ছুটির দিন ঘুম ভেঙে মনে হয় ঢাকা শহরেই আছি। শুয়ে আছি আমার ছোট চিপা রুমে চিকন খাটে, জাহাজের দোকান থেকে কেনা বক্স খাট। ঐসব দোকানে নাকি জাহাজের ফার্নিচার থেকে চেয়ার টেবিল তৈরি হত, দাম ভারি সস্তা। আমাদের তিন ভাইয়ের জন্য তিনসেট করে খাট আর পড়ার চেয়ার টেবিল কেনা হয়েছিল পান্থপথের জাহাজের দোকান থেকে। সেই খাটে শুয়েই ঘুম ভাঙল এইমাত্র, উপরে ঘটঘট শব্দে ফ্যান ঘুরছে। চমৎকার রৌদ্রোজ্জ্বল শুক্রবার সকাল। দশটা মত বাজে। উঠতে হচ্ছে, বাজারে যেতে হবে আব্বার সাথে।
অপেক্ষা
একটা মেইল আসবে সেই অপেক্ষা করছি এক সপ্তাহ হলো। অনেকদিন পরপর এরকম অপেক্ষা করি, মেইল, মেসেজ, ফোন, সম্মুখ বার্তা, এরকম কিছুর। কখনো কখনো ভালো খবর আসে,.. কখনো কখনো অন্য একটা সিদ্ধান্ত বা অনুসিদ্ধান্ত নেবার মতো এক টুকরা খবর আসতে অনন্তকাল কেটে যায়।
ভোরে কুয়াশায় চাদরে ঘুমিয়ে থাকা পাহাড়গুলো, যেন অদ্ভুত ধোঁয়াটে রহস্যময়তায় ঢেকে রাখতে চায় পুরো জগৎ!
এক বন্ধুই বলেছিল, ‘ একা লাগবেনা আর
কিনে ফেল একটা গীটার অথবা বেহালা
কিংবা নিদেনপক্ষে সস্তা দামের বাঁশের একটা বাঁশি।
গীটারের ছয়টা তারে আঙুল ছোঁয়ালেই দেখবি
অদৃশ্য এক জগত থেকে ছুটে এসেছে ছয়টা অপূর্ব ঋতু,
তাদের রূপ তোর অচেনা, তাদের গল্প তোর শোনা হয়নি কোনদিন,
দেয়ালজুড়ে দেখবি তখন ফুটে উঠেছে ফসলের ঊজ্জ্বল মাঠ
একটু আগের বিষন্ন ঘরে যেন হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়েছে
১.
দাঁতে দাঁত চেপে দশটি বছর অপেক্ষা করেছে সে ছয় বাই আট ফুটের এই অন্ধকারাছন্ন সেলে। ছোট্ট একটা ছিদ্রের মতো জানালাটা দুই ধাপে শক্ত লোহার শিক দিয়ে আটকানো। আর তার ফাঁক গলে যতটুকু রোদের আলো সেলে ঢোকে তাতে জমাট বাঁধা অন্ধকারটা যেনো আরও ঘনীভূত হয়। প্রতিটি দিন নয়, প্রতিটি মুহূর্ত যেনো এক একটা বছরের সমান দৈর্ঘ্য নিয়ে কেটেছে। প্রথম প্রথম যখন এখানে আসে সে, ধারণা ছিলো না কতোটা নিষ্ঠুরতা অপেক্ষা করছে তার জন্য। কিন্তু প্রথম সপ্তাহেই একটা ঝামেলায় জড়িয়ে যখন সাত দিনের সলিটারি কনফাইনমেন্ট এ থাকতে হলো, তখন বুঝলো জীবন কতোটা শক্ত।
সেই খেলার মাঠ, দুপুরের তপ্ত রোদেও এমন ধূসর কেন? চারিদিক ঝাপসা, কেমন ধোঁয়াটে। একটুপর চোখে পড়ল এক কিশোরী। মুখটা যে বড় চেনা! ব্যাকুল হয়ে কার জন্য অপেক্ষা করছে? অপেক্ষার যেন শেষ নেই, দাঁড়িয়ে আছে তো আছেই। ওকি কাঁদছে?