ঝটিকা সফরের গোপন তদন্ত রিপোর্ট - ২

কৌস্তুভ এর ছবি
লিখেছেন কৌস্তুভ (তারিখ: শনি, ২১/০১/২০১২ - ১১:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আনিসভাই যেমন সচলাড্ডায় জমিয়ে শরৎচন্দ্র পণ্ডিত ওরফে দাদাঠাকুরের গল্প শোনাচ্ছিলেন, তেমনই আমারও ওনার একটা দারুণ রসিকতা মনে পড়ে গেল। একদিন দাদাঠাকুর বলছেন কাজী নজরুল ইসলামকে, “বুঝলি, হিন্দুদের দেবতা খোদার খোদা।” কাজীসাহেব তড়িঘড়ি বললেন, “দাদা, আমার কাছে বলেছেন সে ঠিক আছে, কিন্তু আপনি অন্য কোনো মুসলিমের কাছে এ কথা কইতে যাবেন না যেন!”
দাদাঠাকুর হেসে বললেন, “আরে, তুই এমন রসিক লেখক হয়ে এটা বুঝলিনে?
হিন্দুদের দেবতা কে, বল? মা গঙ্গা। তা সেই গঙ্গোত্রী থেকে বঙ্গোপসাগর, এই হাজার হাজার কিলোমিটার লম্বা খাল খোদা মানে খনন করা কি মানুষের সাধ্য? এ কেবল ভগবানের পক্ষেই সম্ভব। তাই তো বললাম, সে জিনিস খোদার খোদা।”

গল্পগুচ্ছ ১

এই জোক’টা মনে পড়ার কারণ যা, সেটাই বরং কুইজ হিসাবে জিজ্ঞেস করা যাক – কলকাতার সবচে’ বড় মসজিদটার নাম কী? আর তার ভাই, ঢাকার সবচেয়ে বড় মসজিদ, হচ্ছে শুনলুম বায়তুল মুকাররম মসজিদ, যেটার ঠিক উল্টোদিকের হোটেলটায় পাণ্ডবদা নিয়ে গিয়ে তুললেন আমার মত মানুষকে। কঠিন আয়রনি!

হোটেলটা কিন্তু ভালই, একজন গরীব গ্র্যাডস্টুডেন্টের পক্ষে। পাণ্ডবদা একেবারে বাসস্টপ থেকে হাইজ্যাক করে তুলে সেখানে পৌঁছে দিয়ে আবার অপিক্ষা করি করি আমাদের খেতি নিয়ে গেলেন রাজ্জাকে, সেখানে বিরিয়ানি-ঝালফ্রাই নানাবিধ সুব্যঞ্জন দিয়ে আপ্যায়িত করলেন। ওইদিনের আরেক মুরুব্বি তন্ময়দাও হোটেলে চলে এসে তার গাড়ি করে আমাদের রমনা কালীবাড়ি শহীদ মিনার ইত্যাদি দেখিয়ে ফেলল। বাবা সেই একাত্তরে যুদ্ধ শেষের মাস ৩-৪ পরেই পিরোজপুর ঘুরে গেছিল তার বাবার সাথে, যদিও তার আগেও এসেছে আবার পরেও কিন্তু ওই স্মৃতিটাই সবচেয়ে গরম আছে দেখলাম, খালি বলে “ও, সে এক সময় ছিল বটে!” ঢাকা কখনও আসেনি – সে সময় তো পিরোজপুর যেতেও ভয় ছিল, কোথায় তখনও উটকোছুটকো রাজাকারের দল ঘুরে বেড়াচ্ছে, হিন্দু দেখলেই ছওয়াব কামাই করে নেবে। বাবা দেখলাম সেই রাত্রেই একেবারে শিশুর মত উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েছে (বুড়ো মানুষের যা হয় আরকি – আমাকে তো বেনাপোল পেরিয়ে যশোর রোড ধরে আসার সময়েই ওই প্রাচীন বিশাল গাছগুলোকে দেখিয়ে বলে চলেছে, ‘দেখ এই গাছটার গুঁড়ি, সেই একাত্তরেই দেখেছিলাম শেল’এর দাগ, এখনো রয়েছে’, ‘ওই নাভারন, এখানে পাক আর্মি দারুণ মার খেয়েছিল’, ...), পাণ্ডবদা তন্ময়দাদের কেবল জেরা করেই চলেছে এটা কী ওটা কবে ইত্যাদি ইত্যাদি। পাণ্ডবদাও বুজুর্গ মানুষ, খুব যত্নের সঙ্গে অনেক ইতিহাস চিনিয়ে চলেছেন।

খাদ্যস্থানেই আলাপ হয়েছিল আরো দুজনের সাথে – বৃকোদরসম ক্ষুধা নিয়ে আসা সিমনভাই আর ভরাপেটে আসা কৌশিকদা। তবে তাঁরা এলাম খেলাম চলে গেলাম এর বেশি কোনো কর্মসূচী না নেওয়ায় বেশি ভাবসাব হয় নি। তাও শুনলাম আমার দৈব নেহাতই ভালো যে ঢাকায় নামামাত্রই কৌশিকদার দর্শন পেয়েছি।

***********************************

রাত্রে হোটেলে ফিরে শুনলাম বাবা এদের সবার আন্তরিকতায় ভারি মুগ্ধ। আমি বললাম, পিকচার আভি বাকি হ্যায় মেরে দোস্ত, এ আর কজন’কে দেখেছ? কাল সকালেই টো-টো’র জন্য মস্ত পল্টন আসবে, এক দিদি সেই দূ---র রাজশাহী থেকে ট্রেন পাকড়ে আসছে কেবল আমার সাথেই মোলাকাত করার জন্য। এই অগুন্তি নেটতুতো দাদা-দিদিদের আদরযত্ন দেখবে পিরোজপুরের পরিবারের আদরযত্নর চেয়ে কিছুই কম না।

আরো বললাম, যে এই মানুষগুলো খুবই লিবারেল, কে হিন্দু কে মুসলিম সেটা তুমি ধরতেও পারবে না দেখে, দিব্যি সবাই মিলেমিশে আছে। অনেকে তো আবার আমার মতনই পাষণ্ড নাস্তিক, তবে বাংলাদেশে বসে প্রকাশ্যে আমার মত ‘জঙ্গি নাস্তিক’ হওয়াটা মুশকিল বলেই শুনেছি। (বাংলাদেশে ধর্মীয় (ইসলামী) আবহাওয়াটা যে বেশি সেটা একটু ঘুরলেই বোঝা যায়, বাসে করা এতটা ঘোরাঘুরির সময় অজস্র দেখেছি ‘ওরছ্‌ পাক্‌-এ-শাহ্‌ চন্দ্রপুরী’ ইত্যাদি ইত্যাদি পীরবাবাদের পোস্টার, আর অগুন্তি পলিটিকাল পোস্টার, অ্যাব্বড় চকচকে ভিনাইল করা। কলকাতায় তুলনায় ধর্মীয় পোস্টার অনেক কম, কিছু স্মিতহাস্য ক্রোড়পতি উত্তরভারতীয় বাবা’দের ছবি আজকাল কিছু কিছু জায়গায় দেখা যাচ্ছে ক্রমবর্ধমান মাড়োয়ারি-গুজরাটি সোসাইটিগুলোর কল্যাণে।)

তন্ময়দাও সেদিন রাত্রে হোটেলে পৌঁছে বিদায় নেবার সময় কিছুটা শুনিয়ে গেল একাত্তরের সময়কার তাদের পরিবারের কথা। আমাদের গ্রামে একাত্তরে রাজাকাররা তেমন কিছু করে উঠতে পারেনি বলেই জানি, যদিও তাদের দলবদ্ধ হানা দেওয়ার কাহিনী ছোটবেলা থেকেই অনেক শুনেছি। পিরোজপুরের বলেশ্বর নদীতে বেড়াবার সময় আমাদের নৌকার যে মাঝি ছিল সে হিন্দু, তার কাছে শুনলাম, এখন এই পেশায় সেখানে হিন্দু খুবই বিরল; আর তার মতে খুনজখম-লুটতরাজ-ধর্ষণ এসবে ওই অঞ্চলে একাত্তরকে বহুগুণে ছাপিয়ে গেছিল সাম্প্রতিক সময়ে বিএনপি-জামাতের কাজকর্ম। ওই রিক্সাওয়ালা রপিকুলও পরিস্থিতি বুঝে সে সময়েই মুসলমান হয়ে যায়।

***********************************

আমরা পিরোজপুরে থাকার সময়েই হিল্লোলদা’র ফোনে জানতে পারলাম যে তন্ময়দা আমার বাংলাদেশের নাম্বারটা প্রকাশ্যে ফাঁস করে দিয়েছে। কিন্তু তাতে কোনো লাভ হল না – কোনো খুবসুরৎ হাসিনাই ফোন করে আমার সঙ্গে বার্তালাপ করে নাই – কেবল একজন বাদে, কিন্তু সেটা একটা দিদি। নাম্বার ফাঁস হয়ে যাওয়ার একটা বড় সমস্যা, ছেলে-মেয়ে যে-ই ফোন করে সেই পরিচয় গুপ্ত রেখে গ্রিল করা শুরু করে, ‘বলো তো আমি কে?’ তেমনই একজন ভারি মিষ্টি কিন্তু কর্পোরেটদের মত রাশভারী গলার ম্যাডাম ফোন করে যখন জেরা করা শুরু করলে, আমি প্রথমে ভাবলাম এটা আশালতা ঠাম্মি, কারণ আমি মহিলাদের মধ্যে কেবল ওনাকেই আমার নাম্বার দিয়েছিলাম। কিন্তু এমন ইয়ুথফুল লাইভলি গলা কি আর বুড়ি মানুষের হয়, তাই প্রথমে ভাবলাম এটা যাযাবড়দি, অদ্দূর থেকে আসতে পারছে না তাই ফোনেই দায়িত্ব সেরে নিচ্ছে। কিন্তু ওপার যখন ‘বড়দি’ ট্যাগটাই চিনতে পারল না, সেটা শুনে তেলেবেগুনে জ্বলে ওঠা তো দূরের কথা, তখন হুমকিধমকির পরিমাণ থেকে নিশ্চিত হয়ে নিলাম এটা ছোড়দি মানে দুষ্টবালিকা, যে কিনা আমি ঢাকা আসা মাত্রই রামবাবাদের মত আমার মুণ্ডুটা কেটে ছোট করে ফেলবে ইত্যাদি অনেক ঘোষণা দিয়েছিল। তবে যত গর্জে তত বর্ষে না থিওরেম থেকে যেমন ভাবা গেছিল ঠিক তাই – দিদিটা আসলে খুবই নরম। বরং দুষ্টতমা বালিকা আজকাল হচ্ছে সুরঞ্জনা, কিন্তু তার কথা অনেক পরে।

***********************************

গল্পগুচ্ছ ২

পরের দিন সকালে আমাদের হোটেল থেকে অপহরণ করতে গাড়িসমেত চলে এলেন সিমনভাই (সিমন আর শাকিলভাই আমাদের ওইদিনের ঘোরাঘুরির দুই মুরুব্বি। যা বুঝলাম, ঢাকার বুজুর্গেরা দিন-মত আমাদের জন্য মুরুব্বি ঠিক করে দিয়েছেন – প্রথমদিন পাণ্ডবদা আর তন্ময়দা, আর শেষদিন নৈষাদদা।) হে পাঠক, যদি কাউকে প্রথম ঝলক দেখেই আপনার মনে হয়, কেবলমাত্র স্যান্ডোগেঞ্জির বিজ্ঞাপন-প্রুষ হবার জন্যই ইঁহার এ ধরাধামে আগমন, তবে নিশ্চিত হতে পারেন যে সেইটাই শাহেনশাহ সিমন ওরফে স্বামীউল ভাই।

সেই মহা-পুরুষ আমাদের প্রথমে নিয়ে গেলেন তিন শহীদের চমৎকার জিয়োমেট্রি’র (সোনার কেল্লা স্মরণীয়) স্মৃতিসৌধে। (আমি কোথাও একটা মন্তব্যে বলেছিলাম, ধর্মভিত্তিক দাঙ্গার জন্য যে ধিক্কারটা পাওয়া উচিত কিন্তু আসলে প্রশংসা পায় নরেন্দ্র মোদী, তার সঙ্গে আমি সোহরাওয়ার্দী’র বেশ মিল খুঁজে পাই; তবে সে প্রসঙ্গ এখানে থাক।) সেখান থেকে ঢাকা ইউনিভার্সিটি হয়ে বেরোবার সময় এলো ছোট অর্থাৎ অবিবাহিত স্বামীউল (অনীক) এবং শাকিলভাই। তিনি নাকি পুরানো ঢাকার আদিবাসী এবং পুরানো ঢাকার বিষয়ে এক্সপার্ট, কেবল আমাদের জন্যই বাসাভর্তি আত্মীয়স্বজনকে ভুজুংভাজুং দিয়ে খানিকটা সময় বার করে ছুটে এসেছেন। তিনি এসেই তাঁর সুনামের প্রতি সুবিচার করতে আমাদের নিয়ে গেলেন বাংলা অ্যাকাডেমির পেছনে লুকোনো একটা প্রাচীন গেট দেখাতে, যেটার খোঁজ প্রায় কেউই রাখে না।

অনন্তর পরোটা-ডিমভাজি দ্বারা নাস্তা করার সময় এলো বুনোদি, এবং সুহান ও শচীদেবী, থুড়ি, শুচিদেবী। পথে যেতে যেতে খেলাম সদ্যসেঁকা উমদা ঢাকাই বাকরখানি, যার গল্পও ছোটবেলা থেকে শুনে আসছি। হোসেনি দালান দেখলাম, অনেক কিছু দেখতে হবে এই তাড়াহুড়োয় খুব বেশি সময় দিলাম না কোনোখানেই, তাই কায়দা করে ছবিটবিও তোলা হল না আমার নতুন কামান দিয়ে। সিমনভাই দেখলাম নিজের ক্যামেরায় শাকিলভাইকে দিয়ে, অথবা স্বামীলুলের ক্যামেরার ইস্পেশাল ৮৫মিমি পোর্ট্রেট লেন্সে, নিজের ছবি তোলাতে খুব ব্যস্ত, আর নয়ত সময় পেলেই শচীদেবীকে কায়দামত দাঁড় করিয়ে ফটাস ফটাস কীসব ছবি তুলছেন। আরো জানা গেল, নাইট ডিউটি ইত্যাদি ধুনফুন দিয়ে তিনি আজ মিতু বৌদি’কে আনেন নাই। তাই বলি...

***********************************

আমরা এর পর গেলাম লালবাগ কেল্লায়, যেখান থেকেই অফ-ফর্ম ব্যাটসম্যানের মত আমাদের টাইমিংয়ের গণ্ডগোল শুরু। গিয়ে দেখি সেটা তক্ষুণি তক্ষুণি বন্ধ হয়ে গেছে, যদিও ভেতরে কিছু লোক আছে, আর একদল জাপানি পুরুষ ও রমণী (তাদের দেখেই ক্যাম্রাম্যান স্বামীলুল... নাহ থাক) কেবল ঢুকতে পেল। তাই দেখে সিমন আর শাকিলভাই বিশেষ পরামর্শ করে গেটম্যানের কাছে দিয়ে করুণ দরবার করলেন, ‘আমাদের সাথে বিদেশী আছে, তাদের একটু ঢুকতে দেওয়া হোক’। তাতে কাজ হল, কিন্তু গ্যাঁড়াটা এই যে সাধারণ টিকিটের চেয়ে বৈদেশী টিকিট দশগুণ। যাহোক, ঢুকলাম, ফোনে জানা গেল যাযাদি আসছে তার ভাইকে নিয়ে তাই দুটো টিকিট বেশি কেটে রাখা হল। ভেতরে ঢোকার একটু পরেই দেখা গেল শাকিলভাই বাবাকে নিয়ে কী সব ইতিহাস বোঝাতে বোঝাতে হাওয়া, সিমনভাই তাঁর মডেলকে নিয়ে ছবি তুলতে কোথায় যেন চলে গেলেন, আর সুহান আর বুনোদিও কোন্দিকে যেন ভোঁভাঁ হয়ে গেল। ক্যাম্রাম্যান অনীক এদের কাউকে ফলো করছিল কিনা বলতে পারি না, আমি নিজের মত ঘুরে ঘুরে ছবি তুলতে লাগলাম।

এর মধ্যে যাযাদি এল, তাদের আনতে বুনোদি গেল, কিন্তু দেখলাম সে নিজেও লৌহকপাটের বাইরে বন্দিনী হয়ে পড়ল, বরং শুনলাম গোটা দুর্গের মধ্যে আমরা একা, আমাদের ধরে নিয়ে যেতে পুলিশ পাঠানো হচ্ছে। ইয়ে বাঁচিয়ে কেটে পড়লাম।

***********************************

বাইরে এসে আরো পেলুম দুবা (টীকা: দুষ্টবালিকা = সায়কা = দিশা), সৌরভ (অন্যকেউ) আর নৈষাদদাকে। গেলাম খান মহম্মদ মির্ধা’র পুরোনো মসজিদ দেখতে। তখন নামাজের সময়, আমরা কজন ভেতরে ঢুকলেও তেমন ঘুরতে পারলাম না, আর মহিলারা সেকেন্ড’ক্লাস সিটিজেন কিনা তাই তাঁদের বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হল। বাবার ইসলাম সম্পর্কে ধারণা কম, একে-ওকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, ওদের ঢুকতে দেওয়া হবে না কেন। জানি না, ঈমানী জোশে-বিশ্বাসে বলীয়ান যাঁরা তাঁদের কিছু মনে হয় কিনা, একজন মানুষ বা একজন পুরুষ হিসাবে আমাদের তো লজ্জাই লাগে হিন্দু-বৌদ্ধ সব ধর্মেই মা-বোনেদের প্রতি এমন ‘সম্মান’ বিছিয়ে রাখা দেখতে।

যাযাদির প্রস্তাব হল, কোথাও গিয়ে একটু বসা যাক, আমার জন্য আনা উপঢৌকনগুলি সেখানে হস্তান্তর করেই সে সটকে পড়বে বাড়ি ফেরার ট্রেন ধরার জন্য। শাকিলভাই বিদায় নিলেন, আমরা রয়্যালে গিয়ে বসলাম তাদের ইস্পেশাল পেস্তা-বাদাম শরবৎ খাওয়ার জন্য।

***********************************

গল্পগুচ্ছ ৩

কে যেন বলেছিলেন, একদাগ চকলেট খাওয়া একখানা চুমু খাওয়ার চেয়ে শরীর-মনের পক্ষে বেশি উপকারী। তাই-ই হবে, কারণ চকলেট আর চুমুর মধ্যে অনেক মিল পাওয়া যায় – উভয়েই পরিতোষবর্ধক, উৎফুল্লতাবৃদ্ধিকারক, সুমিষ্ট, স্নেহপরিপূর্ণ, আর মোদ্দা কথা, দুটোই আমরা ‘খেতে’ ভালোবাসি, অর্থাৎ কিনা উত্তমরূপে খেতে গেলেই অধর রসসিক্ত হয়ে ওঠে (তেমনই শুনিয়াছি)। তফাত এই, যে উভয়ের প্রতিই আমাদের লালাসা থাকলেও, চুমু খেতে গেলেই দেওয়াও আবশ্যক, কিন্তু চকলেট সবাই খায় কেবলই কিন্তু দিতে চায় না।

রুশতুতো ভাইবোনের যে অনুপম চিত্রখানি বুনোদি এঁকে দিয়েছিলেন, তার পুরষ্কার হিসাবে (যেহেতু আমি ভালোছেলে, কেবল (U) বিষয় নিয়েই থাকি, অতএব) একবাক্স সুইস চকলেট এনেছিলাম। দারুণ উত্তেজনার সাথে লাল বোম্বেটের গুপ্তধন উদ্ঘাটনের মত তার মোড়ক উন্মোচন হল, সবাই বাক্স থেকে দুহাতে মুঠো মুঠো ছিনিয়ে নিলে, আমি নিজেই কোনো ভাগ পেলুম না, আর ‘অনেক তো আছে, কিছু কালকের সচলাড্ডার জন্যও রেখে দেওয়া হোক’ এই অনুরোধও কারো চিত্ত বিগলিত করতে পারল না। মেঘলা দুপুরের ঢিমেতালা মেজাজে এই ‘অর্গানাইজড ক্যাওস’-মণ্ডিত লুটপাটের মধ্যে বেশ একটা ফিল-গুড পরিবেশ বিরাজ করছে, হঠাৎ যাযাবড়দি –
‘দিব্যি ছিলেন খোসমেজাজে চেয়ারখানি চেপে,
একলা বসে ঝিমঝিমিয়ে হটাৎ গেলেন ক্ষেপে!
আঁৎকে উঠে হাত পা ছুঁড়ে চোখটি করে গোল
হঠাৎ বলেন, “গেলুম গেলুম, আমায় ধরে তোল”!’

সবাই বদ্যি পুলিশ ডাকার কথাও ভুলে গিয়ে এহেন দুর্দৈবের কারণ বুঝতে ব্যস্ত, এমন সময় অ্যাঃ থুঃ অ্যাঃ থুঃ করে সদ্য চাটা চকলেটখানি ফেলে দিয়ে মোড়কখানি গম্ভীরভাবে নিরীক্ষণ করে তিনি রায় দিলেন, “মিন্ট চকোলেট! ওঃ!” অতঃপর ঢকঢক করে এক বোতল রয়্যালের পেস্তাবাদাম শরবৎ ফাঁক করে দিয়ে তিনি “আঃ” বলে চৈন প্রাপ্ত হলেন।

সবাই ফেলে দেওয়া বিদেশি চকলেটের শোকে আর কে যেন একজন বিশেষভাবে মিন্ট চকলেটেরই শোকে কাতর হয়ে পড়লেন। তখন ঐখানাই তিনি সবাইকে অফার করতে লাগলেন, কিন্তু সব ব্যাটাই নিশ্চয় পাষণ্ড নাস্তিক, কারণ দেবীর প্রসাদ গ্রহণে কেউ আগ্রহী হল না।

***********************************

আমরা এর পর গেলুম ঢাকেশ্বরী মন্দিরে, কিন্তু সেখানেও একই ব্যাপার – সেটা সদ্যই বন্ধ হয়ে গেছে। বাইরে থেকেই ছবিটবি তুলে বেরিয়ে এলাম। বাবা শুনছি অনেকক্ষণ থেকেই বঙ্গবন্ধুকে যে বাড়িতে হত্যা করা হয়েছিল সেটা যদি দেখা যায় এমন দরবার এর-ওর কাছে করে চলেছে। সেটা অনেকটা দূরে বলে নৈষাদদা পরের দিন সেখানে আমাদের নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব নিয়ে নিলেন। আমিও একটু আবদার করলাম মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর দেখার, নৈষাদদা তাতেও রাজি।

এরপর দেখলাম আলী মিঁয়ার রঙমহল মানে আহসান মঞ্জিল। সেটার শরিয়তসম্মত বানান আমাকে অনেকক্ষণ ধরে শেখানো হল। তার সিঁড়ি থেকে দেখা যায় আসলেই বুড়ি হয়ে চিমসে হয়ে পড়া বুড়িগঙ্গা’কে। বুনোদি যাযাদির সাথে আগেই কেটে পড়েছিল, কিন্তু ওখানে তাকে আমি-দিশাদি খুব মিস্কর্ছিলাম – abroade ইত্যাদি বানান দেখে।

সেখানেই আমাদের ওইদিনের ঘোরাঘুরির সমাপ্তি। অনেকেই জিজ্ঞেস করছিল, ঢাকা কেমন দেখলাম। বললুম, বেশ চেনা চেনা, বেশ একটা ককটেল। যদিও কলকাতার চেয়ে বেশি পুরোনো আর লোকও অনেক বেশি, মাঝে মাঝে কলকাতার মতই একটা আমেজ পাওয়া যায়। নতুন গজানো বাড়িঘর-শপিংমলগুলোও একই রকম। আবার পুরোনো ঢাকায় বিশেষ করে ইসলামী স্থাপত্যগুলোর আশপাশে, পুরোনো দিল্লির মত লাগে অনেকটাই, যেখানে ছাত্রজীবনে আমরা মাসব্যাপী প্রচুর ফটোওয়াক করে একেবারে চেটেপুটে খেয়েছিলাম শহরটাকে। আর পুরোনো ঢাকার হদ্দ গলিঘুঁজির সঙ্গে বেশ মিল পেলাম কাশী-বেনারসের – শুধু আরো অনেকটা নোংরা – কাদা (গঙ্গাজলের), আর ফুল-বেলপাতা-গোবর-সিঁদুর রাস্তাঘাটে ছড়ানো থাকলেই ব্যাস!

***********************************

স্টারের এলাহি খানাদানা শেষে (যেখানে আমার ফোন সবাই কিডন্যাপ করে নিয়েছিল) রায়হানাবীর, শফিউল জয় ইত্যাদিরা তাদের এক গুপ্ত সমিতির বৈঠকে এসে উপস্থিত হল। ঠিক হল, বৈঠক-খাওয়াদাওয়ার শেষে তারা সবাই টিএসসি’তে যাবে, তখন আমি গিয়ে তাদের সঙ্গে দেখা করব। আমরা প্রথমে চলে গেলাম সেখানেই, সেই লোকের ভিড়ে গিজগিজে আড্ডাখানাটা দেখিয়ে চা-টা খেয়ে কিছু লোক ঝরে গেল।

রয়ে গেল দিশাপু আর স্বামীলুল, যারা আমাকে নিয়ে গেল আজীজে, শুদ্ধস্বর দেখাতে। কিন্তু আপসোস, সেটা বন্ধ। প্রথমা তক্ষশীলা ইত্যাদি আরো কয়েকটা দোকান দেখা হল তার বদলে। আমি খুবই ভালো ছেলে কিনা, তাই দিদির কাছে কোনোই আবদার করলাম না। বরং দেখলাম, কলকাতার দিকের বইই বেশি। “আরে, এ তো আমি কলেজস্ট্রিটেই দেখতে পাই! বাংলাদেশের নিজস্ব বইপত্রের মধ্যে হারিয়ে যাওয়া যাবে এমন জায়গা কোথায়?” তখন শুনলাম নীলক্ষেত ইত্যাদি অন্যান্য জায়গায় যেতে হবে তার জন্য। ফোটোকপি করে আসলের মত বই বানিয়ে ফেলার ব্যবস্থার ব্যাপারে তো আগেই শুনেছি।

***********************************

ফেরার পথে টিএসসি’তে রাত্রিবেলা রায়হানদের সেই গুপ্ত সমিতির দ্বিতীয় দফার বৈঠকের শেষে তাদের সঙ্গে একটু পরিচয় করতে গেলাম। সেই গুপ্ত সমিতি একটি বিশেষ বস্তু লুপ্ত করে দেওয়ার ইচ্ছা রাখে, বিষয়টা ছিরিকাছ তাই প্রকাশ্যে কিছু বলছি না। তবে তাদের নৈশ কার্যাবলী থেকে সমঝদার পাঠকের ‘দেবতা ঘুমালে আমাদের দিন, দেবতা জাগিলে মোদের রাতি’ কবিতাটি মনে পড়লেও পড়তে পারে, আমি কিচ্ছু বলছিনা!

সেখানে আমাকে বাইকধারী রায়হানের হাতে সোপর্দ করে সবাই বিদায় নিল। স্থির হল, সে আমাকে বাইকে করে ধ্রুব এষের বাড়িতে পৌঁছে দেবে ইন্টারভিউয়ের জন্য। সেও আমাকে আগেই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল, ঢাকার রাস্তায় আমাকে সে উড়িয়ে নিয়ে বেড়াবে তার বাইকে বসিয়ে। আমি যেহেতু তার আইসক্রিমের সাথী নই, এ প্রস্তাবে সংশয় জানিয়ে বলেছিলাম, “কিন্তু তোমার বাইকে কি সিটবেল্ট আছে?” চাপার পর বুঝলাম, তার বাইকে সিটবেল্ট থাকা একেবারে পোলিওর টীকার মতনই প্রাথমিক আবশ্যিক প্রতিরোধ। যদি বাইকের সঙ্গে আমার কোমর দশফুট লম্বা দড়ি দিয়ে বাঁধা থাকত, তবে সেরাত্রে আমায় ঢাকার আকাশে প্যারাগ্লাইডিং করতে দেখা যেত তা নিঃসন্দেহে বলা যায়।

***********************************

গল্পগুচ্ছ ৪

পরের দিন দুপুরে চুক্তিমত নৈষাদদা এলেন আমাদের তুলে নিয়ে মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর আর বন্ধবন্ধুর বাড়ি-মিউজিয়াম (যা বত্রিশ নম্বর বলে পরিচিত, জানলাম) দেখাতে। ওদিকে সকাল থেকেই শুনে যাচ্ছি যে সুরঞ্জনা আসছে আমাদের সাথে দেখা করতে। সে তো আগের দিন তন্ময়দার আয়োজিত টো-টো’তে আসেনি, আজকের আড্ডাতেও নাকি আসবে না, তার বদলে সকালে আমাদের হোটেলে এসে দেখা করে ভালো কোথাও নাস্তা করতে নিয়ে যাবে। ওদিকে সকাল গড়িয়ে দুপুর হয়ে গেল, নৈষাদদা হোটেল থেকে তাকে ফোন করলেন, তখনও সে রাস্তায় এবং অনেক দেরি। ঠিক হল, আমরা প্রথমটা বা দ্বিতীয়টা দেখা শেষে কোথাও হল্ট দিলে সে এসে দেখা করে নেবে।

***********************************

মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘর দেখলাম একটা সরু গলির মধ্যে একটা ছোট দোতলা বাড়ি, তার আবার সামনেটা পুরোটা জুড়েই প্রদর্শনীর বাস দাঁড়িয়ে, তাই ছবিটবি কিছুই তোলা গেল না। ক্যামেরাও নিষেধ। তাই এমনিই ভেতরে ঢুকে ঘুরে দেখতে লাগলাম। গণকবরের অগণিত হাড় থেকে পাকবাহিনীকে নারীমাংসভোগের জন্য উদ্দীপিত করে রাখতে আঁকা ছবি, সব দেখেশুনে মনমেজাজ যখন খুবই গুমশো, তখনই সুরঞ্জনা এসে উপস্থিত। বলুন দিকি, তখন কি মুড থাকে কোনো তরুণীর সাথে মিষ্টালাপ করবার?

বালিকা অবশ্য আমায় তিনখানা বই উপহার দিলে, যার একটা যাযাদি’র সঙ্গে কমন পড়ে গেল। সে অবিশ্যি বললে, “ওটা কাউকে একটা দিয়ে দিবেন”, কিন্তু আমাকে নামটাম লিখে যা দেওয়া হল তা কি আর অন্য কাউকে দেওয়া যায়! তাও আবার কেমন ধৃষ্টতা, সে ফিরে গিয়েই ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছে, “আজকে প্রচুর খর্চা হয়ে গেল।” আরে, আমি কি কিছু উপহার চেয়েছিলুম নাকি? খর্চার শোক হলে না দিলেই হয়!

আর, এই ভয়েই কিনা কে জানে, আমি বাংলাদেশ আসা ইস্তক সে যোগাযোগ করে নাই। ঐদিন সকালেই নাকি এক প্রিয় বুজুর্গ তাকে সাইলেন্ট ট্রিটমেন্ট দেওয়ার পর তড়িঘড়ি দেখা করতে বেরিয়েছে। কী আর বলব, নেইমামার চেয়ে কানামামা ভালো, আর এক বালিকা তো চট্টলা ছেড়ে এলোই না! খুকিডোর ফোন অবশ্য করেছিল, তার ভাগের চক্কেত দুষ্টবালিকা পেয়েছে কিনা তা জিজ্ঞেস করল, সেই ঘুষ পেয়ে উনি আমাকে প্রহারের শপথ পরিত্যাগ করেছেন এ শুনে প্রচুর দুঃখপ্রকাশ করল, সে নাকি দিশাপু’কে বলে রেখেছিল, আমাকে পিটিয়ে তা আবার ছবি তুলে পাঠাতে। সেই শিশুর একমাত্র খাদ্য, একবোতল কবিতা কলকাতা থেকে নিয়ে এসেছিলুম, তা পাঠাবার ব্যবস্থা হবে বলে আশ্বাস দিলাম।

***********************************

বই একখানা সুরবালিকার জন্যও নিয়ে এসেছিলাম, সে একজন ভালো নারীবাদী লেখিকা বলে কথা, তারপর খাসা ছবিও আঁকে, তাই একজন বিখ্যাত লেখক-আঁকিয়ের দুটুকরো নারীবাদী উপন্যাসের একটা চমৎকার বই এনেছিলাম, সাথে মনে করে তাতে লিখে দেব বলে একটা যুৎসই বাণী। কিন্তু ওই পরিবেশে ঠিক মুড আসছিল না। সুরঞ্জনাই বললে, এখন কোথাও গিয়ে চায়ে-পানি খাওয়া হোক আর এট্টু আড্ডা হোক, তারপর সে চলে যাবে আর আমরা বত্রিশ নম্বর দেখতে যাব।

তেমনই প্ল্যান করে গাড়িতে ওঠা হল, তার গাড়ি আমাদের ধাওয়া করল। কিন্তু খানিকদূর যেতেই ফোনে সে উল্টো সুর গাইতে আরম্ভ করল, তাকে নাকি এক্ষুণি বাড়ি চলে যেতে হবে, গিয়ে প্রস্থানোদ্যত আত্মীয়দের সাথে খানাদানা করতে হবে, ইত্যাদি ইত্যাদি। তখন কী আর করা, বললাম, ‘বইটা নিয়ে যাও মাণিক!’ সে ওইটুক দেখা করতে রাজি হল, বত্রিশ নম্বরে গিয়ে পোঁছে বইটা দেওয়া মাত্রই সে সট করে কেটে পড়ল, আর আমি ওই হুড়োতাড়ায় বইতে কিছু লিখে দেওয়ার কথা গেলুম ভুলে।

(হোটেলে ফিরে তার বাণী লেখা বই তিনখানা নৈষাদদার গাড়ি থেকে নামাতে গিয়ে মনে পড়েছিল যে আমি কিছু লিখতে ভুলে গেছি। তাই ফোন করে তাকে দিলুম ধমক, এই যে মার্কিন সাবমেরিনের মত হুশ্‌ করে ভেসে উঠেই ফুস্‌ করে ডুবে যাওয়া, এটা পুরোই বেআইনি! আমি কোথায় ভেবে রেখেছিলাম, আজকে সন্ধ্যার আড্ডায় সন্ন্যাসীর তিন চেলার একসাথে জম্পেশ আড্ডা আর গ্রুপফটো তোলা হবে, সেসব কিনা পুরোই বানচাল করে দিলে? কসম’সে, লেখায় এসব ষড়যন্ত্র এক্কেরে ফাঁস কৈরা দিমু!

তবে বইটা হাতে নিয়ে তার লেখা বাণী দেখতে গিয়ে দেখি, তা শুরু হচ্ছে “প্রিয় কৌস্তুভ...” দিয়ে। কী বলব, দিলটা পুরোই গুলবুলিস্তান হয়ে গেল, ভাবলাম সব অপরাধ মাফ করে দেওয়া হৌক। কিন্তু তার পরেই দেখি, “...কৌস্তুভ ভাই কে”। ব্যস, আর কী, ‘ধুক্‌ করে নিভে গেল বুকভরা আশা’...)

***********************************

আর ঘোরাঘুরির ফাঁকে বাবা নৈষাদদার কানে এই গোপনীয় তথ্যটি পাচার করে দিয়েছেন, যে আমার পরিপাকতন্ত্র বাংলাদেশী খাদ্যের সামনে তেমনভাবেই বেবাক আত্মসমর্পণ করেছে যেমন পাকবাহিনী বাংলাদেশী সেনার সামনে করেছিল। পরপর চারবেলা স্টার-রাজ্জাক-রয়্যালের ভালোবাসার জোয়ার কোষ্ঠশুদ্ধু ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। শুনে তখুনি নৈষাদদা রাস্তার হাবিজাবি না খেয়ে তাঁর বাসায় হবিষ্যিভোজনের নিমন্ত্রণ জানালেন। বৌদিকে ফোন করে জানিয়েও দিলেন। (কিন্তু একটা ব্লাণ্ডার করেছিলেন – আমার যে পেট ইয়ে সেইটাই বলেন নাই। তাই বৌদি বেশ করে মাছ ডিম মাংস ইলিশভাজা বেগুনভাজার চেষ্টা দেখছিলেন ওইটুকু সময়ের মধ্যেই। আর আসল খবর শোনার পর একটু ডাল করতে পারেননি বলে নৈষাদদাকে খুব ঝাড় দিচ্ছিলেন।)

ওনার বাসায় আলাপ হল ওনাদের পরীর মত মিষ্টি মেয়েদুটোর সাথে। তারা ইশকুলে পড়ে শুনে তাদের দুটো পেন উপহার দিলাম, হুট করে চলে আসায় আর তো কিছুই ছিল না সাথে। বাবার সঙ্গে নৈষাদদার বিশেষ আলাপ হল ঢাকার মিষ্টির দোকান নিয়ে। পুরোনো ঢাকার কোনো ঐতিহ্যবাহী দোকানে আগের দিন যাওয়া হয়নি বটে, তবে ঢাকা-পিরোজপুর ইত্যাদির কয়েকটা দোকান ঘুরে আমার (আমি আবার বিশেষ মিষ্টান্নমিতরেজনা এ সবাই জানে) যে ধারণা হয়েছে তা বললাম, যে মিষ্টির ব্যাপারে পশ্চিমবঙ্গের হালচাল তুলনায় অনেকটাই ভালো (ফর এক্সাম্পল, বাংলাদেশের মিষ্টি-শরবতে মিষ্টি একটু বেশিই দেয় বলে মনে হয়েছে)। বাবা সুচিন্তিত মতামত দিলেন, এ মনে হয় আমাদের এদিকে দুগ্ধ বিপ্লবের ফল। নৈষাদদা কিঞ্চিৎ প্রতিবাদ করে বললেন, ওনাদের দিকে কিন্তু ভালো দোকান আছে অনেকগুলোই। ওনাদের মতে সবসেরা দই আনালেন, আর ভালো দোকানের রসগোল্লা (বাচ্চাদুটোর ভাষায় ‘সাদা মিষ্টি’, যেটা তারা খেতে ভারি ভালোবাসে) তো ছিলই। খেয়ে দেখলাম, খারাপ না তো বটেই, তবে কোলকাতার ভালো দোকানে অনেক ভালোতর হয় – আমার হাইপোথিসিস রিজেক্ট হল না।

***********************************

গল্পগুচ্ছ ৫

আমাদের ঐদিনের মুরুব্বি নৈষাদদা আমাকে সন্ধ্যায় নজুভাইয়ের বাসায় পৌঁছে দিলেন। বললেন, তাঁকে একটু পরেই উঠে যেতে হবে অন্য কাজে। কিন্তু আড্ডায় বসেই হয়ে উঠলেন পুরো অন্য মানুষ, জোরসে হাসিতামাশা জমিয়ে দিলেন। বুঝলাম, আজকে সারাদিনের আমাদের সঙ্গটা ওনার তেমন মনমত হয়নি। আমার প্রথমদিনের মুরুব্বি পাণ্ডবদাকে প্রচুর পচালেন নজুভাই সিমনভাই ইত্যাদিদের সঙ্গে মিলে। উদাহরণ:

সিমনভাই – “কী, আঙ্কেল এলেন না?”
আমি – “নাঃ, কাল ভোরেই বেরোনো কিনা তাই গোছগাছ করতে...”
নৈষাদদা – “আর আসবেন কেন, পাণ্ডবদা তো ওঁদের জিরো পয়েন্টের লাগোয়া হোটেলে রেখেই পুরো ঢাকা চিনিয়ে ফেলেছেন এমন বুঝ দিয়েছেন! দেখা হলে ওনাকে চেপে ধরতে হবে!”
নজুভাই – “সেই তো, পুরো ঢাকার মধ্যে সব ফেলে গুলিস্তান?”
সিমনভাই – “আমিও তো সেইদিন খেতে গিয়ে ওনারা গুলিস্তানে আছেন শুনে কেমন চমকে উঠেছিলাম!”

***********************************

আর আমি নজুভাইয়ের বৈঠকখানা ঘরে ঢুকেই দেখি ওই দূরে হয়রানাবীর সৌরভ ইত্যাদি কিছু ছেলেছোকরা জটলা করছে আর চানাচুর সাঁটাচ্ছে, আর এদিকে এক সোফায় চুপচাপ বসে আছেন নাকে ইয়াব্বড় নথ পরা এক মহিলা। দেখেই বুঝলুম, বুকে হাত দিয়ে সেলাম করে মিহি গলায় বললুম, “ঠাম্মি?”

ব্যাস, আদর করে পাশে ডেকে বললেন, “বসো”। আমিও টপ করে বসে পড়লুম। অমনি বললেন, “ওমা, আমি যেই বললাম তক্ষুণি বসে পড়লো? কী ভালো ছেলে গো!”

কিন্তু গল্প করার সময়ে খালি বড় নাতি ছন্দ’র কথাই বলে চলেন! ছন্দ এই বলেছে, সেই চেয়েছে, আমার কানমলা দেখতে বায়না করেছে, ইত্যাদি ইত্যাদি। চটে গিয়ে বললাম, “ওসব রাখেন, বলুন আমার নাড়ু কই? পিঠেপুলি কই? পায়েস কই?” অমনিই শুনতে হল, “বাপরে কি আবদেরে ছেলে! আমার বাপু জ্বর ছিল কদিন, পিঠেমিঠে করার সুযোগ পাইনি! এই একখানা চকলেটই নাও হে!”

***********************************

এই চলতেই এল বুনোদি (সাথে উন্মাদের একটা মুডোমিটার গিফট), আর তার সাথে এক পলাশ। তার দাবি যে সে আঁকিয়ে পলাশ মানে আঁকাইন, লিখিয়ে পলাশ না, কিন্তু প্রমাণ-টমাণ কিছু না দেখিয়ে স্রেফ গুল আর প্রতিশ্রুতি দিয়েই চলে গেল কিনা তা বুঝতে পারলাম না। সে এসেই আমার ক্যামেরাটার প্রতি লুলপূর্ণ দৃষ্টিপাত করতে লাগল। একবার দারুণ ভাব নিয়ে বলল, “বুঝেছেন, জীবনে যে কী চাইব সেটাই ঠিক করে ওঠা যায় না। আমার আছে বটে ডিএসএলআর, কিন্তু একটা ক্যানন ৬০ডি-র শখ অনেকদিনের, আবার একটা ইনটুয়োস ট্যাবলেটও কেনা খুব দরকার!”

আমি দেখলাম, পলাশ বেচারা খুবই কষ্টে আছে। একে তো বসেছে সিমনভাইয়ের সাথে একই সোফায়, তাই ভয়ে ভয়ে আছে। তেনার আবার চেয়ার ভাঙার বিশেষ রেপুটেশন আছে নজুভাইয়ের বাসায়, তাই তাঁর জন্য একটা আস্ত গাছের গুঁড়ি থেকে বানানো বিশেষ চেয়ার বরাদ্দ আছে, কিন্তু উনি আবার সেটায় বসবেন না। (নজুভাই প্রত্যেক আড্ডাতেই এই গল্পটা নতুন সবাইকে শোনান, যে সিমন কেমনভাবে নিধির ছোট্ট পেলাসটিকের চেয়ারে বসে দুলে দুলে সেটাকে মড়াৎ করে ভেঙে পড়ে গিয়েছিল। সেটার পর বুনোদি খোঁচা দিয়ে বলল, “সিমনভাই, আপনি হাট্টাকাট্টা মানুষ, এমন ইনছাল্টে কিছুই বলছেন না? সিমনভাই বললেন, “ভাই, কী বলব? তখন যেমন চুপ করে উল্টো হয়ে পড়ে ছিলাম, এখনও তেমনই চুপ করে বসে আছি!”)

তারপর আবার তার হাতের চানাচুরের ভাণ্ড পুরোটাই উনি ছিনতাই করে নিয়েছেন। তা আমি নরম মনের মানুষ, তাকে ভালো লেন্সটা মানে ৫০মিমি/১.৪টা লাগিয়ে ক্যামেরা দিয়ে বললাম, “নাও বাছা, মনের শখ মিটিয়ে ছবি তোলো।” হায়, তখন বুঝিনি, সে ম্যানুয়াল মোড আর ম্যানুয়াল ফোকাসের কেরদানি করতে গিয়ে কত্তগুলো চমৎকার মোমেন্টের ঝাপসা-ঝাপসা ছবি তুলে বারোটা বাজাবে! আর ক্যামেরাকাণ্ডের পর থেকে চার্জারও মৃত, যেট্টুক চার্জ ছিল, ব্যাটা ঝাপসামত ছবি তুলে তুলেই নিংড়ে শেষ করে দিলোগা!

***********************************

একে একে পান্থ ভাই, রেজওয়ান ভাই, দিশাদি ইত্যাদি আরো অনেকে এলেন। চানাচুরের পরে কচুরি আর চিপসও এলো। ঠাম্মি আমাকে চিপস খাইয়ে দিলেন। নানাবিধ আড্ডা চলতে লাগল, যেমন প্রস্তাব উঠল, অকর্মণ্যতার জন্য অন্যায্য মডুকে বরখাস্ত করা হোক। আমিই কেবল প্রতিবাদ করে বললাম যে না, অনার্য বেচারা আসলে মডু নয়, ফ্যাসিবাদী মডুরা আসলে নিজেরা কোনো কাজ করে না বলে তাকেই কাকতাড়ুয়া খাড়া করে রেখে দিয়েছে। শোনা যায়, আগে সচলাড্ডায় নাকি কেবলই তরুণীরা বুজুর্গদের হিমুভাইয়ের কথা জিজ্ঞেস করে করে জ্বালাতন করত। এখন দেখলাম তাদের আলোচনার টপিক ছিনতাই করে নিয়েছে তারেকাণু।

আমি লক্ষ্য করলাম, ছেলেছোকরাদের গ্রুপটা বৈঠকখানার লাগোয়া ঘরে উধাও হয়েছে। গিয়ে দেখি সেটা বইঘর, অবশ্য নজ্রুলভাইয়ের রেপুটেশনের তুলনায় মাত্রই হাতেগোনা বই। তাও সেটারই প্রতি সুহান নিবিড় ইত্যাদিদের লুল্বর্ষণের অন্ত নাই। বাকিরা ফরাসে শুয়েবসে আড্ডা দিচ্ছে। নিবিড় দেখলুম একখানা তার চেয়েও ভারি (এমনকি বইখানার নামই তার চেয়ে লম্বা) এচলামী বই তুলে নিয়ে দাঁড়াতে না পেরে ফরাসে কেতরে পড়েছে। সেইটা দেখে সিমনভাই কী একটা দুষ্টু রসিকতা করলেন। পাপিষ্ঠ হয়রানাবীর (কে যেন বলেছিলেন, ‘এক বইয়ের পাঠক হইতে সাবধান।’ আমি আজকাল বুঝতে পারছি, ‘এক বইয়ের লেখক হইতেও সাবধান’।) তায়ে বললে, ‘এমন কথা শুনলে তো ওরা আপনার মুমিন কেটে ফেলবে!” দারুণ হাস্যরোল উঠল, কিঞ্চিৎ শাসন করার অভিপ্রায়ে মুরব্বি আনিসভাই ওঘর থেকে হাঁক দিলেন, “অ্যাই, সিমনের পেছনে লাগছিস কেন রে তোরা?” হয়রানই উত্তর দিলে, “সিমনভাই রুকুতে দাঁড়িয়েছে!”

***********************************

আনিসভাই সাথে সচলাড্ডায় এনেছিলেন সদ্য ঢাকা-আগত মেহবুবা জুবায়ের ভাবীকে। আমি তাঁর কাছে দারুণ হাসি-হাসি মুখ করে আদর পাওয়ার অভিপ্রায়ে গেলুম, কিন্তু তিনি প্রথমে আমাকে চিনতেই পারলেন না। আমার পরিচয় জিজ্ঞাসা করায় সরাসরি উত্তর না দিয়ে বললাম, “আপনি আমাকে একসময় দ্রুত সচল হওয়ার জন্য অনেক আশীর্বাদ করেছিলেন। এইবার মনে পড়ে?”

তখন চিনতে পারলেন সাথে সাথেই। পাশে বসিয়ে অনেক গল্পসল্প করলেন। আমি মনে মনে বললাম, “অবশ্য আপনার আশীর্বাদ মোটেই ফলে নাই, আমার সচল হতে দীর্ঘদিন লেগেছিল। আর বর্তমান পরিস্থিতিতে মনে হচ্ছে আপনার দ্বিতীয় আশীর্বাদখানা – যে আমার শীঘ্রই একজন সুপাত্রী মিলুক – সেদিকেও গতি হবার কোনো আশা দেখছি না।”

এসময় ঠাম্মি আন্দোলন তুললেন, তাঁকে চলে যেতে দাওয়া হোক, তাঁর বঙ্গভবনে কি একটা আর্জেন্ট অ্যাপো আছে। আমি বললাম, “আরে দাঁড়াও দাঁড়াও, মিতিনমাসির জন্য বই এনেছি সেদুটো নিয়ে যাবে না?” নবছরবয়স্কা ঠাম্মিকন্যার (অতএব আমাদের মাসি-ই তো) জন্য ‘লাল কালো’ আর ‘কালো কালো’ বলে আমার শিশুবেলার প্রিয় দুখানা বই নিয়ে এসেছিলাম। ‘কালো কালো’ আবার একাত্তরের বাংলাদেশের পটভূমিতেই লেখা। সে'দুখানা বগলদাবা করে ফিরে যাওয়ার পথে ঠাম্মি আবার নুপূরভাবীর হাতে আটকা পড়লেন। কী, না, “এখনই রান্না হয়ে যাবে, খেয়ে যাবেন না, এটা কি ভালো দেখায়?” ঠাম্মিও অভিজ্ঞা মহিলা, তিনি নানা কাহিনী বুনতে লাগলেন পালানোর জন্য, সাধে কি আর ‘ঠাকুরমার ঝুলি’ নাম হয়েছে?

আমি আড্ডায় ফিরে গিয়ে দেখলাম, বইঘরের জমায়েত বৈঠকখানায় শতরঞ্চি পেতে স্থানান্তরিত হয়েছে। সেখানে সুহান নিধি’কে কোলে নেবার জন্য নানারকম প্যাঁচপয়জার করছে (সে কারো কোলে গেলেই নাকি একবছরের মধ্যে তার বিয়ে হয়ে যায়), কিন্তু নিধি নেহাতই নারাজ। সে বরং সিমনভাইয়ের ঘাড়ে গিয়ে বসল। জুবায়েরভাবী পরিচয় করিয়ে দিলেন তাঁর পুত্রসম বোনপোর সাথে, যে-ই নাকি প্রথম শিশু যার ডার্টি ডায়াপার তিনি বদলে দিতেন। আমরা সবাই শোর তুলে বললাম, “কিন্তু এই কৃষ্ণগুম্ফ চশমাধারী ধাড়িলোকের সঙ্গে সেসব মোটেই মিলছে না, বাকিটা চেপে যাওয়াই উত্তম হবে, কখন না জানি কোন ডার্টি পিকচার বেরিয়ে পড়ে।”

এর মধ্যে সজলও আবার চলে যাওয়ার ধুয়ো তুলল। সবাই হাঁ-হাঁ করে উঠল, সিমনভাই হুমকি দিলেন, “অ্যাই, নিধি যেমন আমার ঘাড়ে বসেছিল তেমনি আমি তোর ঘাড়ে বসে যাবো যদি পালাতে চাস!” কিন্তু সজল যশ চোপড়া লাইনে পুরোই ঝানু, সে ১১০% সেন্টু ঢেলে দিয়ে বললে, “কিন্তু আমি এতদিন বাদে দেশে ফিরেছি, মা আমার সঙ্গে দুটি ভাত খাবেন বলে অপেক্ষা করে বসে আছেন, তা ফেলে আমি এখানের পোলাওই বা কী করে মুখে তুলি?” নজুভাই শুনে বললেন, “এ পুরোই রণদা’র মত কেস। আমি আজ ওনাকে ফোন করে বললাম, ‘কী বস, আসছেন না?’ উনি তাতে বললেন, ‘নাহ দাদা, আজ বহুদিন পর একটু বউকে সময় দিতে বেরিয়েছি।’ এখন এই কথার আমি কী উত্তর দিই?”

***********************************

সবাই এর ফাঁকে প্রথমে আস্তে পরে জোরে আওয়াজ তুলতে লাগল, ‘খিদে পেয়েছে, খাবার চাই, কেবলই শুনে আসছি রান্না হয়ে যাবে এক্ষুণি, কিন্তু এখনও অবধি চোখে দেখলাম না, অবিলম্বে খেতে দিতে হবে।’ তাতে নজু ভাইয়ের বায়না হল, রান্না হয়ে গিয়েছে তো বটেই, কিন্তু আগে আনিস ভাইয়ের গান হবে তারপর খাবার আসবে। তাতে আনিস ভাই বললেন, খ্যাতা পুড়ি এমন খাবারের, তারপর জনান্তিকে টোকা দিয়ে বললেন, “ঐ, বাড়িতে ঠাণ্ডা ভাত আছে না খানিকটা?” কিন্তু বেগতিক ভাই জোরালো প্রতিবাদ করে বললেন, “আপনার নাহয় বাসায় ভাত আছে, কিন্তু আমরা তো বাসায় জোরগলায় ঘোষণা দিয়ে এসেছি, ‘দাওয়াতে যাচ্ছি’, অতএব দেরি না করে শুরু করুন।”

এমন সাধাসাধি চলছে, এমন সময় ঠাম্মি এসে সেই সরু গলায় আলতো করে বললে, “বাবা কৌ, এবার তবে যাই?” আমি শুধালাম, “সেকি, খালিদের আবদার পূরণ করবে না?” ডাক দিলাম সায়কাদিদিকে। বললাম, “খালিদের শখ সে ঠাম্মিকে দিয়ে আমায় কানমলা খাওয়াবে, আর রিফাতের শখ তোমার আমাকে পেটানোর হুমকি বাস্তবায়িত করার ছবি দেখবে। জয়েন্ট প্রজেক্ট করে ফেলো না?” সে তো আনন্দে তাধেই তাধেই করে নেচে উঠে ঠাম্মিকে আঁচল ধরে টান দিলো, ‘চলো আশাদি, কৌ-কে দুজনে মাটিতে ফেলে পেটাই!”

আমি হাঁক দিলাম পলাশ ক্যামেরোলাকে, সেও আনন্দে তেত্রিশ পাটি বের করে কামান বাগিয়ে ছুটে এল। আমাকে তারা চ্যাংদোলা করে নিয়ে গেল পাশের সেই বইঘরে। কিন্তু কানমলা দিতে গিয়ে সমিস্যে হল। ঠাম্মি বলল, “না না, এতো ঠাণ্ডা, এতো ভালো, এতো নিরীহ, শান্তশিষ্ট লেজবিশিষ্ট একটা ছেলে, তার কান আমি কী করে মুলি?” (যা বুঝলুম, ঠাম্মি ছন্দ’র উপর এখনও ভারি চটে আছেন, তাই তার কথাকে পাত্তা দিতে চান না।) আমি আবার বাঙাল উচ্চারণের লেZবিশিষ্ট-কে Z এর জায়গায় S শুনে ফেলে আঁতকে উঠেছিলুম। সেসব নিয়ে প্রচুর হাসাহাসি হল। আমি বললাম, মারই খাই আর ডুডুই খাই, ঠাম্মির কোলে শুয়ে ঝিনুক দিয়ে খাওয়াই ভালো। সে কথা সেন্সরড হয়ে গেল। দিশাদির উৎসাহের কমতি নেই, সে মুঘল বাদশাহদের মত ঝুলিয়ে টাঙিয়ে শুইয়ে বসিয়ে নানারকম টর্চারের আসন পরিকল্পনা করে ফেলল কিন্তু আসলে সবার হেসে লুটোপুটি খাওয়া ছাড়া আর কিছুই হল না। শেষে ঠাম্মি বিষমটিষম খেয়ে বললে, “বাব্বাহ, সারা জীবনেও আমি এতো হাসিনি!”

***********************************

এবম্বিধ নির্যাতনের ঘর থেকে খোঁড়াতে খোঁড়াতে প্রায় নিশ্চুপ ড্রয়িংরুমে বেরিয়ে আসছি, এমন সময় শুনলাম, কে যেন ভারি মনমরা এক গলায় বলছে, “পেটে চাই খাবার নয়তো দিন চলেনা...”। আহা, সেই করুণ স্বর শুনে নিজের খিদে ভুলে সমব্যথী হয়ে পড়লুম। তারপর ব্যাপার আরেকটু এগোলো, জোশ এসে গলা আরেকটু চড়ল, তখন বুঝলাম, মৃদুলদা গান গাইছে, “যদি ভাবো কিনছো আমায়...”।

এরপর কে যেন নিরন্নতার প্রতীক হিসাবে একটা খালি হাঁড়ি বাড়িয়ে দিল মৃদুলদার দিকে। বুঝলাম, বুভুক্ষু জনতা এর চেয়ে ভালো কোনো সম্মানী দিতে অপারগ।

সবারই অবস্থা কাহিল আরো ভালো বোঝা গেল, যখন আনিস ভাইও একটা ভারি অশ্রুজল-ছলছল গান ধরলেন, “আর আমারে মারিসনে মা...”। মৃদুলদা দেখলুম ওই হাঁড়িটাকে উল্টো করে বাগিয়ে টিংটিং সঙ্গত ধরেছে। গানটা বেশ মন দিয়ে শুনছি, এর মধ্যে হঠাৎ বুনোদি এসে বলল, “ওহে, যাযাপু’র জন্য যে বইখানা এনেছ সেটা আমায় দিলে না তো?”

***********************************

আমার বইভর্তি ব্যাগখানা ছিল বৈঠকখানার লাগোয়া বইঘরে। ঘরখানা তখন খালি, বুনোদিকে বললুম আমার পিছনে চুপিচুপি আসতে। কিন্তু কী কপাল! ‘বই’ শব্দটা কেমনে জানি হাওয়ায় ভেসে দিশাদি’র কানে চলে গেছে। “অ্যাঁ অ্যাঁ কী বই কার বই কোথায় বই” বলতে বলতে সেও দৌড়ে চলে এল পাছে পাছে, আর আমায় ব্যাগের চেনখানা এট্টুখানি বড় করে ফাঁক করতেই হল, মোটা দুভল্যুম নবনীতা দেবসেনের ভ্রমণ সমগ্র (যাযাবর ব্যাকপ্যাকার, যিনি আবার মহিলা লেখিকা (সেটা অবশ্য অনেক বেচারার কাছেই চেপে রাখা হয়), তার জন্য এর চেয়ে উপযুক্ত উপহার আর কী হতে পারে? অবশ্য রুশতুতো দিদি’র জন্য একটা রুশ-পুতুল মাত্রুশকা – পুতুলের ভিতরে পুতুলের ভিতরে পুতুল... সেই জিনিস – তাও এনেছিলাম বটে) বার করার জন্য, আর অমনি ডিম ফুটে বেরোনো ডাইনোসর দেখার মত দুজনে সেটার উপর হামলে পড়ে জরাসন্ধ বধের মত ব্যাগটাকে পুরো দুফালা করে দিলে, আর আমার হাত-পা বেঁধে ঘরের এক কোনায় ফেলে রাখলে যাতে আমি তাদের লুটতরাজে বাধা দিতে না পারি।

তারা তো নিজেদের পছন্দমত মাল হাপিস করলে, এর মধ্যে নজুবাইও এসে (তাঁর কথা ভেবে যেখানা এনেছিলুম সেটা ইতিমধ্যেই পড়া এ সন্দেহও ছিল) একখানা বই হাতিয়ে নিলেন, সৌরভও এসে একখানা হস্তগত করলে, আর পলাশ ক্যাম্রাম্যান কেবলই “দাদা আমি ক্যারিকেচার করে দেবার প্রতিশ্রুতি দিলুম আমাকে একখানা বই দিবানা এটা কেমন বিচার” বলে জেলবন্দী নায়কের অন্ধ মা যেমন মন্দিরে গিয়ে কেঁদে কেঁদে ফরিয়াদ করে তেমন ঘ্যানঘ্যান করতে থাকল। যতই বলি, “ওরে ভাই, আমিও বই দেবার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আগে তো এঁকে দেখা...”, সে ভবি ভোলে না।

আরো কারা কারা এসে যেন কী কী ছিনিয়ে নেওয়ার পর আমি মুক্তি পেলুম। নজু ভাই এসে বলল, “ওহে চিফ গেস্ট, খেতে যাবে না?” কিন্তু তার আগেই বুনোদি আবার হাঁক দিল, “অ্যাই, আগে আমাকে উপহার দেওয়া বইয়ের উপর একটা অটোগ্রাফ দাও!” এখন আড্ডার সম্মানিত সভ্য হিসাবে আমি তো কোনো কন্ট্রোভার্সিতে জড়াতে পারি না, তাই এক্কেবারে সাদামাটা লিখলুম,
“বুনোদিকে,
– কৌস্তুভ”।

প্রিয় অমুককে, ভালোবাসাসহ, এসব এরশাদীয় ভাষা একেবারেই বাদ।

এবার সায়কাপুরও বায়না হল। তাকেও ওই-ই লিখলাম, কিন্তু তা চলবেই না। তাই লিখলাম “দিশাদিকে ****” , সেখানে পাঠক নিজের রুচিমত ভালোবাসা বা খারাপবাসা বা দুষ্টুবাসা বসিয়ে নেবে।

এতেই দেখি লাইন লেগে গেছে। আনিস ভাই, আরো জনকয়েক সচলবন্ধু বই বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বাণী নেওয়ার জন্য। তাদেরকে মিষ্টি মিষ্টি কথা লিখে দিলাম। যেমন আনিস ভাইয়ের বইতে লিখলাম, “প্রিয় বুজুর্গকে...”

***********************************

তারপর খেতে গিয়ে দেখি সেখানেও বিশাল লাইন, বিশাল আয়োজন – খিচুড়ি, সবজি, বেগুনভাজা, মাংস, স্যালাড, ইটিসি ইটিসি। ঠেলেগুঁতিয়ে থালা নিয়ে পাতে সবকিছুই অল্প করে নিলুম। অল্প মানে একটু বেশিই অল্প। পরের দিন সারাদিন বাসে ফিরতে হবে, বাস তো আর আমার উর্ধ্ববেগ-অধঃবেগ অনুযায়ী ঝোপের ধারে, আলের পাড়ে স্টপেজ দেবে না। ‘নজুর মাংস’ অর্থাৎ নজুভাইয়ের রাঁধা স্পেশাল বিফ খেতে ‘অসাম সালা’ হলেও মাত্র এককুচিই নিলাম। লোভে পাপ, পাপে ডায়রিয়া।

কিন্তু রাঁধুনি নজুভাই চমৎকার হলেও হোস্ট নজুভাই ফ্যাকড়া বাঁধালেন। আসরজুড়ে সোরগোল লাগিয়ে দিলেন, আমি এত কম খাবার কেন নিয়েছি, এতে নাকি রান্নার অপমান। তাই শুনে, মহান ষড়যন্ত্রী দিশাদি, বিচ বাজারমেঁ আমার ইজ্জত খুল্লমখুল্লা করে দিয়ে চিৎকার করে উঠল, “আ-রে, ওর তো পে-ট-খা-রা-প হয়েছে!”

আমি হাত-পা-ছুঁড়ে কান্নাকাটি জুড়ে দিলাম। তখন আবুলমন্ত্রী স্টাইলে ম্যানেজ দিতে সে বলল, “না না, ওর কিছুই হয়নি তো।” বুনোদি পাশে বসে ততক্ষণে পাত খালি করে ফেলেছে, সেও জুড়ে দিল, “ওর পেটও কিন্তু ঠিকই আছে!”

সাথেই বসা সিমনভায়ের অবশ্য উল্টো ব্যাপার – এই ছিল পাত খালি এই ভাতে যায় ভরে – আমায় সান্ত্বনা দিতে বললেন, “আরে ওইটা কোনো ব্যাপার না, পরপর রাজ্জাক আর স্টার মেরে আমারও একই হাল হয়েছে, ওসব না ভেবে দুহাতে সাঁটিয়ে যাও ভাই।” আমি মনে মনে বললুম, “তোমার আর বলতে সমস্যা কি, তুমি তো বাড়ি ফিরেই স্লুইসগেট খুলে দিতে পারবা। কিন্তু বাসে সারাদিন যেতে যেতে যখন আমার নদীর ঘোলা পানি উপচে বন্যা হব-হব অবস্থা হবে তখন কি হাসিবভায়ের চিত্রের মত তুমি হাতে বদনা নিয়ে পাশে হাজির থাকবে?”

***********************************

ফেরার সময় আনিসভাই (তিনি শুরুতে ছুডুপোলা বিধায় আমাকে বিশেষ পাত্তা দিচ্ছিলেন না। শুধু আমার ক্যামেরাটা দেখে একবার “বাঃ, অনেকদিন পর কারো ক্যামেরায় প্রাইম লেন্স দেখলাম!” বলে তারিফ করেছিলেন। কিন্তু বই উপহার দেওয়ার পরে খাতির খানিক বাড়ল, তিনি, ‘আসো বাবা, পাশে বসো, কী নাম তোমার, কোন ইস্কুলে পড়ো’ ইত্যাদি কিছু কথাবার্তা বলেছিলেন।) এতো জোরে আর এতো দীর্ঘক্ষণ ধরে করমর্দন করলেন, যে ভাবলাম এই জোড় কেয়ামৎ সে কেয়ামৎ তক অটুট থাকবে, আর না হলে নির্ঘাৎ ফেরার পথে তন্ময়দাকে দেখিয়ে আসতে হবে।

নৈষাদদা আগেই বেরিয়ে সপরিবারে কোন এক আত্মীয়ের বাসায় গেছিলেন, সেখান থেকেই ফোন করে জানতে চাইলেন আমাকে পোস্ট করার মতনই রিসিভ করার দায়িত্বটাও তাঁরই কিনা। রায়হান প্রথমে এমন ভাব করল যেন আমাকে সৌরভ হুশ করে পৌঁছে দিয়ে আসবে। কিন্তু জিজ্ঞেস করে জানলাম যে সৌরভের কোনো নিজস্ব বাহন নেই, সে ‘কোনো একটা রকম ভাবে’ চলে যাবে। তখন নৈষাদদাকে আসতেই বললাম, বরং সৌরভকেই বললাম আমাদের সাথে চলে আসতে। নৈষাদদা সারাদিন আমার জন্য যেরকম দৌড়াদোড়ি করলেন, তাতে তাঁকে বললাম, “আপনি বলছিলেন না, খুব কম সচলের সঙ্গেই আপনার যোগাযোগ আছে? ভাগ্যিস তাই! নইলে এমন সার্ভিস দিতে দিতে আপনার জান বেরিয়ে যেত!”

***********************************

ফেরার আগে, আমাদের জ্যোতিদাদা’র ইসে যিনি, সেই মিস কোল্ডওয়াটার’কে ফোন করিয়ে দিল নিবিড়। কারণ, কলকাতা থেকে আসার সময় বরিশাল ভ্রমণ সম্পর্কে তাঁর পরামর্শ নেওয়ার পর (তিনি আমাদের গ্রামতুতো প্রতিবেশিনী নাকি) হুকুম হয়েছিল, “ঢাকায় এসে আওয়াজ দিবেন। উপযুক্ত হাদিয়া না আনলে আওয়াজ দিবেন না।” হাদিয়ার দাবি হয়েছিল বেগুনি মলাটের হাজমোলা, যা নাকি তিনি এক ড্রাম তিনদিনে শেষ করে থাকেন। হাদিয়া আনার পরও সারাদিনে তাঁকে আওয়াজ দিয়ে দিয়ে পাইনাই, তিনি নাকি সারাদিন ‘ঘুমাইতাসিলেন’। নিবিড় ফোন করে হাদিয়ার খবর দেওয়ায় চৈতন্যপ্রাপ্তিপূর্বক আমার ফোন না করার জন্য যতগুলো হাজমোলা এনেছি ততগুলো সরি বলে আমার কুশলজিজ্ঞাসা ইত্যাদি ফর্মালিটি এবং কিছু গল্পগাছা করলেন।

তাঁর ‘এক বুয়েট ইঞ্জিনিয়ারের পাত্রী দেখা’র প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতার গল্প শুনে বললাম, আহা, আপনাদের কত আরাম, পাত্র লম্পট হোক কিংবা মাতাল, সে বুয়েট ইঞ্জিনিয়ার হলেই শ্বাশুড়িমহলে তার দাম চাঁদের পাথরের চেয়েও বেশি হয়ে ওঠে। আর আমাকে দেখেন, এমন প্ল্যাটিনামের টুকরো ছেলে, তাও আবার অমন ইউনিভার্সিটির, আর আমাদের দেশে তার কোনো কলকেই নেই! (সব দিদিরাই আমার প্রতি বালতি-বালতি স্নেহ বর্ষণ করে থাকেন – ফ্রম যাযাদি টু বুনোদি টু দিশাদি টু ভাবী টু ঠাম্মি অ্যাণ্ড অল, কিন্তু বয়সে ছোট সব মহিলাই (নমুনা – খুকি, সুরবালিকা) কেবলই হ্যাথা করে চলে!) বহুৎ না-ইনসাফি হ্যায়!

(দি এন্ড)


মন্তব্য

আশালতা এর ছবি

এহ্‌, আমার নামে সব মিথ্যে মিথ্যে কথা লিখেছে। ফের খালি পাই হাতের কাছে, তখন কানটি ধরে চানটি যদি না দেখিয়েছি ! রেগে টং

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

কৌস্তুভ এর ছবি

অ্যাঁ অ্যাঁ অ্যাঁ... তুলিদি, বাঁচাউ!

আশালতা এর ছবি

দাঁড়াও, কয়জনার হাত থেকে তুমি বাঁচো সেইটেই দেখি আগে !

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

তুলিরেখা এর ছবি

ওরে ভাই, কী লিখেছিস! একেবারে দেশেবিদেশের মুজতবাকে মনে পড়াচ্ছে! আর এত ভালো ভালো খাবারের মধ্যে পড়েও খেলি খুব অল্প, আহা এই না হলে সংযম শিক্ষা! দেঁতো হাসি
আমি তো এদিকে সচলেই আসতে পারছি না, এফ বি তেও প্রায় না, কত কী ঘটনা গল্প বেড়ানো ছবি সব হুড় হুড় করে পালিয়ে যাচ্ছে আর আর আমি সর্বিস সরোবরে হাবুডুবু খাচ্ছি। মন খারাপ
নে, এমন ভালো লিখেছিস, একদাগ ফ্রুট নাট চকলেট খা। হাসি

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

কৌস্তুভ এর ছবি

লইজ্জা লাগে

ঠাম্মিও আমাকে নাট চকলেটই দিয়েছে একটা, অ্যাত্তবড়!

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

বুঝলেন আশা'পা? আপনার ভার্শনটা তাত্তাড়ি ছাড়েন, নইলে ক্রমে ক্রমে এইসব আজগুবি কাহিনির রেফারেন্স লোকে টেনে টেনে এগুলোকেই সত্য বানিয়ে দিবে! চিন্তিত

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

আশালতা এর ছবি

আহা, ওইটা যে ঘোষণা দিয়ে বাতিল করে দিলাম। আমি লিখলে এই ডেঁপোর লেখার দিকে নাকি পাব্লিকে ঘুরেও তাকাবেনা বলে ফিঁচফিঁচ কচ্ছিল, তাইতে ঘ্যাচাং দিয়েছি। হাসি

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

দ্যা রিডার এর ছবি

দেঁতো হাসি কবে যে এমন একটা আয়জনে যেতে পারব ...।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার জন্য ভাত নাই হে ভ্রাতা। আগে আমার মতো পপুলার ছুডুভাই হোন! খাইছে

দ্যা রিডার এর ছবি

মন খারাপ খাইছে

আশালতা এর ছবি

হুঁ, সত্যপীর বলিয়াছেন, নো রাইস ফর গুড পিপল। [গভীর দার্শনিক ভঙ্গিতে মাথা নাড়ানোর ইমো]

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

দ্যা রিডার এর ছবি

আশা দি আপনিও এমন করে বলতে পারলেন ? শুধু নাহয় কমেন্ট এ দেই , তাই বলে আমার বুঝি মন চায়না একটু ভাল মন্দ খাই আর আড্ডা দেই ? ওঁয়া ওঁয়া

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

এগুলা সব গভীইইইইইর শরযন্তর ... গভীইইইইর শরযন্তর...

যাউকগা, সবার অ্যাত্তগুলো করে নাম কেন হে?! যারা চেনেন না তাদের জন্যে কেমন কনফুইজিং হয়ে যেতে পারে, আমি নিজেই প্রায় সবাইকে চিনেও তালগোল পাকায়ে ফেলছিলাম প্রায়। আর লেখাটা একবারে পুরাটা না দিয়ে দুইদিনের গল্প দুইবারে এলে হতো, কেমন যেন হুড়মুড় তাড়াহুড়ো লাগলো পড়তে।

আর যা বলছিলাম, গভীর ষড়যন্ত্র, যারা উপস্থিত ছিলেন তাদের সবার একটা করে ভার্শন না পেলে বোঝা যাচ্ছে না গঠনা আসলে কী ছিলো... চিন্তিত

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

বেশি আড্ডা দিলে সবাই এতো আপন হয়ে যায়, তখন পাঠকের কাছে তারা যে পর সেইটা আর খেয়াল থাকে না দেঁতো হাসি

ঠাম্মিকে বলা হোক তেনার রূপকথাটাও শোনাতে!

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ছোঁড়াটা বড্ড খারাপ! শুধু কানমলাটা বহোত নাইন্সাফি হয়ে গেছে, হাত পা চাট্টি ভেঙ্গে গোল করে দেবার দরকার ছিলো! :|

দাদার থেকে নাম্বার নিয়ে ফোন দিয়ে ভাবলুম কৌ এসেছে, একটু বাজিয়ে দেখি কেমনতরো বাজে! এম্মা, দেখি এ এক্কেবারে মিনমিনে বিল্লি! রাত এগারোটায় তার নাকি ঘুম পায়। ওসব জার্নিটার্নি সব বাজে কথা, ছোঁড়াটা বড্ড ডেঁপো, যেই দেখেছে ধমক দিতে যাচ্ছি সেই মিনমিনিয়ে বাস ল্যাগ নাকি ঘোড়ার ডিম বুঝিয়ে ঘুমাতে গেলো!

দাড়া বাকিটা বলছি, আগে একজনকে প্যাদানি দিয়ে আসি!

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

কৌস্তুভ এর ছবি

নেহি নেহি! তুলিদি, আবারো বাঁচাউ!

সিমনভাইয়ের ওই ঘটনার ছবিসহ পোস্টটা খুঁজে পেয়ে জুড়ে দিলাম খাইছে

তাপস শর্মা এর ছবি
কৌস্তুভ এর ছবি

অন্যকেউ এর ছবি

দিলো সব গুপ্তকথা ব্যক্ত করে!

চোখে দেখা ছোটো ছোটো ঘটনাগুলো এভাবে রসালো করেও তাহলে দেখা যায়! মিষ্টান্নমিতরেজনা বটে! শোনো, বৈদেশে গিয়ে এই যে সবার নামে কুৎসা করে বেড়াচ্ছো, এই মাঘে কিন্তু শীত শেষ হচ্ছে না, পরের শীতে তোমার দফা রফা করা হৈবেক.. (শয়তানি হাসি ইমো!)।

এত্তবড়ো লেখা লিখে হাসিয়ে গড়াগড়ি খাইয়ে আধমরা করে দেবার জন্য কৌস্তুভের ঠ্যাঙে দড়ি বেঁধে ফাঁসি দেওয়া হোক। বা রায়হানা বীরের বাইকে দুঘন্টার রাইড শাস্তিস্বরূপ দেওয়া যেতে পারে!

যাক, পরীক্ষার পূর্ব রাত্রির অভিজ্ঞতা হিসাবে এরকম জম্পেশ আর মুখরোচক আর সুস্বাদু লেখা পেয়ে মন্দিল গার্ডেন গার্ডেন হয়ে গেলো। সর্বাঙ্গসুন্দর! হাসি

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

কৌস্তুভ এর ছবি

যাহ বেটা, তুঝকো অনেক আশীর্বাদ কিয়া। তু আচ্ছা প্রশংসা করতা হয়। লে লে প্রসাদ লে।

যদুদত্ত  এর ছবি

বেশ ভালো লাগলো পড়ে ... মনে হলো বেশ একটা উৎসবমুখর পুজোবাড়ির দালানে বসে বসে একটা বিশাল যৌথ পরিবারের ভাইবোনদের মধ্যে খুনসুটি দেখছি আর হাসছি !

কৌস্তুভ এর ছবি

দেঁতো হাসি

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

চলুক
অনেক মজা লাগলো পড়ে! এমন আদর-যত্ন পাওয়ার জন্য হইলেও সচলে পুরোদমে লেখালেখি শুরু করতে হবে দেখতেসি!

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

কৌস্তুভ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

টিউলিপ এর ছবি

কথা দিয়েছিলাম মন্তব্য করব, তাই এলাম। নইলে এইসব আজেবাজে প্রবাসীদের হিংসাজাগানিয়া পোস্টে আমি মন্তব্য করিই না।

তবে কথা হলো, এখানের মাত্র কয়েকজনের সাথেই আমার দেখা হয়েছে, নেটে আলাপ আরো কিছু লোকের সাথে। আর তাদের মাঝে একজনের সাথেই সারা দিন কাটিয়েছি, নেটেও প্রায় প্রতিদিন আড্ডা মারি। আমার সে প্রিয় দুষ্টু বালিকার চরিত্র এভাবে হনন করার অপচেষ্টার জন্য তীব্র প্রতিবাদ জানাই। আর সেইসাথে অন্যদের চরিত্রে কালিমালেপনও কতখানি সত্যি, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করি।

ঢাকায় আমি টানা ছিলাম ২০০২ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত, তারপরেও টোটো কোম্পানির খোঁজ না জানায় অনেক জায়গাই এখনো দেখা হয় নি। যাই হোক, নেক্সট দেশে যাই, তারপর দেখা যাবে।

আর মিষ্টি, কৌয়ের কাহিনী পড়ে আসলেই মনে হল, ঢাকায় ভালো মিষ্টি কমই আছে। আমার কেন যেন বগুড়ার দই ভালো লাগে না অত, তার চেয়ে ঢের প্রিয় নওগাঁর দই, আর সিরাজগঞ্জে এনায়েতপুরে আমার বোন কিছুদিন চাকরি করেছিলো, খাজা ইউনুসে, ঐ হসপিটালটার পাশেই একটা দোকান ছিল, তার মিষ্টিগুলো এমন মজা, এই আকালের দিনেও ওরা খাঁটি দুধের মিষ্টি বানাতো, একটুও ভেজাল নেই, আর সেটা খেলেই বোঝা যেত। তাপ্পর টাঙ্গাইলের চমচম, দিনাজপুরের পেঁড়া, এমন কি আমাদের ময়মনসিংহের মালাইকারি (আদ্ধেক্টা চমচমের উপরে দইয়ের আস্তর দেওয়া) - এগুলো না খেয়ে কমেন্ট করলেই হবে? (ধুরো, দেশে থাকতে মিষ্টি খেতামই না, এই বাইরে এসে মিষ্টির নামেই জিহবা আর সংবরণ করতে পারি না, অভাবে স্বভাব নষ্ট)।

___________________

রাতের বাসা হয় নি বাঁধা দিনের কাজে ত্রুটি
বিনা কাজের সেবার মাঝে পাই নে আমি ছুটি

কৌস্তুভ এর ছবি

আমাকে কেউই তো এক্টাও ভালো মেঠাইয়ের দোকানে নিয়ে গেল না!
(তবে অনন্যা-জয়-সৌরভ এরা মিষ্টি কিন্যা জানি কোথায় নিয়ে যাচ্ছিল, আমাকেও অফার দিয়েছিল, কিন্তু তখন স্টার-প্রত্যাগত আমি আর আমাতে নাই)

দুবা'র সম্পর্কে খারাপ তো কিছুই বলিনি! কী যে বলো!

লাবণ্যপ্রভা এর ছবি

আহা, ময়মনসিংহের মালাইকারি... বুড়ির দোকানের সেই মাটির কাপে দই... না খেয়েই ভালনা বললে তো হবে না হাসি

কালো কাক এর ছবি

আআআহ মালাইকারি ! আহা ! দেঁতো হাসি

shafi.m এর ছবি

পড়তে অনেক মজা লেগেছে, এতটুকুই জানাতে চাইছিলাম। বাংলাদেশে গিয়ে এমন মজা করেছেন যে পড়েও মজা পেলাম। তবে অনেক নামে-নিকে তালগোল পাকিয়ে ফেলেছি। আশালতা (ঠাম্মি?), নৈষাদ, তুলিরেখা, বুনোহাঁস (বুনোদি), খুকিডোর (তিথীডোর), পান্ডোবদা, যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (যাযাদি), দুষ্ট বালিকা, নজরুল ইসলাম, সুরন্জ্না, সজল (লগ ইন করলাম না) বা যাদের প্রপার নিক ব্যবহার করেছেন তাদেরকে ছাড়া কমবেশী সবাইকে মিলিয়ে মিশিয়ে ফেলেছি বলে ধারণা করছি। দেঁতো হাসি

শাফি।

কৌস্তুভ এর ছবি

তাও তো অনেককেই চিনেছেন!

শাকিলভাই সচলে লেখান না বোধহয়। তন্ময়দা = ওডিন। কৌশিকদা = খেঁকশিয়াল। নজুভাই = নজরুল ইসলাম। সিমনভাই = বড় স্বামীউল = শাহেনশাহ সিমন। ছোট স্বামীউল = সামিউল আলম অনীক = উদ্ভ্রান্ত পথিক। জ্যোতিদাদা = জ্যোতির্ময় বণিক = সবজান্তা। নূপূরভাবী = নুপূরের ছন্দ। আঁকিয়ে পলাশ = আঁকাইন। খালিদ = পছন্দনীয়।

আর কেউ বাদ গেল?

shafi.m এর ছবি

চলুক মিলিয়ে আবারো পড়লাম। মজা করে লিখেছেন বটে! স্টার মানে কি স্টার কাবাব? ১৯ নাম্বারেরটা নাকি সিটি কলেজের পাশেরটা (বড়-সড় যেটা আরকি) ? আমার বন্ধুও ২ মাসের জন্যে বাংলাদেশ গিয়েছে, ওরো পেটে গন্ডোগোল হয়েছিল দেঁতো হাসি (অনেক কাহিল অবস্থা ছিল যদিও)

শাফি।

কৌস্তুভ এর ছবি

তাই হবে, বন্ধুরা যে সবচেয়ে উমদাটাতেই নিয়ে যাবেন এ নিয়ে আমার কোনো সন্দেহ নেই দেঁতো হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আড্ডার সুযোগে সন্মানিত মডু(দে)র বিষয়ে উসকানিমূলক আলোচনা এবং বক্তব্য লক্ষ্য রাখা হচ্ছে! সময়ে যথাযথ ব্যাবস্থা নেয়া হবে!

সুরবালিকা ভালো মেয়ে! বদ বালকদের এড়িয়ে চলে! চোখ টিপি

দেশ ছাড়ার আগে সবশেষের সচলাড্ডা ছিল সম্ভবত আমার দাফন পর্ব! নজুভাইয়ের বাসায় আধপেটা খেয়ে সহ্য হলনা বলে সবাই নিয়ে আমাকে নিংড়ে সামনের কী যেন বদ হোটেলে ভরপেট খেয়ে নিল! তারপর শাহবাগের কঞ্চিপায় আড্ডা দিয়ে খ্যা খ্যা করে হাসতে হাসতে বিদায় দিয়ে দিল সবাই! বালিকারা অবশ্য খুব মুখভার করে ছিল! আমিও তাদের অপাত্রে ছেড়ে যেতে হবে ভেবে বেশ মনোকষ্টে ছিলেম...!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

এমন গাঁজাগুল দিয়া আর কদিন চালাইবেন? খাড়ান, আমি আইতাছি জার্মানি, আপনার বৈদেশি বান্দবীদের আপনার কীর্তিকলাপ অনুবাদ করে ডাঙ্কে-সহ বুঝিয়ে দিয়ে আসব...

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

তোমার মেমোরিতে গোল পাকিয়ে গেছে দেখছি। যেসব খাবার খাওয়াইনি সেসব খাবারের কথা বলেছ। ঐ রাতে রাজ্জাকে কাচ্চি ছিলনা মোটেই, আর গ্লাসি নেয়া হয়েছিল বটে তবে সেটা সিমন সাঁটিয়েছে। তুমি চিকেন বিরিয়ানী, নান রুটি, চিকেন টিক্কা, চিকেন ঝাল ফ্রাই আর ফালুদা খেয়েছিলে। তুমি যে মিষ্টিরসিক এই কথাটা একবারও যদি বলতে তাহলে খোদ রাজ্জাকে বসেই মালাইচাপ খাওয়ানো যেত। তবে ভ্রমণকালে দুগ্ধজাত জিনিস এড়িয়ে চলাই ভালো। স্টার-মিতালী-রাজ্জাক-রয়্যালে খেলে পেটের ওপর চাপ পড়া স্বাভাবিক। আমি তোমার এই সমস্যা হতে পারে আশঙ্কা করেছিলাম। দুর্ভাগ্যবশত সেটা সত্য হয়ে গেল!

মানুষ যে বিষয়ে সবচে' কম জানে সেটা হচ্ছে নিজের শহরের আবাসিক হোটেল। ঢাকার বাসিন্দারা তাই ঢাকার আবাসিক হোটেলের ব্যাপারে জানে কম। আমি কিছুটা জানি ঠ্যাকায় পড়ে। গুলিস্তান জায়গা সুবিধার না হলেও পাবলিক ট্রান্সপোর্টের অ্যাভেইলিবিলিটি কথা বিবেচনা করে বা গ্রাড-স্টুডেন্টের পকেটের কথা ভেবে গুলিস্তানের ধারে-কাছের আবাসিক হোটেলে থাকাই ভালো। ভবিষ্যতে কারো গেস্ট ঢাকায় বেড়াতে আসলে তার আবাসনের ব্যাপারে এটা মাথায় রাখবেন। তবে গেস্টের কাজ যদি মূলত উত্তর ঢাকায় হয় তাহলে তার গুলশানে থাকাই ঠিক হবে।

পেটের দায়ে শুক্র-শনিবার আটকা পড়ে যাওয়ায় পুরনো ঢাকার টো-টো আর নজরুলের বাসার সচলাড্ডা দুটোই মিস্‌ করেছি। তোমার সাথে আরো আড্ডা মারার ইচ্ছে ছিল। কী আর করা! কপালে নেই।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

রেজওয়ান এর ছবি

কৌস্তুভের সাথে দেখা হলেও প্রান ভরে কথা হলো না। যেমন আমি জিজ্ঞেস করেছিলাম কাকে যেন যে ও উঠেছে কোথায়, দেখলাম তার কাছেও তথ্য নেই। এই দুটো পোস্টে খোলাসা হল। জয়তু ব্লগিং।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনি তো আমাকেই জিজ্ঞেস করতে পার্তেন, দাদা! আমি তো তাও আপনি যে কলকাতা এসেছিলেন ইত্যাদি মনে করে আপনার সাথে কথা কয়ে এলাম!

কৌস্তুভ এর ছবি

হেঁহ হেঁহ, আমি জান্তুম! আমি শুধু ভাবছিলাম কখন আপনি এসে এইগুলা বিস্তারিত লিখে দিয়ে যান কমেন্টের ঘরে, যেমন দিয়েছিলেন ফেসবুকে দেঁতো হাসি

আমাদের বাসওয়ালা তো গুলিস্তানের বদলে কেবলই আমাদের গুলশানে পাঠিয়ে দিতে চাইছিল। নেহাত আপনি ছিলেন তাই...

আপনি, তন্ময়দা, প্রথমদিনের দুই মুরব্বিকেই তো আর দেখতে পেলুম না। আচ্ছা, নেক্সট টাইম!

লাবণ্যপ্রভা এর ছবি

গল্প মজারু হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

থ্যাঙ্কু হাসি

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আসেন পরেরবার, গুপ্ত সমিতির রসময় সব অধ্যায়ের সাথে ওরিয়েন্টেশান করিয়ে দেবো। শয়তানী হাসি

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে, আপনি নিজেই কি কম রসময় লোক! দেখা হল না, কী করব মন খারাপ

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

আরে দাদু, আমি যে রসময় লোক সে তো আমি নিজেই জানি। কিন্তু রস-টস এট্টু ভাই বেরাদারদের সাথে নিয়ে ভাগ দিয়ে খাওয়া লাগেনা! যাহোক, দিন দুনিয়ার অবস্থা ভালো না। আমি রসময় লুপ্তে পরিনত হওয়ার আগেই ভিজিট দিয়েন।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

কল্যাণ এর ছবি

আহা রস, তুমি কোতি? মন খারাপ

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

অদ্রোহ এর ছবি

খোমাখাতায় আগেই ছবিটা চেনা ছিল, তাই অনেক খুঁজেপেতে যখন আহসান মঞ্জিলের গলিঘুপচি থেকে আপনাদের পাকড়াও করলাম তখন আপনার মার্কামারা বদনখানি দেখে ঠাউরে নিতে মোটেই কষ্ট হলনা, মুহাহা!! ইনিই সেই ব্যক্তি...

শরীরটা ওইদিন হঠাৎ করে বিগড়ে না গেলে সকাল থেকেই আপনাদের ভালমত জ্বালাতে পারতাম, কিন্তু পেট-পিঠের ধকল সামলাতে না পেরে ভালমত কথা কওয়া তো হলইনা, গোটা ঝটিকা সফর থেকেই আমার নামটাই বেমালুম হাওয়া হয়ে গেল মন খারাপ

--------------------------------------------
যদ্যপি আমার গুরু শুঁড়ি-বাড়ি যায়
তথাপি আমার গুরু নিত্যানন্দ রায়।

কৌস্তুভ এর ছবি

হ, রুগ্ন মানুষকে পচায়ে আর কষ্ট দিলুম না খাইছে

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

সত্যমিথ্যের বেসাতি বসিয়ে দিব্যি বকে যাচ্ছিস রে ছোঁড়া... ম্যালাই হলো, বসে জিরো এই বেলা হাসি

... না চাইতেই অমন একটা বই ফট করে ধরিয়ে দেবেন বুঝতে পারিনি ভাই কৌস্তুভ, অনেক অনেক ধন্যবাদ। পরেরবার আসলে ভারী কোন অঙ্কের বই না দিয়ে আর ছাড়বো না আপনাকে।

কৌস্তুভ এর ছবি

কোলাকুলি

ভারী অঙ্কের বই আমি বুঝব কী করে?

ওডিন এর ছবি

লেখা বড়ই উমদা হয়েছে! আমি আড্ডাটা মিস করলাম, হিংসায় জ্বলেপুড়ে খাক হয়েযেতে পারি, এই ভয়ে ফেইসবুকে তোমার অ্যালবামে ঢোকার সাহস পাচ্ছিনা হাসি

আর

বললুম, বেশ চেনা চেনা, বেশ একটা ককটেল। যদিও কলকাতার চেয়ে বেশি পুরোনো আর লোকও অনেক বেশি, মাঝে মাঝে কলকাতার মতই একটা আমেজ পাওয়া যায়। নতুন গজানো বাড়িঘর-শপিংমলগুলোও একই রকম। আবার পুরোনো ঢাকায় বিশেষ করে ইসলামী স্থাপত্যগুলোর আশপাশে, পুরোনো দিল্লির মত লাগে অনেকটাই, যেখানে ছাত্রজীবনে আমরা মাসব্যাপী প্রচুর ফটোওয়াক করে একেবারে চেটেপুটে খেয়েছিলাম শহরটাকে। আর পুরোনো ঢাকার হদ্দ গলিঘুঁজির সঙ্গে বেশ মিল পেলাম কাশী-বেনারসের – শুধু আরো অনেকটা নোংরা – কাদা (গঙ্গাজলের), আর ফুল-বেলপাতা-গোবর-সিঁদুর রাস্তাঘাটে ছড়ানো থাকলেই ব্যাস!

আমি আর শাকিল মিলে তোমাকে পুরোনো ঢাকা যদি ঠিকমতো দেখাইতে পারতাম, তাহলে শেষ লাইনটা অন্যভাবে লিখতে! হাসি এইবার তো পারলাম না, নেক্সটা টাইম অবশ্যই। আর যাই বলো, দুইদিনে কি ঢাকা আস্বাদন হয় নাকি, এইটা হাজার হলেও একটা মেট্রোপলিস! দেঁতো হাসি সেইম গোজ ফর দ্য প্রবলেম ফর মিষ্টান্ন ঠ্যু

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে তন্ময়দা, একদিন বাদে তোমার সঙ্গে আর দেখাই যে হল না, এত কিছু তো পরের ব্যাপার মন খারাপ

কৌশিক দত্ত এর ছবি

ছোঁড়াটা দুইদিনেই বাংলাদেশ ঘুইর‍্যা বেজায় এঞ্জয় করসে বুঝতাসি। ল্যাখার কথা নতুন কইর‍্যা কমু না, আমি যে তার ল্যাখাপত্রের পাংখা হেইডা নতুন কইর‍্যা বুঝানের কিছু নাই। কিন্তু যা পষ্ট হইতাসে, যে বাংলাদেশের মানুষের দিল-এ অনেক ভালবাসা ভরা। আমার ছোটমামা বহু বহু বছর আগে একবার কর্মসূত্রে ঢাকা আইস্যা পুরোন চিনা-অচিনা আত্মীয়স্বজনের লগে গল্প কইর‍্যা প্রচুর আদর খাইয়্যা গ্যাছে শুনছিলাম। দিল্লীতে কর্মরত থাকাকালীন রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ-এর একজন প্রফেসর, ডঃ আবদুল্লা সায়েব এবং তার পরিবারের লগে পরিচয় হইসিল, আর অল্পদিনেই ভারি আপন কইর‍্যা নিসিলেন আমারে। স্বল্পপরিচিত, অপরিচিত লোকজনের লেইগ্যা আদর, ভালবাসা, আপ্যায়ণ - এমনটা তো আজকাল দেখা দুষ্কর হইয়্যা উঠসে, তাই এই লেখাটা পইড়্যা প্রাণে ছোঁওয়া লাগল।

আমার বাবার দিক ঢাকা বিক্রমপুর, মা'র দিক চাটগাঁ-মৈমনসিং, শ্বশুরবাড়ি পুরোটাই সিলোইট্যা - কিন্তু হায়, বাংলাদেশটাই আমার এখনও দ্যাখা হইয়্যা উঠলনা। মন খারাপ

কৌস্তুভ এর ছবি

খাইছে

মৃত্যুময় ঈষৎ এর ছবি

তৃপ্তি নিয়ে পড়লাম দাদা চলুক । চমৎকার সময় কাটিয়েছো। বঙ্গবন্ধুর বাড়ির কাছাকাছিই থাকি, ইশ যদি কোনভাবে জানতাম তুমি আছো, ঠিক দেখা হয়ে যেত!!! আমারই ভুল, তোমাকে ম্যাসেজে না যোগাযোগ করে বুদ্ধি করে তন্ময়দার কাছে তোমার সেল নাম্বারটা চেলেই হয়ে যেত!!! মন খারাপ


_____________________
Give Her Freedom!

কৌস্তুভ এর ছবি

কী আর করা মন খারাপ

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

চমৎকার লাগলো। নতুন করে আফসোস হলো এমন একটা আড্ডায় না থাকতে পারার জন্য।

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

দিগন্ত বাহার* এর ছবি

স্টারের গুপ্ত সভায় বসে থেকে দেখেছি আপনাকে, আরে এই ভদ্রলোকই কিনা এমন রসালো-রসালো লেখা ছড়িয়ে বেড়ায়। হাসি

'দেবতা ঘুমোলে আমাদের দিন, দেবতা জাগিলে মোদের রাতি'

আজ্ঞে এটা আরেক্টু চেক মেরে মনে পড়তে হয় যে ভাইডি! গুপ্ত-সভা যে সে-ই প্রথম! আপনি আরো বার-কয়েক আসুন না, মুক্ত সভায় বসি! হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

আরে মিয়া, আড্ডাকে না বলা যায় কখনও! দেঁতো হাসি

রানা মেহের এর ছবি

প্রিয় কৌস্তুভ

আপনার বাংলাদেশ সিরিজের দুটো লেখাই পড়েছি দুদিন আগে। পড়ে একধরনের অস্বস্তি হয়েছিল। এখন এমন একটা অবস্থার মধ্যে আছি, চাইলেও অস্বস্তিকে ঠিকঠাক গুছিয়ে বলার পরিস্থিতি পাইনা। তাই আপনাকেও বলা হলোনা। পরিচিত দুয়েক জনের সাথে কথা বললাম। কেউ আমার মতো অস্বস্তিতে পড়েছে, কেউ পড়েনি।

আজ ফেইসবুকে বন্ধুরা ট্যাগ হবার সুবাদে আপনার অ্যালবামে ঘুরে আমি হাসতে হাসতে শেষ। কিছু ছবি দেখে, কিছু শিরোনামে, কিছু মন্তব্য পড়ে। তাই মনে হলো অস্বস্তিগুলো আপনাকে জিজ্ঞেস করি। আপনার কাছে ব্যাখ্যা নিশ্চয়ই আছে।

প্রথম লেখায় বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আপনি 'থার্ড ওয়ার্ল্ড' শব্দটা ব্যবহার করেছেন।এই শব্দ খুব গুণবাচক কোন শব্দ না এবং সাধারণত অর্থনৈতিক কোন প্রসঙ্গ ছাড়া ব্যাবহ্রিত হলে হয় তাচ্ছিল্য অর্থে। বাংলাদেশ ব্যাপক ধনী কোন দেশ নয়। তবে উন্নয়নশীল দেশ তো বটে। উন্নয়নশীল না বলে থার্ড ওয়ার্ল্ড বলাটা কেমন যেন লাগলো।

দ্বিতীয় লেখাটায় আপনার সুক্ষ্য হিউমার দেখে অনেক মজা পেয়েছি। কিন্তু অস্বস্তির পাল্লা বেড়ে গেছে আরেকটু।

আপনি বাবাকে সচলদের কত লিবারেল কেন বুঝিয়েছেন ধরতে পারলাম না। সচলদের ছাড়া অন্যসময় কি হিন্দু মুসলিম মিশলে আলাদা করে বোঝা যায়না? যদি বোঝা না গিয়ে থাকে, তবে সেটা কোথায়? ভারতে না বাংলাদেশে? আমার বুঝতে ভুল হয়ে থাকতে পারে, কিন্তু এই লাইনটা পড়ে মনে হলো আমাদের দেশে হিন্দু মুসলিম একসাথে মিশতে পারেন না। শুধু আমাদের সচলরা আলাদা। আপনার কি তাই মনে হয় কৌস্তুভ?

আপনার পরের প্যারা

মানুষগুলো খুবই লিবারেল, কে হিন্দু কে মুসলিম সেটা তুমি ধরতেও পারবে না দেখে, দিব্যি সবাই মিলেমিশে আছে। অনেকে তো আবার আমার মতনই পাষণ্ড নাস্তিক, তবে বাংলাদেশে বসে প্রকাশ্যে আমার মত ‘জঙ্গি নাস্তিক’ হওয়াটা মুশকিল বলেই শুনেছি। (বাংলাদেশে ধর্মীয় (ইসলামী) আবহাওয়াটা যে বেশি সেটা একটু ঘুরলেই বোঝা যায়, বাসে করা এতটা ঘোরাঘুরির সময় অজস্র দেখেছি ‘ওরছ্‌ পাক্‌-এ-শাহ্‌ চন্দ্রপুরী’ ইত্যাদি ইত্যাদি পীরবাবাদের পোস্টার, আর অগুন্তি পলিটিকাল পোস্টার, অ্যাব্বড় চকচকে ভিনাইল করা। কলকাতায় তুলনায় ধর্মীয় পোস্টার অনেক কম, কিছু স্মিতহাস্য ক্রোড়পতি উত্তরভারতীয় বাবা’দের ছবি আজকাল কিছু কিছু জায়গায় দেখা যাচ্ছে ক্রমবর্ধমান মাড়োয়ারি-গুজরাটি সোসাইটিগুলোর কল্যাণে

এই প্যারায় স্পষ্ট আপত্তি জানাচ্ছি। না, পীরবাবাদের পোস্টারের ব্যাপারে নয়। আপনি যেভাবে তুলনা করেছেন তার সাথে। আপনি বাংলাদেশে পীরদের আধিক্য দেখতে পাচ্ছেন আর তার তুলনা দিচ্ছেন কলকাতার সাথে, যা পুরো ভারত নয়, ভারতের একটি অংশ মাত্র। আপনি নিজে যেখানে বলছেন মাড়োয়ারী, গুজরাটিদের কল্যানে এখন উত্তর ভারতীয় কিছু বাবার ছবি দেখা যায়, তাহলে গুজরাট কিংবা ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে তো অবস্থা বাংলাদেশ থেকে খুব আলাদা হবার কথা নয়। দয়া করে বাংলাদেশের সাথে তুলনা দেয়ার সময় শুধু কলকাতার তুলনা দেবেন না।

আর বাংলাদেশে নাস্তিকদের অবস্থা নিয়ে আপনি কি আসলেই পরিষ্কার ধারনা রাখেন? জঙ্গী নাস্তিক মানে কি? আপনি ঠিক কীরকম নাস্তিকতাবাদের পরিচয় দিয়ে ভারতে আছেন আর বাংলাদেশে নাস্তিকেরা থাকতে পারছেন না? রায়হান আবীরের সাথে তো আপনার পরিচয় আছে। এই বাচ্চা ছেলেটা দেশেই থাকে। আমাদের মতো নিরাপদ দুরত্বে বাইরে থাকেনা। সে লেখে ধর্মের বিরুদ্ধে ধর্মীয় কুসংস্কারের বিরুদ্ধে। শুধুমাত্র ব্লগে নয়। রীতিমতো বইমেলায় বই বের করে। তাকে দেখে কী মনে হয় আপনার?

আরো বেশি খারাপ লাগে এই অংশের সাথে যখন আপনি সচলদের হিন্দু মুসলিম একসাথে মেশার বর্ণনা মেশান। আমি বিশ্বাস করি, আপনি ইচ্ছে করে করেন নি। কিন্তু এই অংশ পড়লে একটা ধর্মীয় সাম্প্রদায়ীক দেশের ছবি ভেসে ওঠে, যেখানে দুই ধর্মের মানুষের একসাথে মেশা একটা গল্প করার মতো বিষয়, হাটে মাঠে ঘাটে ধর্ম ছড়ানো আছে, নাস্তিকেরা আছে ভয়াবহ বিপদে।

তারপর আসলো রপিকুলের কথা। এই জায়গাটায় এসে রপিকুল আর রপিকুলদের জন্য টনটন করে বুকের ভেতর। কিন্তু একইসাথে মনে হয়, পুরো লেখা জুড়ে আমাদের দেশের অপ্রাপ্তি আর নিপীড়নের কথা যতটা আছে, বন্ধুদের চমতকার বর্ণনা ছাড়া আমার দেশের ভালো কিছুর কোন কথা নেই কেন?

আমি বলছিনা, আপনি যা বলেছেন অসত্য বলেছেন। কিন্তু একপেশে বলেছেন। আপনার লেখা পড়ে আমি অবাংলাদেশী হলে এরকম একটা ধর্মান্ধ, যোযাযোগ ব্যাবস্থার করুন হাল বিশিষ্ঠ থার্ড ওয়ার্ল্ড কোন দেশে যাবার আগে দুবার ভাবতাম।

আমার অস্বস্তি খুলে বললাম। দয়া করে আপনাকে হিন্দুত্ববাদের দালাল কিংবা সাম্রাজ্যবাদে বিশ্বাসী বানানোর চেষ্টা করছি, এরকম কিছু ভেবে বসবেন না।ক্ষমা চেয়ে নিচ্ছি কোনভাবে আপনাকে আঘাত করে থাকলে।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

দিগন্ত এর ছবি

আমি কিছুটা লিখি -
১) থার্ড ওয়ার্ল্ড শব্দটা খারাপ কিছু না, ওটাকেই প্যাকেজ করে উন্নয়নশীল তকমা লাগানো হয় একটা পজিটিভিটি আনার জন্য।
২) হিন্দু-মুসলিম মেশার ব্যাপারটা মনে হয় ১৯৪৭ সালের দেশভাগের আগে বেশ কিছুটা সত্যি ছিল। আজকের যুগে বক্তব্য বেমানান, প্রসঙ্গে আসার কারণ নেই।
৩) আমার মনে হয়না কৌস্তুভ গুজরাটে গেছে কখনও।

বাকি উত্তর কৌস্তুভ দিক।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রানা মেহের এর ছবি

দিগন্ত
১) থার্ড ওয়ার্ল্ড শব্দ গুণবাচক না হলে পজিটিভিটি আনার জন্য অন্য শব্দের তকমা লাগানোর প্রয়োজন পড়তো না।যেখানে অন্য একটা শব্দ ব্যাবহার করে পজেটিভ এপ্রোচ আনা যাচ্ছে, সেখানে উন্ন্যনশীল কেন বলবো না। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ। ত্বতীয় বিশ্বের দেশ না
২) ছিল। তখনকার পুরো ভারতেই। একনকার বাংলাদেশ অংশে শুধু না।
৩) গুজরাট বা ভারতের অন্যান্য অংশ জানার জন্য সেখানে যেতে হবে? কৌস্তুভ এতো শিশুসুলভ জ্ঞানের অধিকারী নয় নিশ্চয়ই। তারপরও যদি সন্দেহ থাকে তাহলে বলা উচিত ছিল কল্কাতায় দেখিনি ভারতের বাকি অংশের কথা জানিনা।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

তাপস শর্মা এর ছবি

ভারতকে এখনো থার্ড ওয়াল্ড বলা হয়। তৃতীয় বিশ্বের সমস্ত উপকরণ ইহাতে মজুদ আছে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও সেই একই কথা প্রযোজ্য বলে মনে হয়। আসলে আমাদের এশিয়ার বেশীরভাগ দেশই এখন তথাকথিত উন্নয়নশীল । কিন্তু এর আগে পিছে তৃতীয় বিশ্বের তকমাটা সাঁটা আছে। তাই এই শব্দটাতে মনে হয়না দোষের কিছু আছে।

রানা মেহের এর ছবি

ভারঙ্কে থার্ড ওয়ার্ল্ড বলা হলেই এই শব্দ ভালো হয়ে যায়না।উন্নয়নশীল শব্দটা আপনার তথাকথিত মনে হতে পারলে আপনি থার্ড ওয়ার্ল্ডে দোষের কিছু দেখেন না কেন? এই শব্দ তকমা হিসেবে সাঁটা আছে এই শব্দের মধ্যে তাচ্ছিল্য লুকিয়ে আছে বলেই উন্নয়নশীল শব্দটা ব্যবহার করা হয়।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

কৌস্তুভ এর ছবি

রানা মেহেরজান,

১. আপনি আগে একটা জিনিস খেয়াল করুন। এই লেখাটার টার্গেট অডিয়েন্স কারা? কারা হুমকি-ধমকি দিয়ে এই পোস্টটা লিখিয়েছে?

এই পোস্টটা লেখা ঢাকাস্থ ও অন্যান্য সচলবন্ধুদের জন্য, আমার/তাদের যে বন্ধুরা তাদের পরিচিত (যেমন শাকিলভাই, অন্দ্রিলা), তাদের জন্য। এই লেখাটা মূলত তাদেরই গল্প একটু 'পচানি' সহযোগে তাদেরই কাছে পরিবেশন করা, internal reference-ওয়ালা গল্প/স্মৃতিচারণ/হিউমারই এই লেখাটার মূল উপজীব্য। সচলের সঙ্গে একদম সম্পর্কহীন পাঠক হয়ত পড়ে কিছুটা মজা পেতেও পারে, কিন্তু খুকিডোর যে তিথীডোর, তাকে যে খুকি বলা খ্যাপানো হয়, তার লেজেন্ডারি কবিতাপ্রেম, এগুলো যাদের জানা তাদের কথা ভেবেই এটা লেখা। আর তাই মূল দর্শনীয় জিনিস যেমন লালবাগ কেল্লা বা রঙমহল নিয়ে তেমন কথাই নেই, যেটা ঠিকঠাক একটা ভ্রমণ-কাহিনী লিখতে গেলে আসত - প্রধানত বাংলাদেশী এই সচলবন্ধুরা তো এসব কতবারই দেখেছে!

অতএব "অবাংলাদেশী হলে এরকম একটা ধর্মান্ধ, যোযাযোগ ব্যাবস্থার করুন হাল বিশিষ্ঠ থার্ড ওয়ার্ল্ড কোন দেশে যাবার আগে দুবার ভাবতাম" এমন সচল-সম্পর্কহীন হাইপোথেটিকাল কোনো পাঠকের কী মনে হতে পারে সে দৃষ্টিভঙ্গিতে এ পোস্টটা লেখা নয়।

আর ওই টার্গেট অডিয়েন্সকে 'ওহে পাঠক, শোনো, বাংলাদেশের এইটা ভালো, বাংলাদেশের এইটা খারাপ' এগুলো বলা মায়ের কাছে মাসির গল্প হয়ে যাবে। যা বলতে চেয়েছি, সেগুলো পার্সোনাল গল্প - পার্সোনাল বেড়ানোর গল্প, পার্সোনাল আড্ডার গল্প।

২. ফাঁকে ফাঁকে যেগুলো মিশে আছে, সেগুলো স্বগতোক্তি, নিজের/নিজের শোনা গল্প। তন্ময়দার পরিবারে একাত্তরে যা হয়েছে, সে গল্পও তো আমি শোনাতে যাই নি। সেগুলো হয়ত কেউ তন্ময়দার কাছে শুনেছেন, কেউ শোনেননি। সেটা আমি শোনাতে যাবার কেউ নই। আমি যেটুকু শুনেছি, ওই মাঝির গল্প, রপিকুলের গল্প, সেটুকু বললাম।

'ধর্মান্ধ' শব্দটা আমি ব্যবহার করি নি। ধর্মীয় প্রভাব বেশি, সেটা দেখে মনে হয়েছে, বলেছি। যোগাযোগ ব্যবস্থার যে সমস্যাগুলোয় আমি পড়েছি, যার কিছু কিছু অনীক ইত্যাদি আগেই জানিয়েও রেখেছিল, তাই-ই বলেছি। (আপনি বাংলাদেশের উপর লোনলি প্ল্যানেট ইত্যাদি কোনো ট্র্যাভেলবুক দেখেন, তাতেও এই প্রসঙ্গগুলো উল্লেখ করে পাঠককে সাবধান করে দেওয়া আছে।)

এইবার সোজা কথা বলি - বাংলাদেশে আমার সবচেয়ে ভালো লেগেছে কি? মানুষগুলো। তাদের আন্তরিকতা, তাদের বন্ধুত্ব, তাদের আপ্যায়নের কথা কি বারে বারে আসে নি এই দুটো লেখায়? যাওয়া মাত্র ডাব পেড়ে খাওয়ানো, পাণ্ডবদার বাসস্ট্যান্ডে অপেক্ষা করে এসে হোটেলে পোঁছে দেওয়া, এই সব পার্সোনাল ভালো লাগা/কৃতজ্ঞতার গল্প অকুন্ঠে বলেছি। নৈষাদদার সারাদিন সার্ভিস দেওয়ার কথা বলেছি। হয়ত ব্যজস্তুতিতে। তাতে চলবে না?

(আর "দেশের ভালো কিছুর কোন কথা নেই কেন?" এটা পুরো লেখাটা পড়ার পরেও আপনি বলতে পারলেন? ট্যুরিস্ট স্পটগুলোর বেশি বর্ণনা দিই নি, কেন সে কথা উপরে বিস্তারিত বললাম, তার পরেও স্মৃতিসৌধের জিওমেট্রি, স্টারের খানাদানা, এগুলোর প্রশংসা কি নেই? মুক্তিযুদ্ধ যাদুঘরের মর্মস্পর্শী প্রদর্শনীই যে তার সফলতা, সেটা কি লেখায় বোঝা যায় না? জানিনা, হয়ত যতটা আশা করেছিলেন কম আছে। কিন্তু মানুষদের ভালোত্ব'র কথা কি সেটা পুষিয়ে দেয় না?)

৩. আমি বাবা'কে যা বলেছি, সেটা প্রায়-কোট করেছি। সেই কথাটা একজন সচলবন্ধু বা একজন সম্পর্কহীন পাঠকের প্রতি তো বলছি না। সেই লোকটা একাত্তরের পর পিরোজপুর এসে ওই পরিবেশের জন্য ঢাকা অবধিও আসার সাহস পায়নি। ওই সময়ে যে হিন্দুরা বাংলাদেশ ছেড়ে পালিয়েছিল তারা এখনও সেই সময়ের ধারণাটাই মনে রেখেছে এবং আমাদের যাবার খবরে বাবাকে সাবধান করে দিতে ভারি উৎসুক ছিল। তাকে এখনকার ঢাকার আমার বন্ধুদের সম্পর্কে সংশোধিত ধারণা দিতে গেলে ওই 'মানুষগুলো খুবই লিবারেল' টাইপের কথাগুলো বলা কি ভুল? (আর তাকে নিয়ে এসে পরিচয় করিয়েছি সচলবন্ধুদের সাথে। তাদের বিষয়েই বলা ওই কথাটা। জেনারেল স্টেটমেন্ট, ঢাকা/বাংলাদেশের সম্পর্কে, করার কী দরকার?)

৪. পূর্ববঙ্গ নিয়ে লেখার সময়ে পশ্চিমবঙ্গের তুলনা দেব না? গোয়া-পন্ডিচেরি টেনে আনতেই হবে? তাও তো এসেছে, নরেন্দ্র মোদী'র কথা।

৫. বাংলাদেশে প্রকাশ্য নাস্তিক হওয়ার সমস্যা নিয়ে, আপনি রায়হানের কথা তুললেন যখন, রায়হানও ওই কথা বলেছে, বলে রাখি। আরিফুর রহমান, ধর্মপচারক এঁরা 'জঙ্গি নাস্তিক' যাঁরা তাঁদের বেশিরভাগেরই বিদেশে থাকাই সুবিধা, এ নিয়ে তার সঙ্গে যেমন কথা হয়েছে, হয়েছে অমন অনেক লোক এবং অনেক সচলের সঙ্গেই। নাস্তিক্যবাদের তত্ত্ব নিয়ে একটা বই লেখা আর প্রকাশ্যে জঙ্গি নাস্তিক হওয়া কিন্তু এক জিনিস না। আর ওই রায়হানও যে আজকাল মুমিনভাইদের থ্রেট পেতে শুরু করেছে সে খবরও রাখেন নিশ্চয়ই?

জঙ্গি নাস্তিক কাকে বলা চলে? চ্যারিটি বিগিনস অ্যাট হোম - ধরেন, ধর্মকারীতে নবীজির নানা কেচ্ছাকাহিনী উদ্ঘাটন করে যে প্রবন্ধগুলো প্রকাশিত হয়, বাংলাদেশে কয়জন মুসলিম পরিবারের নাস্তিক সেটা নিয়ে বাড়িতে আলোচনা করতে পারবে? ঠিক কী ঘটনাকে ভুজুংভাজুং দেওয়ার উদ্দেশ্যে ধর্ষণের ক্ষেত্রে চার সাক্ষী লাগার নিয়ম তিনি চালু করেন, যার জন্য আজ আরবদেশে মহিলাদের অমন দুর্দশা - তার প্রকৃত কারণটা কয়জন বাড়িতে ব্যাখ্যা করতে পারবে?

রানা মেহের এর ছবি

কৌস্তুভ

১) শুধুমাত্র আপনার টার্গেট অডিয়েন্স দের জন্য লেখা হলে সেখানে শুধু তাদের কথাই থাকা উচিত, তাই নয় কি? হ্যা তাদের কথাই বেশিরভাগ আছে কিন্তু তার সাথে আছে বাংলাদেশ নিয়ে আপনার কিছু বক্তব্য। আমার কথা সেই বক্তব্য নিয়ে। লালবাগ কেল্লার বিমূর্ত সৌন্দর্য কিংবা অসাড়তা আপনি কেমন দেখলেন সেই প্রশ্নতো করিনি। যখন আপনি একটা দেশের ধর্মীয় সামাজিক আবহাওয়া বিষয়ে আলাপ করবেন, সেটা তখন আর বন্ধুদের নিয়ে আড্ডার মতো শুধুমাত্র মজার লেখা থাকেনা। মজার কিংবা ব্যক্তিগত লেখায় ঐ বিষয়গুলোই আসার কথা না।

টার্গেট অডিয়েন্স এর ব্যাপারে আপনাকে মেইলে কথা জানাচ্ছি। প্লিজ ভাববেন না চেষ্টা করছি পেছনে কথা বলার। বিষয়টা আপনার ব্যাক্তিগত তাই। মেইল পড়ে আপনার ইচ্ছে হলে সেটা সচলে প্রকাশ করতে পারেন, আমার কোন সমস্যা নেই।

২) স্বগতোক্তিতে ভুল কিছু আছে, বলিনিতো। শুধু অপ্রাপ্তির কথাই উঠে এসেছে। তন্ময় কিংবা আরো কেউ কি আমদের দেশ সম্পর্কে ভালো কিছু বলেননি? আপনি নিজে দেখেননি ভালো কিছু? স্বগতোক্তি মানেই অপ্রাপ্তি হতে হবে? আবারো বলছি আম্পনি যা বলেছেন তা অসত্য নয়। কিন্তু একপেশে।

৩) আপনার বাবার কথা শুনে অনেক খারাপ লাগছে। কিন্তু আপনি লেখার ঐ অংশ টুকু পড়ে দেখুন একনকি আপনার জবাবেও পড়ুন। আপনি এখনো শুধুমাত্র আপনার ঢাকার বন্ধুদের সম্পর্কে সংশোধিত ধারণা দিচ্ছেন। পুরো বাংলাদেশ যে লিবারেল, সেই কথাটা বলছেন না। আপনার বাবার কিংবা ঐ সময় ভারতে প্রান হাতে নিয়ে পালানো মানুষগুলোর সাথে যা হয়েছে মানবতার জন্য আমাদের জন্য একটা বর্বর লজ্জ্বাকর অধ্যায়। কিন্তু তার মানে এই না আমরা কোন একটা গোষ্ঠিকে লিবারেল বলে দেশের বাকি অংশকে বর্ণনায় ধোঁয়াশা রেখে দেবো এমনকি বাবাকে পরিচয় করানোর জন্য হলেও।

৪) না। দয়া করে পূর্ববঙ্গ নিয়ে তুলনার সময় পশ্চিমবঙ্গের তুলনা দেবেন না।অন্তত শুধু পশ্চিমবঙ্গের। কারণ পূর্ববঙ্গ বলে এখন কিছু নেই। আছে বাংলাদেশ। আর একটা দেশের তুলনা অন্য দেশের শুধু একটা অংশের সাথে হয়না। পুরো দেশের সাথে হয়।

৫) রায়হান সত্যিই বলেছে। আমি জানতে চাইছিলাম, প্রকাশ্যে জঙ্গী নাস্তিক হয়ে থাকাটা কীকরে ভারতে নিরাপদ, বাংলাদেশে না। রায়হানও আজকাল মুমিন ভাইদের থেকে থ্রেট পায় এটা যেমন দেখেছি তেমনি এও দেখেছি কী করে মানুষ তার পাশে দাঁড়ায়। আপনিও দেখেছেন আশা করি।

আপনি কি আমাকে বলবেন, শ্রীক্বষনের (কোনভাবেই সঠিক বানান টা লিখতে পারছিনা, স্যরি রে ভাই) নানা কেচ্ছাকাহিনী উদ্ঘাটন করে কোন প্রবন্ধ কিংবা বিবেকানন্দের ওপর অভিজিত দা যেরকম লিখেছেন সেটা নিয়ে ভারতে কয়জন বাসায় আলোচনা করতে পারবে? আমি ধরে নিচ্ছি আপনার বাসার পরিস্থিতি অনেক মুক্ত। কিন্তু আপনার ঘর নিশ্চই পুরো ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেনা। আমি আমার ভাই বোনের সাথে এই আলোচনা করতে পারি। ওরা গালি দেয়। কিন্তু শোনে। এর মানে নিশ্চয়ই আমি বলতে পারবোনা বাকি বাঙালি পরিবারেও এমন হয়।

আরব দেশের মহিলাদের দুর্দশার জন্য ইসলাম দায়ী কিন্তু বাংলাদেশ দায়ী কেন বুঝলামনা। এই প্রসঙ্গ এখানে কেন আসলো? বাংলাদেশে এর ব্যাখ্যার দরকার হয়না। কারণ বাংলাদেশে ধর্ষকের অপ্রাধ প্রমানে এরকম নিয়ম নেই।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

দিগন্ত এর ছবি

৪) তুলনা করলে ভারতের যে অংশটা সম্পর্কে জানা আছে, তার সাথে বাংলাদেশের যে অংশটা জানা আছে সেটার তুলনা আসাই স্বাভাবিক। ভারত স্বাভাবিক জাতিরাষ্ট্র নয়, ফেডারেল ডেমোক্রাসিতে এক প্রদেশের মানুষ অন্য প্রদেশের মানুষের সম্পর্কে জানার দরকার পরে না।

আপনি আমাকে কিছু পুরোনো বক্তব্য মনে করিয়ে দিলেন। আমাদের এক স্যর ছিলেন যিনি ক্লাসে বলতেন রামকৃষ্ণদেব কোনো দেবীর দেখা পান নি, পুরোটাই হ্যালুসিনেশন। আরও একজন আইনস্টাইনএর নাস্তিকতা পড়িয়েছিলেন পদার্থবিদ্যার ক্লাসে যা আমি সচলেও লিখেছি। তবে আপনার বক্তব্য সঠিক - পরিসংখ্যানের বিচারে এখনও পশ্চিমবঙ্গের বাঙালী যারা মুক্তমনে এদের সমালোচনা গ্রহণ করবে তারা সংখ্যালঘু।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

রানা মেহের এর ছবি

তুলনা আসা স্বাভাবিক হলেই যে ঠিক হবে এরকম কোন কথা তো নেই দিগন্ত। ফেডারেল ডেমোক্রেসিতে এক প্রদেশের মানুষ অন্য প্রদেশের মানুষ সম্পর্কে কিছু জানার দরকার পড়েনা এই কথাটা একটু কেমন হয়ে গেলনা? আপনি বলতে চাইছেন পশ্চিম বাংলার লোকেরা ভারতের বাকি অংশ সম্পর্কে কিছু জানেনা? তাহলে আপনি এবং অন্যান্য পশ্চিম বাংলার অধিবাসী যারা আছেন তারা আর ভারত নিয়ে কিছু বললে উলটো বলা উচিত আপনারা বাকি ভারত নিয়ে বেশি কিছু জানেন না, তাই কথাও বলবেন না? চোখ টিপি

আগেও বলেছি। আবারো বলছি। বাংলাদেশ এখন পূর্ববঙ্গ নয়, যা একসময় অবিভক্ত ভারতের অংশ ছিল। এখন বাংলাদেশ একটা পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্র। তাই তার তুলনা একটা পূর্ণাঙ্গ রাষ্ট্রের সাথে হয়। কোন নির্দিষ্ট অংশের সাথে না। যদি ফেডারেল ডেমোক্রেসির কারণে অন্য প্রদেশ সম্পর্কে কেউ না জানেন তবে তার তার দায়িত্ব "আমার প্রদেশে এই হয় অন্য প্রদেশে কী হয় আমি জানিনা" এই কথাটা পরিষ্কার করে বলা।

আমাকে আরবী পড়াতেন যেই হুজুর তিনি নবীজী মেহেদি দাড়িতে দিয়েছিলেন বলে আমরা পায়ে দিতে পারবো কি না এর উত্তরে বলেছিলেন নবীজী কে সম্মন করো, মেহেদী কে না আর প্রশ্নের উত্তর বের করো নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে। অনুতাপের বিষয়, এই হুজুরের মতো লোকেরা সব সমাজেই সংখ্যালঘু

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

দিগন্ত এর ছবি

সত্যিটা স্বীকার করে নেওয়া ভাল, আমি ভারতের ২০% -এর বেশী জানি না। এবং খুব কম ভারতীয়ই আছেন যারা আমার থেকে বেশী জানেন (সঙ্খ্যায় ১% এরও কম)।
কারণ হল দেশের বহুজাতিকতা। সব প্রদেশে না ঘুরলে দেশের সম্পর্কে জানা সম্ভব না।

" তার দায়িত্ব "আমার প্রদেশে এই হয় অন্য প্রদেশে কী হয় আমি জানিনা" এই কথাটা পরিষ্কার করে বলা।" - এটা সব ভারতীয়র ক্ষেত্রে সত্য।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

তাপস শর্মা এর ছবি

সত্যিটা স্বীকার করে নেওয়া ভাল, আমি ভারতের ২০% -এর বেশী জানি না। এবং খুব কম ভারতীয়ই আছেন যারা আমার থেকে বেশী জানেন (সঙ্খ্যায় ১% এরও কম)।
কারণ হল দেশের বহুজাতিকতা। সব প্রদেশে না ঘুরলে দেশের সম্পর্কে জানা সম্ভব না।

দিগন্ত দা ১০০ ভাগ সহমত। এত মিক্সড কালচার যে প্রতিটি জায়গার সঠিক বাস্তবতা অনুধাবন করা কিতাবী জ্ঞান এর দ্বারা সম্ভব নয়। জানতে গেলে দেখতে হবে।

রায়হান আবীর এর ছবি

রানাপু, কৌস্তুভ,

নাস্তিকরা কেমন আছে এই পয়েন্টে বোধহয় আমি দুইটা কথা বলে যেতে পারি। আমার ধারণা 'কেমন আছে' সে প্রশ্নের জবাবে আপনারা দুইজনেই একমত। সমস্যাটা হচ্ছে ভারতের সাথে বাংলাদেশের 'কেমন থাকা' নিয়ে তুলনা। এই ব্যাপারে আমার ধারণা নেই। পরিচিত ভারতীয় নাস্তিক বলতে কৌস্তুভের সাথেই মোটামুটি পরিচয় আছে। কিন্তু ও থাকে বোস্টনে, খুব সম্ভবত জঙ্গী নাস্তিকতা ভারতে ও প্র্যাকটিস করে নি, বা করে থাকলেও আমি জানিনা, তখন কেমন ছিলো। বা ভারতেই বা কেমন আছে বাদ বাকীরা।

বাংলাদেশে আমরা কেমন আছি? এখনেই একটা শ্রেনী বিভাজন আসা দরকার। কৌস্তুভের ভাষাতেই যদি বলি, একভাগ সাধারণ নাস্তিক, আরেকভাগ জঙ্গী।

আমি বোধহয় সাধারণ নাস্তিকদের ক্যাটাগরিতেই পরি। চিন্তা চেতনায় জঙ্গী তো অবশ্যই তবে প্রকাশে কম। এখানে জঙ্গী বলতে বুঝতে হবে ধর্মকারী টাইপ বা বোমার বদলে কোমরে বিয়ার বাঁধা টাইপ।

আমি সবসময় নিজের নামেই লিখেছি, সব জায়গাতেই আমার নাম ধাম, কোথায় থাকি, কোথায় অফিস করি সব বলা আছে। বই প্রকাশের আগে অনেকেই আমাকে আমার নিরাপত্তা নিয়ে তাদের শংকার কথা জানিয়েছিলেন। আমি এই আশংকার একটা জবাবই দিতাম, এখানেও দিতে চাই। বাংলাদেশে এসব করে খুব একটা ঝামেলা হয় না। আমরা মূলতঃ ভয় পাই। হায় হায় ধর্ম নিয়ে উলটা পালটা কিছু লিখলেই তো জবাই। এইটা ভুল ধারণা। আমি কোনোদিন থ্রেট ট্রেট পাই নাই [এইজন্য মনে যদিও অনেক যাতনা, সেটা ভিন্ন প্রসঙ্গ দেঁতো হাসি ]

আরও একটা উদাহরন দিতে পারি। বিবর্তন নিয়ে এই দেশে একেবারেই উপরের লেভেলে ডিসকাশন হয়না। ভাবটা এমন বিবর্তন নিয়ে কিছু করলেই সব শ্যাষ। এইটাও ভুল ধারণা। এইবার আমি আউল্লায় একটা সেমিনার করলাম। পোলাপানকে প্রস্তাব দিলাম, তারা রাজি। একজন শিক্ষকের কাছ থেকে অনুমুতি নিলাম। ব্যাস সেমিনার করলাম। মানুষও হয়েছিলো অনেক। এদের মধ্যে এক পার্সেন্ট হয়তো বিবর্তন সম্পর্কে জানতো, বাকীদের জন্য এটাই প্রথম। সেমিনার শেষে কেউ আমাকে মারতে আসেনি, বকাও দেয়নি। যারা ছিলো তারা পরে একটু ঝামেলা করেছে বটে, তবে সেটুকু হবেই।

মুক্তবুদ্ধির চর্চায় এখন পর্যন্ত বাধা পাই নি। তবে আবার জামাত এবং বৃহত্তর জামাতের মহিলা শেখা ক্ষমতায় আসলে কী হবে বলা মুশকিল।

এবার আসি জঙ্গী নাস্তিকতায়। অনেকেই আছে এমন। বেশিরভাগই ছদ্মনামে। তবে বাংলাদেশ উদার হলেও এই সময়টাও জঙ্গী নাস্তিকদের অনুকূলে নয়। আর জঙ্গীগিরি করতে চাইলে নিরাপদ দুরত্বে থাকাটাই আসলে উত্তম দেঁতো হাসি

নতুন কিছু বললাম না। বোধহয় আপনাদের কাররই এই ব্যাপারটায় দ্বিমত নেই।

তাপস শর্মা এর ছবি

রায়হান আপনার বক্তব্যে অনেক কিছুই পরিষ্কার করে জানা গেলো।

ভারতে নাস্তিকরা কেমন আছে বা কি করে কিছু করে সেই প্রসঙ্গে বলতে পারিঃ কিছু অঞ্চল বিশেষে এর পার্থক্য আছে। যেমন ধরেন আমি যে ভৌগোলিক অঞ্চলের বাসিন্দা ( ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চল) এখানে এইসব নিয়ে কেউ মাথা ঘামায় না ( আসামে এক সময় ছিল, এখন অনেক বদলেছে ) । এখানে ধর্ম চর্চার বাইরে কথা বললে কোন মৌলবাদী বাধা দেয়না। যে যার মতো করে আছে। যেমন আমার নিজের পরিবারের কথাই বা আমার এলাকার কথাই বলিঃ এখানে যদি কেউ ধর্মের কুৎসিত রূপ নিয়ে কথা বলে কিংবা উচ্চাচার করে ধার্মিকরা ভালো পায়না এটাই স্বাভাবিক। কিছু কিছু ক্ষেত্রে আজাইরা যুক্তিও দেয়। কিন্তু প্রায় সব ক্ষেত্রেই আর কোন যুক্তি খুঁজে না পেয়ে হায় হায় করে, ওটুকুই ব্যস ( নিজের অভিজ্ঞতায় বলছি)

এইবার আসি রেস্ট অফ ইণ্ডিয়ার কথায়। আমার খুব প্রখর ধারণা নেই। তবে উত্তর ভারতের কিছু অংশে নাস্তিকতা একটা ভয়ানক অপরাধ হিসেবে দেখা হয়। আবার মুম্বাই এর মতো জায়গাতেও শিবসেনার মত অপদার্থ জাত্যাভিমানীরা পাকনামি করে কখনো কখনো। সমগ্র ভারতের খন্ডচিত্র হয়তো একার পক্ষে দেওয়া সম্ভব না। কেননা এত জাত-ধর্ম-বর্ণের মিশেলে প্রতিটি অঞ্চলের পরিস্থিতি খুঁজে পাওয়া মুশকিল।

তবে আমি আজ যে জায়গায় দাঁড়িয়ে আছি, সে ক্ষেত্রে বলতে পারি - মুক্তমননের চর্চা এখন ভারতে অনেকটাই উন্মুক্ত হয়েছে। সবটা নয়, অনেক মারপ্যাঁচও আছে।

কৌস্তুভ এর ছবি

ভাই রায়হান, নিচে ধুগোকে তোমার যে স্ট্যাটাসের কথা বললাম সেটার কথাগুলো নিখুঁত আমার মনে না থাকায় আমি বলেছি থ্রেট মেল, তুমি ব্যবহার করেছিলে হেট মেল শব্দটা, কিন্তু এক ছাগুর গালাগালি-ওয়ার্নিং সম্বলিত মেল যে তুমি পেয়ে যে অত আনন্দ করে স্ট্যাটাস দিয়েছিলে সেটা কি ঠিক নয়?

কৌস্তুভ এর ছবি

রানা মেহের,

১. টার্গেট অডিয়েন্স ওই সচলবন্ধুরা আমাকে বাংলাদেশ ঘুরে দেখিয়েছে। তা দেখার সময় আমার যে অভিজ্ঞতা/মতামত লেখার/স্বগতোক্তির মধ্যে দিয়ে বেরিয়ে এসেছে তা প্রকাশ হয়ে পড়ে তাই নিয়ে একটু আলোচনা করা নিশ্চয় অন্যায় নয়।
(আপনার মেল কিন্তু আমি পাই নি, অনুমান করছি পাঠাননি আর।)

২. আমার ধারণামতে লেখায় বাংলাদেশ সম্পর্কে প্রশংসাসূচক অবজার্ভেশনও আছে। এখন আপনি যদি বলেন, ভালো কথা যদি x% আছে, x+1% নেই কেন? 100% নেই কেন? তাহলে নিরুপায়।

৩. যাদের সঙ্গে আমার পরিচয় আছে, তাদের কথাই তো বলতে পারি। তাই বললাম, যে তারা খুবই লিবারেল লোক। এটা কেন ধরে নিচ্ছেন যে তার মানে বাকি বাংলাদেশ লিবারেল নয় এটা চাপিয়ে দিচ্ছি? আপনি বলছেন, গড়ে পুরো বাংলাদেশই অনেক লিবারেল, আচ্ছা বেশ।

যদি নেহাতই বলেন, তুলনা করছি-ই, তাহলে এমন কেন ভাবতে পারছেন না, সদ্য গ্রামের বাড়ির যে আত্মীয়দের সঙ্গে দেখা করে এলাম তাদের তুলনায় বেশি লিবারেল?

৪. পূর্ববঙ্গ শব্দটা অবশ্যই বাংলাদেশ নামটাকে প্রতিস্থাপিত করার জন্য ব্যবহৃত নয়। পূর্ববঙ্গ/পশ্চিমবঙ্গ শব্দদুটো কেবল এই আইডিয়াটা বোঝাতে ব্যবহৃত, যে আমরাও বাঙালি, আপনারাও, কেবল এপার আর ওপার। তাই এপার বাংলার সঙ্গে ওপার বাংলা লেখায় এসেছে তুলনা হিসাবে।

৫. প্রকাশ্য জঙ্গি নাস্তিক ভারতেও কিছু প্রদেশে নিরাপদ না। পশ্চিমবঙ্গে মোটামুটিভাবে নিরাপদ।

কৃষ্ণ যে বহু গোপীদের সাথে ফষ্টিনষ্টি করতেন সেটা প্রায় সবাই জানে, 'কেষ্টঠাকুর' শব্দটা ছেলেছোকরাদের ক্ষেত্রে ব্যঙ্গার্থেই ব্যবহৃত হয়। আবার ধরেন, ইন্দ্রও যে প্রচণ্ড লম্পট ছিলেন সেটা ব্যোমকেশের মুখ দিয়ে শরদিন্দু বলিয়ে গেছেন বহুদিন আগেই। পরশুরাম ছিলেন বেশরকম নাস্তিক, সেটা তাঁর লেখাগুলোয় ভালই দেখা যায়, নানা লেখায় কল্পিত দেবতাদের অসহায়ত্বকে ধুয়ে দিয়েছেন। যে দাদাঠাকুরের প্রসঙ্গ উঠেছিল শুরুতেই, তাঁর জীবনীটা শুরুই হচ্ছে নামসংকীর্তনের অসারতার প্রতি তাঁর বিদ্রূপকে নিয়ে।

মাস-মিডিয়ায় ধরেন, 'যমালয়ে জীবন্ত মানুষ'এর মত প্যারডি সিনেমা তৈরি হয়েছে সেই সাদাকালো যুগেই। রবি ঘোষ তাঁর 'কল্কি ও যমরাজ' ইত্যাদি অডিওকৌতুকগুলোয় দেবতাদের পচিয়েছেন চূড়ান্তভাবে। ব্যান্ডের জমানায় হিন্দুধর্মের তিন প্রধান দেবতাকে নিয়ে এই তিনটে গানও শুনে দেখতে পারেন - , , । এইধরনের রম্য গান বাংলাদেশে হয়ে থাকলে আমি শুনতে আগ্রহী, জানাবেন প্লিজ।

৬. আরব দেশের মহিলাদের অবস্থার জন্য বাংলাদেশ দায়ী তা কখন বললাম? মহম্মদ যে দায়ী, সেটা বাংলাদেশে লোকে খোলামেলা আলোচনা করতে পারবে কি না, এই নিয়ে প্রসঙ্গটা এসেছিল।

রানা মেহের এর ছবি

১)

আর ওই টার্গেট অডিয়েন্সকে 'ওহে পাঠক, শোনো, বাংলাদেশের এইটা ভালো, বাংলাদেশের এইটা খারাপ' এগুলো বলা মায়ের কাছে মাসির গল্প হয়ে যাবে। যা বলতে চেয়েছি, সেগুলো পার্সোনাল গল্প - পার্সোনাল বেড়ানোর গল্প, পার্সোনাল আড্ডার গল্প।

এটা আপনারই বলা কথা কৌস্তুভ। তারওপর আপনি বাংলাদেশ বিষয়ে আপনি অনেক অনেক কথা বলেছেন। বাংলাদেশের ধর্মীয় আবহাওয়ার কথা সচলদের লিবারেলিজমের কথা। এই কথাগুলো বলতে গিয়ে আপনার মায়ের কাছে মাসীর বাড়ির গল্প হয়না। শুধু বাংলাদেশে কি ভালো কিছুই দেখেননি এর উত্তরে আপনি বলার চেষ্টা করেন এই লেখাটা মুলত আপনার সচল বন্ধুদের পচিয়ে লেখা। বন্ধুকে পচানো আর দেশ কে পচানো এক জিনিস না।
(না মেইল করিনি। মনে হলো যেটা এখানে বলতে পারবোনা সেটা আলাদা করে বলার কোন দরকার নেই। দুঃখিত। আপনাকে আগেই জানানো উচিত ছিল)

২) প্রশনহসাসূচক অবজার্ভেশন টা কী যদি একটু বলেন। আপনি ধারনা করছেন জেনে ভালো লাগলো। আমারো ধারনা করতে ভালো লাগবে।

৩) আচ্ছা আমরা একটা কথা বিশেষ ভাবে আলাদা করে কেন বলি? অনেকগুলো কারণের মাঝে একটা হলো সেই জিনিসটা যদি ঐ সময় বা জায়গার পার্সপেক্টিভে ঠিক কমন না হয়। আপনি যখন বাবার সাথে সচলদের পরিচয় করিয়ে দিচ্ছিলেন আপনি কিন্তু বলেননি, ওরা বাংলায় কথা বলে কিংবা ওরা ব্লা ব্লা ব্লা। বলেছেন ওদের হিন্দু মুসলিম একসাথে মেশার কথা। কেন কৌস্তুভ? এটা কেন আলাদা রে বলার মতো কিছু? কেন আমাকে ভেবে ভেবে বের করতে হবে আপনার গ্রামের আত্মীয় আর সচলদের লিবারেলিজম এর তুলনা। আপনার যেই গ্রামে বেড়াতে গিয়েছিলেন সেখানে কি হিন্দু মুসলিম রা একসাথে মেশেন না? তারাই বা কোন দিক দিয়ে লিবারেল নন?

৪) জ্বী। আমরা বাঙালি। এবং একই সাথে বাংলাদেশি। আপনাকে বলার সময় যেমন আপনি বাঙালি হবার সাথে যেমন ভারতীয় হবার সম্মান দিই তেমনি একই সাথে নিজের দেশের সাথে তুলনায় একই রাষ্ট্রীয় সম্মান আশা করি। আপনার আগের মন্তব্যের গোয়া পন্ডিচেরির নিয়ে শ্লেষ খুব ভালো লাগেনি।

৫) একইসাথে আপনাকে মনে করিয়ে দিতে চাই ইসলাম এবং হিন্দু ধর্ম নিয়ে অপমান সূচক শিল্পের অপরাধে সালমান রুশদি, মকবুল ফিদা হোসেন ভারত থেকে বিতাড়িত হয়েছিলেন যেমন একই অপরাধে বাংলাদেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে দাউদ হায়দার, তসলিমা নাসরিনকে।
আপনার গানগুলো শুনতে পারলাম না। রাতে লিখছি। বাসার সবাই ঘুমে। আমার গান বিষয়ক আগ্রহ এবং জ্ঞান দুটোই খুব কম। আপনার বর্ণনা মতো গান থাকলেও বলতে পারবোনা। এটা শুনে দেখতে পারেন http://www.youtube.com/watch?v=sOwJOloZcLI

৬) বাংলাদেশ প্রসঙ্গে আরব দেশের মহিলাদের জন্য মোহাম্মদ কত কাঁটা বিছিয়ে রেখেছেন এটা বাংলাদেশ এমনকি খোলামেলা কথা বলার যোগ্য মনে করেনা দেখেই বাংলাদেশে এরকম কোন আইন নেই। কোন দেশ যদি বাজে আইন করতে চায় সেখানে তাকে কিছু না কিছুর আশ্রয় নিতে হয়। আরব দেশের জন্য ধর্ম সেই হাতিয়ার। ধর্ম ব্যবহার করতে না পারলে তারা অন্য কিছু করতেন।
আর আপনার জ্ঞ্যতার্থে জানাচ্ছি। আসল আইন টা যতদুর জানি ধর্ষকের অপরাধ প্রমানে নয়। এই আইনের মানে ছিল কেউ যদি কোন নারীর প্রতি অসদাচনের অভিযোগ আনেন তাকে তার দাবীর স্বপক্ষে চারজন সাক্ষী যোগাড় করতে হবে। সাঈদ আহমেদের একটা পোস্ট আছে এই বিষয়ে। সেই পেইজে যাচ্ছেনা।আপনি যেতে পারলে পড়ে দেখবেন

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ইন্টারেস্টিং। কৌস্তুভ 'ভারতের কিছু প্রদেশ বাদ দিলে' 'নাস্তিকদের নিরাপত্তা'র লক্ষণ হিসাবে বেছে বেছে হিন্দু ধর্ম*কে ব্যঙ্গবিদ্রুপের উদাহরণ দিলেন নাকি। Pick and choose মেথড হয়ে গেল না? ভারতের মুসলমান বা অন্য ধর্মের লোকেরা কি তাহলে নিজের ধর্মের ব্যঙ্গবিদ্রুপ একইভাবে সয়ে নেয়? নাকি 'ভারতীয়' উদাহরণ দিতে গেলে ওদের কথা ঠিক মাথায় আসে না? আপনার উদাহরণ থেকে যদি আপনার ধাঁচেই (অর্থাৎ 'সীমিত' 'স্বল্পকালীন' 'ওপর ওপর' পর্যবেক্ষণজাত) সিদ্ধান্তে আসি তাহলে বলতে পারতাম ভারত হিন্দুরাই থাকেন কেবল (যেহেতু আপনি আর কোনো দৃষ্টান্ত দেন নাই।) অথবা, নিদেনপক্ষে এও বলতে পারতাম একজন ভারতীয় যখন নাস্তিকসহনশীলতার উদাহরণ দেন তখন তিনি কেবল হিন্দুধর্মসংক্রান্ত উদার উদাহরণগুলিই মনে করতে পারেন। কিন্তু আমি জানি সব ভারতীয় = কৌস্তুভ না। সুতরাং কিছু প্রশ্ন রেখে যাই।

ভারতে প্রায় আঠারো কোটি মুসলমান থাকে। আপনি যেহেতু তাদের নাস্তিকসহনশীলতার কোনো উদাহরণ দেন নাই সুতরাং ৪ ধরণের অনুমান সম্ভব হয়।

১. ভারতের মুসলমানেরা নাস্তিক সহনশীল কিন্তু আপনার কাছে উদাহরণ নাই।
২. ভারতের মুসলমানেরা নাস্তিক সহনশীল না, কিন্তু আপনার কাছে কোনো উদাহণ নাই।
৩. ভারতের মুসলমানেরা নাস্তিক সহনশীল হোক বা না হোক, আপনি উদাহরণ খুঁজেন নাই।
৪. ১,২,৩ যেকোনোটা যদি সত্য হয়, তাহলে সন্দেহ করি, আপনার স্যাম্পলিং বায়াসড।

আপনি পরিসংখ্যানের লোক। আপনার পার্সপেক্টিভটা জানতে পারলে ভাল লাগত।

* আম্ব্রেলা টার্ম হিসাবে ব্যবহার করলাম।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

কৌস্তুভ এর ছবি

ভাই, রানা মেহেরের প্রশ্নটা দেখেন।

"শ্রীক্বষনের নানা কেচ্ছাকাহিনী উদ্ঘাটন করে কোন প্রবন্ধ কিংবা বিবেকানন্দের ওপর অভিজিত দা যেরকম লিখেছেন সেটা নিয়ে ভারতে কয়জন বাসায় আলোচনা করতে পারবে?"

কেবল কৃষ্ণের নয়, ইন জেনারেল হিন্দুধর্মের নানা দেবতারই কেচ্ছাকাহিনী যে বলা হয় সেটা নিয়ে কিছু নমুনা দেখালাম। উনি যদি দেশে মহম্মদের কেচ্ছাকাহিনী বলা যায় কিনা সেই প্রশ্ন করতেন তাহলে ভারতের মুসলমানদের প্রসঙ্গ আসত। এই অবভিয়াস ব্যাপারটাকে ছেড়ে এতরকম জটিল ইঙ্গিত করলেন। সেটা মোটেই বিস্ময়কর নয় অবশ্য।

ফাহিম হাসান এর ছবি

রানা মেহের আপু, দিগন্ত ভাই ও কৌস্তুভ,

কাকতালীয়ভাবে গতকালকে অর্থনীতির এক ফ্যাকাল্টির সাথে "তৃতীয় বিশ্ব" টার্ম নিয়ে কথা হচ্ছিল। আমার ব্যক্তিগত ভাবনাটুকু এখানে তুলে দিলাম-

তৃতীয় বিশ্ব, উন্নয়নশীল দেশ বা less/least developed country এ ধরনের সব টার্মই কোন নৈর্ব্যক্তিক গবেষণা থেকে আসে নি। বরং এগুলো world bank, UN কর্তৃক প্রচলিত এবং অন্যান্য NGO দ্বারা জনপ্রিয়। এখন কে আমার দেশকে কী নামে ডাকল এ নিয়ে আমার কোন অস্বস্তি নেই। বাংলাদেশ গরীব দেশ। টোকাইকে পথশিশু ডাকলেও সে টোকাই। উন্নয়নশীল তাই আমার চোখে স্রেফ গালভরা নাম, "তৃতীয় বিশ্ব" এর euphemism। কৌস্তুভ তো "তৃতীয় বিশ্ব" টার্মকে তৈরি করে নাই, সে স্রেফ ব্যবহার করেছে। আর কৌস্তুভ ব্যবহার করলেই বাংলাদেশ থার্ড ক্লাস গোত্রের কিছু হয়ে যায় না।

বর্তমানে world bank ব্যাপারটাকে আরেকটু টেকনিকালি সংজ্ঞায়িত করার চেষ্টা করছে-

বিভিন্ন দেশকে Income group অনুযায়ী ভাগ করছে। একটা ইনকাম ম্যাট্রিক্স 2010 GNI per capita (World Bank Atlas method) হিসেব করে নিচের মত গ্রুপ করছে

low income, $1,005 or less;
lower middle income, $1,006 - $3,975;
upper middle income, $3,976 - $12,275; and
high income, $12,276 +

বাংলাদেশ আসলেই গরীব দেশ, তবে কিনা অর্থনৈতিক ভাবে গরীব।

GDP/GNP তো আর সবকিছু মাপে না। আমাদের সামাজিক বন্ধন, আতিথেয়তা, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, উৎসবমুখর পরিবেশ, ঝড়-বন্যা-জলোচ্ছ্বাসে টিকে থাকা মানুষের মনোবল, শিল্প-সাহিত্যে - (ফটোগ্রাফিতে দেঁতো হাসি ) অগ্রগতী এগুলো তো সবই হিসেবের বাইরে। এখন গরীব দেশ দেখে কোন পর্যটক যদি আসতে না চায়, তাহলে বলব ঐ পর্যটকের দেখার চোখ নেই।

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ, ফাহিম।

রানা মেহের এর ছবি

আমি পর্যটকের আসা নিয়ে চিন্তিত নই ফাহিম।আমার দেশকে যেখানে অপেক্ষাক্বত একটা ভালো নামে যেখানে ডাকা যায়, সেখানে তাচ্ছিল্যসূচক একটা নামে ডাকলে আমার যথেষ্ট অস্বস্তি হবে। হ্যা টোকাইকে পথশিশু ডাকলে সে রাজপুত্র হয়ে যায়না। যেমন পতিতাকে অন্য নামে ডাকলে তিনি তার স্বাভাবিক জীবন ফিরে পান না। কিন্তু তাও আমরা তাকে পতিতা কিংবা ব দিয়ে যা ডাকা হয় না ডেকে যৌনকর্মী ডাকি। আর কিছু নয়। কিচ্ছু করতে না পারি, অন্তত সম্মান তো দিতে পারবো
এখন বলতে পারেন উন্নয়নশীল কিংবা যৌনকর্মী এগুলো এনজিও ওয়ালদের দেয়া নাম। হতে পারে। তবু এটা একজনকে অন্তত কিছু আস্থা নিজের ওপর দিতে পারে। নাম - বিশেষন এই জন্যই আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

দীপ্ত এর ছবি

ভারী রসালো আড্ডা-বর্ণনা, মনে চায় এইরকম আড্ডায় যোগ দিতে। মন খারাপ

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ, দীপ্ত। জলদি সচল হয়ে পড়ুন।

সাফি এর ছবি

আপনার হিউমার খুবই উপভোগ্য। সেই সাথে লেখাও উপাদেয়। হিউমারের ফাঁকে ফাঁকে কিছু বিষয় নিয়ে খটকা লেগেছে (মনে হয় নিজে বাংলাদেশী বলে, পরের মুখে ঝাল খেতে পারিনাই), আপনার নিজস্ব অনুধাবনের স্বাধীনতার কথা চিন্তা করে সেসবকিছু নিয়ে আর কথা বাড়াচ্ছিনা।

গেলাম খান মহম্মদ মির্ধা’র পুরোনো মসজিদ দেখতে। তখন নামাজের সময়, আমরা কজন ভেতরে ঢুকলেও তেমন ঘুরতে পারলাম না, আর মহিলারা সেকেন্ড’ক্লাস সিটিজেন কিনা তাই তাঁদের বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হল। বাবার ইসলাম সম্পর্কে ধারণা কম, একে-ওকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, ওদের ঢুকতে দেওয়া হবে না কেন। জানি না, ঈমানী জোশে-বিশ্বাসে বলীয়ান যাঁরা তাঁদের কিছু মনে হয় কিনা, একজন মানুষ বা একজন পুরুষ হিসাবে আমাদের তো লজ্জাই লাগে হিন্দু-বৌদ্ধ সব ধর্মেই মা-বোনেদের প্রতি এমন ‘সম্মান’ বিছিয়ে রাখা দেখতে।

ঢাকার যেসব মসজিদে মহিলাদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা আছে, সেখানে তাঁদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়না। শুধু ঢাকা বলে না, আপনি আমেরিকায় ফিরে গেলে সেখানকার মসজিদে ঢুঁ দিয়ে মনে হয়না বিপরীত চিত্র দেখতে পাবেন। নামাজের ঘর, বিশ্বাসীর কাছে আসলে তো আর বেড়ানোর জায়গা না, উপাসনার জায়গা আর উপাসনালয়ে গেলে সেখানকার নিয়ম মানতেই হবে সে যে ধর্মের বা যে স্থানেরই হোক না কেন।

ঢাকাকে খুব মিস করি। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ, ঢাকার অনেকগুলো প্রিয় জায়গার স্মৃতিচারণ হলো আপনার লেখার বরাতে।

দিগন্ত এর ছবি

আপনি কৌস্তুভের ভুলগুলো ভাঙিয়ে দিচ্ছেন দেখে ভাল লাগল। আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

কৌস্তুভ এর ছবি

এইটা 'ভুল' নয় দাদা। এইটাকে 'হিউম্যানিস্ট (র‍্যাশনালিস্ট) দৃষ্টিভঙ্গি' বলা চলে। এটাকে 'ভুল' বলে দেখাতে গেলে কিছু সঠিক যুক্তির দরকার।

দিগন্ত এর ছবি

কিন্তু তোমার কথা শুনে মনে হল তুমি এটা শুধু বাংলাদেশে গিয়ে অনুধাবন করছ। সেই ব্যাপারটা "ভুল"।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

কৌস্তুভ এর ছবি

তা কেন। বেড়াবার সময় স্পেসিফিকালি ওই ঘটনাটা ঘটেছে বলে ওই প্রসঙ্গটা এসেছে। সাধারণভাবে যে মহিলাদের সব ধর্মেই সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন বানিয়ে রাখা হয় তাই নিয়ে তো অন্যত্রও লেখা দিয়েছি, দেখেছেন নিশ্চয়ই?

মন মাঝি এর ছবি

সাধারণভাবে যে মহিলাদের সব ধর্মেই সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন বানিয়ে রাখা হয়

কৌস্তুভ ভাই, আপনি ইসলাম, তূলনামূলক ধর্মতত্ত্ব বা "সব ধর্মের" উপর প্রবন্ধ লিখছেন নাকি আপনার বাংলাদেশ ভ্রমণ নিয়ে কোন মজারু-মার্কা ভ্রমণকাহিণি জাতীয় কিছু লিখছেন ? যদি শেষেরটা হয় তাহলে এই লেখায় "সব ধর্মে" কি হয় না হয় সেইসব প্রসংগ এখানে আসছে কেন ? এটাতো ধর্ম/নাস্তিকতা বিষয়ে কোন দার্শনিক/রাজনৈতিক লেখা নয়। "অন্যত্রও লেখা" দিয়েছেন যখন তখন এই বিতর্কটা ওখানেই কি বেশি শোভনীয় নয়? আর আপনি

স্পেসিফিকালি ওই ঘটনাটা ঘটেছে

বলে যে ঘটনার কথা বলছেন, নিচে ঐ সময় উপস্থিত ব্যক্তিদের কিছু কমেন্ট থেকে জানা যাচ্ছে ঐ রকম কোন ঘটনা আদপেই ঘটেনি। যা ঘটেছে তার উপরে আপনি সম্পূর্ণই নিজের মনগড়া স্পিন/টুইস্ট চাঁপিয়ে দিয়েছেন। আমি এর কেবল দুইটা সম্ভাব্য ব্যাখ্যাই আপাতত দেখতে পাচ্ছি। হয় এটা সম্পূর্ণ সচেতনভাবে ইচ্ছাকৃত (আমার এটা বিশ্বাস করতে কষ্ট হয়), অথবা এর জন্য আপনার সাথে করে বয়ে নিয়ে আসা একগাদা প্রিকন্সিভড নোশন বা প্রেজুডিস দায়ী যা আপনাকে, রাগিব যেমন বলেছেন - হস্তীদর্শন করাচ্ছে।

****************************************

মন মাঝি এর ছবি

এইটা 'ভুল'ই, কিম্বা তার চেয়েও বেশি। নিচে সচল যাযাবর ও অন্যান্যদের মন্তব্যগুলি লক্ষনীয়।

আমার এই লেখাটাতে উপর থেকে ৬-নং ছবিটা দেখুন । একটা মসজিদের ছবি, তবে আনফর্চুনেটলি বাংলাদেশে নয় - মুসলিম ব্রাদারহুড অধ্যুষিত একটা আরব দেশ মিশরে। তারপরও, আপনার কাজে লাগলেও লাগতে পারে মনে করে লিঙ্কটা দিলাম। তবে এটা যেনতেন কোন মসজিদ নয়, বলা হয় এটা ইসলামের নবীর সবচেয়ে ধর্মনিষ্ঠ ও কট্টর জেহাদি সাক্ষাৎ শিষ্য স্বয়ং হযরত ওমর (রাঃ) কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত মসজিদ। হযরত ওমর (রাঃ) সম্পর্কে নিশ্চয়ই অবহিতজনদের কিছু বলা লাগবে না। "সেকেন্ড ক্লাস" সিটিজেন নারীদের জন্য যদি মসজিদে প্রবেশ নিষিদ্ধ হয়েই থাকে, তাহলে তাঁদের জন্য এই মসজিদের চেয়ে দুর্গমতর মসজিদ পৃথিবীতে আর কোন মসজিদটা হতে পারে ??? আমার তো মাথায় আসছে না অ্যাঁ

ভাল করে তাকিয়ে দেখুন তো কোন মহিলা দেখতে পান কিনা ? একদম ফোড়গ্রাউন্ডে কি একজন নারী ও একজন পুরুষকে পেছন থেকে দেখতে পাচ্ছেন, যারা দিব্যি ক্লিক-ক্লিক করে ফটুক তুলছে মসজিদের ভেতরে? হ্যাঁ এটা এমনকি নামাজ চলাকালীণ সময়েই। আমি যখন ওখানে ঘুরছি, তখন ভেতরের বারান্দায় দেখলাম কিছু মুসল্লী নামায পড়ছেন, আর তাদের পিছন দিয়ে ্তাদেরকে পাশ কাটিয়ে মোজা পরে নিঃশব্দে কিছু ইউরোপীয় নারী-পুরুষ টুরিস্ট দিব্যি মসজিদে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সুতরাং মসজিদ সম্পর্কে আপনি যে ইম্প্রেশনটা দেয়ার চেষ্টা করছেন সেটা সত্য বলে মনে হচ্ছে না।

আর হ্যাঁ, নারী-পুরুষের আলাদাভাবে (কোন কোন দেশে মনে হয় এমনকি একই সাথেও আছে) একই মসজিদে নামাজ পড়ারও প্রচলন দিব্যি আছে - এবং এর পেছনের কারনটা আমার জানামতে 'ডিস্ক্রিমিনেশন'জাত নয়, ভিন্ন কারনে। এটা হিউম্যানিস্ট/র‍্যাশনালিস্ট-বিতর্কের চৌহদ্দিতে মনে হয় পড়ে না।

****************************************

কৌস্তুভ এর ছবি

ঢাকার যেসব মসজিদে মহিলাদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা আছে, সেখানে তাঁদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়না। শুধু ঢাকা বলে না, আপনি আমেরিকায় ফিরে গেলে সেখানকার মসজিদে ঢুঁ দিয়ে মনে হয়না বিপরীত চিত্র দেখতে পাবেন। নামাজের ঘর, বিশ্বাসীর কাছে আসলে তো আর বেড়ানোর জায়গা না, উপাসনার জায়গা আর উপাসনালয়ে গেলে সেখানকার নিয়ম মানতেই হবে সে যে ধর্মের বা যে স্থানেরই হোক না কেন।

সাফি ভাই, তাহলে সরাসরি একটা প্রশ্ন করি। এই প্রশ্নটা পাঠককেও করা যেত ওই লেখায়, বিতর্ক এড়াতে করি নি। আপনি এই ব্যাখ্যাটা দেওয়ার চেষ্টা করছেন বলে আপনাকেই সরাসরি প্রশ্নটা করছি।

আপনি কি ধার্মিক? আপনি কি ইসলাম ধর্মের অনুসারী? (অন্য ধর্ম হলেও একই ব্যাপার, এখানে মসজিদের প্রসঙ্গটা এসেছে বলে বলছি।) তাহলে, আপনি যে ধর্ম অনুসরণ করছেন তাতে, মহিলাদের যে এইভাবে সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন বানিয়ে রাখা হচ্ছে, তাদের আপনার সমান অধিকার দেওয়া হচ্ছে না *, এটা আপনার খারাপ লাগে না? ওই নারী-অবদমনকারী সিস্টেমের অনুসারী হয়ে থাকতে আপনার লজ্জিত বোধ হয় না?

(সম্ভাব্য ব্যাখ্যা - এই সিস্টেমটা যে নারী-অবদমনকারী সেটা আপনার কখনও চোখে পড়ে নি, কখনও খেয়াল করেন নি, কখনও ভেবে দেখেন নি। তাই অফ-হ্যান্ড আপনার মনে হবে না যে এটা নারী-অবদমনকারী, 'যার যা সিস্টেম' বলে এটাকে ছেড়ে দেবেন।)

* আপনি পুরুষ হয়ে ঢুকতে পারবেন আর বুনোদি মহিলা বলে ঢুকতে পারবেন না, এটা যে উপাসনাস্থলের নিয়মই হোক, সেটা কি fair?
একজন পল্লবের সাক্ষ্য দুজন টিউলিপের সাক্ষ্যের সমান, ধর্মের এই নিয়মটা কি fair?

দময়ন্তী এর ছবি

এর হিন্দু ইক্যুইভ্যালেন্ট হতে পারে তামিলনাড়ুর শবরীমালা মন্দির, যেখানে মেয়েদের ঢুকতে দেওয়া হয় না৷

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

দিগন্ত এর ছবি

আরো আছে, পুরীর মন্দিরে জাত-পাত নির্বিশেষে সবাইকে রথযাত্রায় সমানভাবে সামিল হতে দেওয়া হয় না।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

দময়ন্তী এর ছবি

জাতের ব্যপার তো চাইলে মিথ্যে বলে বা অর্ধসত্য বলে ভেতরে ঢোকা যায়৷ কিন্তু 'নারীত্ব' হায় গোপন করা যায় না৷

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার (অফ্লাইন) এর ছবি

যেহেতু নিজে উপস্থিত ছিলাম তাই এখানে কিছু কথা বলা দরকার মনে করছি, আগেই বলতাম, কিন্তু প্রসঙ্গটা উত্থাপন করতে ইচ্ছা করছিলো না।

খান মহম্মদ মির্ধা’র পুরাতন মসজিদটা আমি আগে দেখি নাই। ঐটা যে সেই মসজিদ সেটাও বুঝি নাই প্রথমে। অন্য সময়ে গেলে আমি ঢুকে দেখতাম। আর আমি তোমাকে খুব ভালো করে বিশ্বাসের সাথে বলছি, অন্য সময়ে না গিয়েও, যে আমাকে ঢুকে দেখতেও দিতো, সানন্দে!

পুরান ঢাকায় তো আর প্রশস্ত রাস্তা না, সারি ধরে গায়ের উপরে চলে আসা রিকশা বাঁচিয়ে হাঁটছিলাম আমরা লালবাগ কেল্লা থেকে ঐদিকে যাবার পথে। শাকিল ভাই সামনে ছিলেন, ফলো করছিলাম পেছনের মানুষেরা সামনের মানুষদেরকে। একসময়ে শাকিল ভাই (যা বুঝেছি সেদিনের তখন পর্যন্ত টিম লিডার) পুরাতন সব বাড়িটাড়ির একটার ফটক দিয়ে ঢুকে গেলেন, আর তার পিছে পিছে সামনে থাকা অন্য সচলেরা। ভেতরে যান নাই, এমন দুই একজন পুরুষ সচলও ছিলেন, খেয়াল করেছিলে কিনা!
আমি কী নিয়ে যেন আলাপ করছিলাম, করতে করতে ঢুকে পড়ছিলাম ভেতরে। বাইরে থেকে যাওয়া পুরুষ সচলদের কে যেন হঠাৎ বললো, এটা কিন্তু মসজিদ।
তাতে আমি কিছুটা অবাক হয়েই বললাম, তো কী হয়েছে?
তখন নিজের থেকেই মনে পড়লো, সেদিন শুক্রবার আর ততক্ষণে জুম্মার নামাজ শুরু হয়েছে। আমাদের দেশে সাধারণত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়েন না এমন মানুষও সাপ্তাহিক ছুটির দিনে এই নামাজ পরিবারের অন্যদের সাথে পড়তে যান, মেজরিটি পড়তেও চান, শাকিল ভাইই পড়তে আগ্রহী ছিলেন, ঐ মসজিদেই, যে কারণে উনি আমাদেরকে ঐ সময়ে ঐদিকে নিয়ে গিয়েছিলেন, এবং বাড়িতে ফোনে বলেছিলেন, যে নামাজ পড়েই আসছেন (এগুলা খেয়াল করেছিলে কিনা বলতে পারি না)।

এখন জুম্মার ওয়াক্তে মসজিদে কেউ বেড়াতে যায় না, বেড়ানোর ইচ্ছা থাকলেও। এটা ভদ্রতা বলা যায়, আবার অভদ্র হলেও কনভেনিয়েন্সের ব্যাপারও, নামাজ পড়তে আসা ব্যক্তিদের এবং বেড়াতে যাওয়া মানুষ উভয়েরই। যারা নামাজ পড়তেই এসেছেন, উপাসনার জন্যে, তাদের মেজরিটি পছন্দ করবেন না ঘুরে ঘুরে ফটোসেশন বা উপাসনালয়ের আর্কিটেকচারাল বা ঐতিহাসিক আলোচনা ঐখানে দাঁড়িয়ে কতগুলো মানুষ করতে থাকুক। এইটা কমন সেন্স। মনে করো বড় কোন মন্দির যেমন ঢাকেশ্বরীতে কোন বড় বা ব্যক্তিগত পূজো-অর্চণা চলাকালীন আমরা গিয়ে হাউকাউ করলেও উপাসনাকারীরা বিরক্ত হবার একটা সম্ভাবনা তো থাকেই। বলতেই পারেন আমাদেরকে কেউ, ভাই অন্যখানে গিয়া ফট তুলেন, বা আলাপ করেন, বা অন্য সময়ে আসেন।

ঈদের নামাজ, জুম্মার নামাজ একত্রিত হয়ে পড়তে হয়, যেটাকে বলে জামায়েত-এ। 'জামাত' (জমায়েত) ছাড়া এই নামাজগুলো হয়না। মহিলাদের নামাজ পড়ার সুব্যবস্থা অনেক মসজিদে থাকে। তবে যেহেতু আমাদের উপমহাদেশে নারীদেরকে দীর্ঘদিন অন্দরেই থাকতে হয়েছে, পুরা উপমহাদেশ জুড়েই মহিলাদের সুব্যবস্থাওয়ালা মসজিদের সংখ্যা কম। ইওরোপ আর আমেরিকায় সম্ভবত সব মসজিদেই তাদের জন্যে ব্যবস্থা আছে। আর পৃথিবীর বাকি এলাকার ব্যাপারে আমি জানি না। এই মসজিদেও থাকতে পারে, আমি যেহেতু ধরেই নিয়েছিলাম (বলা যায় এক্রকমের জানতামই) তোমরা বেশি হলে মিনিট পনেরোর মাঝে বেরিয়ে পড়বে, আর আমার নিজের যেহেতু উপাসনালয়ে উপাসনায় আগ্রহ কম, ঐসময়ে তাই খোঁজ নেয়ার কথা মাথায় আসেনি। তবে ঢাকায় (আর রাজশাহীতেও) অনেক জায়গাতেই ব্যবস্থা আছে, আমি জানি। তবে হ্যাঁ, শুনেছি ইহুদীদের সেনেগগ-এ নারীদের প্রবেশাধিকার নিষিদ্ধ। (এইটা ভেরিফাই করে দেখতে হবে, মনে পড়লো যখন)। এমনিতে মসজিদে বা কবরস্থানে মহিলারা ঢুকতে পারবেন না এমন কোন অথেন্টিক ধর্মীয় রেফারেন্স-এর কথা আমার জানা নেই, আঞ্চলিক আচার-আচরণ অবশ্যই থাকতে পারে। আর আমি সর্বদা মানুষের ধর্মীয় বা সামাজিক রীতিনীতির প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা পছন্দ করি।

মসজিদের বাইরে আমাদেরকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়নি। আমরাই দাঁড়িয়ে ছিলাম! অন্তত আমি নিজে ছিলাম, বাই চয়েস! অঞ্চলভেদে অবশ্যই মানুষের সামাজিক রীতি ও আচারে কিছু পার্থক্য আসে। আমার অভিজ্ঞতা বলে পুরান ঢাকা, সিলেট, চিটাগাং-এর মুসল্লীদের মাঝে আলাদা ধরনের কিছুকিছু ধর্মীয় রীতি আছে (নো অফেন্স টু আদারস)। বলতে পারো আমি নিজে কারও অনুভূতিকে হার্ট করতে চাইনি, আবার আমার মেজাজ যেহেতু একটু গরম, তাই কেউ কিছু যদি বলতোও তাহলে তার যুক্তিখণ্ডনে দুইটা কড়া কথা শুনিয়ে সবার মুড অফ করতেও চাইনি।
আমি ঢুকতে চাইলেই পারতাম আসলে। গেট দিয়ে ভেতরে, মসজিদটা দোতলা মনে হলো, নিচে বাগান দেখতে পাচ্ছিলাম, আমি ওখানে দাঁড়িয়ে কাওকে বিরক্ত না করে দুই চারটা ছবি পটাপট তুলে বেরিয়ে গেলে কেউ আমাকে কিছু বলতেন না, ঘাড় ধরে বার তো করে দিতেনই না, আমি তোমাকে এই ব্যাপারে আশ্বস্ত করতে চাই! পরেরবার না হয় মনে কইরো, হাতেকলমে করে দেখাবোনি!
(আর ছবিটবি তোলা বা ঐতিহাসিক আলাপসালাপ, ইত্যাদি করার ব্যাপারে ফেসবুকে গত ফেব্রুয়ারির ভ্রমণের একটা অ্যালবাম আছে, সেখানে বাংলা একাডেমির উল্টোদিকে তিন নেতার কবরের পেছনে হাজী শাহবাজের মসজিদের ভেতরে আমার টোটো করার ছবি আছে, তন্ময়'দা নিয়ে গিয়েছিলো, শুধু আমি আর আমার ভাই ছিলাম, দেখতে পারো, সময়টা শুক্রবারের সকাল ছিলো যতদূর মনে পড়ছে, কাজেই মসজিদ ফাঁকা ছিলো, নামাজের ওয়াক্ত ছিলো না, হলে আমরা অপেক্ষা করতাম বা যেতাম না, লাইক আই সেইড কনভেনিয়েন্স ফর বোথ পার্টিজ)।

প্রাসঙ্গিকই একটু মনে পড়লো, শুধু ফ্যাক্ট হিসেবে স্টেইট করছি, ব্যক্তিগতভাবে যেন কেউ না নেন, ভারতে আমি আরেকটু বেশিই নিয়মনীতি দেখেছি। ঘেয়ো ময়লা কুকুর বেড়াল ঘোরা, আর পায়রার গু ভর্তি মন্দিরগুলোতেও জোর করে জুতো খুলে হাতে নেয়ানো, সব জায়গাতেই, বিশেষ করে দক্ষিণেশ্বরের বিশাল স্থাপনায় সেই সদরের কাছে, খুবই নোংরা এবং আনহাইজেনিক ব্যপার!

কৌস্তুভ এর ছবি

যা বললাম সাফি ভাইকে, নামাজ চলছিল বলে বেশি ঘুরতে পারিনি এটা স্রেফ একটা স্টেটমেন্ট, যা হয়েছিল তাই বললাম, এটা কোনো অভিযোগ নয়, অভিযোগ দ্বিতীয় পার্টটায়।

আমাদের সেই সময় ওই মসজিদটার পরিচয় জিনি দিচ্ছিলেন, (সেটা সিমনভাই, শাকিলভাই নাকি অন্য কেউ, মনে নেই) তাঁর ওই বক্তব্য ছিল যে ওই মসজিদে নামাজের সময় মহিলাদের ঢুকতে দেওয়া হয় না/মহিলাদের ওইখানে নামাজ পড়তে দেওয়া হয় না। তুমি ঢুকে দুয়েকটা ছবি তুলতে পারতে কি না, সেটা এক্সেপশন, সেটা সাধারণ নিয়ম (যে নিয়মটা আমাদের বলা হয়েছে) তো নয়।

ভারতে কেন, অন্যত্রও মন্দিরে অনেক ফ্যাচাং। দমুদি বললেন যেমন। অনেক মন্দিরে ঋতুবতী নারীদের দূষিত বিধায় ঢুকতে দেওয়া হয় না। বলতেই পার, যে ধর্মের যেমন নিয়ম, কিন্তু কথা হল, নিয়মটা কি fair?

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ওই মসজিদে নামাজের সময় মহিলাদের ঢুকতে দেওয়া হয় না/মহিলাদের ওইখানে নামাজ পড়তে দেওয়া হয় না

একটা স্পেসিফিক মসজিদের কথা হচ্ছে। তুমি ঠিক করে বলতে পারছো না,মানে তোমার ঠিকমতন মনে নাই (যেমন মনে নাই কে তোমাকে তথ্যটা দিয়েছেন) যে মহিলাদেরকে নামাজের সময়ে (শুধু এই সময়েই নাকি সার্বিকভাবে? কোন্‌টা মনে হচ্ছে তোমার?) ঢুকতেই দেয়া হয় না, নাকি শুধু নামাজ পড়বার ব্যবস্থা নাই? আমি বলেছি যে এই মসজিদটার ব্যাপারে আমি জানি না। শাকিল ভাই যদি বলে থাকেন, তিনি ঐ এলাকার অধিবাসী বলে নিশ্চিত জেনেই বলেছেন ধরছি, তবে আমি স্পেসিফিক খোঁজ নেব, যে 'মহিলাদের প্রবেশাধিকার নিষেধ' এমন কোন নিয়ম সেই মসজিদের আছে কিনা।

তুমি ঢুকে দুয়েকটা ছবি তুলতে পারতে কি না, সেটা এক্সেপশন, সেটা সাধারণ নিয়ম (যে নিয়মটা আমাদের বলা হয়েছে) তো নয়।

বাংলাদেশের সম্পর্কে আমার জেনেরাল আইডিয়া তোমার থেকে অনেক বেশি। বাংলাদেশে মহিলাদের অবস্থা নিয়ে তো বটেই। আমি বলছি যে কোন ধর্মীয় স্থানে মহিলাদের ঢুকতে বাধা দেয়া হচ্ছে, এমন রীতি আমার চোখে পড়েনি সেভাবে। হুম, যেখানে যেখানে আলাদা স্থান করেই দিয়েছে পুরুষ ও মহিলাদের জন্যে, সেখানে পুরুষেরা মহিলাদের স্থানে ঢুকে পড়ুন এন্ড ভাইস ভার্সা, সার্বিকভাবে কাম্য নয়।
সাধারণ নিয়ম হলো মানুষ উপাসনার সময়ে বেড়াইতে উপাসনালয়ে ঢুকে না। যে ধর্মের পর্যটক হোক, আর যেই ধর্মের উপাসনালয়েই ঢুকুক না কেন।
এক্সেপশন হতে পারে একটা দুইটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা, আমি কিন্তু বলেছি যে আমি যেকোন মসজিদেই ছবি তুলতে এবং দেখতে ঢুকতে পারবো, এটা বলেছি অনেক জেনে বুঝে, বাংলাদেশে আমি যতটা ঘুরেছি আমার সমান আর খুব কম মেয়েই ঘুরে দেখেছে সেই ফ্যাক্ট থেকে, এটা নিজের সম্পর্কে বড়াই করে বলা না।

যে ধর্মের যেমন নিয়ম, কিন্তু কথা হল, নিয়মটা কি fair?

তোমার প্রশ্নটার উত্তর দিতে আগ্রহী না।
এখানে আগ্রহী না, কারণ - থিওলোজিতে বর্তমানে আমার আগ্রহ প্রায় জিরো। আমি আস্তিকতা, নাস্তিকতা, মধ্যবর্তীতা, কোন বিষয়েই আলাপ করতে আগ্রহ পাই না। আমার নিজের কিছু স্ট্যান্ড থাকার উচিত যদি কেউ মনে করে, আমি বলবো, হ্যাঁ তা আছে, কিন্তু আমি সেটা নিয়ে সবার সাথে, সবখানে কথা বলি না। এটা আমার চয়েস।
ব্যক্তিগতভাবেও আগ্রহী না, কারণটা এখানে প্রকাশ্যে শুনতে তোমার হয়তো ভালো লাগবে না, বলা উচিতও না হয়তো, কাজেই থাক। শুধু বলছি যে, আমার নিজের অভিজ্ঞতায় এখনো পর্যন্ত নিজেকে মসজিদ দ্বারা সেকেন্ড-রেট সিটিজেন অনুভূত হবার ঘটনা শূন্য, বরং অন্যান্য অনেক ধর্মহীন কর্মকাণ্ডে এই অনুভূতি এসেছে, সেগুলা আলোচনা এখানে প্রাসঙ্গিক নয়।

শেষে এসে, আবারও বলছি, অঞ্চলভেদে সামাজিক ও ধর্মীয় আচারে পার্থক্য থাকতে পারে। শুধু শুধু নিজের দেখার, ছবি তোলার আগ্রহে আমি কোন স্থানে গ্যাঞ্জাম, তর্কাতর্কি, ইন জেনেরাল অপ্রীতিকর কোন ঘটনা সৃষ্টি করতে চাই না। আমি আগাগোড়াই যতক্ষণ সম্ভব ততক্ষণ কোন এলাকার জেনেরাল পপুলেশনের সামাজিক ও ধর্মীয় রীতির প্রতি রেস্টপেক্টফুল থাকতে আগ্রহী।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

আচ্ছা, ওই মসজিদে মহিলাদের নামাজ পড়া অ্যালাউড কিনা সেটাই দেখো।

একটা পয়েন্ট তুমি সহ অনেকেই মিস করছ -

মহিলারা সেকেন্ড’ক্লাস সিটিজেন কিনা তাই তাঁদের বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হল।
...
একজন মানুষ বা একজন পুরুষ হিসাবে আমাদের তো লজ্জাই লাগে হিন্দু-বৌদ্ধ সব ধর্মেই মা-বোনেদের প্রতি এমন ‘সম্মান’ বিছিয়ে রাখা দেখতে।

ওই অংশটার মূল পয়েন্ট বিভিন্ন ধর্মে মহিলাদের প্রতি অসম্মান। সেটা থিওলজিকালিই হোক আর বাই প্র্যাকটিস। ওই মির্ধা মসজিদ, বা ইসলাম ধর্ম, এগুলো স্পেশাল কেস, সেজন্যই "তাই তাঁদের বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হল" বলা। পুরুষদের কোনো একটা উপাসনাস্থলে (নানা ধর্মেই) মহিলাদের ঢুকতে দেওয়া হবে না, এর পেছনের কারণটা 'ছেলে-মেয়েদের আলাদা টয়লেট' এর মত হার্মলেস নয়। এই মসজিদে কী হল নাহল, সেটা 'ইসলামিক' না 'অনৈসলামিক', এগুলো মূল পয়েন্ট নয়, ওটার প্রসঙ্গে মূল বক্তব্যটা এসেছে।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

তোমার মন্তব্যের জবাব আমার আগের মন্তব্যগুলোতে আসলে দেয়া হয়ে গেছে, বারবার একই কথা রিপিট করতে ভালো লাগে না। কপি-পেস্ট করে দিচ্ছি কিছু জিনিস। আর আমি যেহেতু শতাধিক মন্তব্যের পোস্টে সাধারণত আলাপ করবার সবগুলো দিক এবং প্রায় সবরকমের প্রাসঙ্গিক মতামত এমনিতেই চলে এসেছে এই ধারণা পোষণ করি, ভবিষ্যতে আর মন্তব্য করতে আগ্রহী না এই পোস্টে।

আমি বলেছি -
আমার নিজের অভিজ্ঞতায় এখনো পর্যন্ত নিজেকে মসজিদ দ্বারা সেকেন্ড-রেট সিটিজেন অনুভূত হবার ঘটনা শূন্য, বরং অন্যান্য অনেক ধর্মহীন কর্মকাণ্ডে এই অনুভূতি এসেছে, সেগুলা আলোচনা এখানে প্রাসঙ্গিক নয়।

শাকিল ভাইয়ের সাথে আমার আলাপ নাই, ঐদিনই প্রথম দেখা হয়েছে। আমি খান মহম্মদ মির্ধা’র মসজিদে মেয়েদেরকে উপাসনা করার জায়গা নাই নাকি ঢুকতে গেলেই তেড়ে আসে এই তথ্য জেনে নেব তার সাথে যোগাযোগ হলেই। তবে তুমি তো তোমার পোস্টে প্রসঙ্গটা নিয়ে এসেছ, নিজেই ভালোকরে ভেরিফাই হয়ে লেখা উচিত ছিলো, কে বলেছিলো, কী বলেছিলো, কোন্‌ প্রসঙ্গে বলেছিলো, সেটাই পুরা বাংলাদেশের ব্রডার পারসস্পেক্টিভ কিনা, ব্লা ব্লা। আরও বড় কথা হলো, তোমাদের মনে যখন এত প্রশ্ন আসলো, তখন এই ঘটনার তাৎক্ষণিক পরেও আমি তোমাদের সাথে প্রায় ঘন্টাখানেক থাকলেও আমাকে বা আর দুইজন মেয়ের একজনের সাথেও এই প্রসঙ্গে কোন আলাপ করলা না কেন? আমাদের কার কী মতামত, কে, কী দেখেছি তা জানতে পারতা। সেটা থেকে তোমার ভিন্ন কোন পার্সপেক্টিভ আসলেও আসতে পারতো। তুমি নিজেই যেখানে রানা আপাকে তার মন্তব্যের জবাবে লিখেছ -

এই পোস্টটা লেখা ঢাকাস্থ ও অন্যান্য সচলবন্ধুদের জন্য, আমার/তাদের যে বন্ধুরা তাদের পরিচিত (যেমন শাকিলভাই, অন্দ্রিলা), তাদের জন্য। এই লেখাটা মূলত তাদেরই গল্প একটু 'পচানি' সহযোগে তাদেরই কাছে পরিবেশন করা, internal reference-ওয়ালা গল্প/স্মৃতিচারণ/হিউমারই এই লেখাটার মূল উপজীব্য

তাহলে নিশ্চয়ই তুমি এই বিষয়টা এত বিচলিত হয়েছ যে সচল বন্ধুদের নিয়ে লেখা একটা পোস্টে এইটা টেনে আনতেই হয়েছে তোমাকে?! সেক্ষেত্রে এত চিন্তার একটা বিষয় মাথায় ঘুরপাক খাবার পুরাটা সময় রয়ালে চুপ করে বসে সবাই মিলে বাদামের শরবত খাবার সময়টায় আমার পাশে চুপ করে বসে না থেকে এটা নিয়ে আল্প করলেই তো হত! আমি অন্তত আমার অভিজ্ঞতাগুলো শেয়ার করতাম তোমার সাথে!

পি.এস.
বাই দ্য ওয়ে, তোমাকে উপহার দেয়া বইটায় আমি তোমাকে আবারও বাংলাদেশে আসবার শুভেচ্ছা জানিয়েছি। সেটা লিখেইছিলাম যাতে তুমি একাধিকবার আসার ও ঢাকাস্থ সচলেরা বাদে আরও অনেক বাংলাদেশীদের সাথে মেশার ও মতামত বিনিময়ের অভিজ্ঞতা অর্জন করো, আশাকরি সেই অভিজ্ঞতা তোমার হবে। (রাত ১:২৩)

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

সাফি এর ছবি

কৌস্তুভ,
আমি কি ধার্মিক এই প্রশ্নের উত্তর মনে হয় সাবজেক্টিভ। আপনি হয়ত জানতে চেয়েছেন আমি আস্তিক কিনা। হ্যা আমি আস্তিক। ধর্মমতে আমার ধর্ম ইসলাম। ইসলামে নারী-অবদমনকারী সিস্টেমের কারণে আমি ইসলাম ধর্মের অধিকারী হিসেবে লজ্জিত না। কারণ ইসলামের অনেক কিছুই আমি পালন করিনা, মহিলাদের সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন হিসেবে গণ্য করা তার মধ্যে একটা। ইসলামের সাথে আমার অভ্যেস এবং আমার কমনসেন্স মেশালে যতটুকু হয়, আমি তার মাঝে থাকার চেষ্টা করি।

আপনি আপনার মূল লেখায় বলেছেন,

তখন নামাজের সময়, আমরা কজন ভেতরে ঢুকলেও তেমন ঘুরতে পারলাম না, আর মহিলারা সেকেন্ড’ক্লাস সিটিজেন কিনা তাই তাঁদের বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হল।

এখানে আমার মনে হয়েছে আপনার দুটো জিনিসে আপত্তি লেগেছে। প্রথমত, নামাজের সময়ে আপনি তেমন ঘুরতে পারেননি। এটা আমার কাছে খুবই হাস্যকর লেগেছে। কোন স্কুল চলাকালে আমি এখন স্কুলে ক্লাশরুমে যেয়ে বেড়াতে চাইলে সেটা কতখানি যুক্তিযুক্ত হবে, সেই বিচার আপনার উপরেই ছেড়ে দিলাম। দ্বিতীয়ত, আপনার আপত্তি লেগেছে মেয়েদের বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা নিয়ে। আপনার লেখার এই অংশটার উত্তর হিসেবেই আমি বলেছিলাম, যেসব মসজিদে মহিলাদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা আছে সেখানে তারা নামাজ পড়তে পারেন ভিতরে যেয়েই। এবং এটা বাংলাদেশ স্পেসিফিক না সারা পৃথিবীতেই একি অবস্থা। এটা সেখানকার নিয়ম, আপনি সেখানে গেলে আপনি সেই নিয়ম মানতে বাধ্য হবেন। এটাই স্বাভাবিক। পাবলিক টয়লেটে ছেলেদের অংশে যেয়ে যদি এখানে মেয়েরা কেন বাথরুম করতে পারবেনা বলে আক্ষেপ করেন তাহলে তো সমস্যা।

আপনার লেখায় অনেক কিছুই উঠে এসেছে যেটা নিয়ে আমার দ্বিমত আছে। আমি সেটা আপনার পর্যবেক্ষণ হিসেবে মেনে নিয়েছি। যেমন ধরা যাক বাসে চলতে চলতে পীর মাজারের পোস্টার আপনার চোখে লাগে, অথচ চারিদিকে চলাফেরা করা মহিলাদের মেজরিটিই যে বোরখা/হিজাব পরে নেই এটা কিন্তু আপনার চোখে পরেনা। প্রায় ৯০% মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠের দেশে এটা অস্বাভাবিক বইকি। আপনার লেখায় এসব বিষয় ইচ্ছাকৃত না অনিচ্ছাকৃত সেই বিতর্কেও যাইনি, বিদেশী হিসেবে বাংলাদেশ নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ হিসেবেই নিয়েছি।

এখন বলুনতো আমার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আমার ধর্ম কিভাবে প্রাসঙ্গিক হলো? আপনার লেখা পড়ে মন্তব্য করার সময়ে তো আমি আপনার ভারতীয় জাতিসত্তা বা ধর্ম নিয়ে কোন ইঙ্গিত করিনি। তাহলে আমার ক্ষেত্রে ধর্ম পরিচয় কেন প্রয়োজন হচ্ছে?

আরেকটা প্রশ্ন করি, ভারতে যেই শতাংশ হিন্দু সধবারা সিঁদুর পড়েন, সেই তুলনায় বাংলাদেশে কত শতাংশ মহিলাকে পর্দা করতে দেখলেন?

কৌস্তুভ এর ছবি

সাফি,

১. আপনি বলছেন আপনার ধর্ম ইসলাম। আবার বলছেন ইসলামের অনেক কিছু আপনি পালন করেন না। ইসলাম ধর্মের সব tenet আপনি মানেন না, নিজের রুচিমত কিছু বেছে সেগুলো পালন করেন।
আপনাকে ইচ্ছামত tenet বেছে নেওয়ার অধিকার কি ইসলাম ধর্ম দিয়েছে? কোরান কি একজন মুসলিমকে ছাড় দিয়েছে ইচ্ছামত একটা সুরা পালন করার কিন্তু আরেকটা না করার?

২. নামাজের সময় বলে বেশি ঘুরতে পারিনি, এটা অনুযোগ নয়, স্রেফ যা হয়েছে/যা করেছি তাই বলেছি। হোসেনি দালান ভালো করে ঘুরেছির মতনই এটা ভালো করে ঘুরতে পারিনি, এটা একটা স্টেটমেন্ট, অভিযোগ নয়। অভিযোগটা পরের পার্টে, মহিলাদের ঢুকতে না দেওয়া নিয়ে।

৩. মসজিদের সঙ্গে পাবলিক টয়লেটের তুলনাটা ভিজুয়ালাইজ করে পুরো গড়াগড়ি দিয়া হাসি
কিন্তু পাবলিক টয়লেটের তুলনাটা খাটে না। কারণটা আপনিও বুঝবেন - পুরুষ আর মহিলাদের আলাদা টয়লেট হবার মধ্যে মহিলাদের প্রতি অবমাননাকর, unfair কোনো দৃষ্টিভঙ্গি নেই। সেটা মসজিদে ঢুকতে দেওয়ার সিস্টেমে আছে। আমার মন্তব্যটার শেষে, আপনার প্রতি ওই যে দুটো প্রশ্ন করলাম, ধর্মের ওই দুটো নিয়ম fair কিনা, তার উত্তর দিলেন না তো?

৪. আপনি মসজিদে ঢুকতে না দেওয়ার ওই যে ইসলাম ধর্মের রীতিটা, তাকে ডিফেন্ড করছেন। একজন এথেইস্ট/হিউম্যানিস্ট সেটা করত না। তাই অনুমান করে নেওয়া কঠিন নয় যে আপনি ধার্মিক (অথবা ধর্মের অ্যাপোলজিস্ট), মোর স্পেসিফিকালি, এই ক্ষেত্রে যেহেতু, ইসলাম ধর্মানুসারী।

৫. মুর্শেদভাইয়ের বোরখার পোস্টে এই নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছিলেন অনেকে, যে আমাদের কাছে বোরখার অর্থ প্রত্যক্ষে না হলেও অবচেতনে সেই মেয়ে ধর্মীয় রিপ্রেশনের বশবর্তী হয়েই বোরখা পরছে। এ অবস্থায় <৫০% মেয়ে বোরখা পড়ছে এটা যত না আনন্দের কথা তার চেয়ে দুঃখের কথা হচ্ছে এখনও x% মেয়ে (x যা-ই হোক) বোরখার মাধ্যমে ওই রিপ্রেশনের কবলে রয়েছে।

৬. আচ্ছা, ভারতে সিঁদুর পরা হিন্দু মেয়ের অনুপাত > বাংলাদেশে বোরখা পড়া মুসলিম মেয়ের অনুপাত যদি হয়ই, সেটা এই প্রসঙ্গটায় টেনে আনছেন কেন?

সাফি এর ছবি

০। আমার ধর্ম কিভাবে আমার আগের মন্তব্যের সাথে প্রাসঙ্গিক হলো সে উত্তর পেলাম না এখনও। আরো উল্টো একগাদা প্রশ্ন করে মূল বিষয় থেকে সরিয়ে দিচ্ছেন। ভাল বুদ্ধি।

১। আমার ধর্ম আমার ব্যক্তিগত ব্যাপার। আমি কিভাবে আমার ধর্ম পালন করি সেটা নিয়ে আপনার কাছে জবাবদিহিতা করাটা কি আমার ব্যক্তিস্বাধীনতায় হস্তক্ষেপ হয়ে যাচ্ছেনা? জোকার নায়েকগোত্রীয় মানুষজন এতকাল ধর্ম নিয়ে নসিহত করত, এখন আপনি সেই লাইনে দাঁড়ালেন, উত্তম।

৩,৪।

আপনি মসজিদে ঢুকতে না দেওয়ার ওই যে ইসলাম ধর্মের রীতিটা

আপনার এই বক্তব্য তো সঠিক না। আমি বার বার সেইটাই ধরিয়ে দিচ্ছি। আমি আমার আগের দুই মন্তব্যেই বলেছি "যেসব মসজিদে মহিলাদের নামাজ পড়ার ব্যবস্থা আছে সেখানে তারা নামাজ পড়তে পারেন ভিতরে যেয়েই। " তাহলে মসজিদে মহিলাদের ঢুকতে না দেওয়া ইসলামের রীতি হলো কিভাবে? আর তাছাড়া, যেই ঘটনার সূত্রধরে আপনি এই কথাটা বলেছেন সেটারও সত্যতা নেই। যাযাবরাপু নিজেই এসে বলেছেন ওনাকে মসজিদে ঢুকতে কেউ বাধা দেয়নি।

৫,৬। বোরখা এবং সিঁদুরের প্রসঙ্গ এসেছে পীরের পোস্টার দেখে, বাংলাদেশের ধর্মীয় আবহাওয়া নিয়ে করা আপনার পূর্বাভাস নিয়ে। বোরখা যেমন মুসলিম নারীরা পরে, তেমনি সিঁদুর পরে হিন্দু নারীরা। অর্থাৎ উভয়েই তাদের ধর্মের আচার পালন করে। বাংলাদেশে যত শতাংশ মহিলারা কিনা বোরখা পরে বের হচ্ছে তার চেয়ে অনেক বেশী শতাংশ মহিলা কলকাতায় সিঁদুর পরে বের হয়। কিন্তু কলকাতার ধর্মীয় আবহাওয়া তাতে নড়েচড়েনা। অথচ পীরের পোস্টার থাকায় বাংলাদেশের ধর্মীয় আবহাওয়া বেশী হয়ে যায়। আর আপনার জ্ঞাতার্থে বলি, ইসলাম অনুসারে পীরবাদ কিন্তু অনৈসলামিক বিষয়।

আমাকে যেভাবে ইসলামের এপোলজিস্ট বানানোর চেষ্টা করছেন, সেটা আপনার লেখার সাথে ভালই যায়।

কৌস্তুভ এর ছবি

সাফি,

০. আমার লেখাটাতে মূল প্রশ্নটা ছিল, যাঁরা এই সিস্টেমটার মধ্যে আছেন, তাঁরা ওই সিস্টেমটাকে আপত্তিজনক মনে করেন কিনা। তাই আপনি যখন বলতে এলেন যে আপনি তা মনে করেন না, তাই প্রশ্নটা করলাম যে আপনি কি সিস্টেমের অনুসারী হয়ে অর্থাৎ সিস্টেমের মধ্যে থেকে বলছেন কিনা।
আপনার ধর্ম ইসলাম কিনা, সেটাও খুব বড় একটা ইস্যু নয়, এক্ষেত্রে মসজিদ তাই ওই কথা। আপনি হিন্দু হলে সবরীকলা মন্দির সম্পর্কেও একই কথা আসত।

১. এটা নসিহত নয়, জবাবদিহি চাওয়াও নয়। জানার ইচ্ছা থেকে কিছু প্রশ্ন করেছি। "আপনার ইসলামধর্ম ভ্যালিড নয়" এরকম কোনো স্টেটমেন্ট তো চাপিয়ে দিইনি। আপনি যখন আলোচনায় এসেছেন, ইসলাম ধর্ম সম্পর্কে আপনার ধারণার কথা জানাচ্ছেন, তখন আরো কিছু জানার ইচ্ছা থেকে প্রশ্ন করতে পারব না? ইচ্ছা না হয়, ব্যক্তিগত ব্যাপার মনে হয়, উত্তর দেবেন না, সে আপনার ব্যাপার।

৩,৪. আপনার মন্তব্য থেকেই বোঝা যাচ্ছে, 'ইসলাম' কোনো ফিক্সড ব্যাপার না, যে যেমনভাবে ইচ্ছা ইসলামকে ইন্টারপ্রেট করেন। তাহলে যে মসজিদে নারীদের ঢুকতে দেওয়া হয় না, তাদের নিজস্ব ইসলামের রূপ ওইটা। আপনাকে করা ওই প্রশ্নটা এই কনটেক্সটে রেলিভ্যান্ট, যে তাহলে আপনার/আপনাদের ধারণার ইসলাম থেকে পৃথক তাদের এই ইসলামের রূপ কি ভ্যালিড? ওটাকে আমি "ওই যে ইসলাম ধর্মের রীতিটা" বলায় আপনার আপত্তি থেকে তো মনে হচ্ছে যে সেটা নয়।

যাযাদি তো মসজিদে ঢোকার চেষ্টাই করেন নি, তাঁকে বাধা দেওয়ার প্রশ্ন আসছে কোত্থেকে। উনি বলছেন খোঁজ নিয়ে দেখবেন। আর এই ঘটনাটা, যদি তর্কের খাতিরে ধরেই নি যে অনৈসলামিক, তাহলেও খোদ ধর্মগ্রন্থগুলোয় লেখা শয়ে শয়ে নারীবিরোধী কথাবার্তা তো রয়েছেই। 'সেকেন্ড ক্লাস সিটিজেন' তো সেগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে সামগ্রিকভাবেই সত্যি।

৫,৬. হ্যাঁ, কে একজন তো এই প্রশ্নও করেছিলেন, যে বাংলাদেশে সেই প্রাচীনকালে অধিকাংশ মানুষ মুসলিম হওয়া শুরু করেছে শাহজালাল ইত্যাদি পীরের হাত ধরে। তাহলে কি তাদের ইসলামত্ব ইনভ্যালিড হয়ে যাবে?

বিয়ের সিম্বল হিসাবে মহিলাদের সিঁদুর পরা অবশ্যই প্রশংসনীয় নয়, তার আদি ইন্টারপ্রিটেশন দেখলে। কিন্তু বোরখা পরা একটা মেয়ের প্রতি যতটা সরাসরি রিপ্রেশন, তার পক্ষে যতটা কষ্টকর, সেটা কি সিঁদুর পরার সমতুল্য? এটা তুলনা করা যায় একাদশীর দিন হিন্দু বিধবাদের নিরম্বু উপবাসের নিয়মের সাথে।

৭. a·pol·o·gist
a person who makes a defense in speech or writing of a belief, idea, etc.
আপনি ওই প্রথাগুলোকে 'যে উপাসনালয়ের যা নিয়ম সেটা তো মানতেই হবে' এই ধরনের কথা বলে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করেছেন বলেই মনে হল। তাই বলেছি।

সাফি এর ছবি

প্রথম দেখি পোস্টে কী লিখেছিলেন,

মহিলারা সেকেন্ড’ক্লাস সিটিজেন কিনা তাই তাঁদের বাইরেই দাঁড়িয়ে থাকতে হল। বাবার ইসলাম সম্পর্কে ধারণা কম, একে-ওকে জিজ্ঞেস করতে লাগলেন, ওদের ঢুকতে দেওয়া হবে না কেন

এর পর যাযাবরাপু এসে বললেন,

মসজিদের বাইরে আমাদেরকে দাঁড় করিয়ে রাখা হয়নি। আমরাই দাঁড়িয়ে ছিলাম! অন্তত আমি নিজে ছিলাম, বাই চয়েস!

এর প্রেক্ষিতে আপনি মন্তব্যে বললেন,

যাযাদি তো মসজিদে ঢোকার চেষ্টাই করেন নি, তাঁকে বাধা দেওয়ার প্রশ্ন আসছে কোত্থেকে।

পোস্টের বক্তব্য আর মন্তব্যের মাঝে পার্থক্য হল যাযাবরাপু এসে নিজের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে গেছেন। সুতরাং আপনার মন্তব্য ১৮০ডিগ্রী ঘুরে গেছে, নাকি দুই বক্তব্য এক আমিই বুঝতে ভুল করছি? মন্তব্যের বক্তব্য মেনে নিলে (অর্থাৎ বাধা না দেওয়া হলে) বাবা কেন ইতিউতি "ঢুকতে দেওয়া হবেনা কেন?" প্রশ্ন করেন সেই উত্তর মেলেনা।

খোদ ধর্মগ্রন্থে অনেক নারীবিরোধী কথা লেখা আছে, অনেকরকম অসঙ্গতি আছে, সেইগুলা নিয়ে পোস্ট দেন। আমি সেখানে ধর্মকে ডিফেন্ড করতে গেলে, সেই আলাপ তো সেই পোস্টে হবে। তখন আমার ধর্মবিশ্বাস প্রাসঙ্গিক হতে পারে যদি আমি যুক্তি না দেখিয়ে বিশ্বাসের উপর ভিত্তি করে পোস্টে আপত্তি করি - সেটা এই পোস্টে কেন প্রাসঙ্গিক হবে? এই পোস্টে আপনি একটা ভুল ইনফরমেশন দিয়েছেন (ইসলামে মহিলাদের মস্জিদে ঢুকতে দেওয়া হয়না), আমি প্রথম থেকে যথেষ্ঠ ধৈর্য্যের সাথে আপনাকে বোঝানোর চেষ্টা করছি ছেলেদের মসজিদ আর মেয়েদের মসজিদ ভিন্ন। আপনি সেটার ব্যাখ্যা করছেন আমি মুসলিম হিসেবে ইসলামকে ডিফেন্ড করার চেষ্টা করছি! আমি আমার প্রথম মন্তব্যে যদি ভুল কিছু বলে থাকি আপনি সেটা ধরায়ে দেন, সেইটা না করে নিজের বক্তব্য জাস্টিফাই করার জন্য এখন আমার কথা টুইস্ট করতেছেন। আমি মুসলিম না হয়ে হিন্দু/বৌদ্ধ/নাস্তিক হলেও আমার বক্তব্যের সাথে সাংঘর্ষিক হয়না - এইটা না বুঝতে না চাওয়ার পিছে কি কারণ থাকতে পারে সেইটা অনুধাবনের শক্তি আমার নাই। তাই এই প্রসঙ্গে ক্ষান্ত দিলাম।

ভাল থাকবেন।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

... হোসেনি দালান ভালো করে ঘুরেছির মতনই এটা ভালো করে ঘুরতে পারিনি...

এহ্‌ এইটা স্কিপ করে গিয়েছিলাম! আসলেই তো তুমি তো হোসেনি দালান স্থান দেখেছিলে আমি পৌঁছাবার আগে, ঐদিনই, মাত্র ঘন্টাখানেক আগেই! হোসেনি দালানটা আসলে কী, সেটা সম্পর্কে তোমাকে কেউ সম্যকভাবে জানিয়েছিলেন আশা করি? এইটাও কিন্তু আরেকটা মুসলিম উপাসনালয়/ধর্মীয় স্থান! হ্যাঁ, এইটা শিয়া মুসলিমদের, মুসলিম এবং ধর্মীয় নান দ্য লেস! তা এইখানে কি মেয়েরা প্রবেশ করেছিলেন? যতদূর জানি করেছিলেন। তাদেরকে কি বাধা দিতে দেখেছিলে কাওকে? যতদূর জানি দেখনি।
ইন্টারেস্টিং ফ্যাক্টস!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

কৌস্তুভ এর ছবি

তো? কালীঘাট মন্দিরে মেয়েরা ঢুকতে পারে, তাই কি সবরীকলা মন্দিরের ঋতু-যোগ্য বয়সের মেয়েদের ঢুকতে না দেওয়ার প্রথাটা কাটাকুটি হয়ে গেল?

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

সেটাই!! তাইলে কী দেখছি? তুমি একটা মাত্র শহর ঢাকার, দুইটা মাত্র মসজিদ/মুসলিম উপাসনালয়, তাও আবার একই এলাকার, দেখেছ।
(আরও দেখে থাকতে পারো, কিন্তু সেগুলার কথা এই পোস্টে নাই, তোমার মহিলাদের জন্যে মসজিদে প্রবেশ নিষেধ এবং তার থেকে সেকেন্ড রেট সিটিজেন স্টেটমেন্ট বা ভাবনা এই দুইটার প্রেক্ষিতেই এসেছে কাজেই আমি অন্তত এই প্রেক্ষিতেই আলাপ করবো)।

একজন স্ট্যাটিস্টিকস না জানা খুব সাধারণ মানুষ হিসেবে আমি যা বুঝছি, তোমার চিন্তাভাবনা যেইটা তুমি সঠিক ভাবছো, এইটা যে একটা খুব ছোট অংশের, খুব ছোট একটা স্যাম্পল, এবং পুরা ধর্মতো বাদ, কোন দেশের বা সমাজের পুরাটাও রিপ্রেজেন্ট করে না ঠিক মতন, এই কথাটাই বলার আমার বা সাফি ভাইয়ের প্রচেষ্টাটা তুমি নিজে একজন স্ট্যাটিস্টিশিয়ান হয়ে মানতে নারাজ!

তুমি সাফি ভাইয়ের ছেলেমেয়েদের আলাদা টয়লেটে ঢোকার উদাহরণ উপাসনালয়ের উদাহরণের সাথে তুলনায় হাসাহাসি করেছ, (হার্মলেস কিনা সেই তর্ক আমার অপছন্দের আলোচনা ধর্মতত্ত্বে পড়ে, ঐটাতে যাবো না যেমনটা আগে বলেছি), আমার কাছে হাসি লাগেনি, অপ্রাসঙ্গিকও লাগেনি। কারণ আমি বুঝাতে চাইছি শুরু থেকেই যে ধর্মীয় কোন নিষেধাজ্ঞা নাই মহিলাদের উপাসনালয়ে যাওয়া নিয়ে। যেটা থাকতে পারে তা হলো কোন উপাসনালয়ের মেইন্টেন্যান্স কর্তৃপক্ষের নিজস্ব নিয়ম, বা হয়তো কোন এলাকার সামাজিক রীতি। ধরো কোন স্থানের বাগানে সাইনবোর্ড দেয়া আছে 'ফুল ছিঁড়িবেন না' বা লেখাও নাই হয়তো, ঐটা জাস্ট ঐ বাগানের নিয়ম, ছিঁড়লেই এসে জরিমানা করে, অথবা ঘাড়ে ধাক্কা দিয়ে বার করে দেয়। তা বলে কি দুনিয়ার সব বাগানেই ফুল ছেঁড়া নিষেধ নাকি! আজব তো! পুকুরে মাছ ধরার ব্যাপারেও তাই। বা যেকোন একটা জায়গায় ঢোকার ব্যাপারেও! এটা একটা জায়গার ধর্মীয় আর হোয়াটেভার জায়গা হোক, সেই স্থানের কর্তৃপক্ষের বানানো আইন বা নিয়ম। আর আমরা যে কোন মানুষ কোন জায়গার কোন নিয়ম থাকলে তা মানি, এমনিতেই, কারণ সেটাই করা উচিত। কোন দেশে গেলে সেখানকার আইন মানি, কোন প্রতিষ্ঠানে গেলে সেটার নিয়ম মানি। আমার স্কুল নিয়ে অনেক আগ্রহ আছে। কিন্তু তাই বলে কোন স্কুলে ক্লাশ চলাকালীন যেমন ঢুকে গিয়ে বাচ্চাদেরকে ধরে ধরে কে কোন্‌ ক্লাসে পড়ে ইন্টারভিউ নেয়া শুরু করি না, বা সেটা করতে গিয়ে কোথাও সেই সময়ে বিরক্ত হয়ে আমাকে বের করে যদি দেয় তো সেটা নিয়ে বিনা প্রয়োজনে একটা কথা বলে তর্ক বাধাই না। এই পোস্টে তোমার এই মসজিদের ইন্টারেস্টটাও আমার কাছে একই রকম মনে হয়েছে!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আপনাকে ইচ্ছামত tenet বেছে নেওয়ার অধিকার কি ইসলাম ধর্ম দিয়েছে? কোরান কি একজন মুসলিমকে ছাড় দিয়েছে ইচ্ছামত একটা সুরা পালন করার কিন্তু আরেকটা না করার?

এখানটায় একটা উত্তর দেয়ার প্রয়োজন বোধ করছি। ইসলাম ধর্মের মাত্র একটাই রূপ, এবং সেটা জানা ও স্বীকৃত, এই কথাটা আজ পর্যন্ত খালি দুই ধরনের মানুষের মুখেই বলতে শুনলাম - কাঠমোল্লা আর কাঠ নাস্তিক। সে নিয়ে বিস্তর লিখেছিও। এটা দেখুন, আর এটা দেখুন। এই ভাবনায় যৌক্তিক ত্রুটি আছে। প্রধানত, অ্যাকাডেমিক্যালি ইসলাম বলতে কোনো একটা বিশেষ ধারণা বোঝানো হয় না। এটার অবশ্যই একটা সর্বাধিক চর্চিত ধারা আছে। কিন্তু ইসলামের বর্ণনায় এটাই স্বাভাবিক, অ্যাকাডেমিক ও কমন সেন্স আদব যে মুসলমান কীভাবে বিশ্বাস করে সেভাবে বলা। যেমন, ইসলাম ধর্ম অধিকার দিয়েছে কি দেয় নি - এভাবে নয়। অনেক বা অধিকাংশ মুসলমান বিশ্বাস করে যে ইসলাম ধর্মে অমুক করা ঠিক নেই বা আছে - এরকম। ইসলামকে বাক্যে কর্তা হিসেবে ব্যবহার করে সাধারণত ওলামা আলেমরা। তাদের ক্ষেত্রে সেটা মানায়, কারণ তারা মনে করে খোদা আছে। তিনি দশটা ইসলাম দেন নি। একটাই নিশ্চয়ই দিয়েছেন। তাই ওনারা চোখে কেবল একটা ইসলামই দেখতে পান। অন্যগুলোকে পানিশ করেন। তারাই সাধারণত বলেন যে ইসলাম অমুক জিনিসের অধিকার দেয় না। কিন্তু নাস্তিকের মুখে এই বয়ান বড়ই বিপর্যয়কর। তারা যেহেতু খোদা নাই মানেন, তাদের ভাষায় ইসলামের আর এককত্ব থাকে কী করে? তাদের কাছে ইসলাম তো কোনো খোদা অবতীর্ণ বিষয় না যে ইসলামের খালি একটা রূপ থাকবে যার হাতে সকল অধিকার অনধিকারের বিচার ন্যস্ত। অন্যান্য রকমগুলো ইসলাম না, সেটা তারা ধার্য করেন কীসের ভিত্তিতে, যেখানে ইসলামই তাদের কাছে কোনো পরম সত্য বস্তু না? বললে তখন তারা বলেন, ইসলামের মোল্লারা তো তাই বলেন। কোরান তো তাই বলে। হ্যাঁ, কাঠনাস্তিকরাও প্রকারান্তে ইসলামের মোল্লাদের আত্মাটাকেই ধারণ করেছেন কিনা, তারা তাই ইসলামের মোল্লাদের হেজামোনিটাই তাদের তরফ থেকে বলবৎ রাখেন, তাদের বয়ান নিজের মুখে ধারণ করে। নিজের কথা নাই, নিজের বিবেচনা নাই।

আর ধর্মে কন্সিস্টেন্সি আশা করাটা কোথা থেকে এসেছে, সেটাও একটা প্রশ্ন। ধর্ম বিশ্বাসে কন্সিস্টেন্সি থাকাটা কেনো একান্ত প্রয়োজন?

তদুপরি ধর্ম যে ব্যক্তিগত বিশ্বাস সেটার ঠিক পুরোপুরি একটা বিপরীত অবস্থান, সেটার প্রতি একটা প্রচ্ছন্ন অবজ্ঞা কাঠনাস্তিক মনে প্রায়শই উপস্থিত। দুই দলই (কাঠমোল্লা আর কাঠনাস্তিক) সাধারণ ধার্মিকদের তাই পেয়ে বসে, চেপে ধরে। এস্পার কি ওস্পার রফা করতে চায়। ছোটখাটো জিহাদীচ্ছু আব্দুল আজিজও যেমন আমাকে চেপে ধরে বলেছিলো - "আপনি আল্লা খোদা মানেন কি মানেন না?" বহুদিন আপনি মানেন কি মানেন না জিজ্ঞেস করতে কাউকে শুনি নি। বললে মানুষ নিজে থেকে বলে। অথবা খুব কাছের মানুষকে জিজ্ঞেস করে। আজ বহুদিন পর এই মোটা দাগের জিনিসটা দেখলাম। এটা কোনো আর্গুমেন্টও না। গায়ে পড়ে অন্যের ধর্ম বিশ্বাস জানতে চেয়ে সেখানে তার বৈপরীত্ব দেখিয়ে দিয়ে উদ্ধার করাটা স্রেফ গ্রাম্যমোড়লিপনা (গ্রাম্য নয়, কিন্তু গ্রামের মোড়লের মতো)। অন্যের লুঙ্গি তুলে লিঙ্গ দেখে (ও অন্যকে দেখিয়ে দিয়ে) হাহা হিহি করার মতো।

এখন কাঠমোল্লারা বাংলাদেশে দৌড়ের উপর আছে। সাফিকে একটা কাঠমোল্লা এসে এই ডিলেমায় ফেলার সুযোগ বাংলাদেশে এখন শূন্যের কোঠায়। কাঠ নাস্তিকেরা তাই সেই অনুপস্থিতিটা পূরণ করে দিচ্ছেন আর কি। হাসি

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ঠিকাছে চলুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

কালো কাক এর ছবি

চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

ধ্রুব বর্ণন,

আপনি সাফির মত একই ভুল করছেন। 'ইসলাম ধর্মের মাত্র একটাই রূপ', এই কথাটা তো আমি বলিনি। আমি ওনাকে ইসলাম সংক্রান্ত কয়েকটা প্রশ্ন করেছি। সেগুলো প্রশ্নই। 'আপনি যা পালন করছেন সেই ধারণাটা ভুল' এমন কোনো স্টেটমেন্ট তো চাপিয়ে দিইনি।

ধর্ম যে ব্যক্তিগত বিশ্বাস, যেকোনো ধর্মের যে শয়ে শয়ে practicing form আছে, সে কথাটা আমরা ভালো করেই জানি। সমস্যাটা এই, যে একটা ফর্ম যে পালন করছেন তিনি ভিন্ন একটা ফর্মকে সচরাচর সমালোচনা করেন না। আর সেই সুযোগে যারা উগ্র, ক্ষতিকর ফর্মগুলো পালন করছে তারাও ধর্মের নামে ওই কাজগুলো চালিয়ে যায়।
আর যখন বিবেকবোধ থেকে তার সমালোচনা করেনও, তখন একটা সমস্যা হয় - যে 'ধর্ম' (অর্থাৎ যে নামের ধর্ম, যার ভিন্ন ফর্ম ওইটা) তিনি পালন করছেন বলে বলেন, সেটারই স্বীকৃত ধর্মগ্রন্থগুলোর মধ্যেই যে ওই কাজগুলোর অনুমতি দেওয়া আছে, ফলে তাঁর সমালোচনাটা ইনভ্যালিড হয়ে যায়। অথবা, দেখা যায় তিনিও ওই ধর্মের একটা মনগড়া ফর্ম (অর্থাৎ যেগুলো কোনো বইতেই বলা নেই) পালন করছেন, ওই অন্য দলও, ফলে তিনি 'ওই ধর্মের আলোকে নিন্দনীয়' এমন কিছু বলার পজিশনে থাকেন না। তাঁর সমালোচনাটা আসে তাঁর সেকুলার বিবেকবোধ, সেকুলার এথিকস থেকে, কিন্তু সেটা তিনি অনুধাবন করতে পারেন না।

ধর্মবিশ্বাস যখন একটা যুক্তির বেসিস হয়, তখন লজিক হিসাবেই সেটাতে কনসিস্টেন্সি থাকা প্রয়োজন। আপনি বলছেন প্রয়োজন নয়, এবং পরোক্ষে বলছেন যে অনেক সময় থাকেও না - ধর্মবিশ্বাস তাহলে যে ইনকনসিস্টেন্ট, ইর‍্যাশনাল, এটা বলতেই বা সমস্যা কোথায়?

সাফি নিজে থেকেই এসে ওই মন্তব্য দিয়ে ব্যাপারটাকে ডিফেন্ড/জাস্টিফাই করার চেষ্টা করেছেন। সে প্রসঙ্গে তখন তাঁর সঙ্গে বিতর্ক এগোবে না? আমি তো তাঁকে ডেকে এনে তাঁর বিশ্বাসকে খোঁচাতে যাইনি। 'যার বিশ্বাস যার কাছে, সে সেটা নিয়ে সুখী থাকুক' এটা জঙ্গি নাস্তিকরাও মানে। কিন্তু কেউ তাঁর ধর্মবিশ্বাসকে সামনে (পরোক্ষে) নিয়ে এসে যখন নিজে থেকে একটা আর্গুমেন্ট শুরু করছেন, তখন সেটাকে ব্যবচ্ছেদ করা যাবে না? তখনও 'তাঁর বিশ্বাসকে কখনই প্রশ্নবিদ্ধ করা যাবে না' এই ভেবে চুপ করে থাকতে হবে, ধর্মবিশ্বাস এমন কি সম্মানীয় আতুপুত বস্তু? এটাকে 'গ্রাম্যমোড়লিপনা' ভেবে থাকলে ভুল করছেন।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

আপনি বলেছেন

আপনাকে ইচ্ছামত tenet বেছে নেওয়ার অধিকার কি ইসলাম ধর্ম দিয়েছে?

এখানে ইসলামকে কর্তা হিসেব ব্যবহার করা আছে।

কোরান কি একজন মুসলিমকে ছাড় দিয়েছে ইচ্ছামত একটা সুরা পালন করার কিন্তু আরেকটা না করার?

এখানে কোরানের হেজামোনি বিচ্ছুরিত হয়েছে। সেগুলোর হ্যাপাটা বিশ্লেষণ করলাম। আমি টেক্সট রিড করেছি। টেক্সট রিডে ভুল হলো কোথায়? ইনটেনশান তো টেক্সটে প্রকাশিত নাই। আফটার দ্য ফ্যাক্ট ইনটেনশান অবতীর্ণ হলে আগের টেক্সটের হ্যাপার বিশ্লেষণ ভুল হয় না রে ভাই। বলা যায় আপনি আপনার ইনটেনশান ক্ল্যারিফাই করেছেন। সেও ভালো। এতে মোল্লাতান্ত্রিক বয়ানের হুজ্জত কিছু কমলো। সচেতনভাবে এভাবে আরো আরো কমাতে পারেন।

আর

ধর্মবিশ্বাস তাহলে যে ইনকনসিস্টেন্ট, ইর‍্যাশনাল

এটাতো আমার কাছে টটোলজি ঠেকলো। বিশ্বাস যুক্তি না, এটা প্রমাণ করতে তো জনে জনে কুইজ করে ম্যাজিক দেখিয়ে প্রমাণ করা লাগে না। বরং ধর্ম বিশ্বাসকে কেউ যদি একটা একশভাগ যৌক্তিক ফ্রেইমওয়ার্কে গঠন করতে যায়, তখনই না দুশ্চিন্তার কথা। এইটা দেখেন। ওখানে আমার সহপাঠী যখন বিশ্বাসকে ইরর্যাশনালিটি আর ইনকন্সিসটেন্সির 'কালিমা' থেকে মুক্তি দেওয়ার জন্যে এটাকে একটা মিনিম্যাল অ্যাক্সিওম নির্ভর গাণিতিক সিস্টেমে উত্তরণ করতে চাইলো, তখন তার সিস্টেমে অনৈতিককে খুন করা যৌক্তিকভাবে খুব সহজে ডিডিউসিবল হয়ে গেলো। এখন সে আর সেইরকম নাই যদিও। কনসিসটেন্সির পাঠ তার নেওয়া হয়ে গেছে। আবার মোল্লারাও এরকম খুব কনসিস্টেন্ট হতে চায়। বিশ্বাসে থাকা মানুষ কনসিস্টেন্ট হয়ে উঠলে অনেকসময় বিপর্যয় দেখা দেয়। কাঠনাস্তিকেরা বিশ্বাসীদের কনসিস্টেন্ট হতে বোলে একটা রিস্ক নেয়। তারা আশা করে যে বিশ্বাসীরা কনসিস্টেন্ট হবার চেষ্টা করলে একমাত্র পথ হচ্ছে ধর্মকে রিজেক্ট করা। কিন্তু জিহাদিদেরও তো বেশ চেষ্টা চরিত্র থাকে কন্সিস্টেন্ট ও কিতাবের সাথে লিটারালি কারেক্ট হবার। তবে সাধারণ ধার্মিক তার বিশ্বাসে অনেক কিতাবীয় ইনকনসিস্টেন্সিকে নিজের অন্যান্য বিবেচনাবোধের সাথে ইনকর্পোরেট করে ঠিকই কন্সিস্টেন্টলি ডিল করতে পারে। তো বিশ্বাস যুক্তি না, সেই টটোলজিটা পুনর্বার প্রমাণ করার জন্যে আরেকজনের ব্যক্তিগত বিষয় ঘেঁটে ম্যাজিক দেখাতে যখন বাঁধে না তখন " 'যার বিশ্বাস যার কাছে, সে সেটা নিয়ে সুখী থাকুক' এটা জঙ্গি নাস্তিকরাও মেনে" আর কী লাভ বলুন? হাসি

টপিক নিয়ে কথা বলা আর ব্যক্তি নিয়ে কথা বলার মাঝে একটা ফারাক দেখা যায় বৈকি। ধর্মীয় বিশ্বাস বিষয়টা তো সম্মানীয় আতুপুতু না, কিন্তু ব্যক্তিগত ব্যাপার তো সেটা কিছুটা বটেই।

সাফি একটা আর্গুমেন্ট যখন দেওয়া শুরু করলো, তখন সেটা খণ্ডানোর জন্য যখন সাফির ব্যক্তিগত বিশ্বাস কী সেটা জানা লাগে, তখন সেই খণ্ডনটার পক্ষে আর শিরদাঁড়া সোজা করে দাঁড়ানো সম্ভব হয় কি? ধরেন, একজন ইহুদি ইসরায়েলের অস্তিত্বের পক্ষে মত দিচ্ছে দেখে আমি যদি বলি যে তোমার জাতীয়তা কী? ও তুমি ইহুদি, তাহলে তো তুমি ইসরায়েলের পক্ষে বলবেই। মানে ইহুদির পক্ষে যেনো যৌক্তিক সঙ্গতিপূর্ণ আর্গুমেন্ট করা সম্ভব না ইসরায়েলের হয়ে। যদি যৌক্তিক অসঙ্গতি থাকে, সেটা ধরিয়ে দিতে নিশ্চয়ই বক্তার পরিচয়, জাতীয়তা, অবস্থান, জানা লাগে না। আর খণ্ডনের জন্যে তার অবস্থান জানাটা যদি নেসেসারি হয়, সেটা না জেনে যদি অসঙ্গতি খণ্ডানো না যায়, তাহলে কীভাবে কী? একইভাবে সাফির আর্গুমেন্ট লজিক্যালি কাউন্টার করতে তার ব্যক্তিগত বিশ্বাস জানার কোনো ভ্যালিড কারণ থাকতে পারে কি? একজনের বিশ্বাস জেনে সেটার উপর ভিত্তি করে তার বক্তব্যের উপরে সিদ্ধান্ত নিলে সেটা লজিক্যাল ফ্যালাসি অব অ্যাড হোমিনেম। লজিকের হেজামোনি প্রতিষ্ঠা করতে চাচ্ছি না। কিন্তু এগুলো বক্তব্যের জন্যে গুরুত্বপূর্ণ গাইডলাইন।

সাফি এর ছবি

যদি যৌক্তিক অসঙ্গতি থাকে, সেটা ধরিয়ে দিতে নিশ্চয়ই বক্তার পরিচয়, জাতীয়তা, অবস্থান, জানা লাগে না। আর খণ্ডনের জন্যে তার অবস্থান জানাটা যদি নেসেসারি হয়, সেটা না জেনে যদি অসঙ্গতি খণ্ডানো না যায়, তাহলে কীভাবে কী

ধন্যবাদ ধ্রুব বর্ণন, এই কথাগুলো বলতে চাইছিলাম কিন্তু আমি এতটা গুছায়ে বলতে পারতামনা।

কৌস্তুভ এর ছবি

এখানে হেজিমোনি শব্দটা ঠিক কেন এল বুঝলাম না। যহোক, কোরানে হেজিমোনি আছে কি না, এটা যদি ওই বাক্যে ইমপ্লিসিট বলে ধরেনই, ব্যাপার হল, সবগুলোই প্রশ্ন। হেজিমোনি আছে কি না, তিনি যে ইসলাম উনি পালন করেন সেই ইসলামে, এটাও এক্ষেত্রে প্রশ্ন। যাঁকে জিজ্ঞেস করা হয়েছে তাঁর যেমন বিবেচনা হবে তিনি সেভাবে বলবেন। প্রশ্ন করা = চাপিয়ে দেওয়ার ইনটেনশন তো না। এক্ষেত্রে বলতেই হবে আপনি টেক্সট রিডে ভুল করছেন।

"আমি ইসলাম ধর্মের অধিকারী" এইখানে উনি ইসলামকে একটা বিশেষ অবজেক্ট (একটা বিশেষ আইডিওলজি বা ওরকম কিছু, যেটা উনি অনুসরণ করেন) এইভাবে বলছেন, এবং সেটা আনইউজুয়াল কিছুই না। "ইসলাম ধর্ম অনুযায়ী" কথাটাও সবাই বলে থাকেন। এটায় সমস্যা কোথায়? সেই অবজেক্টটাকে নিয়ে ভাববাচ্যের বদলে কর্তৃবাচ্যে প্রশ্ন করা চলবে না? "জল পড়ে" বাক্যে জলকে 'কর্তা হিসাবে ব্যবহার করা আছে', সেটা সমস্যা?

বিশ্বাস যুক্তি না, এটার অর্থ কিন্তু এই না যে বিশ্বাস অযৌক্তিক। আমি বিশ্বাস করি আমার মাথাটা কাটলে ঘিলু পাওয়া যাবে। এইটা তো যৌক্তিক বিশ্বাস। ধর্মবিশ্বাস যে ইন পার্টিকুলার অযৌক্তিক বিশ্বাস, এইটা টটোলজি না।

সাফি যে বিষয়টার উত্তর দিতে এলেন, সেইটা কী সেটা খেয়াল করুন। ওটা একটা (সরাসরি না করা) প্রশ্ন, যে যাঁরা ধর্মে বিশ্বাস রাখেন তাঁদের কী খারাপ লাগে না যখন তাঁদের ধর্ম এই নারীবিরোধী অভ্যাসগুলো এনডোর্স করে? সেই প্রশ্নটা যখন শুরুই হয়েছে ধর্মে বিশ্বাস রাখেন যাঁরা তাঁদের নিয়ে, তখন সাফি সেটার উত্তর দিতে আসলে ব্যাপারটা খুবই প্রাসঙ্গিক। বাইরে থেকে টেনে আনা নয়।

উচ্ছলা এর ছবি

লেখাটা মজা মজা মজা...তিলের খাজার মত মজা হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ, উচ্ছলা হাসি

সজল এর ছবি

পোলাপান আমার অনেস্ট স্বীকারোক্তিকে বিশ্বাস করে না, দুঃখ! যাক, আমারে বেশী পঁচায় নাই, রক্ষা। (লেখা মজাদার, তবে বেশিরভাগ আমি মিস করেছি বলে লেখা ভালো বলে স্বীকার করলাম না চোখ টিপি )

যে বিষয়টা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, তা নিয়ে আমার মতামত বলি। আপনার প্রথম লেখায় যেমন বাসে ধর্মীয় পোস্টার দেখে আপনার মনে হচ্ছিলো দেশে ধর্মীয় আবহ তুলনামূলক ভাবে বেশী, সেটা আসলে গোণায় ধরার মত কিছু না। আমি মাঝে মাঝে কিছু পীরের পোস্টার দেখতাম, এরা কিন্তু জাতীয় নির্বাচনেও দাড়াত, কিন্তু প্রায় কাউকেই আসন জিততে দেখতাম না।

হিন্দু-মুসলমান একসাথে অবিচ্ছেদ্য ভাবে মিশে থাকার ব্যাপারটা আসলে ঠিক উল্লেখ করার মত না, সেটা প্রায় যেকোন সার্কেলেই হিন্দু-মুসলমান এক সাথে মিশে থাকে, সচলের জন্য স্পেসিফিক কিছু না। কিন্তু আমার অভিজ্ঞতা বলে, সচলাড্ডায় (আমার সীমিত অভিজ্ঞতা থেকে) যেমন ধর্মীয় আঘাত লাগবে কিনা সেটা খুব না ভেবেও নির্ভয়ে কথা বলা যায়, সেটা কিন্তু আবার সব সার্কেলে বলা যাবে না। পাবলিকলিতো যাবেই না, সেখানে ভয়ংকর পরিস্থিতি ঘটেও যেতে পারে। তবে আমার মনে হচ্ছে, আমাদের দেশে এই ব্যাপারে পরিস্থিতি সাম্প্রতিক কালে ভালোই উন্নতি হচ্ছে, "আমি নাস্তিক" এই কথাটা অন্তত অনেকেই নির্ভয়ে বলে ফেলতে পারে প্রকাশ্যে।

যাই হোক, তিন/চার দিন আসলে একটা দেশকে বুঝে ফেলার জন্য যথেষ্ট না। আপনি আপনার বুঝমত লিখেছেন, সেটা নিয়ে অভিযোগের কিছু দেখছি না। কাছের দেশ, আবার আসুন হাসি । এবার যে আপনাকে সময় দিতে পারিনি, সেটা পুষিয়ে দেয়া যাবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

কৌস্তুভ এর ছবি

আসছে বছর আবার হবে দেঁতো হাসি

রাগিব এর ছবি

আরে, আপনি ঐ সময় দেশে আছেন জানলে যোগাযোগ করতাম। আমিও সপ্তাহ খানেক হলো মাত্র দেশ থেকে ফিরলাম।

চন্দ্রপুরির ওরশের কথা উল্লেখ করেছেন বলে ধরে নিচ্ছি, এই ব্যাটা ভণ্ডপীরের ভক্তদের তৈরী করা বিশাল তোরণ দেখে ধর্মীয়ভাবের কথা বলছেন। এক্ষেত্রে ব্যাপারটা কিন্তু অন্ধের হাতি দেখার মতো মনে হচ্ছে, অর্থাৎ তোরণের স্ন্যাপশট দেখে মনে হচ্ছে ধর্মীয়ভাবের কথা।

খোদ চন্দ্রপুরি কেনো, মাইজভান্ডারি, ফরিদপুরি, রাজারবাগি ইত্যাদি সব পীরের ভক্তরা সংখ্যায় খুব বিশাল নয়। তবে কালো টাকার মালিকদের মাঝে এই পীরভক্তি বেশি, কাজেই তোরণ গঠনের অর্থায়ন সম্ভবত সেই দিক থেকেই আসে।

তবে ব্যাপারটা এভাবে দেখুন, কোনো এলিয়েন (ইটি গোছের) যদি দূর্গাপূজার সময়ে কলকাতায় ল্যান্ড করে আর পূজামন্ডপ, প্রতিমা বিসর্জন ইত্যাদি ধর্মীয় প্রথা দেখে ধরে নেয় কলকাতায় ধর্মীয় বাড়াবাড়ি চরম পর্যায়ে, সেটাও কি একই রকমের অন্ধের হাতি দেখা হবে না? কিংবা বিশ্ব ইজতেমার দিনে টঙ্গিতে ল্যান্ড করে ধারণা করে টুপি-পাঞ্জাবি বাংলাদেশের জাতীয় পোষাক? যখনই স্ন্যাপশট থেকে স্টেরিওটাইপে যাবেন, তখনই সমস্যাটা এরকম দাঁড়াবে।

বাংলাদেশের নারী প্রগতির একটা বড়ো উদাহরণ/প্রমাণটা পেতে হলে আপনাকে ভোরের দিকে কোনো গার্মেন্ট্সের সামনে একটু তাকাতে হবে। দেশের সম্ভবত সবচেয়ে বেশি রপ্তানী হওয়া পন্যের পেছনে কিন্তু রয়েছে বাংলাদেশের নারীরাই, আর এই শ্রমজীবী নারীদের মাঝে বোরখা/হিজাবের বেড়াজালের প্রকোপ কমই দেখবেন।

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

ফাহিম হাসান এর ছবি

যখনই স্ন্যাপশট থেকে স্টেরিওটাইপে যাবেন, তখনই সমস্যাটা এরকম দাঁড়াবে।

চলুক

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

কোনো এলিয়েন (ইটি গোছের) যদি দূর্গাপূজার সময়ে কলকাতায় ল্যান্ড করে আর পূজামন্ডপ, প্রতিমা বিসর্জন ইত্যাদি ধর্মীয় প্রথা দেখে ধরে নেয় কলকাতায় ধর্মীয় বাড়াবাড়ি চরম পর্যায়ে, সেটাও কি একই রকমের অন্ধের হাতি দেখা হবে না? কিংবা বিশ্ব ইজতেমার দিনে টঙ্গিতে ল্যান্ড করে ধারণা করে টুপি-পাঞ্জাবি বাংলাদেশের জাতীয় পোষাক? যখনই স্ন্যাপশট থেকে স্টেরিওটাইপে যাবেন, তখনই সমস্যাটা এরকম দাঁড়াবে।

চলুক

বাংলাদেশের নারী প্রগতির একটা বড়ো উদাহরণ/প্রমাণটা পেতে হলে আপনাকে ভোরের দিকে কোনো গার্মেন্ট্সের সামনে একটু তাকাতে হবে। দেশের সম্ভবত সবচেয়ে বেশি রপ্তানী হওয়া পন্যের পেছনে কিন্তু রয়েছে বাংলাদেশের নারীরাই

চলুক

খুবই চমৎকার দুইটা উদাহরণ!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

দিগন্ত এর ছবি

"যখনই স্ন্যাপশট থেকে স্টেরিওটাইপে যাবেন, তখনই সমস্যাটা এরকম দাঁড়াবে।"

চমৎকার বলেছেন।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

ধূসর জলছবি এর ছবি

চলুক

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

যখনই স্ন্যাপশট থেকে স্টেরিওটাইপে যাবেন, তখনই সমস্যাটা এরকম দাঁড়াবে।

চলুক

কৌস্তুভ এর ছবি

ভালো বলেছেন।

আপনি দেশেই আছেন এ কথাটা তো আমায়ও কেউ বলল না মন খারাপ
আমি অবশ্য ফেসবুকে স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম ওই সময় বাংলাদেশ যাচ্ছি বলে, আপনি তো বন্ধুতালিকায় আছেনই, দেখতে পাননি হয়ত মন খারাপ

হিমু এর ছবি

কৌস্তুভ যেহেতু আমাদের মিষ্টির বদনাম করেছে, কলকাতা থেকে কেউ এর পর এলে আমরা তাকে আর মিষ্টি খেতে দেবো না। নিমকি, করলাভাজি, শুঁটকির ভর্তা, এইসব খেতে দিবো। মিষ্টি যদি মুখ ফুটেও খেতে চায়, বলবো ওসব কলকাতায় গিয়ে খাবেন, এ্দিকে ভালো মিষ্টি নাই।

দময়ন্তী এর ছবি

এহে কলকাতার গড়পড়তা দোকানের মিষ্টিও কিছু আহামরি নয়৷ কোন্নগর-নবগ্রাম, ভদ্রেশ্বর, চন্দনগর, চুঁচুড়া, হরিপাল, কল্যাণী ইত্যাদি জায়গার মিষ্টি যে কোনোদিন কলকাতার মিষ্টিকে বলে বলে দশ গোল দেবে৷ কলকাতার ঐ বলরাম মল্লিক, নকুড়, সেন মহাশয় এর মত হাতেগোণা ৩-৪ টে দোকান ঠিক আছে৷

আমার ব্যক্তিগত ধারণা মেট্রোপলিটান শহরগুলোতে এইসব সুক্ষ্ম জিনিষ ঠিক তৈরী হয় না৷

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

আশালতা এর ছবি

ভারতে বেড়াতে গিয়ে আমার ওখানকার মিষ্টি খাবার অভিজ্ঞতাটাও কিন্তু মধুর হয়নি। সেই থেকে ওখানকার মিষ্টির নাম শুনলেই আমি ছ্যা ছ্যা করি। কৌস্তুভ এখানকার তেমন তেমন ভালো মিষ্টি খেতে পেলে আরও দুদিন শুধু মিষ্টি খাবার জন্যেই থেকে যেতে চাইত বোধ হয়।

----------------
স্বপ্ন হোক শক্তি

মৃত্যুময় ঈষৎ(অফলাইন) এর ছবি

আজিজ সুপার মার্কেটের নিচতলায় 'জাফরান ভোগ' নামের এক ধরণের মিষ্টি পাওয়া যায়, আমার এখন পর্যন্ত খাওয়া জীবনের সেরা মিষ্টি!!! দাদারে খাওয়ানোর দরকার ছিল!!!

কৌস্তুভ এর ছবি

আহ, শাক, শুক্তো, তেতো, এগুলো খেতে আমি যে কী ভালোবাসি! কলকাতায় আজকাল ভ্যারাইটি তেমন সুবিধার্না, বাংলাদেশে বিশেষত গ্রামের দিকে নিশ্চয় অগুন্তি লোভনীয়রকম পাওয়া যায়, যদি খেতে পেতুম মন খারাপ

কনফুসিয়াস এর ছবি

খুব আগ্রহ নিয়ে পড়লাম দু'টো পর্বই। আনন্দ পাচ্ছিলাম পড়ে, কিন্তু পড়তে পড়তেই আমারও রানা মেহেরের মতই কোথায় যেন অস্বস্তি হচ্ছিল বারবার। জানি না, সেটা আপনার লেখার ভঙ্গির সাথে পরিচিত নই বলে হতে পারে, কিন্তু পুরোটা পড়ে আমার মনে হলো, আপনার টানা তুলনাগুলোয় কোথাও খানিকটা অবজ্ঞা মেশানো ছিলো। যেটা পছন্দ হয়নি, অস্বস্তির কারণও তাই।
এই মনে হওয়াটা অনেক কিছুই হতেই পারে, আমার ভুল হতে পারে, আপনার লেখার খামতি হতে পারে, অথবা যাকে বলে লেখক-পাঠকে যোগাযোগ, সেটার অভাবও হতে পারে।
যাকগে, অনুভুতিটা মনে এলো, তাই বলে ফেললাম।
ভাল থাকবেন।

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনার মতামত পষ্টাপষ্টি জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ, দাদা।

দময়ন্তী এর ছবি

একটা কথা না জানিয়ে যাওয়াটা অসততা হবে, রানা মেহেরের মত আমারও ঐ লিবারেল বলে পরিচয় করিয়ে দেওয়াটা পড়তে আমারও খুব অস্বস্তি হয়েছে, খুউব অস্বস্তি৷ এমনিতে আমি আপনার বাবার মনের শঙ্কা অনুমান করতে পারছি৷ কারণ আমার মা সেই যে ১৯৫০ এ একরাত্রে নিজের মা বাবা ছেড়ে অন্য একটি পরিবারের সাথে দেশ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিল, মা'র সেই আতঙ্ক আজও পুরো মোছে নি৷ কিন্তু আমরা মা'কে বোঝাই যে সেই সময়ের বাস্তব আর আজকের বাস্তব একেবারে আলাদা৷ মা যে দেশটা ছেড়ে এসেছিল আর আজকে যে দেশটায় আমি যাওয়ার প্ল্যান বানাই -- এই দুটো একেবারে আলাদা দেশ৷ এটা একটা ঝকঝকে নতুন দেশ৷ মা মানেও সেটা৷ তো, সেই পরিপ্রেক্ষিতেও আপনার বলার ধরণটা -- যাকে বলে --- ঠিক লাগল না৷

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

কৌস্তুভ এর ছবি

আমার ওইভাবে বলাটায় ১০০% প্রশংসা ছাড়া আর কিছুই ছিল না, এটা আপনাকে বলতে পারি।
বাবা একাত্তরের পরে যখন ঘুরে গেছেন, সেটাও তো স্বাধীন বাংলাদেশই। এখন যে সেটা অনেক ঝকঝকে, মানুষগুলো যাদের সঙ্গে মিশছি তারা যে অনেক ঝকঝকে, সেটা 'উপদেষ্টা'দের সাবধানবাণীকে ওভাররাইড করে জানানোর জন্যই বলা। আর এদের প্রসঙ্গে কথা বলার সময় এরা যে লিবারেল, এটা বলার মধ্যে বাকি বাংলাদেশ লিবারেল নয় এই ইঙ্গিতটাই বা কেউ কেন কেন দেখছেন তা বুঝতে পারছি না।

তিথীডোর এর ছবি

বিশাল টেনশনে আছি,তবু দু-মিনিটের জন্য লগালাম।

অসামাজিক স্বভাবের কারণে যাবতীয় আড্ডা সযতনে এড়াই, যদিও অদেখা অনেক সচলের সাথেই বেশ ভাল রিলেশন আছে। হাসি
তবে কৌ ভায়া নেক্সট যখন এদেশে আসবেন, আগে জীবনবীমার পাট চুকিয়ে আসাই উত্তম।
হাতপা কুচিকুচি করে কেটে ব্লেন্ডারে ঢুকিয়ে যদি চিকেন সুপ না বানিয়েছি, তবে আমার নাম তিথী-ই নয়। রেগে টং
কতো বড় সাহস, আমাকে বলে কিনা 'খুকি'!

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

শাব্দিক এর ছবি

অ্যাঁ কৌ কি চিকেন নাকি?

কৌস্তুভ এর ছবি

বটে?

তানিম এহসান এর ছবি

দারুণ লাগলো .. সচলে সবাইকেই কেন যেন খুব পরিচিত মনে হয়, আড্ডার বর্ণনা শুনে আরো বেশি ভালো লেগে গেলো সবাইকে।

সচলকে সচল করেছে, করছে যারা তাদের মঙ্গল হোক!

কৌস্তুভ এর ছবি

পরের বার দেখা হবে, অন্তত এই আশাটুকু করি।

বন্দনা এর ছবি

হুম পরেরবার আমার সাথে ও যেন দেখা হয় এই আশা করছি হাসি

কৌস্তুভ এর ছবি

বাংলাদেশে নাকি? না জানালে কী করব? আর নইলে, সিঙ্গাপুরে যেদিন বেড়াতে যাব সেদিন দেখা হবে এবং অনেককিছু রেঁধেবেড়ে খাওয়াবে এমন প্রতিশ্রুতি তো দিয়েই রেখেছ দেঁতো হাসি

বন্দনা এর ছবি

চলুক

ধুসর গোধূলি এর ছবি

কৌস্তুভ লিখেছেন:
আর ওই রায়হানও যে আজকাল মুমিনভাইদের থ্রেট পেতে শুরু করেছে সে খবরও রাখেন নিশ্চয়ই?

রায়হান আবীর লিখেছেন:
হায় হায় ধর্ম নিয়ে উলটা পালটা কিছু লিখলেই তো জবাই। এইটা ভুল ধারণা। আমি কোনোদিন থ্রেট ট্রেট পাই নাই

নিজের টুপির তল থেকে কথা বের করে বাংলাদেশের ব্যাপারে ইচ্ছাকৃত প্যানিক ছড়ানোর চেষ্টা কৌস্তুভ? চিন্তিত

সাফি লিখেছেন:
আপনার লেখায় এসব বিষয় ইচ্ছাকৃত না অনিচ্ছাকৃত সেই বিতর্কেও যাইনি, বিদেশী হিসেবে বাংলাদেশ নিয়ে আপনার পর্যবেক্ষণ হিসেবেই নিয়েছি।

এর পরে আশাকরি সাফি'র আর ডাউট থাকার কথা না কেবলমাত্র ঢাকার গুলিস্তান আর পিরোজপুর ঘুরে সমগ্র "বাংলাদেশে ধর্মীয় (ইসলামী) আবহাওয়াটা বেশি" এই বটিকার ভেতরে কৌস্তুভ আমাদেরকে আসলে কী খাওয়াতে চায়!

কৌস্তুভ এর ছবি

একটু পার্সোনাল তথ্য হয়ে যাচ্ছে, রায়হানের খারাপ লাগতে পারে, কিন্তু উপায় নেই। সে মাইন্ড করবেনা আশা করি।

রায়হান আপনাকে তার প্রোফাইল থেকে ব্লক করে আন্দাজ ১৭ই মে। ফলে ১৩ই নভেম্বর যে সে তার প্রোফাইলে খুব আনন্দ করে ছাগুদের হেট মেইল পাওয়ার স্ট্যাটাস দেয়, সেটা আপনার চোখে পড়ার কথা নয়। এখন খুঁজে বের করে খুলে দেখলাম, সেটায় তার এবং তার পিতামাতার প্রতি সুমিষ্ট বিশেষণ বর্ষণের পর তাকে 'নেক্সট টাইম এই টাইপের ব্লগ শেয়ারিং থেকে সাবধান থাকবা' ইত্যাদি ওয়ার্নিংও দেওয়া হয়। এতদিন পর সেটার কনটেন্ট বিস্তারিত মনে ছিল না, ওয়ার্নিংয়ের কথা মনে রেখে সংক্ষেপে থ্রেট মেল লিখেছি, হয়ত রায়হানের ব্যবহৃত হেট মেল শব্দটা বেশি উপযুক্ত। কিন্তু কথাটা মিথ্যা নয়। সেটা তার প্রোফাইলে অ্যাকসেস আছে এমন যে-কেউ দেখে নিতে পারবেন।

ধুসর গোধূলি এর ছবি

রায়হান তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে কী লিখে রাখছে, সেটা আপনি নিজের টুপির ভিতরে রাখেন। আমার নজরে পড়ার দরকার নেই আদৌ, যেখানে রায়হানের ডাইরেক্ট, পরিষ্কার মন্তব্য/বক্তব্য আমি এখানেই পাচ্ছি! রায়হানের মন্তব্য অন্য কেউ এসে লিখে দিয়ে গেছে, এটা নিশ্চয়ই বলতে চান না!

তো, সেই মন্তব্যের জের ধরেই তো দেখা যাচ্ছে বাংলাদেশকে আপনি একটা উগ্র-ধর্মবাদী-ইসলামী দেশ হিসেবে প্রচার করতে ব্যস্ত। থ্রেট মেল, হট মেল- এইসব বাদ দিয়ে ঝেড়ে কাশুন তো কৌস্তুভ, আপনি আসলে কী বলতে চান!

বাংলাদেশ খুব দুষ্টু দেশ, ব্লাডি থার্ড ওয়ার্ল্ড, ওরা নারীদের টয়লেটে পুরুষের যাওয়ার অধিকার রুদ্ধ করে রেখেছে, গুলিস্তানের আকাশে বাতাসে রণে-জঙ্গলে পীর-বাবাদের পোস্টারিং এর কারণে এস্তেঞ্জা করা যায় না ইত্যাদি ইত্যাদি বুঝলাম, ঠিকাছে। এর বাইরে একটু ঝেড়ে গলাটা পরিষ্কার করুন।

আর, ফেসবুক টু সচল টু ফেসবুক রিলে করেন কেনো এতো? সেইখানেই বা আপনের উদ্দেশ্যটা কী? এইটাও খোলাসা কইরেন।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

"একটু পার্সোনাল তথ্য হয়ে যাচ্ছে, রায়হানের খারাপ লাগতে পারে, কিন্তু উপায় নেই। সে মাইন্ড করবেনা আশা করি।" এই কথার মধ্যে একটা ভেজাল দেখতে পাই। "পার্সোনাল তথ্য"টা যদি ফেইসবুকে ব্লক করা সংক্রান্ত হয় তাইলে এইটা কেবল যে ব্লক করছে তার পার্সোনাল বিষয় থাকে না। যারে ব্লক করা হইছে তারও পার্সোনাল বিষয় হয়। কৌস্তুভ কেবল একপক্ষের মাইন্ড নিয়া চিন্তিত ক্যান? যাক সেইটা তার ব্যক্তিগত অভিরুচি।

আর ফেইসবুকে কে কারে ব্লক করছে এইটা জানার গুরুদায়িত্ব সচলায়তনের পাঠকের উপ্রে ক্যান?

আরো একটা জিনিস বুঝি নাই। ফেইসবুকের কন্টেন্ট যেইটা প্রাইভেসি সেটিং দ্বারা নির্দিষ্ট সেইটা এইখানে আমদানি করা কেন? আচ্ছা ধরে নিলাম রায়হান আবীরের স্ট্যাটাস ওপেন কন্টেন্ট। সেইটা নাহয় শেয়ার করা কোনো এক ইথিকসে ঠিকাছে। কিন্তু কে কারে ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে আনফ্রেন্ড করছে সেইটা একেবারেই ঐ দুই ব্যক্তির ভিতরের বিষয়। সচলায়তনে হোয়াই দিস কোলাভেরি? হোয়াই?


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আরো একটা জিনিস বুঝি নাই। ফেইসবুকের কন্টেন্ট যেইটা প্রাইভেসি সেটিং দ্বারা নির্দিষ্ট সেইটা এইখানে আমদানি করা কেন? আচ্ছা ধরে নিলাম রায়হান আবীরের স্ট্যাটাস ওপেন কন্টেন্ট। সেইটা নাহয় শেয়ার করা কোনো এক ইথিকসে ঠিকাছে। কিন্তু কে কারে ফ্রেন্ডলিস্ট থেকে আনফ্রেন্ড করছে সেইটা একেবারেই ঐ দুই ব্যক্তির ভিতরের বিষয়।

আশাকরছি, সন-দিন-তারিখ শুদ্ধা ঘটনাটা হৃদয়ঙ্গম করা কৌস্তুভ এখানে আপনার প্রশ্নের উত্তর দিবে, দুই ব্যক্তির বাইরে তার 'ভূমিকা'টা কী!

রায়হানের সামষ্টিক ঝকঝকে এবং পরিষ্কার বক্তব্য এবং রায়হানের স্ট্যাটাস নিয়ে রানা মেহের বক্তব্যের পরে এই বিষয়ে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই যে কৌস্তুভ সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে প্যানিক তৈরীর চেষ্টা করছে।

প্রশ্ন হলো, কেনো? কৌস্তুভ কি দয়াকরে জবাবটা দিবেন?
আগের মন্তব্যে আরও একটা প্রশ্ন রেখেছি, সেটারও জবাব প্রত্যাশা করছি কৌস্তুভের কাছ থেকে। কারণ, তার ভাষাতেই বলি, "পিকচার আভি বাকি হ্যায় মেরে দোস্ত!"

সজল এর ছবি

কৌস্তুভের লেখা থেকে বাংলাদেশ সম্পর্কে তার পূর্বধারণা, এবং সে ধারণার আলোকে অনেক বিষয়ের ভুল ইন্টারপ্রিটেশন আছে। আমার মনে হয়েছে বাংলাদেশ সম্পর্কে তার ভুল ধারণাগুলোই সে লিখেছে, কিন্তু ইচ্ছা করে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে প্যানিক তৈরী করছে না।

সচল বাংলাদেশীদের প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ সম্পর্কে ইচ্ছাকৃত নেতিবাচক প্রচারণা করার জন্য তার এই জায়গা বেছে নেয়ার দরকার ছিলো না। ফেসবুকের ব্যক্তিগত জিনিস এখানে এনে সে এথিক্যাল কাজ করেনি, অনেক ঘটনার পেছনের কারণ না জেনে পূর্বধারণার আলোকে মনমত ব্যাখ্যা করাটা অযৌক্তিক; কিন্তু সেটা তাকে বাংলাদেশবিরোধী বলে প্রমাণ করে না।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ধুসর গোধূলি এর ছবি

কৌস্তুভের পোস্ট(সমূহ) এবং মন্তব্যগুলো ভালো করে অনুসরণ করে তারপর এখানে মন্তব্য করেছেন তো সজল?

বাংলাদেশ সম্পর্কে তার পূর্বধারণা, এবং সে ধারণার আলোকে অনেক বিষয়ের ভুল ইন্টারপ্রিটেশন আছে।

আপনি যেটাকে 'ভুল' বলছেন সেটাকে কিন্তু কৌস্তুভ ভুল বলছে না। বলছে, 'হিউম্যানিস্ট (র‍্যাশনালিস্ট) দৃষ্টিভঙ্গি'। কৌস্তুভ আরও বলছে, "এটাকে 'ভুল' বলে দেখাতে গেলে কিছু সঠিক যুক্তির দরকার।"

আমি প্রশ্ন(টা/গুলো) রেখেছিলাম কৌস্তুভের কাছে। আপনি যেহেতু কৌস্তুভের হয়ে আগ বাড়িয়ে জবাব দিলেন, তাহলে তার দাবীনুযায়ী 'সঠিক যুক্তি'ও দেখিয়ে দিয়েন। সে যেটাকে নিজেই ভুল বলে স্বীকার করছে না, সেটাকে আপনি ভুল 'মনে করলে' হবে?

ফেসবুকের ব্যক্তিগত জিনিস এখানে এনে সে এথিক্যাল কাজ করেনি, অনেক ঘটনার পেছনের কারণ না জেনে পূর্বধারণার আলোকে মনমত ব্যাখ্যা করাটা অযৌক্তিক;

কৌস্তুভ নিজেকে যেখানে তীব্র যুক্তিবাদী হিসেবে দাবী করে এবং প্রমাণও করে, সেখানে আপনি কীকরে/কেনো এসে তাকে অযৌক্তিক হিসেবে দেখাতে চান বুঝলাম না!

প্রাসঙ্গিকভাবে, আপনাকে একটা কথা জিগাই। ফেসবুকের ব্যক্তিগত জিনিস এখানে আনাটা যেমন 'এথিক্যাল কাজ' না আপনি বলছেন, এখানকার 'ব্যক্তিগত' জিনিস ফেসবুকে নেয়াটাকে আপনি কি 'এথিক্যাল কাজ' হিসেবে দেখেন?

সচল বাংলাদেশীদের প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ সম্পর্কে ইচ্ছাকৃত নেতিবাচক প্রচারণা করার জন্য তার এই জায়গা বেছে নেয়ার দরকার ছিলো না।

আসল পয়েন্টই তো এইটা। হোয়াই দিস কোলাভেরি ডি!

সজল এর ছবি

আমি আমার মতামত দিয়েছি, কৌস্তুভের হয়ে জবাব দেইনি। যেহেতু পাবলিকলিই কমেন্ট করা হচ্ছে, তাই এই ব্লগে দুই বছর কাটানোর সুবাদে আমিও আমার মতামত দিতে পারি বলেই মনে করি। হ্যাঁ, পোস্ট আর কমেন্ট পড়েই কমেন্ট করতে এসেছি।
আমি যে ব্যাপারটাকে ভুল, অযৌক্তিক মনে করি সেটা কৌস্তুভ তা মনে নাই করতে পারে, কারণ আমি সজল, কৌস্তুভ কৌস্তুভ--দুই জন আলাদা মানুষ।

এখানকার 'ব্যক্তিগত' জিনিস ফেসবুকে নেয়াটাকে আপনি কি 'এথিক্যাল কাজ' হিসেবে দেখেন?

আপনার প্রশ্ন বুঝতে পারলাম কিনা জানি না, কিন্তু এখানকার ব্যক্তিগত জিনিসও আছে নাকি? নাকি এখানকার ব্লগার-ব্লগার সম্পর্ক ফেসবুক পর্যন্ত টানা নিয়ে বলছেন? যদি তাই হয় এখানে নৈতিকতার প্রশ্ন আসে কোথা থেকে। সে যাই হোক, আমি আমার সাথে এই প্রশ্নের প্রাসঙ্গিকতা বুঝতে ব্যর্থ।
আবারো বলি, আমি মনে করিনা কৌস্তুভ ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচার চালিয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে সে কিছু ভুল ধারণা করেছে এবং সেটা সে সৎ ভাবে লিখেছে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ধুসর গোধূলি এর ছবি

পাবলিকলি কমেন্ট করা হচ্ছে কিন্তু প্রশ্নটা পাবলিকের কাছে করিনি। করেছি কৌস্তুভের কাছে। জবাবটা তার কাছ থেকে আসলেই ভালো। আলাদা মানুষ সজলের কাছ থেকে 'মতামত' এখানে প্রত্যাশিত না। কনটেক্সটে মিলবে না, শুধুই কথার মণিমালা গাঁথা হবে।

আপনি বরং, যেটা জানতে চেয়েছি আপনার কাছে সেটার জবাব দিন। এই ব্লগে দুই বছর কাটানোর পরে এটা নিশ্চয়ই খেয়াল করেছেন যে এখানে চলমান কোনো বিষয়ের বিতর্ক ফেসবুকে টেনে নিয়ে ব্যক্তি, অতিথি, হাচল বা সচলকে হেয় করার চেষ্টা সচলায়তনে ভালো চোখে দেখা হয় না! এটাকে সচল এথিক্স ধরে, এবার বলেন, এরকম কাজকে কি আপনার এথিক্যাল মনে হয়?

সজল এর ছবি

আমি কোথায় মতামত দিব সেটা ডিকটেট করে দেয়াটা পছন্দ করছি না। আপনার বুঝতে সমস্যা হচ্ছে, তাই আমার মন্তব্যের কনটেক্সট ক্লিয়ার করি। আপনি বলেছেন,

রায়হানের সামষ্টিক ঝকঝকে এবং পরিষ্কার বক্তব্য এবং রায়হানের স্ট্যাটাস নিয়ে রানা মেহের বক্তব্যের পরে এই বিষয়ে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই যে কৌস্তুভ সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে প্যানিক তৈরীর চেষ্টা করছে।

আপনি সবগুলো কমেন্ট মিলিয়ে এখানে একটা কনক্লুশন টেনেছেন, এখানে কাউকে প্রশ্ন করেননি। (কোটেট টেক্সট সম্পর্কে বলছি) পাবলিক থ্রেডে একটা মতামত দিয়েছেন, আমি সেই মতামত সম্পর্কে আমার মতামত জানিয়েছি। অন্য কথায় বলতে আপনার মতামতের সাথে দ্বিমত জানিয়েছি। এই হলো কেন আমি কমেন্ট করেছি, এই প্রশ্নের জবাব-দ্বিতীয় বারের মত।

আপনার প্রশ্নের মাঝেইতো উত্তর দিয়ে দিয়েছেন। "x যদি সচলের এথিক্স বিরোধী হয়, তবে x এথিক্যাল কিনা?" । তবে সচলের ব্লগ পাবলিক কন্টেন্ট, সেটা নিয়ে মনে হয় ফেসবুকে কথা বলা যায়। ভাইস ভার্সা না। কাউকে হেয় করা আলাদা কথা। (এই প্যারার উত্তর না দিয়ে বলতে পারতাম, এই প্রশ্নের সাথে আমার কোন প্রাসঙ্গিকতা নেই, তাই উত্তর দেয়ার দরকার মনে করছি না, কিন্তু দিলাম।)
ভালো থাকবেন।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ধুসর গোধূলি এর ছবি

আমি যে কনক্লুশন টেনেছি, তার নিচেই দেখেন সুন্দর করে একটা প্রশ্ন রাখা আছে। এই প্রশ্নটা সেই কনক্লুশনেরই অংশ। যাইহোক, বুঝেন নাই যখন আগে। এবার দেখি বুঝাতে পারি কিনা আপনাকে!

অনেক ঘটনার পেছনের কারণ না জেনে পূর্বধারণার আলোকে মনমত ব্যাখ্যা করাটা অযৌক্তিক; কিন্তু সেটা তাকে বাংলাদেশবিরোধী বলে প্রমাণ করে না।

এটা আপনার মতামত। কৌস্তুভের না। আর, সে ঘটনার পেছনের কারণ না জেনেই পূর্বধারণার আলোকে মনমতো ব্যাখ্যা করছে, এইকথা আপনাকে কৌস্তুভ আলাদা করে ডেকে নিয়ে চা খেতে খেতে বলেছে? নাকি নিজের মুখের কথা আপনি কৌস্তুভের মুখে স্রেফ বসিয়ে দিচ্ছেন! আমি এখানে কৌস্তুভের মুখের কথা নিয়ে বলছি, আপনার মুখের মাপের কথা নিয়ে না। এটা পরিষ্কার?

একেবারে গোড়াতেই জিজ্ঞেস করেছিলাম আপনাকে পোস্ট এবং মন্তব্যসব পড়ে এখানে মন্তব্য করছেন কিনা! কিন্তু মনেহচ্ছে আপনি উত্তেজনায় কিছু মন্তব্য খেয়াল করার সুযোগ পাননি বা করেননি। এমনকি দেখিয়ে দিলেও লাভ হচ্ছে না। কেনো, আল্লায় জানে! আপনি যে কৌস্তুভের 'ভুল ইন্টারপ্রিটেশন' বের করছেন সেটাকে সে নিজেই তো ইনভ্যালিড করে রেখেছে। সেটা একবার দেখিয়ে দিয়েছি আপনাকে। আবারও বলি, তার মতে এগুলো ভুল না, 'হিউম্যানিস্ট (র‍্যাশনালিস্ট) দৃষ্টিভঙ্গি'।

এই 'হিউম্যানিস্ট দৃষ্টিভঙ্গি' থেকেই কৌস্তুভ তার স্টেটমেন্ট প্রমাণ করার জন্য এই পোস্টের লাইনে লাইনে যথাসাধ্য যুক্তি দিয়েছে। এমনকি কে, কাকে ফেসবুক থেকে ব্লক করেছে, তার দিন-তারিখ উল্লেখ সহ। এগুলো সে কেনো করেছে? 'বাংলাদেশ ধর্মীয় দিক দিয়ে উদার'- এটা প্রমাণ করতে? নাকি উল্টাটা প্রমাণ করতে?

আপনি যদি আমার মতামতের সাথে দ্বিমত করেন (যেটা আদৌ আমার মতামত না, কৌস্তুভের দেখানো যুক্তিসমূহ থেকে বের হওয়া সিদ্ধান্ত) তাহলে তার আগে কৌস্তুভের যুক্তি আর 'হিউম্যানিস্ট দৃষ্টিভঙ্গি'কে আপনার খণ্ডন করে আসতে হবে। সেটা না করে আৎকা আমার কথার মধ্যে বাম হাত ঢুকিয়ে দেয়াটা আমিও ঠিক পছন্দ করি নাই।

আর, সচলায়তনের চলমান কোনো ব্যাপার ফেসবুকে নিয়ে কেউ সচলদেরকে 'আঁতেলেকচুয়াল' সম্বোধন করে না, তাদেরকে নিয়ে অ্যালগোরিদম বানায় না। এটাতে মনে হওয়া হওয়ির কিছু নাই, স্রেফ ফাত্রামী এইটা। আপনার সাথে এর কিছুটা হলেও প্রাসঙ্গিকতা আছে বলেই আপনাকে জিজ্ঞেস করেছি, এথিক্যালের কথা বলছিলেন কিনা, তাই। যাইহোক।

সজল এর ছবি

আমার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে আপনি অনেকগুলা অভিযোগ তুলেছেন, দেখি আত্মপক্ষ সমর্থন করা যায় কিনা।
১। পুরো ব্যাপারটা ছিলো কৌস্তুভের উদ্দেশ্যে প্রশ্ন, এখানে আমি বাম হাত ঢুকিয়েছি কেন?

রায়হানের সামষ্টিক ঝকঝকে এবং পরিষ্কার বক্তব্য এবং রায়হানের স্ট্যাটাস নিয়ে রানা মেহের বক্তব্যের পরে এই বিষয়ে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই যে কৌস্তুভ সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে প্যানিক তৈরীর চেষ্টা করছে।

প্রশ্ন হলো, কেনো? কৌস্তুভ কি দয়াকরে জবাবটা দিবেন?

এখানে দুইটা প্যারা। প্রথম প্যারার বক্তব্য অনেকটা "কৌস্তুভ এক্স করেছে", দ্বিতীয় প্যারায়, "কৌস্তুভ, কেন করেছেন?"। মাতৃভাষা যতটা শিখেছি তাতে প্রথম বাক্যটা কৌস্তুভের উদ্দেশ্যে বলা হয়নি সেটাই বুঝেছি, কাউকে উদ্দেশ্য করে কিছু বললে, বাক্যের শেষে "করেছ" হত। তাই আপনি এখানে একটা ডিসিশন নিয়ে পাবলিকলি জানিয়েছেন পার্টিকুলার কাউকে উদ্দেশ্য করে না। পাবলিকলি ছুড়ে দেয়া একটা সিদ্ধান্তের প্রতিক্রিয়া আমি দেখাতেই পারি, ভবিষ্যতেও প্রাসঙ্গিক মনে করলে দেখাব।

২। কৌস্তুভকে করা প্রশ্নের উত্তর আমি কেন দিয়েছি?
অন্তত দুইবার বলেছি, আমি কৌস্তুভকে করা প্রশ্নের উত্তর দেইনি। তাও বারবার এক কাসুন্দি গাওয়ার কারণ আমার মাথায় ঢুকছে না। এটা আমার মতামত, কৌস্তুভের হয়ে উত্তর না। এক জায়গায় বলছেন, আমার কথা কৌস্তুভের মুখে বসিয়ে দিচ্ছি কিনা। আর কয়বার বলার পর আপনাকে বুঝাতে পারব, যে আমি তার হয়ে উত্তর দেইনি, কে জানে।
তার সম্পর্কে আমার মতামতের সাথে এমনকি কৌস্তুভ একমত নাও হতে পারে। এক জায়গায় বলেছেন, আমি উত্তেজিত হয়ে কমেন্ট করছি কিনা। না, বারবার উত্তর দেয়ার পরও সার্কুলার পথে আপনার হাঁটা দেখে উলটা আমারই সন্দেহ হচ্ছে আপনার ব্যাপারে। এখানে আমি যুদ্ধ করতে আসিনি, সিম্পল একটা ব্যাপারে দ্বিমত জানাতে এসেছিলাম মাত্র।

৩। সচল থেকে ফেসবুকে টেনে নেয়ার এথিক্স সম্পর্কেঃ
পাবলিক কমেন্ট নিয়ে পাবলিকলি ডিসকাস করা যেতেই পারে। আমার প্রাসঙ্গিকতা খুঁজতে গিয়ে বিস্তারিত দেখলাম, শুধু নিজের ভূমিকা সম্পর্কে বলি, আপনার সংজ্ঞায়িত "ফাত্রামি"'র একটাও আমি করিনি, তাই উত্তর দেয়ার দরকার মনে করছি না।

৪।পোস্ট এবং মন্তব্য সব পড়েছি কিনা?
কোন কিছু নিয়ে তর্কে গেলে, সুস্পষ্ট জবাব না দিয়ে, "আপনার জানায় ঘাটতি আছে, আরো জেনে আসেন" বলা খুবই প্রচলিত স্ট্র্যাটেজি। দ্বিতীয়বারের মত উত্তর দেই, হ্যাঁ সবগুলা পোস্ট এবং কমেন্ট পড়েই কমেন্ট করেছি, ওর বেশিরভাগ ব্লগে আমার কমেন্টও পাবেন। তবে রিভিশনে দেয়া হয়নি পুরোপুরি।

৫। আপনার সাবজেকটিভ সিদ্ধান্ত বনাম সর্বজনগ্রাহ্য সিদ্ধান্তঃ
এখানে বলেছেন,

আপনি যদি আমার মতামতের সাথে দ্বিমত করেন (যেটা আদৌ আমার মতামত না, কৌস্তুভের দেখানো যুক্তিসমূহ থেকে বের হওয়া সিদ্ধান্ত)

যুক্তিসমূহ আমি এবং আরো অনেকেই দেখেছে আপনার পাশাপাশি। সবাই আপনার সিদ্ধান্তে আসেনি। তাই আপনার সিদ্ধান্তটা একটা সাবজেক্টিভ সিদ্ধান্ত, সবার কাছে নিঃসন্দেহে উপস্থিত হওয়া সিদ্ধান্ত না। আমার কমেন্ট করার একমাত্র উদ্দেশ্য ছিলো, এই সাবজেক্টিভ সিদ্ধান্তের বিপরীতে আমার সাবজেক্টিভ মত তুলে ধরা। সেটার সাথে একমত/দ্বিমত/ইগনোর এটুকুই আপনার কাছ থেকে প্রত্যাশিত ছিলো, এই হাজার হাজার লাইন খরচ করার কোন ইচ্ছা ছিলো না।

৬।

এইকথা আপনাকে কৌস্তুভ আলাদা করে ডেকে নিয়ে চা খেতে খেতে বলেছে?

সেটা না করে আৎকা আমার কথার মধ্যে বাম হাত ঢুকিয়ে দেয়াটা আমিও ঠিক পছন্দ করি নাই।

আমি এখানে কৌস্তুভের মুখের কথা নিয়ে বলছি, আপনার মুখের মাপের কথা নিয়ে না। এটা পরিষ্কার?

আপনার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে।

ধন্যবাদ।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ফাহিম হাসান এর ছবি

ধুসর গোধূলিদা,

কৌস্তুভের লেখা, আপনার মন্তব্য ও অন্যান্য সহসচলদের প্রতিমন্তব্য পড়লাম। এই লেখা এবং তথ্যসহ মিথ্যা কহ পড়ে আমার মনে হয় নাই কৌস্তুভ "বাংলাদেশের ব্যাপারে ইচ্ছাকৃত প্যানিক ছড়ানোর" চেষ্টা করছে।

এই লেখায় কিছু পর্যবেক্ষণ এসেছে। এগুলো রাগিব ভাইয়ের ভাষায় যাকে বলে "স্ন্যাপশট"-ই। কৌস্তুভ তার খন্ডকালীন ভ্রমণের উপর ভিত্তি করে কিছু স্টেইটমেন্ট দিয়েছে। যদি পর্যবেক্ষণে কোন ভুল থাকে, সবাই সেই ভুলটা ধরিয়ে দিলেই হয়।

এখন কথা হল এই ভুলটা ইচ্ছাকৃত কিনা। আমার কাছে মনে হয় নাই যে কৌস্তুভ ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশকে খারাপ দেখানোর চেষ্টা করেছে।

রায়হানের সামষ্টিক ঝকঝকে এবং পরিষ্কার বক্তব্য এবং রায়হানের স্ট্যাটাস নিয়ে রানা মেহের বক্তব্যের পরে এই বিষয়ে আর কোনো সন্দেহের অবকাশ নেই যে কৌস্তুভ সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে প্যানিক তৈরীর চেষ্টা করছে।

আমার সন্দেহের অবকাশ আছে। কৌস্তুভকে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালাতে আমি দেখি নাই।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

আবারো বলি, আমি মনে করিনা কৌস্তুভ ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে অপপ্রচার চালিয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে সে কিছু ভুল ধারণা করেছে এবং সেটা সে সৎ ভাবে লিখেছে।

চলুক

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

কৌস্তুভ এর ছবি

ধুগো, আপনাকে দেওয়া উত্তরের মধ্যেই অনিন্দ্য আর রানা মেহেরকে দেবার উত্তরও চলে আসছে, তাই একসাথেই বলছি।

১. আপনার টুপিরতলা/কলতলা থিয়োরিও আপনার কাছেই রাখেন। রায়হান যে বলেছে, আমার 'থ্রেট মেল' কথাটা তার পাওয়া ইমেল ঠিক স্যাটিসফাই করে নয়, সে কথা আগেই মেনে নিয়েছি। কিন্তু হেট মেল কথাটা যে সে নিজেই বলেছে, সেটা নিয়ে বড় করে স্ট্যাটাস দিয়েছে, এই কথাটা সত্যি, সবাই দেখতেই পাচ্ছেন। এখন যদি তার মনে হয় ওটা তেমন বড় ব্যাপার না, সেটা তার অভিরুচি। আমি যে মিথ্যা কথা বলছিনা সেটা সবাই দেখতেই পাচ্ছে।

২. এটা অনিন্দ্যর কথার উত্তরে - না, সাধারণ সচলপাঠকের সেটা দেখার দরকার ছিল না। ওটা রানা মেহের যেমন বলেছেন, রেস্ট্রিক্ট করে দিলেই ভাল হত। দুঃখিত।

আর আপনারা যেটা বলছেন, ওই কথা এখানে কেন, তার উত্তর - যাঁর সঙ্গে কথা চলছে, সেই আলোচনার সময় একটা প্রাসঙ্গিক ফ্যাক্ট, যেটা তাঁরই সম্পর্কিত, সেটা তাঁর কাছেই উল্লেখে অন্যায় দেখি না।

৩. বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালানো, প্যানিক তৈরীর চেষ্টা, কোনোটাই আমি করছি না। অতএব মোটিভের প্রশ্নই আসে না। আপনার এই ভ্রান্ত তত্ত্ব আপনার কাছেই রাখুন।

এই যেমন, বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম হলে আমি কী করতে পারি? সে প্রসঙ্গই আমি তুলিনি, বাংলাদেশ ইসলামি দেশ সে কথা আপনিই আনলেন। আমি কাকে ডেকে বলেছি, বাংলাদেশ ইসলামী দেশ, ওখানে যেও না? আমি বরং সেখানকার 'ইসলামি'/'হিন্দু'/নাস্তিক সব বন্ধুদের সাদর আপ্যায়নের কথাই বলেছি।

সব ধর্মের আপত্তিকর অংশগুলোর প্রতি আমার নিন্দা বজায় থাকবে। তাতে আপনার আপত্তি থাকলে, কান্ট হেল্প। তা থেকে আপনি এই কনস্পিরেসি থিওরি তৈরি করে প্রচার করা শুরু করলেন, যে আমি বাংলাদেশ বিদ্বেষী, বেশ বেশ। ওই দিন দেখলাম আপনি অন্য এক ভারতীয় সহসচলকেও বেশ গালিগালাজ করলেন। হুম।

৪. সচলের একটা লেখা ফেসবুকে শেয়ার দেওয়া, তার কনটেন্ট বা লেখককে নিয়ে প্রশংসাসূচক মন্তব্য দেওয়া, যদি এথিকাল হয়, তবে কোনো লেখা নিয়ে সমালোচনাসূচক মন্তব্যও জায়েজ।

রায়হান আবীর এর ছবি

কৌস্তুভ সম্পূর্ণ ইচ্ছাকৃতভাবে বাংলাদেশ সম্পর্কে নেতিবাচক প্রচারণা চালিয়ে প্যানিক তৈরীর চেষ্টা করছে।

ব্যক্তিগত ভ্যাজালে অস্থির অবস্থা। একটু সময় নিয়ে আবার আসলাম পোস্টে। অনেক অনেক কথা অলরেডি হয়ে গেছে। আমি আপনার এই মন্তব্যে প্রতিবাদ জানাইলাম।

যতোটুকু চেনা দরকার ততটুকু আমি কৌস্তুভকে চিনি বলেই মনে হয়, ও যে জোটিল কোনো ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন করতে এই ব্লগ লেখেনি তা বলাই বাহুল্য। আমার মন্তব্য দ্বারা আপনি যা প্রমান করতে চাচ্ছেন তা প্রমানিত হয়না।

আর আমি আমার কমেন্ট কৌস্তুভকে হেদায়াতের জন্য বলি নাই। চলমান একটা আলোচনায় কিছু পয়েন্ট যোগ করেছি শুধু। কে ভুল, কে সঠিক সেই আলোচনায় নিজেকে আপাতত জড়াতে আগ্রহী নই।

রানা মেহের এর ছবি

রায়হান কাকে তার প্রোফাইল থেকে কবে ব্লক করলো এটা আপনাকে এখানে বলতে হবে কৌস্তুভ?
কী ধরনের অভদ্রতা এটা? ক্ষমা আপনি শুধু রায়হানের কাছে নয়, যাকে উদ্দেশ্য করে এরকম বাজে একটা কথা বলেছেন, তার কাছে চান।
নিজেকে প্রমানের জন্য এতোটা নীচে নামার দরকার নেই।

আর আবীরের যেই মেইলটা নিয়ে আপনি এরকম বড় বড় কথা বললেন, সেই মেইল টা যে একটা হাস্যকর মেইল ছিল সেটা বোঝার মতো জ্ঞান আপনার নিশ্চই আছে। এটাকে যদি বাংলাদেশে নাস্তিকেরা কেমন জাহান্নামের আগুনে জ্বলছে এর উদাহরন হিসেবে বোঝাতে চান আকর্ণ বিস্ত্বত হাসি ছাড়া আপনাকে কিছুই দেয়ার নেই।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

রায়হান আবীর এর ছবি

হ্যাঁ! আমারো মনে হয়, আমার স্ট্যাটাসটা কৌস্তুভের পয়েন্টকে জাস্টিফাই করার মতো না। কৌস্তুভ, ভুল কিছু কী বললাম? নীচে আরেকটা মন্তব্য দিয়েছি।

কৌস্তুভ এর ছবি

আপনাকে, অনিন্দ্যকে, একসাথেই উত্তর দিলাম উপরে, ধুগোর মন্তব্যের জবাবে।

মেলটা বায়তুল মুকাররমের খতিবের থেকে নাকি একটা পাতি ছাগুর থেকে, সে রায়হানের মুণ্ডু কাটতে চায় নাকি স্রেফ গালি দিতে চায়, সেটা তো পয়েন্ট না। রায়হান হেট মেল (থ্রেট মেল কথাটা ব্যবহার করা এখানে মিলছে না, এটা আগেই মেনে নিয়েছি) পেয়েছে, এটা সে নিজেই বলেছে, ব্যস।

সাফি এর ছবি

কৌস্তুভ বলিয়াছেন,

কিন্তু বোরখা পরা একটা মেয়ের প্রতি যতটা সরাসরি রিপ্রেশন, তার পক্ষে যতটা কষ্টকর, সেটা কি সিঁদুর পরার সমতুল্য?

সুতরাং আমরা শিখলাম, রিপ্রেশনের মাত্রা আছে। দুইটাই ধর্মের চাপিয়ে দেওয়া আচার, এইটা পয়েন্ট না। পয়েন্ট হলো দুইটা সমান না, একটা কম, একটা বেশী।

আবার কৌস্তুভ বললেন,

মেলটা বায়তুল মুকাররমের খতিবের থেকে নাকি একটা পাতি ছাগুর থেকে, সে রায়হানের মুণ্ডু কাটতে চায় নাকি স্রেফ গালি দিতে চায়, সেটা তো পয়েন্ট না।

পয়েন্ট হলো সে যে হেট পাইছে এইটাই বড় কথা। সেইটার মাত্রা কতখানি গুরুতর, সেইটা এখানে আলোচ্য না। হাততালি

আপনেরে আজকে থেকে যুক্তির গুরু মানলাম (গুরু)।

কৌস্তুভ এর ছবি

হ্যাঁ ভাই। যে যুক্তিতে যেমন পয়েন্ট দরকার সেটাই দিতে হবে।

আপনার বক্তব্য যদি হত যে কলকাতার ধর্মীয় আবহাওয়া আছে, সেটা অস্বীকার করার কোনো সুযোগই নেই। আপনার বক্তব্যটা ছিল, বাংলাদেশের ধর্মীয় আবহাওয়া বেশি নয়, সেটার পরিমাণ কলকাতারই সমান। এইটার সম্পর্কে বলতে গেলেই দুটো প্রথার রিপ্রেশনের পরিমাণের তফাত দেখাতে হবে।

আর ওইটার প্রসঙ্গ ছিল, রায়হান হেট মেল পেয়েছে কি পায়নি। কম-বেশি প্রসঙ্গটা আমার মন্তব্যে ছিল না। তাই ওই কথা। মেলটা কম উদ্বেগজনক, এ কথাটা যে রায়হান বলেছে, সেটা তো আমি অস্বীকার করিনি।

shafi.m এর ছবি

একটু পার্সোনাল তথ্য হয়ে যাচ্ছে, রায়হানের খারাপ লাগতে পারে

এইটা বুঝার পরও আপ্নি ব্যক্তিগত (আপ্নার সহ সচলের) তথ্য সচলের মত জনবহুল (পাব্লিক ব্লগ) ব্লগে প্রকাশ করলেন? শুধুই জেতার (যে আপ্নার বক্তব্য ভুল নয়) অভিপ্রায়ে? কে কাকে ফেস্বুকে বাধা দিল এই তথ্যটা কি এড়ান যেত না?

বাংলাদেশ সম্পর্কিত আপ্নার (আমার পড়া ৩ টা) পোস্ট প্রায়ই প্রশ্নবিদ্ধ হয়, আশা করছি ব্যপারটার দিকে আপ্নার সুনজর দিবেন।

এক্টা উদাহরণ দিতে চাই, ইউটিউবের সবচেয়ে সাবস্ক্রাইবড কমেডি চ্যানেল গুলা অগুনতি হেট কমেন্ট (ট্রোল বা ট্রোলদের দ্বারা) পায় এ হিসেবে ধর্ম অনেক বেশী স্পর্শকাতর এক্টা ব্যপার। এক্টা দু'টো হেট মেইল সে বিচারে খুবই দুর্বল উদাহরণ, বিশেষকরে সেটা যদি একটা দেশের সংখ্যাগুরু লোকের ধর্মের বিরুদ্ধে হয়। নাস্তিকতা কোন দেশ বা রাজ্য বা সমাজ সম্পুর্ন রূপে গ্রহন করতে পেরেছে, যেখানে নাস্তিকদের পথ একেবারেই কন্টক হীন? বাংলাদেশে পীরবাবাদের পোস্টার ও বাংলাদেশীদের ধর্মিও নিরপেক্ষতা নিয়ে আপ্নার (কিছুটা কি ডিডিউসিভ?) যে পরিপ্রেক্ষণ, সেটা নিয়ে অনেকেই ভাল ভাবে বুঝিয়ে বলে ফেলেছেন।

এক্টু যোগ করতে চাই, উগ্র ধর্মবাদীতা ও উগ্র নাস্তিকতা দুটোই একই কয়েনের এপিঠ-ওপিঠ।

শাফি।

shafi.m এর ছবি

ইয়ে, টাইপো হয়েগেল, শব্দটি "ডিডাক্টিভ" হবে। দুঃখিত।

শাফি।

কৌস্তুভ এর ছবি

ব্যাপারটা সব পাঠকের সামনে তুলে আনা যে অভিপ্রেত ছিল না সেটা উপরেই বললাম।

বাংলাদেশ আর সব দেশের মতনই ভালোমন্দে মেশানো দেশ। যে বিষয়গুলো সমালোচনার যোগ্য, যেমন পদ্মা সেতু দুর্নীতি, সেটা বাংলাদেশি সচলরাও সমালোচনা করেন। আমার তিনটে পোস্ট, কোন তিনটে তা আপনিই জানেন, যদি যৌক্তিক হয় তবে তা অন্যায় কিসে? ভারতীয় বলে কিছু বলতে পারব না? যদি পোস্টগুলো মিথ্যা হয়, অন্যায় হয়, তবে দেখিয়ে দিন।

উগ্র ধর্মবাদীতা ও উগ্র নাস্তিকতা দুটোই একই কয়েনের এপিঠ-ওপিঠ নয়, এই অর্থে যে দুটো মোটেই সমতুল্য নয়। নেটেই এই নিয়ে প্রচুর আলোচনা আছে, বাংলাতেও, চাইলে পড়ে দেখে নিন। নেহাত যদি জোর করেই উপমাটা চালাতে চান, তাহলে একটু এগিয়ে গিয়ে বলি, এটা টসের মত ব্যাপার - দ্বিতীয়টা পড়লে মানবতা জিতবে, প্রথমটা পড়লে মানবতা হারবে।

রায়হান আবীর এর ছবি

কৌস্তুভ,

প্রথম লাইনটা দরকার ছিলোনা, ধূগোকে দেখানোর জন্য স্ক্রিন শটও দেখানো যেতো মন খারাপ যাই হোক।

তোমার বক্তব্য ধরেই বলি- উপর পর্যন্ত মোটামুটি মনে হলো, তুমি বিষয়টা পরিষ্কারভাবে বুঝতে পারছো, কিন্তু এখন মনে হচ্ছে আরও একটা কথা বলা দরকার।

ফেসবুকে ওড়না পার্টি বলে একটা পার্টি আছে। জানো নিশ্চয়ই। এদের বেশ কয়েকটি ফ্যান পেইজ আছে, যেগুলোর কয়েকটায় বিশ হাজার সদস্য। এরা এইসব পেইজ থেকে নানা ধরণের অসভ্যতা প্রচার করে। সেটা নাস্তিকদের বিরুদ্ধে হতে পারে কিংবা মেয়েদের ললিপপ হিসেবে দেখানো নিয়ে হতে পারে।

পুরা দেশটা কী তবে রসতলে গেলো?

ওড়না পার্টির কর্মকান্ড দিয়ে সেটা বিবেচনা করা অযৌক্তিক। কারণ? প্রথম কারণ এই পেইজগুলো নির্দিষ্ট একটা মানুষের মতের প্রতিফলন। অনেক অনেক লাইক, শেয়ার হলেও, কথাটা লিখছে একজন, কিছু ক্ষেত্রে পাঁচ ছয়জনের ডেডিকেটেড এডমিন প্যানেল। এরা কারা? অবাক ব্যাপার হলো, এরা সবাই খুব বেশি হলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং বেশিরভাগ কলেজে একাদশ কিংবা দ্বাদ্শ শ্রেনীতে পড়ে।

সেই সময়টা আমিও অনেক ছাগু ছিলাম, এদের মতো অবশ্যই না। কিন্তু অনেক অযৌক্তিক ব্যাপারে বিশ্বাস করতাম। আমার আসপাশের ফ্রেন্ডরাও মোটামুটি সেই লেভেই ছিলো। সেইসময়ে ম্যাচিউরিটি আসেনা, আড্ডার একমাত্র বিষয় থাকে নারী, নারী নারী।

তাই ফেসবুকের এই ধরণের নারীবিদ্বেষী কর্মকাণ্ডের ফলেই যে দেশের নারী নারী সমাজের অবস্থা খারাপ হয়ে গেলো সেট বলা উচিত নয়। আমাদের জেনারেশনের সাথে এই জেনারেশনের একাদশ, দ্বাদশ শ্রেণীর পার্থক্যটা হলো ইন্টারনেটের সহজলভ্যতা। ঘরে ঘরে ইন্টারনেটের আলো পৌঁছেছে ঠিকই, কিন্তু একই সাথে কিছু অর্বাচীন যুবকের ইমম্যাচিউরড বয়ান এখন চোখের সামনে পড়ে নিয়মিত, নেট এবং ফেসবুকের কল্যাণে। আর কিছু না। এরা আগেও ছিলো, এখনও আছে।

নাস্তিকতা নিয়ে থ্রেট কিংবা হেট মেইলের কাহিনিও ঠিক এক। সব পিচ্চি পোলাপান। দিন দুনিয়া এখনও বুঝে উঠতে পারেনি। ধর্ম নিয়ে কিছু দেখলেই স্বভাবতই ক্রোধে ফেটে পড়ে। এক পার্সেন্ট ক্রোধের বহিপ্রকাশ এবং বেহেশতে প্লট পাবার আশায় কিছু গালাগালি কিংবা হেট মেইল করে। কিন্তু এদের বাপেরও সামর্থ্য নেই, সামনা-সামনি এসে কিছু করার বা বলার।

তাইলে দেখো, ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড আর আসল ওয়ার্ল্ডের পার্থক্য আছে। সাধারণ নাস্তিকরা আসল ওয়ার্ল্ডে এখন নিরাপদ। বাংলাদেশের মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারীরাও। কিন্তু জঙ্গী নাস্তিকও হয়ে গেলে সমস্যা। তখন হয়তো আসল ওয়ার্ল্ডেও উত্তাপটা চলে আসতে পারে।

ব্লোডলি বলি, জাস্ট কমন সেন্স ব্যবহার করে দেখে শুনে বুঝে চললে এদেশে মুক্তবুদ্ধির চর্চার দ্বার এখনও সবার জন্য উন্মুক্ত, যারা চর্চা করছে তাদের পথও কন্টকাকীর্ণ নয়। পরে কী হবে বলা মুশকিল। কিন্তু এখন না।

ধ্রুব বর্ণন এর ছবি

ওড়না পার্টির মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণটা খারাপ হয় নি। ইউটিউবে একটা প্রায় জনপ্রিয় মন্তব্য হচ্ছে, "নাও গেট ব্যাক টু কিচেন অ্যান্ড মেইক মি এ স্যান্ডউইচ।" এরাও বাচ্চা পোলাপাইনই মনে হয়। নাকি ইংরেজি ভাষীদের নারীর প্রতি অবজ্ঞা চূড়ান্ত? আমারে "আপনারে মনে হয় আমি খুন করুম না" বলা জিহাদীচ্ছু ছেলেটাও ছিলো কলেজগামী। আমি নিজে নটরডেমে থাকতে একেকজন কতো কিছিমের কতো কতো বিধ্বংসী কথা বলতো মনে আছে। এরা এখন একেকজন আমার চেয়েও ভদ্র। ইউটিউবে ধর্মীয় পোস্টে কমেন্ট আসে "ফাক এথিস্টস/ক্রিশ্চান্স/মুসলিমস/জিউস, গো টু ইউর ফাকিং হেল!" পশ্চিমও তাহলে ধর্মীয় হুমকিপূর্ণ! তা আসলে হয়তো তাই। বাংলাদেশ তার থেকে অধিক কিছু কেনো? সব দেশেই আছে। কিন্তু বাংলাদেশে সড়ক ব্যবস্থা যেরকম একটা সমস্যা, এটা সেরকম উল্লেখ করার মতো সমস্যা না। বাংলাদেশের ধর্মীয় আবহের নিজস্ব একটা চরিত্র আছে। সেটার সাথে বসবাসেরও একটা কমন সেন্স প্র্যাকটিস আছে, যেখানে আপনি যেমন বললেন - "দেখে শুনে বুঝে চললে এদেশে মুক্তবুদ্ধির চর্চার দ্বার এখনও সবার জন্য উন্মুক্ত, যারা চর্চা করছে তাদের পথও কন্টকাকীর্ণ নয়।"

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

রায়হান ভাই, আপনি কৌস্তুভ'কে উদ্দেশ্য করে মন্তব্য করেছেন। কিন্তু পাবলিক থ্রেডে আলোচনা চলছে দেখে নিজের মতটাও জানালাম। বলে রাখি, এটা কৌস্তুভের পক্ষের মত নয়। আমার ব্যক্তিগত মত।

ওড়না পার্টির কর্মকান্ড দিয়ে সেটা বিবেচনা করা অযৌক্তিক। কারণ? প্রথম কারণ এই পেইজগুলো নির্দিষ্ট একটা মানুষের মতের প্রতিফলন। অনেক অনেক লাইক, শেয়ার হলেও, কথাটা লিখছে একজন, কিছু ক্ষেত্রে পাঁচ ছয়জনের ডেডিকেটেড এডমিন প্যানেল। এরা কারা? অবাক ব্যাপার হলো, এরা সবাই খুব বেশি হলে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ের প্রথম বর্ষের ছাত্র এবং বেশিরভাগ কলেজে একাদশ কিংবা দ্বাদশ শ্রেনীতে পড়ে।

কারো বয়স ১৮ হলেই তাকে প্রাপ্ত বয়স্ক ধরা উচিত। কোনো একটা নির্দিষ্ট বয়সের লোকেদের সমাজের আংশ না ভাবার কোনো যুক্তি নেই। সমাজে এদের মিথস্ক্রিয়া আপনার আমার চেয়ে কম নয়। এদেরকে উড়িয়ে দেয়ার বা অগ্রাহ্য করারও কোনো কারণ নেই। এদের দৃষ্টিভঙ্গিও বাংলাদেশের দৃষ্টিভঙ্গি। আপনি যেমন বলছেন, একটা বয়সে আপনি খানিকটা হলেও এদের মতো ভাবতেন, এখন আর ভাবছেন না। এই কথাটি বাংলাদেশের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির মুক্ততা নির্দেশ করে না। আপনার কথামতো সবাই/বেশিরভাগেই একটা বয়সে খানিকটা হলেও ছাগল* থাকে। তারমানে কিন্তু আমাদের সমাজ বেশিরভাগকেই ছাগল হিসেবে গড়ে তোলে। আপনি সেই অবস্থা থেকে উঠে এসেছেন। আমাকে বলবেন, আপনার মতো কতজন সেই অবস্থা থেকে উঠে এসেছে? কতজন সত্যি সত্যি উঠে আসে?

বয়সের কারণে পরিবর্তনটা হয় অন্যখানে, সামাজিক দায় কাঁধে চাপে। রক্তের টগবগে ভাব কমে যায়। তখন বেশীরভাগেই আর কুপিয়ে নাস্তিক মেরে বেহেস্তে প্লট নেয়ার জন্য পথে নেমে পড়ে না। কিন্তু তাদের ঘৃণা কিন্তু কমে যায় না। তাদের দৃষ্টিভঙ্গিও বদলে যায় না। প্রকাশভঙ্গি হয়তো বদলায়, কমে যায়।

বাংলাদেশে মুক্তমনারা (যারা ধর্মের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে কথা বলেন) বাস্তবে নিরাপদ সেটাও আমার মনে হয় না। ঢাকার ছোট একটি অংশ নিরাপদ হতে পারে (অথচ হূমায়ুন আজাদ স্যারকে এখানেই কুপিয়ে মারা হয়েছিল)। কিন্তু বাংলাদেশের গ্রামেগজ্ঞে, যেটাকে বিস্তীর্ণভাবে আপনি বাংলাদেশ বলতে পারেন, সেখানে নাস্তিক্যবাদের প্রচার সন্দেহাতীতভাবে বিপজ্জনক।

*ছাগু শব্দটি ব্যাবহার করলাম না। এটা জামাত শিবির এবং তাদের অ্যাপোলজিস্ট ছানাপোনাদের জন্যই বরাদ্দ থাকুক।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

আমি তোমার স্ট্যাটাস নিয়ে যে মিথ্যাচার করিনি, হেট মেল পাওয়ার কথাটা তুমি নিজেই বলেছ, এটা পরোক্ষে স্বীকার করছ, সরাসরি বলে দিলে ঝামেলা এড়ানো যেত। আর 'থ্রেট মেল' শব্দচয়নটা যে ঠিক হয়নি, এটা তো আগেই বললাম।

হ্যাঁ, প্রথম লাইনটা প্রকাশ্যে বলার দরকার ছিল না। দুঃখিত।

'জঙ্গী নাস্তিকও হয়ে গেলে সমস্যা', 'দেখে শুনে বুঝে চললে ... তাদের পথও কন্টকাকীর্ণ নয়', এই সাবধানবাণী-ওয়ালা কথাগুলো তুমি বা অন্যরা আগেও বলেছেন, এখনও বললে, নিচে অনার্য মডুও বলছেন। মনে হচ্ছে বিদেশী হিসাবে আমি বললেই সমস্যা।

রায়হান আবীর এর ছবি

আমি কী কোথাও বলেছি তুমি আমার স্ট্যাটাস নিয়ে মিথ্যাচার করছো? আমি খালি বললাম, আমার স্ট্যাটাস দিয়ে কোনো পয়েন্ট স্ট্যাবলিশড হয়না।

তোমার এই পোস্টে রাগিব ভাইয়ের মন্তব্যের সাথেই আমি একমত। বাদবাদি কোনো আলাপে সত্যিকার অর্থেই আমার আগ্রহ নাই। আমি দুইটা কমেন্ট করেছি, কিছু বিষয় পরিষ্কার করার জন্য। বোধহয় তারও দরকার ছিলোনা।

কৌস্তুভ এর ছবি

নারে ভাই। কিন্তু যা অবস্থা, যতক্ষণ সরাসরি না বলে দেবে ততক্ষণ উল্টোটাই দাবি করা হবে...

ফাহিম হাসান এর ছবি

রায়হান ভাই, সাধারণ নাস্তিক ও জঙ্গী নাস্তিকদের পার্থক্যটা আমি বুঝি নাই। কৌস্তুভ জঙ্গী বলতে ঠিক কী বুঝিয়েছেন জানি না, তবে আপনার মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কিছু কথা বলি-

ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড আর আসল ওয়ার্ল্ডের পার্থক্য আছে। সাধারণ নাস্তিকরা আসল ওয়ার্ল্ডে এখন নিরাপদ। বাংলাদেশের মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারীরাও। কিন্তু জঙ্গী নাস্তিকও হয়ে গেলে সমস্যা। তখন হয়তো আসল ওয়ার্ল্ডেও উত্তাপটা চলে আসতে পারে।

"বাংলাদেশ" মানে ঢাকা নয়। ঢাকায় একটা মানুষের সামাজিক বলয়টা তুলনামূলক ভাবে বড়। একই কথা অন্যান্য বড় শহর, নগরের ক্ষেত্রেও খাটে। শহুরে মানুষের জীবনধারা একটু অ্ন্যরকম। এখানে একজন মানুষকে সামাজিক চাপে রাখাটাও কষ্টকর, বিশেষ করে সেই মানুষ যদি অরথনৈতিক ভাবে শক্তিশালী হয়।

গ্রামে, ছোট শহরে বা মফস্বলে ব্যাপারটা একরকম নয়। সেখানের পরিচয়ের বলয়টা ছোট। নাস্তিকতার চর্চা করাটা সেখানে অত্যন্ত বিপদজনক। আর সেই নাস্তিক যদি অন্য ধর্মের (হিন্দু) হয়, তাহলে আরো কঠিন।

শামসুর রাহমানকে তার নিজের বাসায় আক্রমণ করা হয়েছে। তসলিমার বিরুদ্ধে এই একুশে বইমেলাতেই মিছিল হয়েছে। আজাদকে কোপানো হয়েছে টিএসসির কাছেই।

জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার কবীরকে কাফনের কাপড় পাঠানো হল। তারা তো সে অর্থে নাস্তিকও নন।

এগুলো তো বেশিদিন আগের কথা না। এবং এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনাও না।

নাস্তিকতা চর্চা ও মুক্তবুদ্ধির চর্চার মাঝে একটা স্পষ্ট লাইন আছে। দুইটাকে এক করে কনক্লুশানে আসা ঠিক না। প্রকাশ্যে ধর্ম বিরোধীতা করা ও সামাজিক অন্যান্য ইস্যু নিয়ে কথা বলা দুটোর আফটার ম্যাথ এক রকম না।

আপনি নারী স্বাধীনতা নিয়ে সাধারণভাবে কথা বলুন দেখবেন বেশ সমর্থন পাচ্ছেন, হয়ত অল্প কিছু ছাগু টাইপের মানুষ চিল্লাবে।

এবার বলুন - নারী স্বাধীনতার ক্ষেত্রে ধর্ম একটা ফ্যাক্টর; ইসলামে নারীকে স্বাধীনতা দেওয়া হয় নাই, প্রপার সম্মান দেওয়া হয় নাই। এবার অসংখ্য মানুষ এর বিরোধীতা করবে। এর আগে যারা সমর্থন জানিয়েছিল তাদের অনেকেই যুক্তি দিবে কেন বোরখা ভাল, ইসলামে কিভাবে নারীকে সম্মান জানানো হয়েছে ইত্যাদি।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

ফাহিম,

'শামসুর রাহমানকে তার নিজের বাসায় আক্রমণ করা হয়েছে। তসলিমার বিরুদ্ধে এই একুশে বইমেলাতেই মিছিল হয়েছে। আজাদকে কোপানো হয়েছে টিএসসির কাছেই। ... জাফর ইকবাল, শাহরিয়ার কবীরকে কাফনের কাপড় পাঠানো হল। তারা তো সে অর্থে নাস্তিকও নন।' একমত। আমার ধারণা, এই ঘটনাগুলির পিছনে 'শুধুই' ধর্মকে দায়ী করলে (আপনি করছেন বলছি না, যদি কেউ দায়ী করে থাকে তাহলে) একটা মেজর পার্সপেক্টিভ হারায়া যায়। বাংলাদেশে একটা নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দল (মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি জামাত) বা জোট (চারদলীয় জোট) (এবং তাদের পূর্বসূরি অবৈধ সেনাশাসকেরা - জিয়াউর রহমান ও এরশাদ) বাংলাদেশে জঙ্গীবাদকে রাজনৈতিক কৌশল হিসাবে বাড়তে দিয়েছে। পরিচর্যা করে বাড়তে দিয়েছে। এই যে তারা এমনটা করেছে (যেকারণে, আমি আপনারই মতো মনে করি 'এগুলো বিচ্ছিন্ন ঘটনাও না') সেটা তাদের বিশেষ ধর্মের প্রতি আনুগত্য বা আদর্শিক অবস্থান থেকে না। রাষ্ট্রক্ষমতাকে কবজায় রাখার দীর্ঘমেয়াদী গাজোয়ারির কৌশল।

ধর্মের প্রেমে পড়ে কেউ এইসব হামলা চালায় নাই ফাহিম। বা, ধর্মানুভূতিতে আঘাত পেয়ে কেউ এই হামলা চালায় নাই। এই হামলাগুলি জামাত-শিবির-হরকাতুলজিহাদের মতন গোষ্ঠি চালিয়েছে। এগুলি রাজনৈতিক ক্ষমতাদখলের মিশনে সাংগঠনিক অ্যাকশন।

সুতরাং কেবলই 'ধর্মের' অভিধান দিয়ে এই ঘটনাগুলি বুঝতে গেলে (আপনি বুঝেছেন বলছি না, যদি কেউ বুঝে থাকেন তাহলে) এই ঘটনাগুলি যে 'ক্ষমতা-কাঠামো'র ভিতর দিয়ে অস্তিত্বশীল হয়েছে সেটা দৃষ্টির আড়ালে থাকে। ভেবে দেখেন, এই দৃষ্টির আড়ালে থাকার বিষয়টাই ঐ জঙ্গীবাদী দল ও রাজনৈতিক গোষ্ঠিগুলির অভীষ্ট। অর্থাৎ তারা বাংলাদেশের মানুষকে বুঝাতে চায়, তারা ধর্ম রক্ষায় নানা ধরণের 'অ্যাকশন' নিচ্ছে। যেখানে 'ধর্মরক্ষা' আসলে তাদের উদ্দেশ্য না। উদ্দেশ্য রাষ্ট্রক্ষমতা কুক্ষিগত করে রাখা, এবং এই কুক্ষিগত করে রাখার বিষয়টা যাতে সহজে চোখে না পড়ে সেজন্য সেটাকে ধর্মের মোড়কে ঢেকে রাখা।

এখন কেউ বলতে পারেন 'ধর্ম' না থাকলে তারা কীসের মোড়ক ব্যবহার করত? 'ধর্ম' জিনিসটা থাকার কারণেই না, তারা এটা করতে পারে। তাদের কথাটা খুব ভুলও না। কিন্তু আমি বলব, জরুরি হচ্ছে এটা বুঝে নেয়া, মোড়ক হিসাবে তারা যেটাকে ব্যবহার করে সেটা আসলে বিশেষ প্রকারের 'আইডিওলজি'।

এখন 'আইডিওলজি' কী ব্স্তু? আপনি এক রকম অবশ্যই জানেন। কিন্তু আমি কীরকম জানি একটু বলতে চাই (আমি অবশ্যই দাবি করি না আমিই ঠিক জানি)। আইডিওলজি' হচ্ছে 'ফলস কনশাসনেস' অর্থাৎ 'মিথ্যা চেতনা'। কেউ কেউ বলেন, বাজার অর্থনীতিও এক ধরণের মিথ্যা চেতনার সৃষ্টি করে। একটা উদাহরণ দেই। ধরেন আমি আর আপনি বন্ধু। এখন আমরা স্বাভাবিকভাবেই আমাদের চারপাশের বাস্তবজগতের উপর ভিত্তি করে বন্ধুত্ব গড়তে পারি। আবার অ্যামেরিকান সিটকম দেখেও ঠিক করতে পারি আজকালকার 'স্মার্ট' বন্ধুত্ব কেমন হয়। তারপর সেই 'স্মার্ট' বন্ধুত্বের আদলে নিজেরা বন্ধু হয়ে যেতে পারি। একে অপরকে নানা রকম পণ্য কিনে উপহার দিতে পারি (বিষয়টা একটু অন্যরকম হয়ে যাবে যদিও খাইছে)। টিভিকে নকল করতে করতে নিজের জীবনযাপনকে ভরিয়ে তুলতে পারি অজস্র পণ্যে। এবং সবসময় অশান্তিতে থাকতে পারি, কারণ টিভিতে দেখানো দুনিয়াটা আমাদের এখনও-কিনা-হয়-নাই এমনতর জিনিসপত্রের বোঝাই হয়ে আছে।

এখন বলতে পারেন এতে সমস্যা কী। আমাদের ব্যক্তিস্বাধীনতা। আমাদের ইচ্ছা আমরা টিভি দেখে বন্ধু হতে শিখব, কার কী বলার আছে। বলার নাই কিছু আসলে। কিন্তু মনে করানোর আছে, ঐ যে টিভি দেখে মানুষ বন্ধুত্ব শিখছে বা অন্য উদাহরণ দিলে, বিজ্ঞাপন দেখে জানছে কীভাবে দেশকে ভালবাসতে হয় - তাতে তারা নিজেরা স্বকীয়তা অর্জন করে না। তারা নিছক ক্রেতা হয়ে উঠে। নানান ভাবে ক্রেতা হয়ে ওঠে। এই ক্রেতা হয়ে ওঠাটা শেষ বিচারে ব্যক্তিস্বাধীনতাকে নিশ্চিত করে না। আরেকটা 'কেইস' বিচার করতে চাই।

বাজার অর্থনীতিতে 'নারী' কী ব্স্তু? সেখানেও সে ভোগ্যপণ্য। তাকে ভোগ্যপণ্যের মতো সেজেগুঁজে থাকতে হয়। বিক্রয়যোগ্য হতে হয়। পশ্চিমের মহান পুঁজিবাদী দেশেগুলিতেও তাকে প্রতিভা আর মেধার দামের জন্য লড়াই করতে হয়। হয় না? আর দুনিয়জুড়েই তাকে টাকার বিনিময়ে ডাউনলোড করা যায়। এখন দেখেন বাজার অর্থনীতির কোনো 'ধর্মগ্রন্থ' নাই। এবং আমরা 'বিশ্বাস' করি বাজার অর্থনীতি নারীর প্রতি সব অবমাননার উৎস না। ধর্মের বিরুদ্ধে সোচ্চার যারা তাদের একটা বড় অংশকেই আমি দেখি বাজার অর্থনীতির প্রতি আশ্চর্যরকম বিশ্বস্ত। তারা ধর্ম নিয়ে যতটা উৎসাহী, বাজার অর্থনীতির শোষক-স্বভাব নিয়ে আলোচনায় ততটাই অনিচ্ছুক। অথচ বাজার অর্থনীতিও একটা 'আই্ডিওলজি'।

আমি কেবল বলতে চাই, শোষণের হাতিয়ার হিসাবে আমরা যেভাবে ধর্মকে চিনতে পারি, অপরাপর 'আইডিওলজি'গুলিকেও যেন চিহ্নিত করতে পারি। কারণ দিনশেষে শোষণের হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহৃত না হলে ধর্মকে চিনে নেয়া তো কোনো গুরুত্ব নাই। নাকি আছে? শুধুই ধর্মকে চিনতে চাওয়া বা সবার আগে ধর্মকেই চিনতে যাওয়ার পলিটিকাল ইকনমিটা তাই বুঝে নেয়া জরুরি।

এই পোস্টের বিষয়ের সাথে খুব বেশি সঙ্গতিপূর্ণ হবে না বলে এই বিষয়ে এখানে হয়ত আর আলাপ করব না। ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

রায়হান আবীর এর ছবি

অনিন্দ্য'দার সাথে একমত।

প্রিয় ফাহিমভাই, অনার্য। হুমায়ুন আজাদ, তসলিমা সবার ঘটনা তো আমি জানিই। আমি এও বুঝি বাংলাদেশ মানে ঢাকা না। কিন্তু নাস্তিকতার চর্চা এখন সারাদেশেই হচ্ছে। অল্প তবে হচ্ছে তো। আর এছাড়া দেখেন, আমি কমেন্টে কী বলেছিলাম-

এদেশে মুক্তবুদ্ধির চর্চার দ্বার এখনও সবার জন্য উন্মুক্ত

। এখনও কথাটা আমি অত্যন্ত সচেতনভাবে বলেছি। চারদলীয় জোট ক্ষমতায় এলে কী হবে সেটা আশংকা করেই এই কথা বলা। ধর্ম ছাগুরা এখন যেমন আছে তখন তেমনই থাকবে। কিন্তু কাহিনি হৈলো বৃহত্তর জামাত ক্ষমতায় এলেই বাস্তবিক আক্রমণের শংকা বাড়ে। এখনও হয়তো আছে, তবে সত্যিকারের যা হৈতে পারতো তার থেকে অনেক সামান্য।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকের কন্টেন্ট অনলাইন রাইটার্স কমিউনিটি সচলায়তন-এ আর সচলায়তনের কন্টেন্ট ফেসবুকে প্রচারটা ও দুই ক্ষেত্রেই পৃথক আলোচনা করার অভ্যাসটা আমার চরম বিরক্তির উদ্রেক করছে দিন কে দিন।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

রানা মেহের এর ছবি

মডারে্টরদের অমুরোধ করবো কৌস্তুভের ব্লক সংক্রান্ত মন্তব্যটা রেস্ট্রিক্ট করতে যদি সম্ভব হয়

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

পারিবারিক সূত্রে যতজন ভারতীয় বাঙালির সাথে মেলামেশার সুযোগ হয়েছে, বেশিরভাগেরই ধারণা ছিল/ আছে বাংলাদেশ একটি মৌলবাদী রাষ্ট্র। " তোরা ঢাকায় বোরখা ছাড়া চলাফেরা করতে পারিস?" এই প্রশ্ন বেশ কবার শুনেছি। একই ভাষায় কথা বলে কি করে একদম পাশের ভূখণ্ড সম্পর্কে মানুষের এতটা অজ্ঞতা থাকতে পারে, তা ভেবে বহুবার অবাক হয়েছি। আপনার পোস্টেও সেই একই টোন দেখতে পেলাম। এবং দুঃখিত হলাম। পড়ে মনে হয়েছে কিছু প্রিকন্সিভড ধারণা পোক্ত করতে আপনি পছন্দমত উদাহরণ খুঁজেছেন কেবল। হয়তো সচেতনভাবে না, অবচেতনভাবে।

আরো বললাম, যে এই মানুষগুলো খুবই লিবারেল, কে হিন্দু কে মুসলিম সেটা তুমি ধরতেও পারবে না দেখে, দিব্যি সবাই মিলেমিশে আছে।

যদি আরো কিছুদিন থাকতেন, আরো মানুষজনের সাথে মিশতেন, পুরো বাংলাদেশ নিয়েই আপনি এই কথাটা বলতে পারতেন আশা করি। রাষ্ট্র, সংবিধান, রাজনৈতিক দল ইত্যাদিরা নানাভাবে ধর্মকে ব্যবহার করে এবং করছে, সেটা ঠিক। কিন্তু, বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মাঝে শুভবুদ্ধির অংশটাই বেশি, তা বিশ্বাস করি।

১৯৭১ সনের বাংলাদেশ আর এখনকার বাংলাদেশ এক না। তখনকার হিন্দু-নিধন কন্সেপ্টের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল পাকিস্তানি রা। এরকম বহু ঘটনা আছে বহু হিন্দু পরিবারকে সেইসময় মুসলমান পরিবারগুলি আশ্রয় দিয়েছেন, রক্ষা করেছেন নিজেদের প্রাণ বিপন্ন করে। আর দাঙ্গা যারা করে তারা হিন্দুও না, মুসলমানও না, তারা স্রেফ ক্রিমিনাল।

কৌস্তুভ এর ছবি

আনন্দীদি,

বাংলাদেশ একটি মৌলবাদী রাষ্ট্র এই ধারণাটা আমার নেই, আশপাশে কারো থাকলে তাকেও সে ধারণা থেকে বেরিয়ে আসতেই বলি।

নেহাতই তুলনা হিসাবে ভাবতে গেলে ধরেন, আমার সচলবন্ধুরা যতটা লিবারেল, আমাদের গ্রামের বাড়ির আত্মীয়রা ততটা নন, এটা আশ্চর্য কিছু না। কম-বেশি অনেক রকমই থাকবে একটা দেশ জুড়ে। পুরো বাংলাদেশে অধিকাংশ লোকই লিবারেল যদি হন, সেটা অস্বীকার করার কোনো অ্যাজেন্ডা আমার নেই। আমার যেমন আলাপ, যেমন অভিজ্ঞতা, ততটুকুই বলেছি।

সেই কথাটাই তো আমিও বললাম। বাবাকে বলা আমার ওই কথাটায় কেবল প্রশংসা ছাড়া আর কিছুই ছিল না। সেটাতে অনেকের অত অস্বস্তি দেখে বিস্মিত হচ্ছি।

তাপস শর্মা এর ছবি

এই পোষ্টে যে বিষয়টা নিয়ে বিতর্ক হচ্ছে, সেই প্রসঙ্গে মনে করি যে , কৌস্তুভ এর কিছু বক্তব্য হয়তো না বললেও চলত। কিন্তু অভারল এই পোস্টে সে যা বলতে চেয়েছে তা কোন উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে করেনি বলে আমার মনে হয়েছে। আসলে লেখাটা আমার কাছে খুনসুটি কিংবা বন্ধুদের নিয়ে আড্ডার গল্প বলার গল্প। তারপর হল - কিছু কিছু অংশে বাংলাদেশের ধর্মীয় ব্যাপারে কথা এসেছে। আমার মনে হয়েছে - এটা কৌস্তভের দৃষ্টির ফলে হয়েছে। আসলে কৌস্তভের মতো ছেলেরা এতটাই লিব্যারেল চেতনা কিংবা ( যদি হয় নাস্তিকতা ) চিন্তায় বিশ্বাস রাখে যে তাদের কাছে এই জিনিষ গুলি ( ধর্মীয় সংস্কার, রীতি) সহ্য হয়না। আমার মনে হয় এগুলি ও শুধু বাংলাদেশে দেখেছে বলে নয়, শুধু ইসলাম ধর্মের ক্ষেত্রে নয়... পৃথিবীর যেখানে যে ধর্মের ক্ষেত্রেই এই জিনিষগুলি দেখবে কৌস্তুভদের মতো মানুষের মনে এই চেতনারই জন্ম নেবে। কিন্তু সেই চেতনাটাকে যদি কোন দেশের বিরুদ্ধে অপপ্রচার বলে ধরে নেওয়া হয়, তাহলে সেটাও হয়তো ভুল ছাড়া সঠিক হবেনা।

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

চলুক

----------------------------------------------------------------------------
একশজন খাঁটি মানুষ দিয়ে একটা দেশ পাল্টে দেয়া যায়।তাই কখনো বিখ্যাত হওয়ার চেষ্টা করতে হয় না--চেষ্টা করতে হয় খাঁটি হওয়ার!!

কৌস্তুভ এর ছবি

হাসি

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

কৌস্তুভ দা, আপনার এই লেখাটিতে আগে মন্তব্য করেছি। কিন্তু তারপর অনেক তর্ক বিতর্ক হয়েছে। হচ্ছে। আমার এই মন্তব্যটির দরকার ছিল না। কিন্তু ভাবলাম, এই তর্কের ক্ষেত্রে নিজের অবস্থানটা জানিয়ে রাখি হাসি

অনেকগুলো কথা উঠেছে, কিছুই আমার গায়ে লাগেনি। পুরো লেখাটাকেই একজন বিদেশী বন্ধুর ঢাকা ভ্রমন এবং তার সঙ্গে তাঁর নিজের পূর্বধারনা, বর্তমান উপলব্ধি মিলিয়ে একটা নির্দোষ লেখা মনে হয়েছে।

অনেক কষ্ট কল্পনাতেও আপনাকে অপপ্রচার করে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করে অথবা ভারতের তুলনায় বাংলাদেশকে ছোট করে ভবিষ্যতে রাজনৈতিক/অর্থনৈতিক/সামাজিক ফায়দালোটার প্রচেষ্টাকারী গোপন/প্রকাশ্য কোনো দলের মুখপাত্র, নিদেনপক্ষে সদস্য বলেও দাঁড় করাতে পারলাম না। আফসোস!

আপনি যা বলেছেন, আপনার উপলব্ধি। বাংলাদেশ সম্পর্কে আপনার এতদিনের ধারনার সঙ্গে মিলিয়ে বর্তমানে যা দেখেছেন তার বর্ণনা। ভারত বা তার কিছু অংশের সঙ্গে দুয়েক জায়গায় তুলনা করেছেন যা কারো কারো ভালো লাগেনি। এ সম্পর্কে কিছু বলতে পারছি না। আমার কিছু মনে হয়নি। অনেকের হয়েছে। সেটা যার যার দৃষ্টিভঙ্গি।

কোথাও মিথ্যে বলছেন বলেও মনে হয়নি। একটা বিষয় বলতে চাই, বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ ইসলামিক রাষ্ট্র। সুতরাং (আপনার স্বভাবসুলভ), ধর্মকে খোঁচা মারলে সেই খোঁচা গিয়ে লাগে ধর্মের প্রভাবে প্রভাবিত সমাজের অবস্থার উপর। বাংলাদেশ তার অন্তর্গত সমাজের সেই অবস্থার দায় এড়িয়ে যেতে পারে না। ধর্মকে খোঁচা দিয়ে করা আপনার মন্তব্যে এজন্য খানিকটা পথ ঘুরে হলেও বাংলাদেশের বদনাম হয়ে যায়। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার দেশের সেই বদনাম/সমালোচনা করার অধিকার রাখি। একজন মানুষ হিসেবে সেই আধিকার আপনারও রয়েছে বলে মানি। অন্যরা মানেন কীনা তা জানিনা।

যদি মনে হত, আপনি উদ্দেশ্যমূলকভাবে বাংলাদেশের বদনাম করছেন, তাহলেও আপনার সেই বদনাম করার স্বাধীনতা নিয়ে কোনো সংশয়ের অবকাশ নেই। সেক্ষেত্রে কেবল আপনাকে পছন্দ করতে পারতাম না। আপনাকে পছন্দ আমি এমনিতেও করছি না, কিন্তু সে আমার পাঠিকা ভাগিয়ে নিতে আপনার উপর্যূপরি অপচেষ্টার জন্যে। অন্য কোনো কারণে নয়।

ভালো থাকুন চোখ টিপি

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

আফসোস আমারও। এই সচলবন্ধুদেরই আমি মাত্র কয়মাস আছে শর্মিলা বোস বা মেহেরজানের বিতর্কের ব্যবচ্ছেদ এনে দিলাম, আর এই কদিনের মধ্যেই তাঁদের কিছু লোকের থেকেই বাংলাদেশ-বিদ্বেষী ট্যাগিং উপহার পেতে হল। কী করা, আমার ওই স্ট্যাটাসটা তো দেখেইছিলেন, দুনিয়ায় একটাই মীম আছে যেটা মাতৃত্বের মত কড়া ইমোশনকেও ওভাররাইড করে দিতে পারে।

"বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ ইসলামিক রাষ্ট্র।"
এইটা যে কী সোনার পাথরবাটি তা তো বুঝিনা রে ভাই। তবে তা নিয়ে লেখায় কিন্তু কিছুই বলতে যাই নি। তাও...

আমার লেখা আমার পাঠিকারা পড়তে না পারলে, আপনার মত মডুদের ডাকাডাকি করলেও আপনারা গা করেন না, আপনাকেও আমি ১১০% অপছন্দ করি খাইছে

সাফি এর ছবি

ভাই কৌস্তুভ, প্রতিটা পোস্ট তো নিজের মেরিটেই মন্তব্য পাবে। শর্মিলা বোসের পুস্তাকালোচনার পোস্টে আপনাকে যদি যথাবিহিত কৃতজ্ঞতা প্রদর্শন করা না হয়ে থাকে, তাহলে আরেকবার নতশিরে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে গেলাম। এর পরে আপনাকে অনুরোধ করবো, আপনার ঠিক আগের লেখাতেই (পর্ব-১) এ আসা ৭৫টি মন্তব্য আরেকবার পড়ার জন্য। ভিক্টিম কার্ড খেলার আগে, অনুরোধ করব দুদন্ড বসে ভাবতে - আগের পর্বে আসা মন্তব্যগুলোর সাথে এই পোস্টের কিছু মন্তব্যর পার্থক্যটা কোথায় এবং কেন? পাঠক কখনও পিঠ চাপড়ানি দিবে, কখনও চোখ রাঙানি দিবে এই ফিডব্যাকটাই ব্লগের শক্তি। পিঠ চাপড়ানি নেওয়ার সাথে সাথে চোখ রাঙানির কারণ অনুসন্ধান করাটা ব্লগারের বড় শক্তি।

অন্তত আমি আমার পক্ষ থেকে বলতে পারি মন্তব্য করার সময় আমি পোস্টের বিষয়াদিকেই আমলে রাখি, আগে পরে কি হয়েছে বা ফেসবুকে কে কি বলেছে, এগুলা এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। আর ব্লগারকে ব্লগার হিসেবেই দেখি, তার জাতীয়তা বা ধর্মবিশ্বাস যাচাই করার আগে তার যুক্তির দূর্বলতা বের করে সেই যুক্তি খন্ডানোর চেষ্টা করি। ভাল থাকবেন।

কৌস্তুভ এর ছবি

সাফি, আপনার প্রতি আমার কোনোই ক্ষোভ নেই। মনে হয় আমার প্রতিমন্তব্যগুলো থেকে আপনার খানিকটা হয়েছে। তার জন্য দুঃখিত।

অনিন্দ্যকে নিচে যেমন বললাম, প্রতিদান, কৃতজ্ঞতার আকাঙ্ক্ষা থেকে ওই কাজগুলো কাজটা করিনি। এবং কাজটার ফলে সচলবন্ধুদের সহমর্মিতা বলেন, ধন্যবাদ বলেন, অনেকই পেয়েইছি। যেটা কয়েকজনের থেকে পাইনি বলে দেখছি, এবং দেখে দুঃখিত হচ্ছি, সেটা হচ্ছে ট্রাস্ট।

কারো বাংলাদেশ সম্পর্কে অভিমত/ধারণা নিয়ে বিতর্ক চলতেই পারে। কিন্তু একজন সহসচলকে (যাকে এতদিনে সচলদের ট্রাস্ট করা যোগ্য বলেই মনে করেছিলাম) বাংলাদেশ-বিরোধী ষড়যন্ত্রকারী বলে অন্যায় ট্যাগিং করা হলে তার ভিক্টিম মনে হওয়া কি অকারণ?

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

আফসোস আমারও। এই সচলবন্ধুদেরই আমি মাত্র কয়মাস আছে শর্মিলা বোস বা মেহেরজানের বিতর্কের ব্যবচ্ছেদ এনে দিলাম, আর এই কদিনের মধ্যেই তাঁদের কিছু লোকের থেকেই বাংলাদেশ-বিদ্বেষী ট্যাগিং উপহার পেতে হল।

এইখানে এসে আমি চরম হতাশ হলাম!
প্রতিটা পোস্ট আসলেই তার মেরিটেই আদ্রিত বা অনাদ্রিত হবে পুরাতন বা নতুন যেই আলাপই তাতে যুক্ত হোক না কেন। তোমার সেই দুইটা পোস্টে ধন্যবাদ বা বাহবার কমতি হয়নি যে সেইটা এখানে জানাতে হবে। আগে পিছে তুমি যেইরকমই মন্তব্য করে তোমার এই কথাটাকে জাস্টিফাই করতে চাও না কেন, তুমি বাংলাদেশ-বিদ্বেষী না সেটা প্রমাণ করতে তোমাকে আগের বাহবা পাওয়া পোস্ট টেনে আনতে হবে কেন!! আজকে এখানে তোমার সাথে মতান্তর হওয়া একটা সচলও যে কোন একটা দেশের, তোমার দেশই ধরা যাক, যদি উচিত একটা cause-এর পেছনে শ্রম দিতেন সচলায়তনে, কারও অনুরোধে হোক বা নিজেই, সেটা উদাহরণ হিসেবে তুলে আনতে যেতেন সচলায়তনের আরেকটা পোস্টে, আমার কেন যেন এটা ঠিক বিশ্বাস হলো না!

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

অনিকেত এর ছবি

অনার্যের মন্তব্যে চলুক
স্পষ্টতঃই কৌস্তুভ'দার 'টাইমিং' এখানে গোলমেলে হয়ে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে। কৌস্তুভ'দার সব লেখা আমি পড়িনি---কিন্তু তাঁর শর্মিলা বসু'র উপরে লেখা পড়ার পরে আমার মনে হয় না বাংলাদেশ নিয়ে তাঁর অনুভূতি বিষয়ে কারো কোন দ্বিমত থাকতে পারে।
কৌস্তুভ'দা---আপনার লেখাটা মজার হয়েছে। তর্ক-বিতর্কের বিষ-বাষ্প আপনার মন ভুলিয়ে দেয় নি আশা করব। বাংলাদেশে আবারো ঘুরে যাবার নিমন্ত্রণ রইল।
শুভেচ্ছা অনিঃশেষ!

দিগন্ত এর ছবি

কৌস্তুভ'দার 'টাইমিং' এখানে গোলমেলে হয়ে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

এইটাই আসল কথা।


পথের দেবতা প্রসন্ন হাসিয়া বলেন, মূর্খ বালক, পথ তো আমার শেষ হয়নি তোমাদের গ্রামের বাঁশের বনে । পথ আমার চলে গেছে সামনে, সামনে, শুধুই সামনে...।

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

অনিকেত'দা আপনি অনিন্দ্যের মন্তব্যের জবাবে 'টাইমিং' ভুলের ব্যাপারটা ব্যাখ্যা করেছেন, কিন্তু আমি এখনো

স্পষ্টতঃই কৌস্তুভ'দার 'টাইমিং' এখানে গোলমেলে হয়ে গিয়েছে বলে মনে হচ্ছে।

এই কথাটার অর্থ বুঝি নাই। কৌস্তুভ ঢাকা থেকে ঘুরে যাবার মোটামুটি দেড় সপ্তাহের মাঝেই তার ঢাকা ভ্রমণের পোস্ট দিয়েছে। এখানে টাইমিং কীভাবে গোলমাল হলো! সে যদি ঢাকা বেড়াবার আগেই ঢাকা নিয়ে পোস্ট দিতো, বা অনেক পরে দিতো তাহলে না হয় সময়ের ভুলের অর্থ হতো, কিন্তু এখন কীভাবে বা কী প্রসঙ্গে 'টাইমিং' মিলে নাই এইটা বুঝি নাই।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

তাসনীম এর ছবি

ষোল বছর হোলো ঢাকা ছাড়া - এই শহর ছেড়ে দুই দিন থাকলেই কেমন একটা দুঃখবোধ হতো। সেটা আর নেই তবু কোথাও যেন একটা শূন্যতা রয়ে গেছে। মনে হয় অভিমানী প্রেমিকার মতো ঢাকা শহরের ছলছলে চোখ যেন আমি প্রায়ই দেখি। শহরগুলোও আসলে মানুষ...

বেশ লাগলো। ঢাকায় ফিরতে, ঘুরতে, বেড়াতে মন চায় - মানস ভ্রমণ হলেই বা মন্দ কি। আমার কোনো অস্বস্তি হয় নি, আপনার দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা ঢাকা আমার ভালো লেগেছে। বারবার ফেরা যায় এই শহরে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

কৌস্তুভ এর ছবি

তাসনীম ভাই, থ্যাঙ্কু। আপনার সঙ্গে কবে আড্ডার সুযোগ হবে? আপনাকে কাল্টিভেট করতে মন চায় দেঁতো হাসি

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

নানা প্রশ্ন মনে। বলতে চাই, জানতেও চাই ...

(১)
কৌস্তুভ সচলায়নের পোস্ট বিষয়ে ফেইসবুকে লিখে থাকলে সেটা তার বিষয়।

কিন্তু ফেইসবুকে কে কাকে ব্লক করেছে এই তথ্য পাবলিক ফোরামে কেন, তৃতীয় যেকোনো ব্যক্তিকে বলার মধ্যেও অভদ্রতা দেখতে পাই।

এখন, সচলায়তনের চৌহদ্দির ভিতরেই যখন এই প্রাইভেসি ব্রিচের ঘটনা ঘটেছে, সচলায়তন কর্তৃপক্ষের কাছে এই বিষয়ে মতামত চেয়ে অনুরোধ জানাচ্ছি।

(২)

'টাইমিং ভুল' [অনার্য সঙ্গীত এবং যারা যারা তাকে সমর্থন করেছেন] মানে কী? বাংলাদেশ সম্পর্কে 'বিভ্রান্তিকর সরলীকরণ' সবসময় ভুল, নাকি কখনো কখনো ভুল?

একটা কথা বলে নিই, ভুল ঐচ্ছিক না অনৈচ্ছিক, এটা ভুলকে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে প্রভাব রাখে না।

(৩)

'এই সচলবন্ধুদেরই আমি মাত্র কয়মাস আছে শর্মিলা বোস বা মেহেরজানের বিতর্কের ব্যবচ্ছেদ এনে দিলাম, আর এই কদিনের মধ্যেই তাঁদের কিছু লোকের থেকেই বাংলাদেশ-বিদ্বেষী ট্যাগিং উপহার পেতে হল।' [কৌস্তুভ]

'এনে দিলেন' মানে কি? 'এনে দিয়ে' যদি উপকার করে থাকেন, এবং প্রতিদান না পেয়ে থাকেন তাহলে তাহলে আপনার ক্ষমা চাইলাম। (ভারতীয় মিডিয়া দাবি করে তারা বাংলাদেশকে স্বাধীনতা 'এনে দিয়েছে'। আমরা চিরকৃতজ্ঞ।)

(৪)
'তর্ক-বিতর্কের বিষ-বাষ্প' [অনিকেত]

তর্ক-বিকর্তে অংশ না নিয়ে তাকে 'বিষ-বাষ্প' অভিহিত করাটা কেমন হল না? আপনি সচলায়তনের এই পোস্টের মিথস্ক্রিয়াকে বিষাক্ত বলেছেন? বিষের প্রভাব কাটাতে ভূমিকা রাখতে পারতেন হয়ত, যদিও এটা আপনার বিষয়। কিন্তু তর্ক-বিতর্ককে পাইকারি হারে বিষ-বাষ্প সৃষ্টিকারী বলাটা মানতে পারলাম না।

(৫)
'আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার দেশের সেই বদনাম/সমালোচনা করার অধিকার রাখি। একজন মানুষ হিসেবে সেই আধিকার আপনারও রয়েছে বলে মানি। অন্যরা মানেন কীনা তা জানিনা।' [অনার্য সঙ্গীত]

সমালোচনা আর বদনাম বিনিময়যোগ্য প্রতিশব্দ কি? বদনামের অধিকার আপনার বাক-স্বাধীনতার সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে? কৌতুহল থেকে জানতে চাইছি।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

অনিকেত এর ছবি

অনিন্দ্য,
আমার অংশের উত্তরগুলো দিই।

'টাইমিং ভুল' [অনার্য সঙ্গীত এবং যারা যারা তাকে সমর্থন করেছেন] মানে কী? বাংলাদেশ সম্পর্কে 'বিভ্রান্তিকর সরলীকরণ' সবসময় ভুল, নাকি কখনো কখনো ভুল?

ভুল সব সময়েই ভুল। কথা হল, কোনো কোনো সময় আমরা ভুলগুলো হয়ত উপেক্ষা করি-- আর কখনো ভুলগুলো উপেক্ষনীয় হয়ত নয়। আমার কাছে ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয়েছে কৌস্তুভ'দা-র কমেন্টগুলো সরলীকরণের দোষে দুষ্ট হলেও এগুলো উপেক্ষা হয়ত করা যেত। আপনার/আপনাদের যদি মনে হয় সেটা ঠিক নয়--তবে তাই ভেবে নিন।

তর্ক-বিকর্তে অংশ না নিয়ে তাকে 'বিষ-বাষ্প' অভিহিত করাটা কেমন হল না? আপনি সচলায়তনের এই পোস্টের মিথস্ক্রিয়াকে বিষাক্ত বলেছেন? বিষের প্রভাব কাটাতে ভূমিকা রাখতে পারতেন হয়ত, যদিও এটা আপনার বিষয়। কিন্তু তর্ক-বিতর্ককে পাইকারি হারে বিষ-বাষ্প সৃষ্টিকারী বলাটা মানতে পারলাম না।

আপনি আপনার কিছু ভাবনা আমার মুখে তুলে দিতে চাইছেন কেন? আমি যে কথা বলেছি সেইটার ব্যাখ্যা হল এইরকমঃ এইখানে যেসব তর্ক-বিতর্ক হচ্ছে সে কারণে মন কষাকষিটা না হোক। তর্কের বিষে অনেক সময় কিছু সহজ জিনিস সহজ করে বুঝতে মন চায় না। তখন তর্কে জেতাটা মুখ্য হয়ে দাঁড়ায়। আমি কৌস্তুভ'দা-কে বলতে চেয়েছি এইসব মন কষাকষি যেন
তাকে ভুলিয়ে না দেয় যে, বাংলাদেশে তার নিমন্ত্রণ সব সময়ের।
ধন্যবাদ।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

আমার ভাবনা আমি নিজের মুখেই বলছি। আপনি অন্যরকম বুঝে থাকলে দুঃখিত। আর বাংলাদেশ বিষয়ক বিভ্রান্তিকর সরলীকরণ আমার কাছে উপেক্ষার বিষয় না। উত্তর দেয়ার জন্য ধন্যবাদ।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

কৌস্তুভ এর ছবি

অনিন্দ্য, আপনার (৩) প্রশ্নটাই মনে হয় আমাকে করা। ওটারই উত্তর দিই।

'খবর এনে দেওয়া' কথাটার মানে আপনি জানেন নিশ্চয়ই। সেই অতি সরল অর্থটাই ব্যবহার করেছি।

প্রতিদান, কৃতজ্ঞতার আকাঙ্ক্ষা থেকে কাজটা করিনি। (সচলের উপর এই ভরসাটা আছে, যে কেউ এটাকে 'মা ফলেষু কদাচন' থেকে উদ্ভূত বলে আবার হিন্দুধর্মের এজেন্ট ইঙ্গিত করে বসবেন না।) করেছি মিথ্যাচারের বিরোধিতা করার ইচ্ছা, বাংলাদেশের প্রতি সহমর্মিতা, সচলবন্ধুদের সাথে সহমর্মিতা থেকে। এবং সত্যি বলতে সচলবন্ধুদের সহমর্মিতা বলেন, ধন্যবাদ বলেন, অনেকই পেয়েইছি। যেটা কয়েকজনের থেকে পাইনি বলে দেখছি, এবং দেখে দুঃখিত হচ্ছি, সেটা হচ্ছে ট্রাস্ট।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

যতটুকু আমার (মন্তব্যের) সংগে সংশ্লিষ্ট মনে হচ্ছে, বলার চেষ্টা করছি অনিন্দ্য'দা,

(২) 'টাইমিং ভুল' [অনার্য সঙ্গীত এবং যারা যারা তাকে সমর্থন করেছেন] মানে কী? বাংলাদেশ সম্পর্কে 'বিভ্রান্তিকর সরলীকরণ' সবসময় ভুল, নাকি কখনো কখনো ভুল?
একটা কথা বলে নিই, ভুল ঐচ্ছিক না অনৈচ্ছিক, এটা ভুলকে চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে প্রভাব রাখে না।

- 'টাইমিং ভুল' বিষয়ক কিছু জানিনা।
- বাংলাদেশ সম্পর্কে বিভ্রান্তিকর সরলীকরণ 'ভুল' কিনা জানিনা। আমার মতে, "অনুচিত"।
- 'ঐচ্ছিক ভুল' বলে কিছু নেই। ভুল মাত্রই 'অনৈচ্ছিক'।

সমালোচনা আর বদনাম বিনিময়যোগ্য প্রতিশব্দ কি? বদনামের অধিকার আপনার বাক-স্বাধীনতার সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে? কৌতুহল থেকে জানতে চাইছি।

- সমালোচনা এবং বদনাম আভিধানিকভাবে বিনিময়যোগ্য প্রতিশব্দ কিনা জানিনা। আমি প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহার করি না।
- বদনাম* করতে পারা (এই ক্ষেত্রে নেতিবাচক মনোভাব ব্যক্ত করা বোঝাচ্ছি) বাক-স্বাধীনতার মধ্যে পড়ে বলে মনে করি।
*: 'উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার' হলে সেটাকে বাক-স্বাধীনতা বলে মনে করিনা।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

রানা মেহের এর ছবি

কৌস্তুভ

রায়হান আবীর তার থ্রেট মেইল বা হেইট মেইল যেভাবেই বলুন না কেন কখনোই সেটাকে সিরিয়াসলি কিংবা নাস্তিকতার পথে প্রতিবন্ধকতা হিসেবে ভাবেন নি। তিনি নিজে যখন ঐ মেইলের কথা বলেছেন তখনো ওটাকে হাস্যকর একটা কান্ড হিসেবে দেখেছেন এখনো এটাকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু মনে করেন না। আর আপনি সেই মেইলের ওপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ নাস্তিকতার জন্য কতটা অনিরাপদ এর হাইপোথেসিস বের করে ফেললেন? না মিথ্যে আপনি বলেন নি। মেইল সে সত্যি পেয়েছিল। কিন্তু আপনি যেই ব্যাখ্যা এই মেইলের করেছেন তা মিথ্যা থেকে কম কিছু না বরং কিছু কিছু সময় তা মিথ্যা থেকেও বিপদজনক।

আপনি বলছেন আবীর তার লিস্ট থেকে কাকে ব্লক করলো তা আপনার রেস্ট্রিক্ট করে দেয় উচিত ছিল। কেন? এ প্রসঙ্গই আসবে কেন এখানে? এমনকি রেস্ট্রিক্ট করে দিলেও আমি আর অন্যান্য সচলেরা ঐ অংশ টুকু দেখতে পেতাম। কেন আমরা দুজনের এই ব্যক্তিগত বিষয় এখানে দেখবো? আমার রেস্ট্রিক্ট করতে বলা ছিল শেষ চেষ্টা হিসেবে যেহেতু ঐ মন্তব্যের এডিট সম্ভব ছিল না। আপনাকে এমনকি এরকম একটা কথা রেস্ট্রিক্ট করে হলেও বলার বৈধতা দেবার জন্য নয়।

'এই সচলবন্ধুদেরই আমি মাত্র কয়মাস আছে শর্মিলা বোস বা মেহেরজানের বিতর্কের ব্যবচ্ছেদ এনে দিলাম, আর এই কদিনের মধ্যেই তাঁদের কিছু লোকের থেকেই বাংলাদেশ-বিদ্বেষী ট্যাগিং উপহার পেতে হল।'

আপনার লেখাদুটো যথেষ্ট ভালো ছিল। আপনি একটা কষ্টসাধ্য কাজ করেছেন এবং এজন্য শুধু ধন্যবাদ অনেক কম পড়ে যায়।
কিন্তু আপনি কোন বিতর্কের ব্যবচ্ছেদ করেন নি। ওখানে শর্মিলা বসুর বইয়ের ওপর আলোচনায় আপনি যা দেখেছেন তার বিবরণী দিয়েছেন। আর মেহেরজান সিনেমার ওপর আপনি যা বলেছেন তা বেশিরভাগই আপনার আগেই সচলে চর্চিত আর তারপরে আবার সেই অনুষ্ঠানে কী হলো তার বর্ণনা। আবারো বলছি আপনার সেই লেখাগুলো অনেক ভালো। কিন্তু শর্মিলা বোস বা মেহেরজান বিতর্কের ব্যবচ্ছেন নয়।
ব্যবচ্ছেদ দেখতে চাইলে বরং আপনি এই বিষয়ে শুভাশীষ দা আর অনিন্দ্যের লেখা পড়ে দেখতে পারেন।

বাংলাদেশ ইসলামি ধর্মনিরপেক্ষ ইসলামি রাষ্ট্র, এ কথার মানে কী? কেঊ কি আমাকে একটু বুঝিয়ে বলবেন ঠিক কী কারণে বাংলাদেশকে এরকম একটা উপাধি দেয়া হলো?

আমরা বোধহয় নিজের অজান্তেই স্বাধীনতাবিরোধীদের একটা অস্ত্র তুলে দেই সবকিছুর জন্য ধর্মকে দায়ী করে।বাংলাদেশে মুক্তবুদ্ধির চর্চাকারীদের ওপর যেইসব আঘাত আসে তা যতটুকু না ধর্মের জন্য তার থেকে অনেক বেশি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষাবলম্বনের জন্য। বাংলাদেশের মানুষ যদি ধর্মকে যতটুকু সম্মান করেন রক মিউজিক কে অতটুকু সম্মান করতেন তাহলে স্বাধীনতাবিরোধীরা তাই ব্যবহার করতো। তাই ধর্মীয় আকাশ বাতাস খোঁজার আগে একটু খেয়াল করবেন প্লিজ।

কিছু কিছু বিশেষন পাচ্ছি। "কৌস্তুভ ভুল করেছেন", "কৌস্তুভ সরলীকরণ করেছেন" "একজন বিদেশী বন্ধুর ঢাকা ভ্রমন এবং তার সঙ্গে তাঁর নিজের পূর্বধারনা, বর্তমান উপলব্ধি মিলিয়ে একটা নির্দোষ লেখা..."। সমস্যা হচ্ছে কৌস্তুভ কোথাও তার ভুল কিংবা সরলীকরন দেখতে পাচ্ছেন না। তিনি রীতিমতো ফেইসবুক খুঁজে তার কথা যে সামগ্রীকভাবে প্রযোজ্য সেই প্রমান নিয়ে আসছেন। একজন সচল যখন বলছেন মসজিদ ঘটনায় তিনি উপস্থিত ছিলেন লেখার বর্ণনার মতো কিছু ঘটেনি তখনো তিনি তার বক্তব্য থেকে সরে আসছেন না। আর শেষের কথা মানে যদি এই হয় বাংলাদেশ সম্পর্কে ঊনি এখানে আসার আগে তাই ভাবতেন যা তিনি বর্তমান উপলদ্ধিতে লিখেছেন তাহলে তো আনন্দীর কথাই ঠিক হয়ে যায়। বদনাম কিংবা সমালোচনা করার অধিকার কেউ কারো কাছ থেকে কেড়ে নেয়নি। শুধু সেই গুলো যদি একপেশে হয় তখনি প্রশ্ন আসে।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

তোমার মন্তব্যের দুয়েকটি অংশ আমার মন্তব্যের অংশ। এজন্য জবাব দিচ্ছি আপু। হাসি

বাংলাদেশ ইসলামি ধর্মনিরপেক্ষ ইসলামি রাষ্ট্র, এ কথার মানে কী?

এটি আমার মন্তব্য থেকে এসেছে সম্ভবত। আমি লিখেছি, বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ ইসলামি রাষ্ট্র
আমার জানামতে, বাংলাদেশের সংবিধানে এক জায়গায় আছে, 'বাংলাদেশের রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম'। অন্যখানে বলা আছে, 'বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র'। দুটো মিলিয়ে বলেছি, 'বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ ইসলামি রাষ্ট্র'।

"একজন বিদেশী বন্ধুর ঢাকা ভ্রমন এবং তার সঙ্গে তাঁর নিজের পূর্বধারনা, বর্তমান উপলব্ধি মিলিয়ে একটা নির্দোষ লেখা..."

এই মন্তব্যটাও আমি করেছি। কৌস্তুভের লেখা বিষয়ে আমার কী মনে হয়েছে সেটা তাকে জানিয়েছি। সম্পূর্ন লাইনটি এরকম: পুরো লেখাটাকেই একজন বিদেশী বন্ধুর ঢাকা ভ্রমন এবং তার সঙ্গে তাঁর নিজের পূর্বধারনা, বর্তমান উপলব্ধি মিলিয়ে একটা নির্দোষ লেখা মনে হয়েছে। আমার আসলেও এরকম মনে হয়েছে। বিতর্ক শুরুর পর লেখাটা আবার পড়ে দেখেছি। মনোভাব বদলায়নি।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

কৌস্তুভ এর ছবি

রানা মেহের,

১. ওই মেলের উপর ভিত্তি করে বাংলাদেশ নাস্তিকতার পক্ষে কতটা অনিরাপদ এই সিদ্ধান্ত আমি করিনি। নিরাপত্তার অভাব সম্পর্কে এখানেই ফাহিম, অনার্য মন্তব্য করেছেন। অন্যত্রও অন্য অনেকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। একট সামগ্রিক ধারণা পেয়েছি। এই মেলটা ওই প্রসঙ্গে অনেকটাই তুচ্ছ। মেলের কথা এল কারণ, বিশেষ করে রায়হান আবীরের কথা যখন তুললেন তখন একটা উদাহরণ হিসাবে এটা বললাম মাত্র, যে সেও হেট মেলের বাইরে নয়। অতএব 'ওই ইমেলভিত্তিক বিপদজনক ব্যাখ্যা করেছেন' এগুলো ঠিক না।

২. ওই কথা আনা কেন প্রাসঙ্গিক মনে করেছি সেটা তো উপরেই বললাম। সেটা যদি সম্ভব হত আমার আর ধুগোর মধ্যে রেস্ট্রিক্ট করার, তাহলে সেটাই করা উচিত ছিল, কিন্তু তা মনে হয় যায় না; তাই অন্তত রেস্ট্রিক্ট করে দেওয়া ঠিক হত, এটাও স্বীকার করলাম।

৩. ধন্যবাদের লোভে কাজটা করিনি; তবুও অনেক সচলবন্ধুই যথেষ্ট ধন্যবাদ জানিয়েছেন; ওটা ক্ষোভের কোনো বিষয়ই না। এটা অনিন্দ্য, সাফিকে উপরে করা মন্তব্যে বলেছি, দেখবেন প্লিজ।

আমি ব্যবচ্ছেদ করেছি, কখন বললাম? বিতর্কের ব্যবচ্ছেদ এনে দিয়েছি, যেমন খবর এনে দেয়। (বিতর্ক মানে ওই সভার ডিবেট।) শর্মিলার/রুবাইয়াতের গাঁজাগুলের ব্যবচ্ছেদ করেছেন ওই ডিবেটের অনেক মন্তব্যকারী। আমিও সুযোগ পেয়ে দুয়েকটা মন্তব্য করেছি, সেটা ব্যবচ্ছেদ না-ই হল নাহয়।

একটা আধা-অনটপিক কথা এখানে বলছি, মাইন্ড করবেন না। কদিন আগেই যে একটা 'ব্যবচ্ছেদমূলক প্রবন্ধ' প্রকাশিত হল, ওটাকে কিন্তু উদাহরণ হিসাবে কিছুতেই একটা দৃষ্টান্তমূলক ব্যবচ্ছেদ মানতে পারব না, কেবল আধা-ভ্রান্ত ব্যবচ্ছেদই বলতে পারি, দুঃখিত।

৪. ওই "বাংলাদেশ ইসলামি ধর্মনিরপেক্ষ ইসলামি রাষ্ট্র" কথাটা আমি তো বলিইনি, অনার্যও বলেননি। তিনি ব্যবহার করেছেন "বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ ইসলামি রাষ্ট্র" কথাটা। তা আমার যা অনুমান, উনি যে কারণে বলেছেন, সেটুকু বলতে পারি। একটা কথা আপনি একটু ভেবে দেখুন -
বাংলাদেশের সংবিধানের সংশোধনী বাতিল হয়ে আগের ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের ডিক্লারেশনেই ফিরে গেছে বলে শুনেছি। আবার সরকার বলছেন, সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম বহাল থাকছে। তাহলে বাংলাদেশ ধর্মনিরপেক্ষ নাকি ইসলামধর্মী? এইটা কি প্যারাডক্স নয়?

৫. সেটা আপনার ইন্টারপ্রিটেশন। মনে হয় দ্বিমত করারও অনেকে আছেন। আমি এইটুকুই বলব, বাংলাদেশকে denigrate করার আমার কোনোই উদ্দেশ্য/ইচ্ছা নেই।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

লেখাটা আগে একবার পড়ে গিয়েছিলাম, মাঝখানে দেখছি অনেক পানি গড়িয়ে গেছে।
আমার কাছে লেখাটাকে দোষনীয় মনে হয়নি। ইনফ্যাক্ট কলকাতা ঘুরে এসে দেখে আমিও হয়তো কিছু একটা লিখব যেটা আমার পূর্বধারনার সঙ্গে মিলবে কি মিলবে না।
এই লেখায় ইচ্ছাকৃত বিদ্বেষ সেটি বাংলাদেশ বিদ্বেষ হোক কি ইসলাম বিদ্বেষ, সেটা হয়তো অনেক পাঠক খুজে পেয়েছেন, কিন্তু আমি খুজে পাইনি। পর্যটকের চোখ আর এখানে থাকা লোকদের চোখ এক হবে না, এটাই স্বাভাবিক।

আমিও হয়তো আমার মাকে নিয়ে কলকাতায় বেড়াতে গেলে বলব, আম্মা, আমার এই বন্ধুরা অনেক লিবারেল, ছুয়াছুয়ির ঝামেলায় যাবে না। কারণ আমার মায়েরও ধারণা হচ্ছে কলকাতার হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা অতি গোড়া কট্টর, সেখানে ম্লেচ্ছদের গায়ের বাতাস লাগলেও তারা স্নান করেন।
সেরকম মানুষ নিশ্চয়ই কলকাতায় আছেন, আবার আমার মতো মানুষও নিশ্চয়ই পাওয়া যাবে, কিন্তু সেটা আমার মায়ের সঠিক পূর্বধারণা না-ও থাকতে পারে।

সাবেকা এর ছবি

আপনার মন্তব্যের সাথে সহমত ।

কৌস্তুভ এর ছবি

ধন্যবাদ, জেবতিক ভাই।

কিষান এর ছবি

চলুক

রাজিব মোস্তাফিজ এর ছবি

বন্ধু তৌফিকের মন্তব্য অনুসরণ করতে গিয়ে সচলায়তনে কৌস্তুভদার প্রথম লেখাটা পড়ে ফেললাম! ভাবলাম এখানে হয়ত এটা অপ্রাসংগিক হবে না! --

http://www.sachalayatan.com/guest_writer/30437#comment-484422

কৌস্তুভ এর ছবি

রাজিব মোস্তাফিজ, পুরোনো লেখা কষ্ট করে খুঁজে পড়ার জন্য ধন্যবাদ হাসি

অরফিয়াস এর ছবি

কৌস্তভ দা, লেখাটা পড়ে মজা লাগলো| কিন্তু সচলাড্ডা কি জিনিস দেখবার মন চায় !!! আমরা তো এখনো বহিরাগতই আছি, আড্ডার ঝালমুড়ি কেউ দেয়না|

প্রত্যেকটি দেশ এবং জাতির কিছু জিনিস আছে যা নিয়ে মজা করা যায়, কটাক্ষ করা যায়, একজন মানুষের ব্যাক্তিগত ধারণা থেকে তাতে বিভিন্ন মতের অমিল থাকতেই পারে, তাই বলে এই লেখাটা দূষণীয় কিছু মনে হচ্ছেনা|

----------------------------------------------------------------------------------------------

"একদিন ভোর হবেই"

কৌস্তুভ এর ছবি

নেটতুতো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা দেওয়াটা খুবই উপভোগ্য, যাদের সঙ্গে প্রথমবার দেখা হচ্ছে নেটের কল্যাণে তাদের সঙ্গে বহুদিনের পরিচিতিই হয়ে থাকে আসলে। কখনও কোথাও নিশ্চয়ই আপনারও সৌভাগ্য হবে এমন একটা জমায়েতে মিলমিশের। হাসি

মুস্তাফিজ এর ছবি

আমার সাথে দেখা না করে চলে যাওয়াটা খুব ভালো হয়নি। চোখ টিপি

...........................
Every Picture Tells a Story

কৌস্তুভ এর ছবি

মুস্তাফিজ ভাই, ঢাকায় গেলে ঘোরাফিরার আপনি যে একজন বড় মুরুব্বি হবেন সে প্রতিশ্রুতি আপনার থেকে তো পেয়েইছিলাম। তাই আমি ওদিক যাওয়ার কদিন আগেই যখন আপনি পাড়ি জমালেন তখন মনটা কেমন যেন খারাপ হয়ে গেল, কারণ ভ্যাঙ্কুভার গিয়ে আপনার সাক্ষাত পাওয়ার আশু কোনো সম্ভাবনা নেই মন খারাপ

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এর ছবি

পোস্টে দুই পক্ষের ধুন্দুমার আলোচনা দেখলাম। মাথায় এখন একটা প্রশ্নই ঘুরছে, নাস্তিকরা বাংলাদেশে এখন কতোটা নিরাপদ? চিন্তিত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।