসলমান রাষ্ট্র দ্বিখণ্ডিত করে বের হয়ে এসেছিলাম। আমরা যুদ্ধ করেছিলাম মোল্লাদের বিপক্ষে, আল্লাহর আইন দিয়ে জাস্টিফায়েড করা গনিমতের মাল মেয়েদের ধর্ষণকারীদের বিরুদ্ধে।

কিন্তু সেই গৌরব কি আমরা ধরে রাখতে পেরেছি?

আমরা পারি নি। আমরা আমাদের গতিবেগ শ্লথ করেছিলাম কেবল। হুমায়ুন আজাদ যেমনটা বলেছিলেন, ঠিক তাই হতে যাচ্ছি আমরা। একসময় আমরা ছিলাম মুসলমান, তারপর হলাম বাঙালি মুসলমান, তারপর হলাম বাঙালি। স্বাধীনতার পর বাঙালি থেকে আমরা কয়েক বছরের মধ্যেই নিজের বাঙালি মুসলমানে পরিণত করে ফেলেছি, আমাদের মুসলমান হতে বেশি দেরি নেই, বেশি দেরি নেই পাকিস্তান থেকে বের হয়ে আরেকটি ছোট পাকিস্তান রাষ্ট্র গড়তে। কারণ মুক্তিযুদ্ধের তাৎপর্য আমরা বুঝি নি। আমাদের বাপ- চাচারাও বোঝেন নি।

আর এই প্রক্রিয়ায় গতি আনতে হুমায়ূন আহমেদরা “জোছনা ও জননীর গল্প” লেখেন। সেখানে তারা দেখান একজন মৌলভী সাহেব কীভাবে পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরোধিতা করে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, আজ আমরা মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র “মেহেরজান” তৈরি করি, যেখানে দেখানো হয়, ধর্ষণ নয়, পাকিদের সাথে প্রেম করেছিলো বাঙালি ললনারা। হ্যাঁ! এমনটা ঘটা অস্বাভাবিক নয়। অনেক মৌলভীই মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, হয়তো স্বাধীনতার সময় অনেক মেহেরজানও ছিলো। কিন্তু যে লক্ষ মৌলভী ধর্মের দোহাই দিয়ে আমাদের জবাই করলো, সেই লক্ষ মৌলভীর কথা না বলে এক ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে আলোচনা, উপন্যাস, সিনেমা কেন?

কারণ যাই হোক এতে করে তৈরি হচ্ছে সফট কর্নার। আজ তাই আমরা আমাদের বন্ধুদের বলতে শুনি, মুক্তিযুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ শহীদ হওয়ার কথা ভুল। শহীদ হয়েছিলেন দশ হাজার, এর মাঝে আবার অর্ধেকই বিহারী। আর ধর্ষণ? ধুর এমন কিছু হয়েছিলো নাকি! ওটা তো মুসলমানদের হেয় করার জন্য হিন্দু রাষ্ট্র ভারতের প্রোপাগান্ডা। এর বাইরে আরেকটা অংশ দেখি, যারা জামায়াতে ইসলামীকে গদাম লাথি মারে ফেসবুকে, ব্লগে, কিন্তু অন্তরে ধারণ করে এদেরই চিন্তা-চেতনা। আজ আমরা দিকে দিকে দেখি আমাদের সেই পুরাতন মস্তিষ্কের জয়জয়কার। যে জামায়াতে ইসলামী আমার বাবা-চাচাকে জবাই করে হত্যা করেছিলো, আমরা তাদের ভোট দেই, তাদের গাড়িতে পতাকা তুলি। যে পতাকার রক্তিম অংশটা আমার ভাইয়ের ভেতর থেকে বের হয়েছে। আজ আমাদের সেক্যুলার বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, ধর্মগ্রন্থের মতো আমাদের সংবিধানের সূচনা হয় বিসমিল্লাহির রহমানির রাহিম দিয়ে। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দল আওয়ামী লীগ তাদের ব্যানারে এখন বড় করে লাগায় "আল্লাহ সর্বশক্তিমান", তাদের নেতা আমাদের জানান বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম থাকবে ইসলাম। তারা ফালতু নারী নীতিকে আরও ফালতু করার জন্য কওমি মাদ্রাসার আলেমদের সাথে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করেন। আর বিএনপির কথা কী বলবো?
বাংলাদেশের অর্ধেক মানুষ সজ্ঞানে এই দলকে সমর্থন করে। চারদিকে দেখি কেবল মুর্খামির জয়জয়কার। নিজের ভেতরে হতাশা লুকিয়ে রাখি, পথ খুঁজি মুক্তির।

এই তীব্র হতাশায় একটু আশা দেখালো “গেরিলা”। এই চলচ্চিত্র দিয়ে পরিচালক আমাদের ভুলে যাওয়া কথাকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাইলেন। আমাদের মনে করিয়ে দিতে চাইলেন গোলাম আজম কোনো ইসলামী চিন্তাবিদ নয়, সে খুনী, ধর্ষণকারী। তিনি আমাদের চোখে আঙল দিয়ে দেখিয়ে দিলেন, যে ধর্মের ঝাণ্ডা আজ আমরা গর্ব করে ওড়াই, সেই ধর্ম আমাদের কী করেছিলো। এই দেশ নিয়ে গর্ব করার উপাদান খুব কম। আমি “গেরিলা” দেখে এমন একটা প্রোডাকশন টিমের জন্য গর্বিত হলাম। গর্বিত হলাম আমাদের জাতিগত এই অস্থির সময়ে তারা কিছু করে দেখালেন বলে।

এটা “গেরিলা”-র রিভিউ পোস্ট নয়। তারপরও দুই একটি কথা বলতে চাই। এই সিনেমার প্রতিটা দৃশ্য অত্যন্ত ভেবেচিন্তে বানানো। “মনপুরা” টাইপ অশ্লীলতা বিরোধী কিন্তু অত্যন্ত নিম্নমানের কিছু নয়। শুধুমাত্র সিনেমা হিসেবে দেখলেও “গেরিলা” দশে আট পাবে। অসাধারণ অভিনয় করেছেন জয়া। ফেরদৌস বাদে অন্যান্য কলাকুশলীরাও প্রশংসার দাবীদার। সিনেমায় চোখে পড়ে কেবলমাত্র স্পেশাল ইফেক্টের কাজ। এর জন্য আমি গেরিলা টিমকে দোষ দেবো না, বাংলাদেশে থেকে যতোটুকু করেছেন, ততোটুকুই সই। বোমা মেরে গাড়ি উড়িয়ে দেবার শটটুকু আমাদের আরও “বাস্তবের কাছাকাছি” না দেখলেও চলবে। বুকের মাঝে সেটা আমরা অনুভব করে নিতে পারি। হল থেকে বের হয়ে আমি বেশ কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম সিনেপ্লেক্সের সামনে। আমি দেখেছি অনেক মানুষ চোখ ছলছল করে বের হয়ে আসছেন ভেতর থেকে।

শেষ বয়সে হজ্জ্ব করে মসজিদ বানানোর পথে আগানো বামপন্থী সাংবাদিকরা গেরিলা নিয়ে লিখবেন না, লিখবেন না বিশিষ্ট চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞরা, লিখবেন না মগবাজারি পয়সাখোররা। মনের ভাবনাকে লেখায় ফোটানো ভুলে গেছি গত একবছরের বিরতিতে। কিন্তু নিজের ভেতরের তাড়নায় এই লেখাটা লিখলাম। “গেরিলা” আমাকে বাধ্য করলো। “গেরিলা” নিয়ে লিখতে হবে আমাদের। এর মার্কেটিং করতে হবে, ফেসবুকে এর লিংকও শেয়ার করতে হবে আমাদেরকেই। কারণ “গেরিলা” আমাদের সিনেমা, একান্তই আমাদের।


মন্তব্য

সাফি এর ছবি

দারুন

রায়হান আবীর এর ছবি

হ্যাঁ!- মুভিটা হাসি

নীলকান্ত এর ছবি

হল থেকে বের হয়ে আমি বেশ কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে দাঁড়িয়েছিলাম সিনেপ্লেক্সের সামনে। আমি দেখেছি অনেক মানুষ চোখ ছলছল করে বের হয়ে আসছেন ভেতর থেকে।

আমার অনুভূতিটা ছিল সম্পূর্ণ এরকম।


অলস সময়

রায়হান আবীর এর ছবি

ঠিক- আমাদের সবারই!

অপ্রতিম এর ছবি

"অনেক মৌলভীই মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, হয়তো স্বাধীনতার সময় অনেক মেহেরজানও ছিলো।"

একেবারেই একমত হতে পারলাম না। অনেক মৌলভীই মুক্তিযুদ্ধ করেছেন হয়তো, কিন্তু "মেহেরজান" এর মত ১-২ জন "পাকিদের সাথে প্রেম করা বাঙালি ললনা" তখন সারা দেশে পাওয়া অসম্ভব ছিল। এটা নিয়ে কোন সুস্থ মস্তিষ্কের মানুষের সন্দেহ থাকার কথা না। নিজের মনগড়া একটা কাহিনী নিয়ে যা খুশি তাই টাইপের একটা মুভি বানালেই মানুষ সেটা মেনে নেবে না। এরকম আরো ১০টা মুভি বানাক, মানুষ সবগুলোকেই প্রত্যাখান করবে।

হিমু এর ছবি

কিছু মেহেরজান অবশ্যই ছিলো, নইলে চারপাশে এতো হাফু-দ্দীণূ-গুয়েবাড়ারা এলো কোত্থেকে?

চাচা চৌধুরী এর ছবি

আপনি পারেনও বস! গড়াগড়ি দিয়া হাসি
হাজার হোক পিতৃপ্রেম বলে কথা! কথায় আছে না, blood is thicker than water! এ দেশের জলবায়ুতে যতই হেসে খেলে বেড়াক, পাকি আব্বুদের নিয়ে কিছু বললে রক্ত গরম হবে এটাই তো স্বাভাবিক!

রায়হান আবীর এর ছবি

@ অপ্রতিম, মেহেরজান থাকার কথাটা তীব্র হতাশা নিয়ে বলেছি! সত্যি সত্যি মিন করে না হাসি

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

রায়হান ভাই,
পোষ্টের লিঙ্কটা ফেসবুকে শেয়ার দিলাম।

রায়হান আবীর এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

রকিবুল ইসলাম কমল এর ছবি

অনলাইনে আসার আগে হয়তো ছবিটা দেখার সুযোগ হবে না। কিন্তু আপনার লেখাটা আমি এক নিঃশ্বাসে পড়লাম।

send2rakibul@yahoo.com

নিক- ছাইপাশ

রায়হান আবীর এর ছবি

দ্রুত অনলাইনে আসুক, এই কামনা করি হাসি

হাসিব এর ছবি

কারণ যাই হোক এতে করে তৈরি হচ্ছে সফট কর্নার।

রিকনসিলিসমুস! এইটাই আসল কথা। পাকিরাউ ভালো প্রজেক্টের আওতায় এগুলো হচ্ছে।

হিমু এর ছবি

বাংলার বিপ্লবী সম্বাদিগ, সম্বাদিগতার জগতের অবিসংবাদিত গেরিলা যোদ্ধা, বাংলার চে গুয়েবাড়া ফারুক গুয়েবাড়াদা মেহেরবাল নিয়ে তো বিষ্ঠা ঘেঁটে ফেনা তুলে ফেলেছিলেন। গেরিলা নিয়েও গুয়েবাড়াদা দুয়েকটি গসপেল রচনা করবেন কি না, বোঝা যাচ্ছে না। অবশ্য ইদানীং উনি ঘরোয়া খুচরা ব্যাপারে কিছু বলেন না, লিবিয়া-সিরিয়া-আম্রিকা-আফ্রিকা ছাড়া দেখি কথাই বলেন না, আর কালেভদ্রে ফেসবুকে হাফুদার টয়লেটে হাগুর্দাগ রেখে আসেন। গুয়েবাড়াদাকে ন্যাটোর কনছালট্যান্ট নিয়োগ করার আবেদন জানাই।

রায়হান আবীর এর ছবি

ঠিক, পাকিরাউ ভালু হাসি

দ্রোহী এর ছবি

দুটো ভ্রাতৃপ্রতিম দেশ অতীতের সব বিভেদ ভুলে এক হবার পথে এগুচ্ছে। এমতাবস্থায় এ ধরনের লেখা শুধু ভাইয়ে ভাইয়ে বিভেদ সৃষ্টি করবে। এ মুহুর্তে আমাদের উচিত বিভেদ সৃষ্টিকারীদের শক্ত হাতে দমন করা।

গেরিলা-মেহেরজান ভাই ভাই
হয়রান আবীরের ফাঁসি চাই।

ইয়া হাবিবি!

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

দেঁতো হাসি

রায়হান আবীর এর ছবি

খোমাখাতার কথা আবারও উচ্চারণ করি, হয়রান আবীরের পুটু মেরে দেওয়া হউক! হাসি

রাহিন হায়দার এর ছবি

দুর্দান্ত লিখেছিস।

অতি অল্প সময়ের মুক্তিযুদ্ধটা আমাদের ঠিকমতো শুদ্ধ করতে পারেনি।

খুবই খাঁটি একটি কথা। শুধু বাস্তব দিকটা ভাবলেও, ৯ মাস না হয়ে যদি ৯ বছর হতো যুদ্ধটা, প্রতিটি পরিবারকেই যুদ্ধের ক্ষত বইতে হতো। তখন দেখা যেত পাকিপ্রেম কোন দিক দিয়ে বেরোয়!

রায়হান আবীর এর ছবি

যুদ্ধটা, প্রতিটি পরিবারকেই যুদ্ধের ক্ষত বইতে হতো। তখন দেখা যেত পাকিপ্রেম কোন দিক দিয়ে বেরোয়!

আসল কথা হাসি

রায়হান আবীর এর ছবি

জয়া আসলেই অসাধারন। একদিকে তাকে নিজের অংশে ভালো অভিনয় করতে হয়েছে, অন্যদিকে ফেরদৌসের করা বাজে অভিনয়ের অংশটুকুও কভার করতে হয়েছে হাসি

পুন্নি এর ছবি

আজ দেখে আসলাম।বেশ ভাল লাগল।জয়া আহসান এই মুভির প্রাণ।অসাধারন অভিনয় করেছেন।

মাহবুব রানা এর ছবি

চলুক

রায়হান আবীর এর ছবি

হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

চারপাশে সবাই কেবল ধার্মিক হতে চায়, মানুষ কেউ হইতে চায় না...

দারুণ লিখেছেন...

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

রায়হান আবীর এর ছবি

আপনার মতো বুড়োভামরা যদি আমারে আপনি কইরা সম্বোধন করেন তাইলে হপে? দেঁতো হাসি

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

ঠিক আছে!!! চলুক

রায়হান আবীর এর ছবি

ভাব তো বাড়ায়ে দিলেন খাইছে

নাশতারান এর ছবি

সিনেমা শেষ হওয়ার পরেও বেশ খানিকক্ষণ বসে ছিলাম ওখানেই। নিজেকে ধাতস্থ করতে সময় নিচ্ছিলাম।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

রায়হান আবীর এর ছবি

হুম

ওডিন এর ছবি

..."অতি অল্প সময়ের মুক্তিযুদ্ধটা আমাদের ঠিকমতো শুদ্ধ করতে পারেনি"

আমার ক্যান জানি মনে হয় তাই হইছে, যারা সেইসময় কোন না কোনভাবে এফেকটেড ছিলো তারাই এখনো এইসব বস্তাপচা জিনিস নিয়ে লাফালাফি করে। বাকিরা খুব সুন্দর সবকিছু ভুলে রিকনসিলসিয়েশনের পথে এগুচ্ছে, আমাদেরও তাই করতে হবে। হাসি

রায়হান আবীর এর ছবি

সঠিক!

তাসনীম এর ছবি

চলুক
ছবিটা দেখার অপেক্ষায় আছি।

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

রায়হান আবীর এর ছবি

অপেক্ষার সময়টুকু অল্প হোক এই কামনা হাসি

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

চমৎকার!!! চলুক

রায়হান আবীর এর ছবি

খুশী হয়ে গেলাম হাসি

রায়হান আবীর এর ছবি

অনেক অনেক ভাব বাড়লো হাসি

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সিনেমাটা এখনও দেখা হয়নি
তবু তোমার সব কথারে 'হ' কইলাম

তারাপ কোয়াস এর ছবি

চলুক
দুর্দান্ত!!


love the life you live. live the life you love.

রায়হান আবীর এর ছবি

হাসি

দিগন্ত বাহার() এর ছবি

গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু গুরু

এর চেয়ে বেশি একমত হওয়া যায় না!

রায়হান আবীর এর ছবি

হাসি

হিমাদ্রী জল এর ছবি

চরম........

রায়হান আবীর এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

জাহামজেদ এর ছবি

গেরিলা খুব বড় বাজেটের চলচ্চিত্র না, আবার বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে গেরিলা অনেক বড় বাজেটের সিনেমা। কিন্তু এত বিশাল বাজেট নিয়ে গেরিলা'র মতো মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক এমন একটা সিনেমা বানানোর যে সাহস নাসিরউদ্দিন ইউসুফ দেখিয়েছেন, তা হয়তো এই প্রজন্মের কোনো নির্মাতাও করতেন না। কারণ, আমাদের দেশের সিনেমা শিল্প এখন মুম্বাই'র খানদের মতো এক খানের উপর নির্ভরশীল। একটা সিনেমা যে টাকা দিয়ে নির্মিত হচ্ছে, তার অর্ধেক আবার চলে যায় খান সাহেবের পকেটে। তাই বাংলা সিনেমায় যারা টাকা লগ্নি করেন তারা তাদের লগ্নিকৃত টাকা বিপুল পরিমানের লাভ সহ ফেরত পাওয়ার জন্য বারবার ছুটে যান খান সাহেবের দরবারে। নতুন নির্মাতারা প্রযোজকের অভাবে ভালো সিনেমা বানাতে পারেন না। অন্যদিকে খান সাহেবের লাখের ঘোড়া ছুটতে থাকে... সেটা ত্রিশ পেরিয়ে চল্লিশ পেরোয়, এখন সেটা নাকি পঞ্চাশ লাখ !!! মধ্যবিত্ত খান সাহেব আর তার চারপাশে নায়িকা নামের নাচনেওয়ালি হস্তিনীদের দেখতে চায় না বলে সিনেমা হলেই যায় না। আমাদের দেশের সিনেমা নিম্নবিত্ত শ্রমজীবি মানুষের উপরে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছে। সারাদিন কাজ করে আমাদের দেশের শ্রমজীবি মানুষেরা নিজেকে একটু উচ্চবিত্ত বা মধ্যবিত্তের কাতারে দেখতে চায়। তাই রিকশাওয়ালার প্রেম অথবা বস্তির ছেলে কোটিপতি আমাদের দেশের সিনেমা ইতিহাসে চরম ব্যবসাসফল সিনেমা।

অন্যদিকে সুস্থধারার কিছু নির্মাতা সিনেমা বানিয়ে সিনেমা হলে দেখানোর পরিবর্তে বায়োস্কোপ দেখানোর মতো করে নিজের সিনেমা নিয়ে শহরে নগরে ছুটছেন, নিজের লাভের কথা চিন্তা করছেন, নিম্মবিত্ত শ্রমজীবি মানুষ যারা মূলধারার বাংলা সিনেমার দর্শক তাদেরকে নিজের ছবি দেখার সুযোগ দিচ্ছেন অথবা তাদের রুচি বদলের চেষ্টাও করছেন না। আর্ট ফিল্ম ট্যাগ লাগিয়ে এই শহরের এই মিলনায়তন থেকে ওই মিলনায়তনে গিয়ে সিনেমা প্রদর্শনের নামে নিজের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ভারি করছেন শুধু।

অন্যদিকে নাসিরউদ্দিন ইউসুফ ( আমাদের শ্রদ্ধেয় বাচ্চু ভাই ), যিনি নিজে একজন বীর যোদ্ধা, নিজে একজন গেরিলা- তিনি অনেক সীমাবদ্ধতার মাঝেও সরকারি অনুদানের সামান্য কিছু টাকার ( বলিউডের সিনেমায় এই টাকার থেকে অনেকগুণ বেশি টাকা ফিল্ম কেনার পেছনে খরচ হয় ) সঙ্গে নিজের সাহসকে পুজি করে নিজের পকেট থেকে বিনিয়োগ করলেন বিশাল অংকের টাকা। এজন্য তাকে স্যালুট জানাতেই হয়...

গেরিলা'র স্পেশাল এফেক্ট হয়তো হলিউড বলিউডের যুদ্ধের সিনেমার মতো না, গল্পে কিছু কিছু জায়গায় হয়তো কিছুটা অসঙ্গতিও আছে, কিছু চরিত্র হয়তো অপ্রয়োজনীয়, কিছু চরিত্র হয়তো দর্শকের প্রত্যাশা মেটাতে পারেনি... তারপরও গেরিলা একটা পূর্ণাঙ্গ সিনেমা। কারণেএকাত্তরের একজন গেরিলা নিজের না বলা কথাগুলো ছড়িয়ে দিতে চেয়েছেন এই প্রজন্মের কাছে, সিনেমায় কোনো সংলাপে কিছু না বলেই বুঝিয়ে দিয়েছেন, একাত্তরের জামাতের ভূমিকা কি ছিলো, শান্তি কমিটি আর গোলাম আযম আসলে কি করেছে ?

গেরিলা'র প্রচারণা তেমন একটা হয়তো হয়নি। কারণ, মেহেরজানের মতো গেরিলা'র বাপের টাকা নেই। গেরিলা একটা সিনেমা, একাত্তরকে সেলুলয়েডে ধারণ করা সিনেমা, গেরিলা আমাদের সিনেমা...

গেরিলা'র সাফল্যে নতুন ও তরুণ নির্মাতারা ভালো সিনেমা নির্মাণে সাহস পাবে। তাই গেরিলা'র প্রচারণা আমাদেরকেই করতে হবে...

__________________________________
মরণের পরপারে বড় অন্ধকার
এইসব আলো প্রেম ও নির্জনতার মতো
__________________________________

রায়হান আবীর এর ছবি

(ঘ্যাচাং)

রায়হান আবীর এর ছবি

আপনার চমৎকার মন্তব্য ব্লগটাকে পূর্ণতা দিলো। ধন্যবাদ।

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

পয়েন্ট ১ -

কেউ ঈশ্বরে বিশ্বাস করে, ধর্ম পালন করে আবার কেউ ঈশ্বরকে কোনো ভাবেই বিশ্বাস করেনা, ধর্ম পালন তো দূর কি বাৎ। আমার এই দুই দলের প্রতিই শ্রদ্ধা। আমি মনে করি নাস্তিককে আস্তিকের আক্রমন যেমন মৌলবাদী আচরণ, ঠিক তেমনি আস্তিককে তার ধর্ম পালনের জন্য নাস্তিকের আক্রমনও একরূপ মৌলবাদী আচরণ। তবে এই ব্যাপারটা শুধুই ব্যাক্তি কেন্দ্রিক। অর্থাৎ ধর্ম হলো ব্যাক্তির নিজস্ব ও একান্ত ব্যাক্তিগত মতামত। পরিবার, সমাজ বা রাষ্ট্র এ নিয়ে ব্যাক্তির উপর কখনই কিছু চাপিয়ে দিতে পারে না।
-------------------------------------------------------------------

পয়েন্ট ২ -

ধর্ম বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে কোনো ব্যাক্তিগত, জাতিগত বা রাষ্ট্রীয় হাঙ্গামা-ফ্যাসাদ শুরু হবার পূর্বে দেখা যায় কোনো একটা পয়েন্টে ধর্ম বিশ্বাসীরা ঈশ্বর প্রদত্ত কিছু নিয়ম-কানুনের বুলি আউড়ায়। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ঐ সমস্ত বুলি, যেগুলোকে তারা বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থের আয়াত হিসেবে তুলে ধরে, নেহায়াতই তাদের নিজস্ব হীন উদ্দেশ্যে নিজেদেরই তৈরী অথবা ঐ গ্রন্থের কোনো উক্তির 'ম্যানিপুলেটেড ভার্শন'। আমরা যারা ধর্ম নিয়ে জানি কম, তারা এইসব নীচ কর্ম দেখে বীতশ্রদ্ধ হই শুধু। এবং এই অপকর্মটির প্রাতিষ্ঠানিক রূপ নিয়ে আসে 'মওদু্দি' আর একে নিয়ে বাস্তব ফিল্ডওয়ার্ক করে 'জামায়াতে ইসলামী'। ১৯৭১ ছিলো তাদের ঐ জোশের চরম বহিঃপ্রকাশ।
-------------------------------------------------------------------

পয়েন্ট ৩ -

রাষ্ট্র আমাদের ব্যাক্তি জীবনের এই বিশ্বাস-দ্বন্দ্ব গুলোকে নিয়ে নিরন্তর খেলে যাচ্ছে। তাইতো স্বাধীনতার বছর কয়েক পরেই আমাদের নতুন করে শিখতে হয়েছে যে মুক্তিযুদ্ধের কোনো অংশে কোনো ভাবেই 'ধর্ম' বা এই বিষয়ক কিছু জড়িত ছিলো না। আমরা যেনো আইনত তা মানতে বাধ্য হই তাই 'হাঁটুরে'রা আমাদের সংবিধানকে পবিত্রতা দেয়ার নাম করে 'বিসমিল্লাহ' জুড়ে দিলো। আরেক 'লুল হাঁটুরে' রাষ্ট্রের পুরুষাঙ্গ তৈরী করে এর মুন্ডু কেঁটে রাষ্ট্র ধর্ম 'ইসলাম' ঘোষনা করলো। আমরা পড়ে রইলাম নিজেদের অজ্ঞতার দ্বন্দ্বে। ঠিক এখানেই মওদুদিবাদীদের ফিল্ডওয়ার্ক স্বার্থক। আর এদের বর্ম করে স্বার্থক আমাদের রাষ্ট্রের শাসকরা।
--------------------------------------------------------------------

আমরা এখনো মেনে নেইনা যে, ধর্ম বিশ্বাস একান্তই ব্যাক্তিগত ব্যাপার, এটি কোনো দ্বন্দ্ব বা রেষারেষির জিনিশ নয়। আমরা এখন ভুলেই গেছি, ৭১ শুধু পাকীদের থেকে নিজেদের মুক্তি বুঝে নিয়ে স্বাধীনতা উপভোগ করার যুদ্ধ নয়, সেই সাথে এটি ছিলো আমাদের একটি জাতী হিসেবে নিজেদের পরিচিত করার যুদ্ধ, যেখানে ধর্ম দিয়ে আমাকে বিবেচনা করা হবে না। ঠিক একারণেই আমাদের আরো একটি মুক্তিযুদ্ধ দরকার, যেনো নিজেকে কোনো ধর্মীয় পরিচিতিতে পরিচিত করতে না হয়, আমার সংবিধান যেনো 'রাষ্ট্রের নাগরিক'দের জন্য হয়, আমার রাষ্ট্রের যেনো কোনো ধর্মীয় পরিচয় না থাকে। আমি যেনো আমার বিশ্বাস নিয়ে নিজের মতো করে বাঁচতে পারি, রাষ্ট্র যেনো আমার বিশ্বাসকে নিয়ে ছিনি-মিনি খেলার কৌশলগত কোনো আইন বা বাধ্যবাধকতা তৈরি না করে।
----------------------------------------------------------------------

গেরিলা দেখতে হবে।

খুব সুন্দর করে লেখার জন্য তোমাকে স্যালুট, আবীর।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

ধুসর গোধূলি এর ছবি

রায়হান আবীরের লেখার সাথে এই মন্তব্যটিকেও মন থেকে স্যালুট জানিয়ে গেলাম। চলুক

রায়হান আবীর এর ছবি

হুম! এই লেখা এবং উপরের মন্তব্যটা একসাথে যায় না।

পোয়েট অব এ ডিমাইজ এর ছবি

এই মন্তব্যেও সহমত ও চলুক চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

আস্তিককে তার ধর্ম পালনের জন্য নাস্তিকের আক্রমনও একরূপ মৌলবাদী আচরণ।

ঐ সমস্ত বুলি, যেগুলোকে তারা বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থের আয়াত হিসেবে তুলে ধরে, নেহায়াতই তাদের নিজস্ব হীন উদ্দেশ্যে নিজেদেরই তৈরী অথবা ঐ গ্রন্থের কোনো উক্তির 'ম্যানিপুলেটেড ভার্শন'।

এই দুটো পয়েন্টে দ্বিমত করছি। বিস্তারিত আলোচনা করা যেত, তবে আমার মনে হয় রায়হান ভাইয়ের গেরিলা সংক্রান্ত পোস্টে আলোচনা ধর্মের দিকে ঘুরিয়ে নিয়ে যাওয়াটা অনেকেরই ভালো লাগবে না। কী বলেন?

রায়হান আবীর এর ছবি

আলোচনাটায় ধর্ম অপ্রাসংগিক না। জবাব দিতে একটু দেরি হইলো এই যা!

অপছন্দনীয় এর ছবি

আমি মনে করি নাস্তিককে আস্তিকের আক্রমন যেমন মৌলবাদী আচরণ, ঠিক তেমনি আস্তিককে তার ধর্ম পালনের জন্য নাস্তিকের আক্রমনও একরূপ মৌলবাদী আচরণ।

সহমত। তবে ব্যাপারটা যদি আস্তিক-নাস্তিক পার হয়ে ধার্মিক এবং ধর্মবিরোধীতে চলে যায় সেখানে একটু সমস্যা দেখা দেয়, নিজের সাথে অন্যকেও 'ঠিক রাস্তায়' চালানো যেহেতু ধার্মিকের ধর্মেরই অংশ, সেটাকে সে আক্রমণ হিসেবে না-ও দেখতে পারে, এবং না দেখলেই ঝামেলা শুরু হয়।

ঐ সমস্ত বুলি, যেগুলোকে তারা বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থের আয়াত হিসেবে তুলে ধরে, নেহায়াতই তাদের নিজস্ব হীন উদ্দেশ্যে নিজেদেরই তৈরী অথবা ঐ গ্রন্থের কোনো উক্তির 'ম্যানিপুলেটেড ভার্শন'।

পূর্ণ দ্বিমত। ম্যানিপুলেট করলে তো কথাই নেই, ধর্মের বাণীকে ম্যানিপুলেট না করেও অনেক নোংরামী করা সম্ভব।

বাকি সর্ব অংশে আপনার মন্তব্যে সহমত জানিয়ে গেলাম।

রায়হান আবীর এর ছবি

সুহাস ভাই,

আমি মনে করি নাস্তিককে আস্তিকের আক্রমন যেমন মৌলবাদী আচরণ, ঠিক তেমনি আস্তিককে তার ধর্ম পালনের জন্য নাস্তিকের আক্রমনও একরূপ মৌলবাদী আচরণ।

ভাইয়া কথাটা সঠিক মানতে পারলাম না। মৌলবাদী মানেটাই হলো মূলের কাছাকছি। সুতরাং একজন ধার্মিক যদি মূলের কাছাকাছি না থেকে নিজের মতো করে ধর্মকে সাজিয়ে অমৌলবাদী হয়ে যান তাহলে ধর্মে তার অবস্থান কোথায়। ইসলামের আলোকে তিনি তো কাফের।

নাস্তিকতা প্রসংগে বলি- কেউ যদি ঘরে কিংবা মসজিদে বসে চুপিচুপি স্পিরিচুয়াল ফিলিং এর জন্য নামাজ পড়ে তাতে তো কোনো সমস্যা নাই। আসলে এখানে সমস্যা থাকেওনা। কিন্তু কাহিনি হইলো আস্তিকরা সংখ্যাপরিষ্টতার জোরে তাদের বালছাল সমাজের উপর চাপিয়ে দিতে চাই। সমস্যাটা এখানেই। আমি এখানেই বিরোধীতা করি।

অর্থাৎ ধর্ম হলো ব্যাক্তির নিজস্ব ও একান্ত ব্যাক্তিগত মতামত

কখনই নয়। মানুষ ধর্ম [প্রথাগত ধর্মগুলো] ৯৯ ভাগ সময়ের ব্যক্তিগত সন্ধানে লাভ করেনা। পারিবারিকভাবেই চাপিয়ে দেওয়া হয়। তারপরই তাদের মুখে আমার ধর্ম শ্রেষ্ঠ টাইপ বড় বড় কথার ফুল ফুটে। হিন্দুর ঘরে তো কোনোদিন খ্রিস্টান জন্মাতে দেখিনাই।

দুঃখজনক হলেও সত্য যে, ঐ সমস্ত বুলি, যেগুলোকে তারা বিভিন্ন ধর্ম গ্রন্থের আয়াত হিসেবে তুলে ধরে, নেহায়াতই তাদের নিজস্ব হীন উদ্দেশ্যে নিজেদেরই তৈরী অথবা ঐ গ্রন্থের কোনো উক্তির 'ম্যানিপুলেটেড ভার্শন'।

মানতে পারলাম না। প্রথাগত ধর্মগুলোর উৎপত্তি হাজার বছর আগে। সেই সময়ে বিপক্ষ দলকে জবাই করা জায়েজ ছিলো, মেয়েদের পাথর মেরে মেরে ফেলাটা স্বাভাবিক ছিলো। কিন্তু এখন নেই। আমরা সভ্য হয়ছি। শুধু সভ্য হয়নি ধর্মগ্রন্থগুলো। কারণ আমরা নিজের ব্লগ এডিট করতে পারলেও ঈশ্বরের ক্ষমতা নেই, সামান্য একটা বই এডিট করার। এখানেই সমস্যা। আপনি কী মনে করেন, জামাত কোরানের আয়াত ম্যানিপুলেটেড করছে। তারা কোরয়ানের আয়াত অবিকৃত রেখেই এইসব চালাইছে। যেকোনো ধর্মগ্রন্থ দিয়েই ম্যাসকিলিং জাস্টিফাইড করা যাবে- তারজন্য ম্যানিপুলেশনের দরকার নাই।

আমরা যারা ধর্ম নিয়ে জানি কম, তারা এইসব নীচ কর্ম দেখে বীতশ্রদ্ধ হই শুধু

এতোকিছুর পর ধর্মকে মহিমান্বিত রাখার জন্য এটা একটা প্রটেকশন শিল্ড। আমরা নিজেকে স্বান্তনা দেই, নিশ্চ্যই ধর্মটা ভালো, লোকগুলা খ্রাপ করতেছে। একটু ঘাটলেই দেখা যাবে কতোটা মহিমান্বিত এই ধর্মগুলো।

২ নং পয়েন্টের সাথে একমত।

আমরা এখনো মেনে নেইনা যে, ধর্ম বিশ্বাস একান্তই ব্যাক্তিগত ব্যাপার, এটি কোনো দ্বন্দ্ব বা রেষারেষির জিনিশ নয়।

ফান্ডামেন্টালি ধর্ম একটা রেষারেষির বিষয়। উগ্র জাতীয়তাবাদও তাই। কেনো সেটা সামান্য ব্লগে ব্যাখ্যা করেছি।

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি

চলুক ......

রায়হান আবীর এর ছবি

হাসি

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ভালো লিখেছিস ভাইয়া।

* অনেক চেষ্টা করেও এর বেশী কিছু লিখতে পারলাম না। তবে আমি চেষ্টা করবো অন্তত আমার পরিবারের সবাইকে এই সিনেমাটা দেখাতে!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

রায়হান আবীর এর ছবি

কমেন্টের জন্য অনেক অনেক থ্যাংকু!

রায়হান আবীর এর ছবি

সাথে পেয়ে ভালো লাগলো হাসি

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

লেখাটার পেছনের দর্শনটাকে সালাম জানিয়ে গেলাম, এত সুন্দর এবং বলিষ্ঠভাবে কিছু বলা যায়, আপনার লেখাটা না পড়লে সেটা বোঝাই হত না!

সচল জাহিদ এর ছবি

চমৎকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

রায়হান আবীর এর ছবি

হাসি

মনসুর খান এর ছবি

আপনাকে অভিবাদন|

অমিত এর ছবি

চলুক

পোয়েট অব এ ডিমাইজ এর ছবি

কারণ যাই হোক এতে করে তৈরি হচ্ছে সফট কর্নার।

শেষ বয়সে হজ্জ্ব করে মসজিদ বানানোর পথে আগানো বামপন্থী সাংবাদিকরা গেরিলা নিয়ে লিখবেন না, লিখবেন না বিশিষ্ট চলচ্চিত্র বিশেষজ্ঞরা, লিখবেন না মগবাজারি পয়সাখোররা।.... গেরিলার মার্কেটিং করতে হবে, ফেসবুকে এর লিংকও শেয়ার করতে হবে আমাদেরকেই। কারণ “গেরিলা” আমাদের সিনেমা, একান্তই আমাদের।

সহমত।

লেখাটি পড়ে আমার একটি কবিতা পোস্ট করার ইচ্ছে হচ্ছে খুউব!!!! চলুক চলুক

কবি মৃত্যুময়,

আসিফ আদনান এর ছবি

সবাইকে সালাম
আ্পনার লেখনির প্রশংসা করছি। কিন্তু লেখাটা পছন্দ করতে পারি নাই। আ্মার কাছে মনে হয়েছে আ্পনি অযথা ধর্ম বিষয়ক বিদ্বেষ পোষন করছেন। একটি দেশ, রাষ্ট্র কিংবা লোকালয় রাতারাতি ইসলামী অথাব সেকুলার হয়ে যেতে পারে না। এজন্ন দরকার মাঠ পর্যায়ের পরিশ্রম। ১৫ কোটি লোকের এই জনপদের যদি আক্ষরিক আ্ত্মিক পরিবর্তন চাই, তাহলে এর লোকদের ভালবাসতে পারতে হবে, আবেগের দাম দিতে পারতে হবে। প্রথম থেকেই যদি ইটপাটকেল মারতে থাকি, আজীবন দূরেই থাকব।
আমি মনে করি, আমাদের মুক্তিযুদ্ধ এর সাথে যে কোন ধর্মকে মেলালে দেশের সব ধর্মের প্রতি অরিচার হবে। আশা করি আ্মাদের রুচি ধর্ম বেবসায়ীদের চেয়ে উন্নত যে আ্মরাও ধর্ম নিয়ে বেবসা করব না।

guest_writer এর ছবি

লেখাটার জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ। সচলায়তনে অনেকেই সিনেমাটার বিভিন্ন কারিগরি দিক নিয়ে নানা রকম প্রশ্ন তুলেছেন। আবার দেখেছি বর্তমান প্রজন্মের অনেকেই সিনেমাটির আলোচনা সমালোচনার মাধ্যমে মুক্তিষুদ্ধকালিন সাধারন মানুষের আবেগ ও নিঃস্বার্থ ত্যাগের বিষয়টিকে অনুধাবন করার চেষ্টা করেছেন। কিছুকাল পূর্বে একটি সিনেমা ও বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলতে আসা একটি দলকে নিয়ে এক শ্রেণীর মানুষের অতিরিক্ত বাড়াবাড়ি মনকে বড়ই পীড়া দিয়েছিল। নব প্রজন্ম তাদেরকে সমুচিত জবাবও দিয়েছিলো। আপনারা সিনেমাটিতে বিভৎসতার দৃশ্য দেখেছেন। বাস্তবতা দেখেননি। এই সিনেমাটির সিনেমা হয়ে ওঠার দুর্বলতা থাকতে পারে কিন্তু যারা বাস্তবে এই নৃশংসতার শিকার, তাদের জন্য এটি আবার নতুন করে লড়াইয়ের অনুপ্রেরনা

অদ্রোহ এর ছবি

মূল ভাবনাটা ঠিকঠাক ধরেছেন, এজন্য স্যালুট...

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

কালামিয়া এর ছবি

চলুক
পড়ে খুবই ভাল লাগল।

আয়নামতি1 এর ছবি

'গেরিলা' দেখার অপেক্ষায় থাকলাম। আপনার লেখাটি চমৎকার লাগলো!

guest_writer এর ছবি

হৃদয় নিংড়ানো অসাধারন লেখা।
একটা কথা, আমরা যারা দেশের বাইরে থাকি, তাদের কি 'গেরিলা' ছবিটা দেখার কোন উপায় আছে?

নীল সমুদ্র

স্বাধীন এর ছবি

চলুক

লুৎফর রহমান রিটন এর ছবি

চমৎকার রায়হান আবীর! হাততালি

হয়তো স্বাধীনতার সময় অনেক মেহেরজানও ছিলো।

অ্যাঁ অফ যা

হাবু বেশ বড়সড়,গাবুটা তো পিচ্চি
হেরে গিয়ে হাবু বলে--উৎসাহ দিচ্ছি!

কৌস্তুভ এর ছবি

হয়রানাবীর ফাডালায়েছে। এর শাস্তিস্বরূপ পোস্টলেখককে রিমান্ডে নিয়ে একমাস ধরে দিনে তিনবার মেহেরজান দেখানো হোক।

অপছন্দনীয় এর ছবি

ছবিটা দেখিনি, সুযোগ পেলে দেখতে হবে।

লেখায় চলুক

সুরঞ্জনা এর ছবি

স্যালুটস আবীর। হাততালি
আমাদের জেগে থাকতে হবে।

সদা জাগ্রত
বাংলার
মুক্তিবাহিনী।

হাসি

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আবারো সবাইকে আহ্বান জানাই গেরিলা দেখার জন্য...
আর আপনার লেখাটা নিয়ে কিছু বলার নাই...

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

ফয়সাল এর ছবি

"কিন্তু যে লক্ষ মৌলভী ধর্মের দোহাই দিয়ে আমাদের জবাই করলো, সেই লক্ষ মৌলভীর কথা না বলে এক ক্ষুদ্র অংশ নিয়ে আলোচনা, উপন্যাস, সিনেমা কেন?"

বিশাল বড় বড় ডায়ালগ,,, পড়তে ভালোই লাগে। কিন্তু সংকীর্ণ মনোভাব স্পষ্ট লেখাগুলোতে যত বড় ডায়ালগই থাকুক না কেন লেখা দেখেই বোঝা যায় আর যাই হোক তার কাছ থেকে কিছু শেখার নেই। যারা আজকে রাজনীতির দোহাই দিয়ে খুন, ধর্ষন করে তাদের মত মানুষরাই একাত্তরের হানাদারের দোসর ছিলো। তফাৎ - তারা এখন টুপি পড়ে না, দাড়ি রাখে না। সুবিধাবাদী গোষ্ঠীর রুপ পরিবর্তনের চিত্র পৃথিবীর আদিমতম অভিনয় শিল্পের বাস্তব প্রয়োগ। কিন্তু সেটার উদাহরণ দেখিয়ে কিছু শান্তিপ্রিয় মানুষের বিরুদ্ধে অন্যকে খেপিয়ে তোলার প্রচেষ্টা যারা ভালোভাবে গ্রহন করতে পারে তাদের মানসিকতা নিয়ে আমার প্রশ্ন হয়তো সারাজীবনই থেকে যাবে। নিজে অন‌্যের মনোভাবকে শ্রদ্ধা না করতে পারার ব‌্যাপারটা মনে হয় শিক্ষা থেকেই আসে। আমি মেহেরজান ছবির পক্ষে বলছি না (আমি নিজেই ভালো ছবি বলে মনে করি না) - কিন্তু একাত্তরে পাক দোসররা টুপি, দাড়ি রেখেছিলো বলে (টুপি দাড়ি ছাড়াও তো ছিলো, মোচওয়ালা গুলাও তো ছিলো), ধর্মের দোহাই দিয়ে সুবিধা আদায় করেছিলো বলে, তাদের উদাহরণ দেখিয়ে সব নামাজী মানুষের বিরুদ্ধে মানুষকে খেপানোর প্রচেষ্টা কেন?

Pathok এর ছবি

"যারা আজকে রাজনীতির দোহাই দিয়ে খুন, ধর্ষন করে তাদের মত মানুষরাই একাত্তরের হানাদারের দোসর ছিলো।: ---

এই এক প্যাচাল আর কতদিন?? খুন ধর্ষন সব হারামজাদার আমলেই হয়েছে। কিন্তু এদের সাথে পাক হানাদারদের দোসরদের মিলায়ে ফেললে আপনি চরম অন্ধ, সুবিধাবাদী অথবা মেহেরজানের গর্ভজাত (এর চেয়ে ভদ্র কোন গালি খুজে পাচ্ছিনা।) । আপনার কোন বোন একাত্তরে ধর্ষিত হলে তখন বুঝতেন "অন‌্যের মনোভাবকে শ্রদ্ধা না করতে পারা" এর মত বালের প্যাচাল শুনতে কেমন লাগে।

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

চলুক

রানা মেহের এর ছবি

খুব শক্তিশালী একটা লেখা।
এরকম স্পষ্ট ভাষা শুনলে মনের মধ্যে সাহস আসে।
'আমাদের' এই সিনেমাটা সবাই দেখুক।
মেহেরজানের গোলাপি জামাগুলো পুড়ে ছাই হয়ে যাক

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমাদের মুক্তিযুদ্ধ কোনো পারলৌকিক কল্যান লাভের আশায় কেউ করেনি। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য, উদ্দেশ্য এবং এর থেকে সাধারণ মানুষের চাওয়া সবই ছিল ইহজাগতিক। মুক্তিযোদ্ধাদের অনেকেই নিয়মিত নিজ ধর্মের বিধান অনুযায়ী প্রার্থনা করেছেন এবং যথাসাধ্য অন্যান্য আচারও পালন করেছেন। মুক্তিযোদ্ধাদের সাহ্‌রী না খেয়ে সারাদিন রোজা রেখে কোন প্রকার ইফতার ছাড়া সন্ধ্যায় আল্লাহ্‌র নামে রোজা ভাঙার ইতিহাস এই সচলেই আমরা পড়েছি। ঐসব ধর্মপ্রাণ মুসলিম মুক্তিযোদ্ধারাও পারলৌকিক কল্যানের আশায় (মরলে শহীদ, বাঁচলে গাজী টাইপ) মুক্তিযুদ্ধ করেননি। পক্ষান্তরে পাকিস্তানী হানাদার আর তাদের এদেশীয় দোসররা তাদের কৃত প্রতিটি অন্যায়, প্রতিটি অপকর্মই ইসলামের নামে করেছে। ইসলামের দোহাই দিলেও তারা এদেশ থেকে যে কুলাঙ্গারগুলোকে নিজেদের দলে ভিড়িয়েছিলো তাদেরকে পার্থিব প্রাপ্তির (ক্ষমতা, জমি, বাড়ি, দোকান, টাকা-পয়সা, স্বর্ণালঙ্কার বা নারী) লোভ দেখিয়েই দলে ভিড়িয়েছিলো। আমাদের মুক্তিযুদ্ধের এই ইহজাগতিক চরিত্রটি বুঝতে হবে। তাহলে সেই মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে প্রাপ্ত দেশের রাষ্ট্রকাঠামোতে ধর্মের অবস্থানটি কোথায় হবে সেটিও স্পষ্ট হয়ে যাবে।

চমৎকার বিশ্লেষণের জন্য রায়হান আবীরকে ধন্যবাদ।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

গুরু গুরু

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

নজমুল আলবাব এর ছবি

ভাইরে এইসব লেখার কমেন্ট করার সাধ্যও আমার নাই। লিখতে থাকেন, আরো আরো লেখা চাই।

সাম্য এর ছবি

দেরিতে হলেও চোখে পড়ল এই চমৎকার লেখাটা। লেখায় উত্তম জাঝা!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।