নদী কি পারে- তার গহীন অতলে
জন্মান্তরের যত সঞ্চিত ব্যথা
উপচে দিতে ঢেউয়ের ছলাৎছলে ?
নারী কি পারে- এমনি অবহেলে
মুছে ফেলতে দেহের সন্তাপ
ঐ খরস্রোতা নদীর জলে ?
যদিও পূণ্যার্থী ছিলাম না কখনোই,
তবুও নদীকে নারী ভেবেই গিয়েছিলাম তীর্থস্নানে
ছুতেঁ চেয়েছিলাম জলের শরীর, মৃত্তিকা পলল,
অঞ্জলি পেতে নিতে বেহুলার খোঁপা থেকে খসে পড়া ভাঁটফুল-
হায়- সেখানে ভাঙ্গনের উল্লাস, শোনিতের ধারা ,
বন্ধু সমেত ছোট ভাই জাবেদের ফোন পেয়ে জানতে পারলাম বন্ধু বর তাজুর মা আর নেই। খবরটা শুনেই আমার বুকটা কেন জানি কেঁপে উঠলো। কখন যেনো আমাকেও এ নিষষ্ঠুর খবরটা শুনতে হয়! বাবার কবরেতো মাটি দেয়ার সৌভাগ্য হয়নি। এ যে কত বড়ো যাতনা, যার জীবনে ঘটে গেছে এ মরমন্তুদ নিষঠুরতা সেই কেবল উপলব্দি করতে পারে।
১.
প্রফেসর দরবেশ মন দিয়ে বিস্কুট খাচ্ছিলেন, চায়ে চুবিয়ে। সব কনফারেন্স শেষেই তিনি সংলগ্ন ক্যাফেতে ঢুকে তাদের চা আর বিস্কুটের মান পরখ করেন, তারপর মনে মনে একটা রেটিং দেন। যেসব ক্যাফের চা ভালো, যাদের বিস্কুট চায়ে চুবানোর পর ঠুস করে গলে ভেঙে চায়ে ডুবে আত্মহত্যা করে না, সেসব ক্যাফের সাথে সংশ্লিষ্ট কনফারেন্স এবং আয়োজকদের প্রতি তিনি প্রসন্ন থাকেন। যেসব কনফারেন্সে গিয়ে সাথের ক্যাফেতে, বলাই বাহুল্য, সুবাসিত চা এবং বলিষ্ঠ বিস্কুট মেলে না, সেসব কনফারেন্সকে তিনি তুচ্ছজ্ঞান করেন। বিজ্ঞান কোনো না কোনোভাবে এগিয়ে চলবেই, কিন্তু দুবলা বিস্কুট সরবরাহকারী ক্যাফে মানবজাতিকে সবসময় পেছনদিকে টেনে নিয়ে যায়।
চায়ে চুবিয়ে বিস্কুট খাওয়ার কাজটাকে কিছুটা ঐকান্তিক মনে করেন প্রফেসর দরবেশ, অনেকটা প্রেমিকার সাথে ফিসফিস আলাপের মতোই। এ সময়ে কেউ কাছে এসে দাঁড়িয়ে থাকলে দুটো কাজেই ব্যাঘাত ঘটে।
"ডক্টর দরবেশ?" একটা পিলে কাঁপানো ভারি কণ্ঠস্বর মেঝের ছয়ফুট ওপর থেকে হেঁকে ওঠে।
ঝানু তাত্ত্বিকেরা বলে মৃত্যুইচ্ছা নাকি মানুষের সহজাত স্বভাব আর তাইতেই সকলের নাকি খালি খালি মরে যেতে ইচ্ছে করে। কথাটা এমনিতে নেহাত মন্দ নয়। আমাদের জীবনে আমরা কথায় কথায় অসংখ্যবার মরে যেতে চাই। কিন্তু সত্যি করে মৃত্যুর সামনে পড়লে বোঝা যায় এইসব কথা বার্তা কি বিশ্রি রকমের ছেঁদো। অনেক বছর আগে একবার ছোট্ট এক কাঠের নৌকায় করে সেন্ট মার্টিন থেকে ফেরার সময় সমুদ্রঝড়ের কবলে পড়ে বুঝেছিলাম মৃত্যুভয় কি
“মানুষ কীভাবে এই শহরে যেত যিকালী?”
“আমার মনে হয় সমুদ্র পথে, মাকুমাজন। তবে আমার ধারনা তোমার ঐ পথে না যাওয়াই ভালো। সমুদ্র পাঁড়ের জলাপথ এখন পার করা অসম্ভব। তোমার পায়ে হেঁটে যাওয়াই তোমার পক্ষে নিরাপদ”
“যিকালী তুমি কেন আমাকে এই অভিযানে পাঠাতে চাও? আমি জানি তুমি উদ্দেশ্য ছাড়া কিছু কর না।”
এই বিষয়টি নিয়ে আমার বরাবরই খুব আগ্রহ ছিল। ব্যক্তিগতভাবে আমার মাথায় সারাক্ষণই এ নিয়ে যুদ্ধ চলতে থাকে, বেশ স্ট্রাগল করি, হয়তো তাই। সেদিন ড্যানিয়েল গিলবার্ট উপস্থাপিত পিবিএস ডকুমেন্টারি 'দিস ইমোশনাল লাইফ'-এ এ নিয়ে খুব ভাল একটা আলোচনা দেখলাম। তখনই ইচ্ছা করছিল এ নিয়ে লেখতে, কিন্তু নানা কারণেই লেখা হয়নি।
সবুজ বৃত্তের মমতা ছেড়ে ভিনদেশের পথে
পা বাড়ানোর ইচ্ছে কোনদিনই ছিলোনা আমার
স্বজনদের মায়াবী সুতোর গিঁট,
সবুজ রংমালের দোলা
সব আজ মুল্যহীন।
খুব বেশী আখাংক্ষা ছিলোনা আমার, পাখী্র মতো
মাটির গন্ধ চেয়েছিলাম
দিতে পারেনি স্বাধীন এ স্বদেশ।
যে দেশ তার সন্তান্দের পঙ্গু বানায়, সে ভূখণ্ড
কতোটুকু স্বাধীনতার স্বাদ ভোগ করে?
সাজেদুল চৌধুরী রুবেল
কি করে লুকোই বলো তোমার দস্যুতা―
বিবশ স্তনের চুড়ো
শিহরণে থরো থরো
কি ভীষণ ভয় হয়,
যদি বলে দেয় সব?
প্রাইমারী স্কুলের গণ্ডি পেরিয়ে হাইস্কুলে সবে পা দিয়েছি। যুগের হাওয়া আর ডিশ এন্টেনার কল্যাণে ইংরেজি গানের জগতে আমাদের ভীরু পায়ে অনুপ্রবেশ, শিক্ষক আর অভিভাবকদের রক্তচক্ষু এড়িয়ে সেই তীব্র আকর্ষণময় জগতে সময়ক্ষেপণ বেড়ে চলত সর্বদাই। বন্ধুদের আড্ডায় মাইকেল জ্যাকসন, ফিল কলিন্স, জন বনজোভি, রিচার্ড মার্ক্স, বব মার্লে, জন ডেনভার, জর্জ মাইকেল, লিওনেল রিচি, ব্রায়ান অ্যাডামস, বিটলসদের নিয়ে ঘণ্টার পর
আমার মনে হয়, আমরা প্রত্যেকেই এমন একজনকে ভালবাসি - যে কি না, আসলে এই পৃথিবীতেই থাকে না। আমাদের মনের মধ্যে ওরা কোথাও থাকে। বাইরের পৃথিবীতে ওদের ছায়া পড়ে। সেই ছায়ার আদল কারো মুখে খেলে গেলে আমরা তাদের প্রেমে পড়ি।